সম্পাদকীয়

সময়োচিত রক্ষাকবচ

মানুষ মেহনত করে বহু কিছুরই পরিমাণ এবং পরিধি বাড়াতে সক্ষম, কিন্তু থমকে যায় জমির প্রসঙ্গ এলে। কেননা, এই গ্রহের আকার অপরিবর্তনীয়। তার উপর পৃথিবীর তিনভাগ জল এবং স্থল মাত্র একভাগ। কিন্তু স্থলভাগের অতিসামান্য অংশই মানুষের পক্ষে বসবাসের যোগ্য। একটা বিশাল অংশ ঊষর, অনুর্বর ও মরুপ্রান্তর, এমনকী কিয়দংশের ভূমির গঠন এমন যে সেসব স্থান ঘরবাড়ি নির্মাণেরও উপযুক্ত নয়। এছাড়া জলের অপ্রতুলতার দিকটিও উল্লেখযোগ্য। আবার ভূমিপৃষ্ঠের যতটা মানুষের আয়ত্তের মধ্যে তার ৩১ শতাংশে (৪.০৬ বিলিয়ন হেক্টর) রয়েছে বনভূমি। মোট ভূমিভাগের এক তৃতীয়াংশ ব্যবহার করা হয় কৃষিকাজের জন্য। পৃথিবীতে আনুমানিক ১৬.৭ মিলিয়ন বর্গ কিমি ফসলি জমি রয়েছে। শুধু তো ধান, গম, সব্জি প্রভৃতি উৎপাদন করলেই মানুষের খাদ্যের চাহিদা শেষ হবে না। মানবসভ্যতা টিকিয়ে রাখতে পশুপালনও অপরিহার্য। তাদের বিস্তীর্ণ চারণভূমিও টিকিয়া রাখা জরুরি। বিশ্বজুড়ে এমন চারণভূমির পরিমাণ ৩৩.৫ মিলিয়ন বর্গ কিমি। নিজেকে ‘সর্বশ্রেষ্ঠ জীব’ ঘোষণা করে দিয়েছে ‘সভ্য’ মানুষ অনেক আগেই। আর মানুষেরই সাধের ‘সভ্যতা’র সামনে অসহায় উঠেছে বাস্তুতন্ত্র। কারণ মানুষের আগ্রাসী নীতি প্রতিনিয়ত অরণ্য, চারণভূমি, পাহাড় ও জলাজমির উপর থাবা বসাচ্ছে। 
জনসংখ্যার বৃদ্ধিতে লাগাম নেই। জনবিস্ফোরণের চেহারা নিয়ে আজ বিশ্ব জনসংখ্যা ৮২০ কোটি অতিক্রম করেছে। ভারতই যেন নেতৃত্ব দিচ্ছে জনসংখ্যার বৃদ্ধিতে—সংখ্যার বিচারে আমরাই এখন শীর্ষস্থানে—১৪৫ কোটি অতিক্রম করে ফেলেছি। জনঘনত্বের প্রশ্নে ভারতে দ্বিতীয় স্থানে পশ্চিমবঙ্গ, বিহারের পরেই। বাংলার জনসংখ্যা এখন ১০ কোটির অধিক। একে এরাজ্যের পুরনো বাসিন্দারা আছেন, তার উপর রয়েছে প্রতিবেশী দেশ থেকে ছিন্নমূল হয়ে আসা অসংখ্য শরণার্থীর চাপ। অন্যান্য রাজ্যের বহু মানুষও জীবিকার সন্ধানে এখানে এসে বসতিস্থাপন করেছেন। এই দুই প্রবণতায় কোনও বিরাম নেই। কিন্তু এত এত মানুষ যে থাকবেন বসবাস করবেন, তার জন্য পর্যাপ্ত জমি কোথায়? বনভূমি, কৃষিজমি, পাহাড়, জলাজমি প্রভৃতিতে থাবা বসিয়েও থামছে না অপরিকল্পিত নগরায়ণে মত্ত মানুষ। কিছু অসাধু লোক দু’হাতে টাকা লুটবার জন্য হাতিয়ার করেছে চতু্র্দিকে এই ‘নেই নেই’ রবকেই। জমি-বাড়ি কেনাবেচার কারবারি কিংবা দালাল সেজে তারা আসলে সহজ সরল মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করছে। ভূমিদপ্তরের কিছু অসৎ কর্মী এবং আইনজীবীদের একাংশ তাদের মদত করছে বলেই অভিযোগ পাওয়া যায়। বিষয়টি রাজ্য সরকারের নজরে এসেছে আগেই। বিশেষত, ভূমিদপ্তরের অসাধুতা নিয়ে অত্যন্ত রুষ্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। এই ধরনের অসাধুতা এবং তার জন্য সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ তাঁর সরকার বরদাস্ত করবে না বলে মুখ্যমন্ত্রী অতীতে একাধিকবার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। অসাধু সরকারি কর্মীদের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই একাধিকবার কঠোর পদক্ষেপও রাজ্যবাসীর নজরে এসেছে। 
জমিচুরি রুখতে এবার নবান্ন এগিয়ে এসেছে অন্য কড়া পদক্ষেপ নিয়ে। রাজ্যের জমিজমার সাড়ে পাঁচ কোটি খতিয়ানের সঙ্গে সেগুলির প্রকৃত মালিকদের নিজস্ব ফোন নম্বর সংযুক্ত করবে ভূমিদপ্তর। কাজটি সম্পূর্ণ হলে রাজ্যের কোনও ব্যক্তিগত মালিকানাধীন জমি আর অসাধু উপায়ে কেউ বিক্রি কিংবা অন্য কারও নামে ট্রান্সফার করতে পারবে না। এমন অন্যায় করতে গেলেই জমির আসল মালিকের মোবাইল ফোনে অ্যালার্ট মেসেজ চলে যাবে। ফলে হাতেনাতে ধরা পড়ে যাবে জমিচুরির চক্র। এই সাধু উদ্যোগের তথ্য-প্রযুক্তিগত প্রয়োজনীয় কাজ ইতিমধ্যেই সন্তোষজনকভাবে এগিয়ে গিয়েছে। সরকারের আশা, শারদোৎসব মিটলেই এই কর্মসূচি চালু হয়ে যাবে। যাঁরা ইতিমধ্যেই প্রতারিত বা সর্বস্বান্ত হয়েছেন,  তাঁরা অবশ্যই জানেন, এই উদ্যোগ কতটা প্রয়োজনীয় এবং বাংলার মানুষ কত বড় রক্ষাকবচ পেতে চলেছেন। তাঁদের হয়তো এই আক্ষেপও হবে, এমন ব্যবস্থা বামফ্রন্ট সরকার করে গেলে তাঁরাও প্রতারকদের হাত থেকে রেহাই পেতে পারতেন। রাজ্যের জমির মালিকদেরও উচিত, এই উদ্যোগে দ্রুত সাড়া দিয়ে নিজ নিজ অধিকার সুরক্ষিত করা। যাই হোক, এই উদ্যোগকেও যথেষ্ট ভেবে নিয়ে নিশ্চিন্ত থাকা ঠিক হবে না। কেননা, প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করে সরকারি বজ্রআঁটুনির সঙ্গে পাল্লা দিতেই ওস্তাদ প্রতারকরা!  
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

ধর্মকর্মে সক্রিয় অংশগ্রহণে মানসিক তৃপ্তি ও সামাজিক সুনাম। পেশাদার শিল্পীদের শুভ সময়।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৫ টাকা৮৪.৮৯ টাকা
পাউন্ড১০৮.২৫ টাকা১১১.৮০ টাকা
ইউরো৯০.৭১ টাকা৯৩.৮৮ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা