শরীর ও স্বাস্থ্য

গণপিটুনির প্রবণতা মানসিক রোগ?

সংবাদপত্র বা টিভির পর্দায় চোখ রাখলেই ইদানীং বিভিন্ন জায়গায় গণপিটুনির খবর পাওয়া যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা রীতিমতো ভয় ধরিয়ে দিচ্ছে। বারবার নিজের হাতে আইন তুলে নিচ্ছে মানুষ। মুক্তির পথ কোথায়? জানালেন ইনস্টিটিউট অব সাইকিয়াট্রির অধ্যাপক ডাঃ সুজিত সরখেল।

হঠাৎ এত গণপিটুনির ঘটনা ঘটছে কেন? কোন মানসিকতা থেকে ঘটছে এমন ঘটনা? 
গণপিটুনির অর্থ হল দলবদ্ধভাবে কাউকে প্রহার করা। এমন ঘটনা ঘটার পিছনে অনেকগুলো বিষয় কাজ করে। ধরুন রাস্তায় একজন কাউকে চোর সন্দেহে গণপ্রহার চলছে বা হঠাৎ করে কাউকে পকেটমার চিহ্নিত করে মারধোর শুরু হল, এই ধরনের গণপিটুনিগুলির ক্ষেত্রে সাধারণত ‘মব সাইকোলজি’ কাজ করে। একজন ব্যক্তি একা থাকলে হয়তো এরকম ঝামেলার মধ্যে যেত না। কিন্তু সেই ব্যক্তিই যখন কোনও দলে পড়ে যাচ্ছে, তখন তার ক্রোধের প্রকাশ, আক্রমণাত্মক ভঙ্গি অত্যধিক বেড়ে যাচ্ছে। আসলে কেউ যখন একটা গোষ্ঠীর অংশ হয়ে যায়, তখন সেই ব্যক্তির নিজস্বতা হারিয়ে যায়। যাকে সে মারছে তার ভার্সনটা তো প্রহারকারী শুনতে পাচ্ছে না। ভিকটিম পড়ে পড়ে মার খাচ্ছে। প্রহারকারী কথা শুনছে এমন কিছু লোকের কাছ থেকে, যারা ইতিমধ্যে সেই ভিকটিমকে প্রহার করছে বা করবে ভাবছে। পাঁচটা লোক যখন একজনকে চোর বলে দাগিয়ে দিচ্ছে, তখন সেই ব্যক্তি সত্যিই চোর কি না, তা যাচাই করার প্রয়োজন পড়ছে না। অর্থাৎ বেশিরভাগের মতামতেপ্রভাবিত হচ্ছে একজন গণপ্রহারে অংশ নেওয়া ব্যক্তি। 
দ্বিতীয়ত, ধরুন আপনি কোনও কারণে রেগে রয়েছেন বা হতাশা আপনাকে গ্রাস করেছে। এক্ষেত্রে আপনার হতাশার বহিঃপ্রকাশ খানিকটা দুর্বল কারও উপর প্রয়োগ করছেন। টার্গেট শারীরিকভাবে দুর্বল। এমন লোককে আঘাত করা সোজা। 
তৃতীয়ত, সাধারণ লোক যখন একটা গোষ্ঠীর অংশ হয়ে যায়, তখন তার আর নিজস্ব পরিচয় থাকে না। চক্ষুলজ্জা চলে যায়। তিনি ভাবেন সবাই নিগ্রহ করেছে, আমিও করেছি। যেহেতু আলাদা করে চিহ্নিত হচ্ছি না, আমিও দু’ঘা দিয়ে দিই! অপেক্ষাকৃত সহজ টার্গেট আর চিহ্নিত হওয়ার ভয় না থাকা— মূলত এই কারণেই ঘটনাগুলো বারবার ঘটে।  

এ কি মানসিক বিকার?
মব সাইকোলজি কখনওই মানসিক বিকারের পরিচয় নয়। অনেকের মধ্যেও দেখবেন দু-একজন আটকানোর চেষ্টা করে। কিন্তু তার গলার স্বর চাপা পড়ে যায় সমবেত হিংসার উল্লাসধ্বনিতে।

নিছক মজা পাওয়ার জন্য কি এই ধরনের ঘটনা ঘটানো যায়? 
না, মজা নয়। ফ্রাস্ট্রেশন বা হতাশা কাটানোর উপায় বলতে পারেন। একজন ব্যক্তির ওপর অত্যাচার করে বা রাগের শোধ তুলে নিজের বিরক্তি কিছুটা কমে। সরাসরি মজা না পেলেও কষ্ট খানিকটা লাঘব হল! 

মুক্তির উপায় কী? সরকারের কী করণীয়?
ঘটনাগুলো তাৎক্ষণিক। তাই এই ধরনের ঘটনা এড়ানো খুব মুশকিল। গণপিটুনির সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে ভিড়ের মধ্যে মেরে বেরিয়ে যাওয়া যায়। খুব কড়া আইন যদি আনা যায় আর অন্তত দু-তিনটে দৃষ্টান্তমূলক সাজা হয়, তাহলে গণপিটুনির হার খানিকটা কমবে। এছাড়াও এই ঘটনাগুলো মিডিয়াতে প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ফলেও লোকে প্রভাবিত হয়। হুজুগ একবার ছড়ালে পরপর হতেই থাকে। সেই কারণে দেশ-বিদেশে কোথাও দাঙ্গা হলে সংবাদ অনেকক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। সেটাও তো একধরনের মব ভায়োলেন্স। খবর যত ছড়ায়, ততই মানুষ উত্তেজিত হয়ে যায়। এটা রোধ করা দরকার।  চিরতরে এই ঘটনা থেকে বাঁচার চেষ্টা করা যেতে পারে কড়া আইন প্রণয়নের মাধ্যমে। গণপিটুনির সাজা সাধারণ সাজার থেকে বেশি হওয়া উচিত। সঙ্গে সরকারের তরফে নিয়মিত প্রচারও চালাতে হবে। সোজা কথা, লোকের মনে আইনের ভয়, শাস্তির ভয় না ঢুকলে এই ধরনের ঘটনা চট করে কমানোা খুব মুশকিল। 
সাক্ষাত্‍কার: সন্দীপ রায়চৌধুরী
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রখর অনুমান ক্ষমতার গুণে কার্যোদ্ধার। ব্যবসা, বিদ্যা, দাম্পত্য ক্ষেত্রগুলি শুভ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৩২ টাকা১১১.৮৭ টাকা
ইউরো৯১.২৫ টাকা৯৪.৪৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা