উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
বীরনগর পুরসভায় শাসক দলের অর্ন্তদ্বন্দ্ব নতুন কিছু নয়। ২০১৫ সালে বীরনগর পুরসভার নির্বাচনে মোট ১৪টি আসনের মধ্যে ১১টিতে জয়লাভ করে তৃণমূল। বাকি তিনটি আসনের সিপিএম সমর্থিত নির্দলরা জয়ী হন। পুরসভার চেয়ারম্যান হন পার্থকুমার চট্টোপাধ্যায় এবং ভাইস চেয়ারম্যান হন স্বপন দাস। ২০১৭ সালের ২৩ জুন রানাঘাট উত্তর পশ্চিমের বিধায়ক শংকর সিং কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। শংকরবাবুর হাত ধরেই তৃণমূলে আসেন সিপিএম সমর্থিত গোবিন্দ পোদ্দার, নন্দদুলাল মিস্ত্রি সহ তিন নির্দল কাউন্সিলার। এরপর থেকেই বীরনগর পুরবোর্ডে শাসক দলের কোন্দল মাথাচাড়া দেয়। দলের চাপে চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেন পার্থকুমারবাবু। নতুন চেয়ারম্যান হন স্বপন দাস এবং ভাইস চেয়ারম্যান হন গোবিন্দ পোদ্দার।
২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে খোদ দলের সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পার্থকুমারবাবুকে চেয়ারম্যান পদে ফেরানোর নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ অনুযায়ী ওই বছর মার্চ মাসে চেয়ারম্যান পদে ফেরেন পার্থকুমারবাবু। এরপর চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়তে থাকে। তখন থেকেই ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে গোবিন্দকে সরানোর দাবি তোলেন পার্থ অনুগামী কাউন্সিলাররা। পার্থ সহ অন্যান্য কাউন্সিলাররা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে একাধিকবার চিঠি লেখেন। গোবিন্দবাবুকে ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে সরানো হবে বলে রাজ্য নেতৃত্ব সবুজ সঙ্কেত দেয়। কিন্তু তা এখনও কার্যকর হয়নি।
এরই মাঝে লোকসভা নির্বাচনে বীরনগর পুরসভা এলাকায় শাসক দলের বিপর্যয় ঘটেছে। চোদ্দটি ওয়ার্ডেই লিড নিয়েছে বিজেপি। বীরনগর থেকেই আট হাজার ভোটের লিড রয়েছে গেরুয়া শিবিরের। পুর এলাকায় হার প্রসঙ্গে চেয়ারম্যান পার্থকুমারবাবু বলেন, ২০১৩ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত আমি শহরের সভাপতি ছিলাম। আমি থাকাকালীন প্রতিটি নির্বাচনে লিড এসেছে। এমনকী, ২০১৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনেই লিড এসেছে। আমি দলকে আগেই সতর্ক করে বলেছিলাম, পুরসভা এলাকা একদল সমাজবিরোধীদের বাইক বাহিনী ঘুরে বেড়াচ্ছে। এর প্রভাব পড়বে নির্বাচনে। আগাম সতর্কতা জানিয়েছিলাম জেলার পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডলকেও। সংখ্যালঘু সংখ্যালগুরু ভোট ভাগ হওয়ার পাশাপাশি বাইক বাহিনী ফ্যাক্টর হয়েছে।
তৃণমূলের নদীয়া জেলার নতুন পর্যবেক্ষক হয়েছেন মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। গত শনিবার তিনি কৃষ্ণনগরের রবীন্দ্র ভবনে সাংগঠনিক বৈঠক করেন। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, জেলার পর্যবেক্ষককে বীরনগর পুরসভার চেয়ারম্যান সহ নয় কাউন্সিলার ভাইস চেয়ারম্যান গোবিন্দ পোদ্দারের পদত্যাগের দাবি তুলে চিঠি দিয়েছেন। ওই চিঠিতে গোবিন্দ পোদ্দারের বিরুদ্ধে জমি কারবার সহ একাধিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ তোলা হয়েছে।
আবার পার্থকুমার বিরোধী এক কাউন্সিলার কয়েকজন ছাঁটাই হওয়া অস্থায়ী কর্মীকে রাজীববাবুর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন। ছাঁটাই হওয়া অস্থায়ী কর্মীরা বলেন, ডেঙ্গু নির্মূল প্রকল্পে আমরা কাজ করেছি। চলতি মাস থেকে আমাদের ছাঁটাই করা হয়েছে। সেই কথাই রাজীববাবুকে জানালাম।
আগামী ১৮ জুন কলকাতায় রাজ্যের সব পুরসভার চেয়ারম্যানদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। সেখানে বীরনগর পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবির বিষয়টি উঠতে পারে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। যদিও বীরনগর পুরসভার চেয়ারম্যান পার্থকুমারবাবু রাজীববাবুকে চিঠি দেওয়া প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করতে নারাজ। তিনি বলেন, এ নিয়ে কিছু বলব না।
পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান গোবিন্দ পোদ্দার বলেন, চিঠির কথা জানা নেই। আমার বিরুদ্ধে যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে সব ভিত্তিহীন। মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একটি চিঠি পেয়েছি। চিঠির বিষয়টি নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের কাছে কিছু বলতে রাজি নই। এটা দলের বিষয়।