বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
সম্পাদকীয়

গণপরিবহণে গতিবৃদ্ধি

লাল সন্ত্রাসে অতিষ্ঠ বাংলার মানুষ ‘পরিবর্তন’ চেয়েছিল। জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যবাসীর সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ করেন ২০১১ সালে। তাঁর সেই আন্তরিক উদ্যোগে শুধু এক জগদ্দল প্রশাসনই সরেনি, বাস্তবিক পরিবর্তনও এসেছে নানা ক্ষেত্রে। কারণ পূর্বসূরিদের অনুকরণে তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী তাঁর সরকার রাইটার্স কিংবা নবান্নের উচ্চাসন থেকে পরিচালনা করার ভুল করেননি। তিনি স্বেচ্ছায় নেমে এসেছেন মাটিতে। শুরু থেকেই তিনি ঘুরে বেড়ান জেলায় জেলায়, বাংলার প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে—সেখানে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার পায় পাহাড়, সুন্দরবন ও জঙ্গলমহল। তবে তাঁর প্রশাসনের কাছে কোনোভাবেই উপেক্ষিত হয় না মহানগর কলকাতা এবং শিলিগুড়ি, আসানসোল, বর্ধমান, হলদিয়া, তমলুক, বারাসত, বাঁকুড়া, বালুরঘাট, বহরমপুর প্রভৃতি ছোট বড় শহরগুলিও। এমন কোনও জায়গার নাম বলা যাবে না যেখানে একাধিকবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পা পড়েনি। আসলে বাংলার প্রতিটি গ্রাম, শহর এবং মানুষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক নির্মাণের শুরু রাজনৈতিক জীবনের প্রারম্ভেই। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে সেই সম্পর্ককে তিনি উন্নত করে চলেছেন নিরন্তর। তার ফলে এরাজ্যের কারও সুখ-দুঃখের খবর তাঁর অগোচর নয়। মন্ত্রী-আমলা তো বটেই, এমনকী কোনও পার্টিকর্মীও এই ব্যাপারে তাঁকে ভুল তথ্য দিয়ে পার পাবেন না। কারণ গোটা বাংলা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নখদর্পণে। তাই এরাজ্যে সরকারি পরিষেবা থেকে প্রশাসনিক তৎপরতায় সামান্য ছন্দপতনেও তিনি অস্বস্তি বোধ করেন, মানুষের সমস্যায়, কষ্টে উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠেন। তাঁর সরকারের লক্ষ্যপূরণে ক্ষেত্রবিশেষে যাঁদের গাফিলতি, ত্রুটি ও ব্যর্থতা অন্তরায়, তাঁদের প্রকাশ্যেই চিহ্নিত করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। এই ব্যাপারে দাপুটে আমলা থেকে বাঘা মন্ত্রী—মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেয়াত করেন না কাউকেই। যেমন গত বৃহস্পিতবার নবান্নে অনুষ্ঠিত প্রশাসনিক পর্যালোচনা বৈঠকে একাধিক ক্ষেত্রের পরিষেবায় ঘাটতি ও ত্রুটি নিয়ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য গণপরিবহণ। বিশেষত বাস পরিবহণে সমস্যা বেড়েছে করোনাকাল থেকে। করোনা বিদায় নেওয়ার পর সমস্যাগুলি ধীরে ধীরে দূর হবে বলেই ধরে নিয়েছিল সকলে। কিন্তু বাস্তবে তা হয়নি। 
এনিয়ে মানুষের বেড়ে চলা দুর্ভোগ এবং ক্ষোভ মুখ্যমন্ত্রীর নজর এড়ায়নি। বৃহস্পতিবারের বৈঠকেই সাফ জানিয়ে দেন তিনি, তাঁর সরকার এসব কোনোভাবেই বরদাস্ত করবে না। তাঁর কড়া বার্তা ছিল, ‘মানুষ বাস পাচ্ছে কি না রাস্তায় বেরিয়ে, শহর ঘুরে পরিবহণ মন্ত্রীকেই তার খোঁজ নিতে হবে।’ রাজ্য পরিবহণ দপ্তরের বেহাল দশা নিয়েও রীতিমতো উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি। মন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা শোনা যায়, ‘অফিস ছুটির পর বাসের জন্য কত মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকে, তা নিয়ে পরিবহণ দপ্তর কোনও সমীক্ষা করেছে কি? কোন কোন এলাকায় বাসের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়ানো যেতে পারে, তা কি দেখা হয়েছে? আমি নিজে বহুবার দেখেছি, বহু মানুষ বাসের জন্য রাস্তায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। পরিবহণ মন্ত্রী কি নিজে কখনও ভিজিট করেছে?’ একের পর এক প্রশ্নের উত্তরে কার্যত অপ্রস্তুত পরিবহণ মন্ত্রীকে বলতে শোনা যায়, ‘বাসের ফ্রিকোয়েন্সি কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।’ তাঁর এই সংক্ষিপ্ত উত্তর শুনেই ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী বস্তুত হুঁশিয়ারির সুরে বলেন, ‘মানুষ যাতে ভালোভাবে অফিস যেতে এবং বাড়ি ফিরতে পারে, তা তোমাকে দেখতে হবে। কাজের দিন ভিজিট করতে হবে শহরের সর্বত্র। তথ্য-প্রযুক্তি তালুক থেকে হাসপাতালের ভিজিটিং আওয়ার—কী অবস্থা হয়, সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করেই তা বুঝে নিতে হবে।’ শহরে যান নিয়ন্ত্রণে পুলিসের ভূমিকা নিয়েও তাঁর অসন্তোষ গোপন করেননি মমতা। যানবাহনের গতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণেরই নির্দেশ দেন তিনি। 
সুখের কথা, মুখ্যমন্ত্রী ভর্ৎসনা করতেই নড়েচড়ে বসেছে পরিবহণ দপ্তর এবং পুলিসের ট্রাফিক বিভাগ। সাম্প্রতিক অতীতে সরকারি বাসের ট্রিপের সংখ্যা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু একাধিক কারণে ওই পরিকল্পনার সফল বাস্তবায়ন হয়নি। পরিবেশবান্ধব কয়েকশো নতুন বাসের অর্ডার দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আইনি গেরোয় তা ঝুলেই রয়েছে। বিকল্প হিসেবে কয়েকশো পুরনো বাস যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামত করে রাস্তায় নামানো হয়। তার ফলে উৎসবের মরশুমে গণপরিবহণ কিছুটা মসৃণই ছিল। কিন্তু পরবর্তীকালেও সেই বাড়তি ট্রিপ চালাবার ক্ষেত্রে মূল সমস্যা কর্মীর অভাব। এটা দ্রুত মিটিয়ে বাস পরিষেবা যাত্রীবান্ধব করে তুলতেই তৎপর এখন দপ্তর। তারপরেও যেসব সমস্যা থাকতে পারে সেসব চিহ্নিত করতে আজ, সোমবার থেকেই রাস্তায় নামবেন বিভাগীয় মন্ত্রী ও সচিব। প্রশাসন পরিচালনার এই মডেল সত্যিই অনবদ্য। কিছু রুটে ভাড়া নিয়ে বিবাদ এবং ক্যাব বুকিং অহরহ রিফিউজাল বন্ধেও তাঁদের তৎপরতা কাম্য।
20d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পেশাগত উচ্চশিক্ষায় দিনটি বিশেষ শুভ। ধৈর্য ধরে মনোযোগ দিয়ে কাজ করুন সাফল্য পাবেন। অর্থ ও...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৫.৪৮ টাকা৮৭.২২ টাকা
পাউন্ড১০৫.০৯ টাকা১০৮.৮১ টাকা
ইউরো৮৮.৪৭ টাকা৯১.৮৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
25th     January,   2025
দিন পঞ্জিকা