উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
শনিবার ভোরে কুচিয়ামোড়া গ্রামে দু’পক্ষের গুলি, বোমার লড়াইয়ে তিন তৃণমূল কর্মীর মৃত্যু হয়। মৃতদের নাম সোহেল রানা(১৯), খাইরুদ্দিন শেখ(৫০) ও রহিদুল হালসোনা(৩৫)। ওই দিনই সকাল থেকে সংশ্লিষ্ট গ্রামে অভিযান চালিয়ে পুলিস চারজনকে আটক করে। দীর্ঘক্ষণ ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। ধৃতদের নাম মাসাদুল মণ্ডল, সাদর আলি ওরফে রিন্টু, জুলফিকার মণ্ডল ওরফে পিন্টু এবং আকালি শেখ। রবিবার ধৃতদের বহরমপুর সিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক ধৃতদের সাতদিনের জন্য পুলিস হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। ধৃতরা গাউস শেখের অনুগামী। ধৃতরা কংগ্রেস ও সিপিএম আশ্রিত বলেই তৃণমূলের দাবি।
কংগ্রেস ও সিপিএম অবশ্য জানিয়েছে, ধৃতরা কংগ্রেস ও সিপিএমের সঙ্গে যুক্ত নয়। তবে, এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ঘটনায় মূল অভিযুক্ত গাউস শেখকে পুলিস গ্রেপ্তার করতে পারেনি। ঘটনায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্রও উদ্ধার করতে পারেনি।
পুলিস সুপার বলেন, গাউস সহ বাকি অভিযুক্তদের ধরতে গ্রামে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। শীঘ্রই বাকি অভিযুক্তরা ধরা পড়বে বলেই আশা করছি।
অন্যদিকে, ওই সংঘর্ষের পর থেকেই গ্রামে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। শনিবারের মতো এদিনও গ্রাম পুরুষশূন্য ছিল। বাড়িতে মহিলারা থাকলেও তাঁরা সেভাবে কথা বলতে চাননি। অধিকাংশ বাড়ির গেট ও ঘরের জানালা ছিল বন্ধ। বহু ডাকাডাকি করেও তাঁদের সাড়া মেলেনি। গ্রামের রাস্তার মোড়ের চায়ের দোকানও ছিল বন্ধ। রাস্তা ছিল কার্যত শুনসান। তবে, গ্রামের বাসিন্দাদের একাংশ ছেলেমেয়ে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে চলে গিয়েছেন। তাঁদের কেউ দৌলতাবাদ থানার ১৪মাইলে, আবার কেউ ডোমকলে ভগীরথপুরে, কেউ জলঙ্গিতে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।
ওই গ্রামবাসীদের কয়েকজন বলেন, এই গ্রামে দুই গোষ্ঠীর বোমা, গুলির লড়াই বহুকালের। বিগত বামফ্রন্ট জমানায় পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দলের রাখা নিয়ে বিরোধের জেরে সিপিএম ও কংগ্রেসের মধ্যে মাঝেমধ্যেই খণ্ডযুদ্ধ হতো। রাজ্যের ক্ষমতা তৃণমূল দখল করার পরও গোলমাল কমেনি। একসময় নতুন ও পুরনো তৃণমূলের মধ্যে সংঘর্ষ হতো। গত লোকসভা ভোটের আগে থেকে এখানে তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেস ও সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের লড়াই হচ্ছে। মাঝেমধ্যেই এখানেই বোমাবাজির ঘটনা ঘটেছে। লোকসভা ভোটের আগে থেকেই এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তাই ছেলেমেয়েদের ভবিষ্যতে কথা ভেবে গ্রাম ছেড়ে আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছি।
তিন তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনার প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিসের এক অফিসার বলেন, প্রায় তিন মাস আগে তৃণমূল নেতা তথা পঞ্চায়েত সমিতির মৎস্য কর্মাধ্যক্ষ আলতাব শেখ খুন হন। সেই ঘটনার জেরেই শনিবার দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। তাতেই তিনজন খুন হয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
অপরদিকে, ওই এলাকাটি গড়াইমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে। এদিন সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েতের কার্যালয়ে একটি ঘরে পুলিস ক্যাম্প চালু করা হয়েছে। পুলিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ক্যাম্পের দায়িত্বে এক এসআই রয়েছেন। এর বাইরে তিনজন এএসআই এবং ১৫জন সশস্ত্র ফোর্স রয়েছেন। এছাড়া, ক্যাম্পে টিয়ার গ্যাসের সেল ও একটি গাড়ি রয়েছে। পুলিস সুপার বলেন, আইন-শৃঙ্খলা ঠিক রাখতেই সংশ্লিষ্ট ক্যাম্প বসানো হয়েছে। গ্রামের পরিবেশ স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই ক্যাম্প থাকবে।