দক্ষিণবঙ্গ

কৃষ্ণগঞ্জের পাবাখালির বড় সরকারবাড়ির দ্বিভুজা দুর্গার পুজো নিয়ে এলাকায় আবেগ

সংবাদদাতা, কৃষ্ণনগর: অধুনা বাংলাদেশের যশোর জেলার মহেশপুর গ্রামে ছিল বড় সরকারদের জমিদারি। সম্রাট জাহাঙ্গির তাঁদের রায়চৌধুরী উপাধি দেন। সেই আনন্দে শুরু হয় দুর্গাপুজো। তাঁদের আরাধ্যা দেবী দ্বিভুজা। বলা হয় দেবীর বাকি আট হাত নাকি চুলের আড়ালে ঢাকা থাকে। এর পিছনে অবশ্য একটি গল্প প্রচলিত আছে। রায়চৌধুরী পরিবার সূত্রে জানা যায়, মা দুর্গা দশ হাতে খাচ্ছিলেন। এই সময় গণেশ ও কার্তিক এসে বলে, তুমি যদি খেয়ে নেবে তাহলে আমরা কী খাব? দেবী তখন লজ্জায় ৮টি হাত ঢুকিয়ে নেন। এরপর থেকে রায়চৌধুরী বাড়িতে এই রূপে প্রতিমা করা হয়। সে সময়ে দুর্গাপুজোর সময়ে আলো আর আতসবাজির রোশনাইয়ে ভেসে যেত মহেশপুর। তিনদিন ধরে চলত মিষ্টি বিতরণ। তারপর এল ইংরেজরা। তাদের তিনশো বছরের রাজত্বেরও একদিন অবসান হল। ভারত স্বাধীন হল, একই সঙ্গে হল দেশভাগ। ১৯৪৯ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান থেকে সম্পত্তি বিনিময় করে এপারে পাবাখালিতে চলে আসেন রায়চৌধুরীরা। এপারে এসেও কিন্তু দুর্গাপুজো চলতে থাকে পুরনো নিয়ম ও আচার মেনেই। আজও সীমান্তের কড়াকড়ির মধ্যেই বৈধ ও অবৈধ উপায়ে দ্বিভুজা দেবীকে দেখতে ওপার বাংলা থেকে ভক্তরা আসেন। জানা যায়, ওপার বাংলা ও এপার বাংলা মিলিয়ে ধারাবাহিক ভাবে ৩০০ বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসছে এই পুজো। মহেশপুর থেকে পাবাখালির দূরত্ব মাত্র পঁচিশ কিমি। তবে বর্তমানে দু’টি গ্রাম দুটি রাষ্ট্রের অধীনে। প্রথা অনুযায়ী রথযাত্রার দিন দুর্গার কাঠামো পুজো হয়। তৃতীয়ার চাঁদের মতো চালি নিয়ে দেবী মূর্তির উচ্চতা হয় প্রায় পনেরো ফুট। এক চালার দেবীর ডান হাতে ত্রিশূল, বাঁ হাতে সাপের লেজ থাকে। নিয়ম মেনেই সপ্তমীর দিন হোমকুণ্ডে আগুন জ্বলে। হোমের আগুন নেভানো হয় নবমীতে। চারদিন ধরে চলে নামজপ, চণ্ডীপাঠ। প্রথা অনুযায়ী ভোগ দেওয়া হয় চারবার। আমন ধানের চাল আর বাড়ির জমিতে হওয়া কলাইয়ের ডাল দিয়ে খিচুড়ি করা হয়। পাঁচ ভাজা দেওয়া হয়। আর থাকে পায়েস। ভোগ রান্না করেন বাড়ির দীক্ষিত মানুষরা। রাতে নারকেলের নাড়ু, মিষ্টি, ফলের সঙ্গে লুচি দেওয়া হয়। সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত এই ভোগ দেওয়া হয়। দুপুরে অন্ন, বিকালে পরমান্ন ভোগ ও রাতে লুচি, সুজি, সন্দেশ ভোগ দেওয়া হয়। সন্ধি পুজোয় ঠাকুরের সামনে মোমবাতি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। শিখাটা সোজা হলে মনে করা এটা ঠিক সময়। সেই মতো বন্দুকের গুলি ছুড়ে সন্ধিপুজো শুরু করা হয়। এই সময়ে গ্রামের অন্য পুজোতেও সন্ধিপুজো হতো। একসময় মোষ বলিও হতো। নবমীতে বলি হয় কলা দিয়ে। হয় আহুতি। নবমীর দিন রেঁধে রাখা পান্তাভাত, কচুর শাক, কলার বড়া, দশমীতে শিবকে তামাক ভোগ দেওয়া হয়। দশমীর দিন সূর্য ডোবার সন্ধিক্ষণে কাঁধে করে দেবীকে নিয়ে গিয়ে শিবনিবাসের চূর্ণি নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। ৩৬ পুরুষ ধরে এভাবেই চলছে। রায়চৌধুরী বাড়ির কর্তা পিনাকীপ্রসাদ রায়চৌধুরী  বলেন, জমিদারি নেই ঠিকই, তবে পুজোয় নিষ্ঠার কোনও খামতি থাকে না। আগে পূর্ব পাকিস্তানে পুজোটি আমাদের যেভাবে হতো সেরকম ভাবেই এখানে হয়।
3d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পেশা ও ব্যবসায় উন্নতির বড় কোনও সুযোগ প্রাপ্তি। ধর্মভাব শুভ। স্বাস্থ্য গড়বড় করতে পারে।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮২.৮৩ টাকা৮৪.৫৭ টাকা
পাউন্ড১০৯.৩৫ টাকা১১২.৯২ টাকা
ইউরো৯১.৯২ টাকা৯৫.১২ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা