সম্পাদকীয়

কড়ায় গণ্ডায় বুঝে নিতে...

ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরিকে জাগিয়ে দিলে কী হয়, রাজধানী দিল্লিকে ঘিরে সাড়ে তিন বছর আগে কৃষক বিক্ষোভের সময় তা নিশ্চয়ই টের পেয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। ২০২০-২১-এর সেই উত্তাল কৃষক আন্দোলনের কাছে মাথা নত করে সরকারের মুখ পুড়িয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রবল প্রতিপত্তিশালী ‘বিশ্বগুরু’কে তিনটি কৃষি আইন নিঃশর্তভাবে প্রত্যাহার করে নিতে হয়েছিল। এবার না সেই কৃষকদের ক্ষোভের আঁচে কপাল পোড়ে গেরুয়া শাসকের! মোদির টানা তিনবার সরকার গঠনের স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়! দেশজুড়ে ’২৪-এর লোকসভা ভোট শুরু হয়ে গিয়েছে। এই ভোটে একদিকে ‘মোদি গ্যারান্টি’কে হাতিয়ার করে ৪০০ আসন দখলের হুঙ্কার দিয়েছিলেন মোদি-শাহরা। অন্যদিকে, দেশের প্রায় সব বিরোধী দল জোট বেঁধে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চ তৈরি করে বিজেপিকে হারাতে কোমর বেঁধেছে। আদ্যন্ত এই রাজনৈতিক লড়াইয়ে এবার মোদিকে ক্ষমতাচ্যুত করে চরম শিক্ষা দিতে চাইছেন দেশের ক্ষুব্ধ কৃষকরা। তথ্য বলছে, কৃষি প্রধান এই দেশের ৬০ শতাংশ মানুষ কৃষিকাজের উপর নির্ভরশীল। দেশের মোট জিডিপির ১৪ শতাংশ আসে কৃষকদের রক্ত জল করা ফসলের থেকে। অথচ মোদি জমানায় তারাই সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত। ২০২০-তে কৃষক আন্দোলন শুরু হয়। ৩৮০ দিনের শেষে ২০২১-এর ৯ ডিসেম্বর লিখিত প্রতিশ্রুতি দিয়ে মোদি সরকার বলেছিল, সমস্ত ফসলের এমএসপি বা ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের আইনি বৈধতা দেওয়া হবে। বলেছিল, ফসলের দাম ঠিক হবে স্বামীনাথন কমিশনের নির্ধারিত ফর্মুলা মেনে। যেখানে ফসলের ন্যূনতম দাম হবে উৎপাদন খরচের দেড়গুণ। প্রতিশ্রুতি ছিল, কৃষিঋণ মকুব, কৃষকদের উপর চাপিয়ে দেওয়া মামলা প্রত্যাহার, আন্দোলন চলাকালীন প্রাণ হারানো ৭০০ কৃষক পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া, সংশোধিত বিদ্যুৎ বিল প্রত্যাহার করারও। এর প্রায় কোনও প্রতিশ্রুতিই রক্ষা করেনি মোদি সরকার। এও ছিল এক প্রকার জুমলা। তাই এই নির্বাচনে মোদিকে ‘শাস্তি’ দিতে চান কৃষকরা। 
‘এক্সপোজ বিজেপি, পানিশ বিজেপি’। নির্বাচনের ঢাকে কাঠি পড়তেই এই দাবিতে সরব হয়েছে দেশের কয়েকশো কৃষক সংগঠনের মঞ্চ সংযুক্ত কিষান মোর্চা। এই আহ্বান জানিয়ে রাজ্যে রাজ্যে চলছে বিজেপি বিরোধী কর্মসূচি। সাধারণ মানুষের মধ্যে বিলি করা হচ্ছে লিফলেট, হ্যান্ডবিল। বলা হচ্ছে, লোকসভা ভোটে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ সরকারকে সরিয়ে একটি বিকল্প গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ শাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলুন। না হলে কৃষক তো বটেই, শ্রমিক-কর্মচারী থেকে সাধারণ মানুষের জীবন আরও দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। কেন্দ্রের শাসকের অস্বস্তি বাড়িয়ে কৃষকদের এই প্রচারে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছে বিজেপি শাসিত উত্তরপ্রদেশ, হরিয়ানা এবং ‘আপ’-এর শাসনাধীন পাঞ্জাব রাজ্যের কৃষিজীবীরা। প্রচারে সরাসরি না বললেও ইন্ডিয়া মঞ্চকেই যে ক্ষমতায় দেখতে চাইছেন দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি কৃষকরা, তা পরিষ্কার। 
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, মোদি জমানার দশ বছরে অভূতপূর্ব সঙ্কটে রয়েছে কৃষিক্ষেত্র। এই সময়কালে ৪ লক্ষের বেশি কৃষক ও খেতমজুর ঋণের ফাঁদে ও খিদের জ্বালায় আত্মহত্যা করেছেন। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার কর্পোরেটের লক্ষ কোটি টাকা ঋণ মকুব করলেও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সময়ে কৃষকদের পাশে দাঁড়ায়নি। দেখা গিয়েছে, কৃষিতে উৎপাদন খরচ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়লেও সরকারের বাজেট-বরাদ্দ বছর বছর কমেছে। কৃষকরা ভুলে যাননি উত্তরপ্রদেশের লখিমপুরে তাঁদের ভাইদের রক্তাক্ত হওয়ার স্মৃতি। ভোলেননি ২০২১-এ আন্দোলন চলাকালীন এই লখিমপুরের খেরিতে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রমন্ত্রী অজয় মিশ্রের ছেলের গাড়ির চাকায় পিষে পাঁচ কৃষক ও এক সাংবাদিকের মৃত্যুর নিদারুণ কাহিনি। সেই অজয় মিশ্র এবারের নির্বাচনেও পদ্মফুলের প্রার্থী হয়েছেন! কথায় আছে, পাপ বাপকেও ছাড়ে না। মোদি সরকারকে তাই এবার ফিরিয়ে দেওয়ার শপথ নিয়েছেন কৃষকরা। বিজেপিকে হারানোর জন্য সর্বশক্তি নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে হরিয়ানার বিক্ষোভকারী কৃষকরা কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, রাজ্যে বিজেপি কিংবা তার সহযোগী কোনও দলের প্রার্থী অথবা এমএলএ-এমপিকে প্রচার করতে দেওয়া হবে না। এ তো আসলে ক্ষোভেরই বিস্ফোরণ। তাই নরেন্দ্র মোদির ‘কৃষক ভাইবোন’ সম্বোধনেও চিঁড়ে ভিজছে না। যা দেখে জমি হারানোর আশঙ্কায় তটস্থ গেরুয়া শিবির। 
3Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা