উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
নির্বাচনে ধাক্কা খেয়ে বোধদয় হওয়া অনুব্রতবাবু এদিন পঞ্চায়েতে বেনিয়মের পাশাপাশি এলাকার আইনশৃঙ্খলার অবনতি নিয়েও সরব হন। তিনি বলেন, খুন, বোমাবাজি বন্ধ করুন। পুলিসকে বলছি, যে করছে তাকেই গ্রেপ্তার করুন, যা খুশি মামলা দিন। আমাদের কোনও দুঃখ নেই।
এদিন তিনি মুখ্যমন্ত্রীর মতো বাঙালি আবেগকেও উসকে দিতে চেয়েছেন। পশ্চিম বর্ধমান ঘেঁষা খয়রাশোলে এসে তিনি বলেন, আসানসোলে আবার বিহারীরাজ করার রব উঠেছে। এটা বাংলার সংস্কৃতি নয়, এখানে সবাই একসঙ্গে থাকে। খয়রোশোলে ভোটে বিপর্যয়ের জন্য আক্ষেপের সুরও শোনা যায় এই দাপুটে নেতার গলায়। তিনি বলেন, উন্নয়ন কি বেশি করা হয়ে গেল! কী ছিল খয়রাশোলে, আর এখন রাস্তা ও পানীয় জলের ব্যবস্থা সবই তো দিয়েছি। এরপরেই জনতার উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, বিজেপিকে তো ভোটটা দিলেন, পাড়ার কলটা খারাপ হলে কি বিজেপি সারাবে, বিজেপি কি জল দেবে?
এই প্রশ্ন করতেই কর্মী সম্মেলনে অনুব্রতর বিড়ম্বনা বাড়িয়ে একজনকে বলতে শোনা যায়, বিজেপিই জল দেবে। এরপরই ক্ষিপ্ত অনুব্রতবাবু তাঁকে উঠে দাঁড়াতে বললেও সেই সাহস কেউ দেখায়নি। তবে এদিন অনুব্রতবাবুকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ঠেকাতেও উদ্যোগী হতে দেখা গিয়েছে। বাবুইজোড় পঞ্চায়েতের বিবাদমান দুই নেতা আব্দুর রহমান এবং মৃণালকান্তি ঘোষকে এক হয়ে মিছিল করার নির্দেশ দেন। একইভাবে পাঁচড়ার অঞ্চল সভাপতিকেও সরিয়ে দেওয়া হয়।
এদিনের সম্মেলনে অনুব্রত মণ্ডল ছাড়াও হাজির ছিলেন সভাধিপতি বিকাশ রায়চৌধুরী, জেলা সহসভাপতি অভিজিৎ সিংহ, বিধায়ক নরেশচন্দ্র বাউরি।
বহুবছর পর বীরভূমের নানা প্রান্তে ভোটে তৃণমূলের বিপর্যয় হয়েছে। যে খয়রাশোলে তৃণমূল ছাড়া অন্য দলের প্রকাশ্যে কোনও অস্তিত্বই পাওয়া যায় না সেখানেই ১৫হাজারের বেশি ভোটে পিছিয়ে শাসকদল। বোমা, বন্দুকের আতঙ্কে সন্ত্রস্ত করে রাখা তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতি সত্ত্বেও কেন এই ফল তা বিশ্লেষণ করতে এদিন খয়রাশোলের ইরিগেশন কমিটির মাঠে তৃণমূলের ব্লক কর্মী সম্মেলন হয়। হাজির হয়েছিলেন অনুব্রত। তাই সেই সম্মেলনের দিকে নজর ছিল রাজনৈতিক মহলের।
এদিন কার্যত প্রতিটি হারের কারণ তুলে ধরেই নেতা ও প্রধানদের তুলোধনা করেন জেলা সভাপতি। প্রথমেই তিনি পঞ্চায়েতের বেনিয়ম নিয়ে সরব হন। সেখানে স্থানীয় নেতারা কীভাবে টাকার বিনিময়ে কাজ করছেন তা প্রকাশ্যে তুলে ধরেন। এতেই সম্মেলন হাততালিতে ফেটে পড়ে। তখনই প্রধানদের জেলে পাঠানোর হুঁশিয়ারি দেন অনুব্রতবাবু। রাজনৈতিক মহলের মতে এই এলাকায় পঞ্চায়েতে লাগামছাড়া বেনিয়ম শাসক শিবিরের দিক থেকে স্থানীয় মানুষকে দূরে সরিয়েছে। এরপরই তিনি এলাকার বোমা, খুনের রাজনীতি নিয়ে সরব হন। তিনি জেলা সভাধিপতিকেও নির্দেশ দেন, তিনিও যেন কোনও নেতার জন্য থানায় ফোন না করেন।
কিছু কড়া পদক্ষেপের পাশাপাশি এদিন খয়রাশোলবাসীর কাছে নিজের হতাশা ব্যক্ত করেন অনুব্রতবাবু। তিনি বলেন, আমি এখানে আগে এসে বলেছি, বিকাশদা ড্রেন দাও, রাস্তা করে দাও। আমি ভুল করলাম। আরও দু’বছর খারাপ রাস্তা দিয়ে হাটানোর পরই কী রাস্তা করলে ভালো হতো? এরপরে তিনি কর্মীদের চাঙ্গা করার জন্য বলেন, এই ফল একটা দুর্ঘটনা মনে করুন। আপনাদের ঘুরে দাঁড়ানোর ক্ষমতা আছে। ভালো করেই জানি বিধানসভা ভোটে আবার ২০হাজার লিড দেবেন। এরপরেই প্রতি অঞ্চলে মিছিল করার নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি পাঁচড়ার অঞ্চল সভাপতি পদে কার্তিক ঘোষকে জায়গায় কিশোর মণ্ডলকে আনার কথা জানান। এদিন দুবরাজপুরে তৃণমূলের মিছিলে অংশ নেন অনুব্রত। বাইক মিছিলও হয়।