শরীর ও স্বাস্থ্য

অপরাধী চিনতে ডিএনএ

অকুস্থল থেকে প্রমাণ সংগ্রহের উপরই নির্ভর করে অপরাধী শনাক্তকরণ। এই সময় কী কী প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়? জানালেন জিন গবেষক ও ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা।

ডিএনএ প্রোফাইলিং 
আমাদের সমস্ত কোশের মধ্যে যে ক্রোমোজমগুলি থাকে, সেগুলি জৈব-অণু ডিএনএ দিয়ে তৈরি। এই ডিএনএর অনেকটা অংশ সব মানুষের মধ্যে একই রকম (আইডেন্টিক্যাল)। তবে আরও বেশ কিছু অংশ রয়েছে, যেগুলি বিভিন্ন মানুষের শরীরে বিভিন্ন রকম। এই অংশগুলিকে বলা হয় শর্ট ট্যান্ডেম রিপিট। ফরেন্সিক ল্যাবে ডিএনএ প্রোফাইলিং-এর মাধ্যমে এই আলাদা অংশগুলিকে খুঁজে বের করা যায়। প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল (পিও) থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে হয়। যেমন - চুল, রক্ত, জামা কাপড়ের অংশ, সিমেন, আঙুলের ছাপ। এগুলি ছাড়াও মোবাইল, গ্লাস, কাপ- বাসন, চাবি, গাড়ির হাতল, সিগারেট, অর্ধেক খাওয়া খাবার নমুনা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এগুলি সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়। এগুলিতে পাওয়া ডিএনএ’র সঙ্গে সন্দেহ ভাজনের ডিএনএ মিলিয়ে দেখা হয়। মিলে গেলে তা প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরা যায়। তবে একবার পরীক্ষা করেই কিন্তু সিদ্ধান্তে আসা যায় না। তার জন্য বারবার পরীক্ষা করতে হয়। যত বেশি শর্ট ট্যান্ডেম রিপিট পরীক্ষা হবে, তত পার্থক্য প্রকট হয়। আবার অনেক সময় কোনও ব্যক্তিকে বাবা বা মা বলে ভুয়ো দাবি করার কথা উঠে আসে। সেক্ষেত্রেও আদালতের অনুমতি নিয়ে যে ব্যক্তি ওই দাবি করছেন, তাঁর ডিএনএ পরীক্ষা করে মিলিয়ে নেওয়া হয়। স্পষ্ট হয় সত্য ও মিথ্যার পার্থক্য। আমাদের প্রত্যেকটি কোশে ৪৬টি ক্রোমোজোম রয়েছে। যার মধ্যে ২৩টি বাবার থেকে ও ২৩টি মায়ের থেকে পাওয়া যায়। তাই ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত নমুনার সঙ্গে অভিযুক্ত সত্যিই দোষী হলে তাঁর ডিএনএ মিলে যেতে বাধ্য। জেনেটিক্স বিজ্ঞানী অ্যালেক জেফ্রিস বহু মানুষের ডিএনএ পরীক্ষা করে বুঝেছিলেন, প্রত্যেকে আলাদা বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন। তাঁর এই গবেষণা আজও কাজে লাগছে অপরাধী চিহ্নিতকরণে। ভারতে রাজীব গান্ধী হত্যা মামলা, তন্দুর কেস ইত্যাদিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিল এই ডিএনএ টেস্ট। তবে নমুনা ঠিক মতো সংগ্রহ না করা গেলে ডিএনএ পরীক্ষার ফল নিখুঁত হয় না। তবে গবেষকদের এত দিনের অভিজ্ঞতা ও প্রযুক্তির উন্নতির জন্য বর্তমানে ডিএনএ পরীক্ষায় ভুল হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। 

 তদন্তকারীদের ‘অস্ত্র’ আরও কয়েকটি পরীক্ষা

টাওয়ার ডাম্পিং 
প্রমাণ সংগ্রহের ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ পদ্ধতি এটি। একটি নির্দিষ্ট মোবাইল টাওয়ার এলাকায় নির্দিষ্ট সময়ে কোন কোন মোবাইলের নম্বরে ফোন গিয়েছে বা এসেছে, তা চিহ্নিত করা যায় এই পদ্ধতিতে। যখন অপরাধ হচ্ছে, তার আগে বা পরে কয়েক ঘণ্টায় কোন কোন মোবাইল নম্বর থেকে ফোন এসেছে বা গিয়েছে তা ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কারও বক্তব্যে অসঙ্গতি পেলে চিহ্নিত করা যায় সন্দেহভাজনদের। 

ব্রেন ম্যাপিং 
অনেক সময় অভিযুক্তের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থার বিশ্লেষণ প্রয়োজন হয়। এটি প্রমাণ সংগ্রহের একটি ধাপ। তার জন্য পলিগ্রাফ টেস্ট, নারকো টেস্ট করা হয়। পাশাপাশি আরেকটি পরীক্ষাও করা হয়— ব্রেন ম্যাপিং। মস্তিস্কের মানচিত্র তৈরি করে সেটির পর্যালোচনা করা হয়। গত বছর সংসদ ভবনে হামলায় অভিযুক্তদের পলিগ্রাফ, নারকো পরীক্ষার পাশাপাশি ব্রেন ম্যাপিংও করা হয়েছিল। এই পদ্ধতি চিকিৎসাক্ষেত্রেও ব্যবহার হয়। এই প্রযুক্তির সাহায্যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা বোঝা যায়। ব্রেন ম্যাপ বিশদে বিশ্লেষণ করে চিকিৎসার সুস্পষ্ট রাস্তা পাওয়া যায়। 

থ্রি ডি স্ক্যানিং 
এই স্ক্যানারের মাধ্যমে ঘটনাস্থলের পুঙ্খানুপুঙ্খ ছবি তোলা হয়। থ্রি ডি স্ক্যানার ৩৬০ ডিগ্রি অ্যাঙ্গেলে ছবি তুলতে সক্ষম। অর্থাৎ ওই ছবির মাধ্যমে পুরো ঘটনাস্থল দেখা যায়। এখন প্রশ্ন উঠতে পারে, ভিডিও করলে বা এমনি ছবি তুললেই তো তা সম্ভব। তাহলে থ্রি ডি স্ক্যানিংয়ের দরকার কেন? আসলে এই প্রক্রিয়ায় কোন বস্তু কত দূরে রয়েছে? ঢোকা-বেরনোর রাস্তা,  দু’টি বস্তুর দূরত্ব— সব বিশদে বোঝা যায় ও মাপজোক করা সম্ভব হয়। ক্রাইম সিনের থ্রি ডি মডেল তৈরি করা যায় এই প্রক্রিয়ায়। ফলে তদন্তকারীরা ভার্চুয়ালি পৌঁছে যেতে পারেন ঘটনাস্থলে। 
লিখেছেন  শান্তনু  দত্ত
কৃতজ্ঞতা স্বীকার: জিন গবেষক ডঃ অনির্বাণ মিত্র
11d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

আয় বৃদ্ধি ও গৃহসুখ বৃদ্ধি। কর্মস্থলে সাফল্য ও প্রশংসা লাভের সম্ভাবনা। শরীর-স্বাস্থ্য বুঝে চলুন।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১০ টাকা৮৪.৮৪ টাকা
পাউন্ড১০৮.৬৪ টাকা১১২.১৯ টাকা
ইউরো৯১.৫৩ টাকা৯৪.৭৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
14th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা