উচ্চতর বিদ্যায় সাফল্য আসবে। প্রেম-ভালোবাসায় আগ্রহ বাড়বে। পুরনো বন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাতে আনন্দলাভ হবে। সম্ভাব্য ক্ষেত্রে ... বিশদ
টানা ছ’দিন ধরে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি আন্দোলন চলায় মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালের পরিষেবা কার্যত অচল হয়ে পড়েছে। ইতিমধ্যে এই হাসপাতালে চারজন রোগী বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বেশ কয়েকজন রোগীকে এখান থেকে নার্সিংহোমে স্থানান্তরিত করেছেন তাঁদের পরিবারের লোকজন। তাঁরা এনিয়ে জুনিয়র ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন। এই অবস্থায় এদিন দুপুরে হাসপাতালে সমান্তরাল জরুরি বিভাগ চালু করেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। এমনকী, জরুরি বিভাগ, ব্লাড ব্যাঙ্ক, শিশু ও প্রসূতি বিভাগ এবং অপারেশন থিয়েটার চালু রয়েছে বলে পোস্টারও সাঁটান তাঁরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কাছে দু’টি টেবিল এবং পাঁচটি চেয়ার পেতে চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করছেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সেখানে রোগী দেখা হবে। জরুরি বিভাগের পাশাপাশি, আউটডোরে আসা রোগীদেরও চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হবে। আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষে ডাঃ আব্দুল আজিজ বলেন, আমরা কিছু দাবি নিয়ে আন্দোলন করছি। কলকাতার এনআরএসে যতদিন আন্দোলন চলবে, ততদিন এখানেও আন্দোলন চলবে। তবে, রোগীদের সঙ্গে আমাদের কোনও সমস্যা নেই। আমরা রোগীদের পাশে আছি। তাই কর্মবিরতি ও অবস্থান আন্দোলন চললেও আমরা হাসপাতালে সমান্তরাল জরুরি বিভাগ চালু করেছি। রোগীদের স্বার্থে ও মানবিকতার তাগিদে এই কাজ করছি। তাছাড়া, সঙ্কটজনক রোগীদের রক্তও জোগাড় করে দিচ্ছি। এমনকী, আমাদের এক বন্ধু সঙ্কটজনক এক রোগিণীকে রক্তদান করেছেন।
অন্যদিকে, ছুটিতে ছিলেন মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্রিন্সিপাল ডাঃ মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত সোমবার তিনি ছুটিতে গিয়েছিলেন। আগামী সোমবার তাঁর ছুটি শেষ হওয়ার কথা ছিল। তা শেষ হওয়ার আগেই শনিবার রাতে তিনি হাসপাতালে চলে আসেন। এদিন সকালে হাসপাতালের প্রশাসনিক ভবনে গিয়ে অবস্থানরত জুনিয়র ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
পরে তিনি বলেন, ছুটিতে থাকলেও ফোনে পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছিলাম। ছাত্রছাত্রীদের কথা শুনে ছুটি শেষ হওয়ার আগেই চলে এসেছি। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি আন্দোলন চললেও এই হাসপাতালে বিনা চিকিৎসায় কোনও রোগীর মৃত্যু হয়নি। শনিবার যে রোগিণীর মৃত্যু ঘিরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছিল তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়েছিল। তাঁর চিকিৎসাও হয়েছিল। তবে, এই বিশাল ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা ভালো নেই। নিরাপত্তারক্ষীদের গাফিলতির জেরেই অবাঞ্ছিত লোকরা ওয়ার্ডে ভিড় করছেন। এব্যাপারে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এজেন্সিকে একাধিকবার জানিয়েও লাভ হয়নি। বিষয়টি স্বাস্থ্য ভবনেও একাধিকবার জানানো হয়েছে।
এদিকে, আজ, হাসপাতালের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বৈঠক করতে পারে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় ৩৩একর জমির উপর এই মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল অবস্থিত। এখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন মাত্র ১০৬জন কর্মী। নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা আরও ২৩৬জন বাড়ানোর প্রস্তাব স্বাস্থ্য ভবনে পাঠানো হয়েছে। বৈঠকে হাসপাতাল ও কলেজের বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকতে পারেন।
অন্যদিকে, জুনিয়র ডাক্তাররা যাতে অ্যাপ্রন পরে এবং গলায় পরিচয়পত্র ঝুলিয়ে ওয়ার্ডে প্রবেশ করেন, সেই দাবিও তুলেছেন অনেকে। বিষয়টি ভেবে দেখার আশ্বাস দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।