সম্পাদকীয়

পদ্মের চেনা ছক!

লোকসভা ভোটের আগে নিজেকে ‘ঈশ্বরের আশীর্বাদ ধন্য বরপুত্র’ হিসেবে প্রচার করেছিলেন নরেন্দ্র মোদি। ভোটের ফল ঘোষণার পর দেখা গেল আশীর্বাদ নয়, যেন পরমাত্মার ‘অভিশাপ’ নিয়ে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরলেন তিনি। তাঁর দল বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা (২৭২ আসন) পায়নি। গেরুয়া শিবিরকে থামতে হয়েছে ২৪০টি আসনে। অতঃপর এনডিএ নামক জোট শরিকদের কাঁধে ভর দিয়ে কোনওরকমে তাঁর তৃতীয় ইনিংস শুরু করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু এই ‘গভীর ক্ষত’ নিয়ে যে বেশিদিন চলা যাবে না তা ভালোই জানেন মোদি-অমিত শাহরা। একদিকে সরকার ফেলে দেওয়ার প্রচ্ছন্ন হুমকি মাথায় নিয়ে প্রতিনিয়ত শরিকদের চাপ, অন্যদিকে বিরোধী ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের লাগাতার চোখে চোখ রেখে লড়াইয়ের বার্তা, বিদ্রুপ, কটাক্ষ— এই দু’য়ের চোখরাঙানির সামনে একদিন হয়তো নতজানু হয়ে গদি হারাতে হতে পারে। অতঃপর সরকার গঠন ও বাজেট পেশের পরেই এবার ‘প্ল্যান বি’ কার্যকর করতে ঝাঁপাতে চলেছে গেরুয়া শিবির—রাজধানীর অন্দরে সংসদ ও আমলামহলে এই খবরই জল-আলো-বাতাস পেয়ে দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। আগের দুবার যথাক্রমে ২৮২ ও ৩০৩টি আসন পেয়ে একাই নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসাবে সরকার চালিয়ে ‘দাপট’ দেখিয়েছেন মোদি। আবার সেই ‘দাপট’ ফেরাতে হলে কমপক্ষে আরও ৩২টি আসন জরুরি। তাহলেই ফিরবে সংখ্যাগরিষ্ঠের তকমা। অতএব যে খেলায় মোদি-শাহরা বারবার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন সেই ‘অপারেশন লোটাস’ ফের দরজায় কড়া নাড়তে শুরু করেছে। আর বিলম্ব নয়, বরং এই শারদোৎসবের মধ্যেই সাংসদ কেনা-বেচা করে ২৭২-এর ম্যাজিক ফিগারে পৌঁছানোর পর হয়তো ‘দুগ্গা মাই কি জয়’ বলতে চান প্রধানমন্ত্রী। পরিকল্পনা অন্তত তেমনই।
শুরু হয়েছিল কর্ণাটক থেকে ২০০৮ সালে। সেই প্রথম ‘অপারেশন লোটাস’ শব্দবন্ধের সঙ্গে পরিচিত হয় দেশবাসী। সেবার রাজ্যের সংখ্যালঘু সরকারকে বাঁচাতে বিধায়ক কেনা-বেচা করেছিলেন বিজেপি’র তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী। সে যাত্রায় সফলও হন তিনি। এই একই খেলায় মধ্যপ্রদেশ সরকার দখল করেছিল বিজেপি। আবার মহারাষ্ট্রে ‘অপারেশন লোটাসের’ কৌশলে শাসক শিবসেনা দলে ফাটল ধরিয়ে সরকারের রাশ কার্যত নিজেদের হাতে তুলে নেয় মোদি-শাহের দল। অবশ্য সবটাই এমন সাফল্যের ইতিহাস নয়। মোদি জমানার দশ বছরে একাধিক রাজ্যে এই কৌশল নিয়েও সাফল্য ঘরে তুলতে পারেনি বিজেপি। যেমন দিল্লি ও পাঞ্জাবে কয়েকজন আপ বিধায়ককে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে কিনে নাকি রাজ্যের ক্ষমতা দখলের মতলবে ছিল পদ্মশিবির। কর্ণাটকেও এই নোংরা খেলা শুরু হয়েছিল। কিন্তু কাজ হাসিল হয়নি। এসব ব্যর্থতা থেকে যে কোনও শিক্ষাই নেয়নি বিজেপি’র শীর্ষ নেতৃত্ব, আরও একবার ‘অপারেশন লোটাসের’ পরিকল্পনাতেই তা স্পষ্ট। তবে এতদিন অনৈতিক পথে রাজ্যের সরকার দখলেই এই কৌশল ব্যবহার করেছিলেন মোদি-শাহরা। এবার ‘বিপদ’ নিজেদের বেডরুমে ঢুকে পড়েছে। এতএব বিরোধী সাংসদ কিনে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলার চেষ্টা করছেন পদ্মনেতারা। কিন্তু কাজটা অত সহজ নয়, তাও বুঝতে পারছেন তাঁদের অনেকে।
খবরে প্রকাশ, সংখ্যাগরিষ্ঠতার লক্ষ্যে পৌঁছতে আপাতত টার্গেট দু’রকম। এক, বিরোধীদের ঘর ভাঙা অর্থাৎ অন্যের ঘর ভেঙে নিজেদের ঘর গড়া। দুই, জোট শরিকদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত ছোট দলগুলিকে বিজেপি’র সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়া। তথ্য বলছে, ‘ইন্ডিয়া মঞ্চে’ পাঁচটি দল আছে যাদের একটি করে আসন রয়েছে। এছাড়া রয়েছেন চারজন নির্দল সাংসদও। এর বাইরে বিরোধী আসনে বসছেন পাঁচটি ভিন্ন দলের একজন করে সাংসদ এবং তিনজন নির্দল সাংসদ। মাছকে যেমন চার দিয়ে জল থেকে টেনে তোলা হয়, এই কম শক্তিধর দলের এমপিদের ‘টোপ’ দিয়ে কেনার চেষ্টা হবে বলে আশঙ্কা। পাশাপাশি ইন্ডিয়া জোটেও দেখা যাচ্ছে সাতটি দলের একজন করে সাংসদ রয়েছেন। তিনটি দলের রয়েছেন দু’জন করে সাংসদ। চেষ্টা হচ্ছে, অর্থ ছাড়াও আকর্ষণীয় কোনও উপঢৌকন দিয়ে বিজেপি’র সঙ্গে এঁদের মিশিয়ে দেওয়া। এছাড়া দলবদলের বাজারে এনডিএ জোটের তিন বড় শরিক তেলুগু দেশম, জনতা দল (ইউনাইটেড) এবং এলজেডি-র সব এমপি আদর্শ সততার প্রতীক হয়ে নিজেদের দলের সঙ্গেই থাকবেন, এমন ‘গ্যারান্টি’ তাঁদের দলের নেতারাও হয়তো দিতে পারবেন না। মোদিবাহিনী তাই ‘অপারেশন লোটাসের’ ব্যাপারে আশাবাদী। এমন অনৈতিক ঘৃণ্য খেলা হলে আবার হয়তো এনডিএ সরকার হয়ে যাবে ‘বিজেপি’ সরকার। ধেয়ে আসবে মোদির ‘গ্যারান্টি’র কথা। সরকারি অনুষ্ঠানে শোনা যাবে ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান। তাই শক্তিক্ষয় রুখতে সতর্ক থাকতে হবে ‘ইন্ডিয়া’কে। সাধু সাবধান।
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রখর অনুমান ক্ষমতার গুণে কার্যোদ্ধার। ব্যবসা, বিদ্যা, দাম্পত্য ক্ষেত্রগুলি শুভ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৩২ টাকা১১১.৮৭ টাকা
ইউরো৯১.২৫ টাকা৯৪.৪৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা