উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
উল্লেখ্য, পূর্ব রেলের অন্তর্গত বর্ধমান একটি গুরুত্বপূর্ণ জংশন স্টেশন। প্রতিদিন কয়েক লক্ষ যাত্রী বর্ধমান স্টেশন হয়ে নিজেদের গন্তব্যস্থলে রওনা দেন। হাওড়া-দিল্লি মেন লাইনের পাশাপাশি হাওড়া-গয়া-দিল্লি, হাওড়া-এলাহাবাদ-মুম্বই, হাওড়া-নিউ জলপাইগুড়ি মতো লাইনে দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল করে। এছাড়াও বর্ধমান-হাওড়া মেন, হাওড়া-বর্ধমান কর্ড, বর্ধমান-আসানসোল সেকশন এবং বর্ধমান-কাটোয়া লাইন রয়েছে। দূরপাল্লার ও লোকাল মিলিয়ে প্রতিদিন কয়েকশো ট্রেন চলাচল করে বর্ধমান স্টেশনের উপর দিয়ে। মোট প্লাটফর্মের সংখ্যা আটটি। স্টেশনের আয়তন ৩৪মিটার। অর্থাৎ প্রায় ১১১.৫৫ফুট।
১৮৫৫সালে বর্ধমান স্টেশনের পথচলা শুরু। কিন্তু, পরিকাঠামোগত সমস্যার শেষ নেই। এক সময় বয়স্ক এবং বিশেষভাবে চাহিদা সম্পন্ন যাত্রীদের জন্য র্যা ম্প তৈরির পরিকল্পনা হয়েছিল। বর্ধমান-দুর্গাপুর লোকসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন সংসদ সদস্য সাইদুল হকের সংসদ তহবিল থেকে তিন কোটি টাকা এজন্য বরাদ্দ হয়েছিল। কিন্তু, তারপরও র্যা ম্প হয়নি। এনিয়ে সদ্য বদলি হওয়া জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব একাধিক চিঠি দিয়েছিলেন রেলকে। যদিও রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ চলমান সিঁড়ি তৈরির পরিকল্পনা নেওয়ায় আর র্যা ম্প বানানো হয়নি।
বর্ধমান স্টেশনে চারটি চলমান সিঁড়ি তৈরির জন্য মোট ছ’কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। চারটি চলমান সিঁড়ি কোথায় বসানো হবে তানিয়ে রেলের পদস্থ অফিসাররা স্টেশন ঘুরে জায়গা চূড়ান্ত করেন। প্রথমে ২নম্বর প্ল্যাটফর্মে চলমান সিঁড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হয়। সম্প্রতি ওই কাজ শেষ হয়েছে। সোম ও মঙ্গলবার পরীক্ষামূলকভাবে চালানো হবে। তারপর আনুষ্ঠানিকভাবে ২নম্বর প্ল্যাটফর্মে চলমান সিঁড়ি চালু হয়ে যাবে। এখন যাতে কেউ সিঁড়িতে ওঠতে না পারে সেজন্য সামনের অংশে টিন বেঁধে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি ৮নম্বর প্ল্যাটফর্মেও চলমান সিঁড়ির কাজ একেবারে শেষপর্যায়ে। ওই দু’টি সিঁড়ি আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার পর ১নম্বর প্ল্যাটফর্ম এবং ৪ ও ৫নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে আরও দু’টি চলমান সিঁড়ি নির্মাণের কাজ শুরু হবে।
চলমান সিঁড়ি চালু হওয়ার ফলে প্ল্যাটফর্মে ওঠা এবং নামা সহজ হবে। ব্যাগপত্র নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে ওঠা নামার ঝামেলা থেকে রেহাই মিলবে। একসঙ্গে একাধিক ট্রেন স্টেশনে ঢুকে পড়লে তখন ভিড়ে ঠাসা সিঁড়িতে ওঠা-নামা করা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। বয়স্ক যাত্রীরা সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েন। পকেটমার সুযোগ ঝোপ বুঝে কোপ মারতে কসুর করে না। চলমান সিঁড়ি চালু হওয়ার পর ফলে সিঁড়িতে ওঠা-নামা করা যাত্রীর সংখ্যা কমে যাবে।
বর্ধমানের স্টেশন ম্যানেজার স্বপন অধিকারী বলেন, বর্ধমান স্টেশনে মোট চারটি চলমান সিঁড়ি তৈরি হবে। আপাতত ২নম্বর প্ল্যাটফর্মে চলমান সিঁড়ি নির্মাণের কাজ শেষ। সোম ও মঙ্গলবার টেস্টিং হবে। ৮নম্বর প্ল্যাটফর্মে নির্মাণের কাজ শেষ পর্যায়ে। এছাড়াও ১ প্ল্যাটফর্মে একটি এবং ৪ ও ৫নম্বর প্ল্যাটফর্মের মাঝে আরও একটি চলমান সিঁড়ি তৈরি হবে। চারটি প্ল্যাটফর্ম নির্মাণ করতে খরচ হবে ছ’কোটি টাকা।
তবে, চলমান সিঁড়ি বসানোর পাশাপাশি বর্ধমান স্টেশনে পরিকাঠামোগত আরও উন্নতির দাবি রয়েছেন সাধারণ ও নিত্যযাত্রীদের। স্টেশনে দীর্ঘদিন ডিজিটাল ডিসপ্লে বোর্ড বিকল। এরফলে ট্রেন আসা যাওয়া সংক্রান্ত খবর শুধুমাত্র ঘোষণার উপর নির্ভর করতে হয়। দূরপাল্লার ট্রেনের কোন কামরা কোথায় দাঁড়াবে তা নিয়েও যাত্রীদের মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এছাড়াও ট্রেনে ঢোকা এবং বেরনোর সময় কোনওরকম স্ক্যানার নেই। এই সুযোগে জঙ্গি কার্যকলাপের জন্য বিস্ফোরক এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিয়ে যাওয়া হলে কোনওভাবে ধরা পড়ার সুযোগ নেই। এই বিষয়গুলিতে রেল কর্তৃপক্ষের নজর দেওয়া উচিত বলে যাত্রীদের দাবি।