বর্তমান পত্রিকা : Bartaman Patrika | West Bengal's frontliner Newspaper | Latest Bengali News, এই মুহূর্তে বাংলা খবর
সম্পাদকীয়

ফের মহাজনি ফাঁদে ছোট শিল্প?

ভারতে বৃহৎ শিল্পের প্রসারে সবচেয়ে বড় বাধা পুঁজি। আজকের বৃহৎ শিল্প অতিমাত্রায় প্রযুক্তিনির্ভর। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিকে ভিত্তি করে গড়ে ওঠা শিল্পে যত পুঁজির প্রয়োজন কর্মসংস্থান সেই অনুপাতে হয় না। ভারত হল সর্বাধিক জনসংখ্যার দেশ। এখানকার শ্রমিকদের একটি বড় অংশের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ নেই কিংবা প্রয়োজনের তুলনায় কম। এই অদক্ষ বা স্বল্পদক্ষ শ্রমিকের চাকরির সুযোগ এখনকার বড় শিল্পে প্রায় নেই। কৃষি ক্ষেত্রের বাইরে, তাদের কর্মসংস্থানের মূল ভরসা ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্প (এমএসএমই)। অতএব ভারতের মতো সুবৃহৎ দেশে এমএসএমই শিল্প-বাণিজ্য ক্ষেত্রের গুরুত্ব প্রশ্নাতীত। বস্তুত তারাই এদেশের শিল্প-বাণিজ্য ক্ষেত্রের মেরুদণ্ড। এই ক্ষেত্রই দেশের আর্থিক বৃদ্ধির ইঞ্জিন এবং আর্থ-সামাজিক অগ্রগতির চালক বলে গণ্য হয়। এই ধরনের উদ্যোগ কর্মসংস্থান সৃষ্টির বড় ভরসা। গ্রামীণ ও অনগ্রসর এলাকায় এই সেক্টরের বিকল্প ভাবাই যায় না। বেকারত্ব ও দারিদ্র্য হ্রাসের প্রশ্নে এমএসএমই’র ভূমিকা বহুদিন যাবৎ অনন্য। সারা দেশে এমএসএমই সংস্থার সংখ্যা ৬ থেকে সাড়ে ৬ কোটি। তাদের মাধ্যমে যা উৎপাদন হয় তার পরিমাণ ভারতের জিডিপির আনুমানিক ৮ শতাংশ। ম্যানুফ্যাকচারিং সেক্টরে তাদের অবদান কমবেশি ৪৫ শতাংশ। দেশ প্রতিবছর যত রপ্তানি করে তার মধ্যে এমএসএমই ক্ষেত্রে উৎপন্ন পণ্য থাকে প্রায় ৪০ শতাংশ।
তাই অর্থনীতিবিদদের অনেকেই এই পরামর্শ দিয়ে থাকেন যে, দেশীয় অর্থনীতিকে চাঙ্গা রাখতে এবং তাকে অধিকতর মজবুত করে তুলতে এমএসএমই সেক্টরের প্রতি সরকারের বিশেষ কৃপাদৃষ্টি জরুরি। সাম্প্রতিক অতীতের মধ্যে, করোনার দু-তিন বছরে এমএসএমই সেক্টরের ক্ষতি হয়েছে মারাত্মক। কয়েক লক্ষ এমএসএমই ইউনিট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। তার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছিল কর্মসংস্থানের উপর। একটি অতিসাধারণ চাকরির জন্যও যে-দেশে কয়েক হাজার শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতী আবেদন এবং বছরের পর বছর লড়াই করেন, সেই দেশেই ওই সময়ে লক্ষ লক্ষ মানুষকে কাজ হারাতে হয়েছিল। অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ ছিল রুগ্ন বা বন্ধ এমএসএমই ইউনিটগুলিকে বাঁচাতে সরকার কিছু অনুদান দিক কিংবা সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করুক। তাদের জন্য সময়োপযোগী প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি ও টেলি যোগাযোগের সহায়তা প্রদান এবং করছাড়েরও প্রস্তাব ছিল। আর ছিল জিএসটি আইনকে এমএসএমই সহায়ক করে তোলার পরামর্শ। মোদি সরকার গালভরা প্রকল্প একটি নিয়েছিল বটে কিন্তু তাতে ওই শিল্প-বাণিজ্য ক্ষেত্রের আদৌ কোনও সুরাহা হয়েছিল কি না সেই সদুত্তর আজও মেলেনি। এমএসএমই’র পাশে দাঁড়াতে পরবর্তীকালেও একাধিক প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছে মোদি সরকার। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বন্ধকহীন ঋণ। অর্থাৎ কোনও সম্পত্তি গচ্ছিত না রেখেই এমএসএমই শিল্পক্ষেত্র যাতে ঋণ পেতে পারে তার কথাই জোর গলায় বলছে কেন্দ্রীয় সরকার।
কিন্তু বাস্তবে সেই ঋণ সত্যিই মিলছে কি? এই প্রশ্ন তুলে দিল সর্বভারতীয় বণিকসভা অ্যাসোচেমের একটি রিপোর্ট। বাজেট তৈরির আগে সরকার প্রতিবছরই বণিকসভাগুলির পরামর্শ চায়। সেই পরামর্শ এবং দাবিদাওয়া সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট তারা অর্থমন্ত্রকে পেশ করেছে। সেখানে এমএসএমই ক্ষেত্রে ঋণ প্রদানের বিষয়ে আরও স্বচ্ছতা দাবি করেছে অ্যাসোচেম। তাদের অভিযোগ, ঋণ প্রসেস সম্পর্কে আবেদনকারীকে স্পষ্ট করে কিছু বলা হচ্ছে না এবং ঋণ প্রদানের সময় ব্যাঙ্কগুলি সম্পত্তি গচ্ছিত রাখার কথাই বলছে! তবে কেউ কেউ বন্ধকহীন ঋণ পেলেও তার জন্য সুদ আদায় করা হচ্ছে চড়া হারে। বণিক সভার প্রশ্ন, তাহলে বন্ধকহীন ঋণ কথার কী মূল্য রইল? এই সংক্রান্ত অসংগতিগুলির সম্পূর্ণ ও দ্রুত অবসান চায় তারা। তাদের বক্তব্য, ব্যাঙ্কগুলিতে বন্ধকহীন ঋণের কত আবেদন বাস্তবে মঞ্জুর হল এবং তার আর্থিক পরিমাণই-বা কত, সেই তথ্যাদি নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রকাশের দাবি তারা জানিয়েছে। বণিক সভা চায়, এই বিষয়ে স্বচ্ছতা বৃদ্ধির দায়িত্ব কেন্দ্রকেই নিতে হবে। সরকার এই বিষয়টিতে এখনও গুরুত্ব দিচ্ছে না কেন? তারা কী চায়—দেশের ছোট শিল্প-বাণিজ্য ক্ষেত্র ফের মহাজনি ঋণের ফাঁদে পড়ুক? ইতিমধ্যেই ভারত সরকারের পরিসংখ্যান বিভাগ অশনিসঙ্কেত দিয়ে রেখেছে, চলতি অর্থবর্ষের জিডিপি বৃদ্ধির হার হবে মাত্র ৬.৪ শতাংশ, যা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের প্রত্যাশার চেয়ে ২০ বেসিস পয়েন্ট কম। অর্থাৎ দেশের অর্থনীতি এগনোর পরিবর্তে চারবছর পিছনে হাঁটতে চলেছে! কৃষি এবং এমএসএমই সেক্টরের সঙ্গে যে ধারাবাহিক বঞ্চনার রেকর্ড এই সরকার গড়েছে, তাতে অবশ্য দেশের অর্থনীতির এর অধিক প্রাপ্য হওয়ার কথা ছিলও না।
5d ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

সম্পত্তি সংক্রান্ত আইনি প্রচেষ্টায় সাফল্যের সম্ভাবনা। ন্যায্য অর্থ সঠিক সময়ে নাও পেতে পারেন।  অর্থপ্রাপ্তির যোগ...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৫.৮৩ টাকা৮৭.৫৭ টাকা
পাউন্ড১০৪.০৫ টাকা১০৭.৭৪ টাকা
ইউরো৮৭.৩০ টাকা৯০.৬৫ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা