উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
এক সময় ভোট এবং ভোট পরবর্তী হিংসায় মৃত্যু নিয়ে দিনের পর দিন খবরের কাগজের শিরোনাম হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, যত সংখ্যক দলীয় কর্মী এই ধরনের ঘটনায় (বা দুর্ঘটনায়) প্রাণ হারাতেন, সাধারণ নাগরিকের সংখ্যা তার থেকে কম হতো না! পশ্চিমবঙ্গের ভোট উৎসব বছরের পর বছর এ রাজ্যের নাগরিকদের বাস্তবেই ‘উলুখাগড়া’ বলে প্রমাণ করেছে। বাম জমানার তুলনায় তৃণমূল আমলে এমন ঘটনা অনেকটা কমেছে ঠিকই, কিন্তু একেবারে বন্ধ হয়নি। তার প্রমাণ ফের রাখল চোপড়া। গত বৃহস্পতিবার তিন কেন্দ্রের ভোটে এরাজ্যে একটি এলাকার হিংসাই শিরোনামে এসেছে—সেটি চোপড়া। উত্তর দিনাজপুরের অংশ, কিন্তু দার্জিলিং কেন্দ্রের অন্তর্গত। এই লোকসভা কেন্দ্রের পাহাড়ে বা শিলিগুড়ি সংলগ্ন সমতলে নির্বাচন ছিল শান্তিপূর্ণ। ব্যতিক্রম শুধু চোপড়া। শুক্রবারও এখানে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকদের বাদানুবাদ এবং তারপর সংঘর্ষ হয়। গ্রামের নাম মুকদুবি। আচমকাই গুলি, বোমের লড়াই শুরু হয়ে যায়। বাইরে চেঁচামেচি শুনে ঘর থেকে বেরিয়ে রাস্তায় এসেছিল আব্দুল। সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র। সেসময়ই তার বাঁ পা ছুঁয়ে একটি গুলি বেরিয়ে যায়। স্থানীয়রা তাকে চোপড়ার দলুয়া ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করে। সেখানেই তার চিকিৎসা চলছে।
ঘটনাটি নিশ্চয়ই এখানে শেষ হয়ে যাওয়া উচিত নয়! কী দোষ ছিল আব্দুলের? আইন-শৃঙ্খলা কিংবা এলাকাবাসীর মানবিকতার প্রতি ভরসা রেখে তার কি বাড়ির বাইরে বেরনো উচিত হয়নি? এই ঘটনা কিন্তু ফের প্রমাণ করল, রাজনীতির লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত বলি হতে হয় সাধারণ মানুষকেই। দুই দলের লড়াই, সেখানে কর্মী-সমর্থকরাও তো সাধারণ নাগরিকই! রাজনৈতিক হত্যা কিংবা ভোটের হিংসার দায় কেন দলগুলি নেবে না? একজন কর্মী বা সমর্থক, যাকে সেই সময় ঘটনাস্থলে দেখা গিয়েছিল, তাকেই পুলিস গ্রেপ্তার করবে। হয়তো তার সাজা হবে। হয়তো হবে না। সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দল কিন্তু সরকারিভাবে ছাঁকনির নীচে আসবে না। এই প্রবণতারও তো বদল দরকার! যদি দু’টি রাজনৈতিক দলের সংঘর্ষে সাধারণ মানুষ বা আরও স্পষ্ট করে বলতে গেলে ভোটার প্রাণ হারান বা জখম হন, সেই দায় নিতে হবে দলগুলিকেও। আর সেটা শুধু তাদের কর্মীদের জন্য নয়। প্রত্যেকটি নাগরিকের জন্য। গণতন্ত্রের জন্য। না হলে চিরকালই রাজা-রাজড়ায় যুদ্ধের মাশুল উলুখাগড়াকেই দিতে হবে।