সম্পাদকীয়

আশার আলো

বছরখানেকের শুনানির পর শেষমেশ দেখা দিয়েছে আশার আলো। রাজ্যের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগের সামনে যে যবনিকা অনড় মনে হচ্ছিল, সেটা এবার উঠে যেতে চলেছে। সৌজন্যে শীর্ষ আদালত। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছে, উপাচার্য নিয়োগে মুখ্যমন্ত্রীর মতকেই আচার্য তথা রাজ্যপালকে প্রাধান্য দিতে হবে। সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়, এই কাজে সাহায্য করতে একটি সার্চ-কাম-সিলেকশন কমিটিও গঠন করে দিয়েছে। তার মাথায় থাকবেন সুপ্রিম কোর্টেরই একজন প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি। প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি উদয় উমেশ ললিত ওই কমিটির সদস্যদের বেছে নেবেন। সদস্যরা হবেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, প্রশাসনিক কাজে দক্ষ ব্যক্তিত্ব প্রমুখ। এমন ৬৭ জনের নামের একটি তালিকাও শীর্ষ আদালত ইতিমধ্যে জানিয়েও দিয়েছে। সার্চ কমিটিকে কাজ শেষ করতে হবে আগামী তিনমাসের ভিতরে। মোট ২৪ পাতার এক প্রত্যাশিত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশে এমনটাই জানিয়েছে বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং কে ভি বিশ্বনাথনের বেঞ্চ।
পশ্চিমবঙ্গের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শীর্ষপদ পূরণের জটিলতার নেপথ্যে নবান্ন ও রাজভবনের দ্বৈরথ। নবান্নের অভিযোগ, রাজ্যের উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থায় রাজ্যপালের অনাবশ্যক হস্তক্ষেপের ফলে রাজ্যের স্বশাসন ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। ‘রাজ্যে কেন্দ্রের এজেন্টের’ এই ভূমিকাকে শিক্ষানুরাগী মহলেরও অনেকে যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার পরিপন্থী বলে নিন্দা করেছেন। রাজ্যবাসীর এই উষ্মার মনোভাব রাজভবনের গোচরে এনেছেন তাঁরা, প্রতিবাদ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে দিল্লির দরবারেও। তবু ‘দাদাগিরি’ ছেড়ে বাস্তবের মাটিতে পা রাখেননি একগুঁয়ে রাজ্যপাল। মোদি সরকারও তাঁকে তেমন পরামর্শ কখনও দিয়েছে বলে শোনা যায়নি। ফলে উপাচার্যের পদটি নিয়ে বাংলার বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়কে নানাবিধ সমস্যার মধ্যে ফেলে দেওয়া হয়। বঙ্গদেশ ঐতিহাসিকভাবেই শিক্ষা-সংস্কৃতির জগতে অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করে এসেছে। ব্রিটিশ ভারতে কলকাতাই ছিল তার কেন্দ্র। রাজভবন বা মোদি সরকারের অসহযোগিতার অবাঞ্ছিত আঘাত নেমে এসেছে তেমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে। স্বভাবতই সুবিচারের আশায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ ন্যায়ালয়ের কাছে পেশ করে। 
গতবছরের ২১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্টে এই মামলার প্রথম শুনানি হয়। প্রায় ১১ মাস পর শেষ পর্যন্ত সোমবার দেখা দিল আশার আলো। শীর্ষ আদালতই রাজ্যের উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়া সহজ করে দিয়েছে। বিচারের সর্বোচ্চ আসনের অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ নির্দেশ এই যে, আচার্য তথা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসকে কোনও নামের তালিকা পাঠাবে না সার্চ কমিটি। এমনকী, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রীর কাছেও কোনও সুপারিশ তারা করবে না। উপাচার্য নিয়োগের জন্য প্রস্তাবিত নামের তালিকা সরাসরি যাবে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে। তার মধ্যে থেকে যোগ্য প্রার্থীদের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই বেছে নেবেন। অতঃপর তালিকাটি যাবে রাজভবনে। মুখ্যমন্ত্রীর সুপারিশ মেনেই উপাচার্য নিয়োগে সিলমোহর দিতে হবে রাজ্যপাল তথা আচার্যকে। তার জন্য দু’সপ্তাহের সময়সীমাও বেঁধে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আচার্যের সিলমোহর নিয়ে একসপ্তাহের মধ্যেই উপাচার্য নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করবে রাজ্য। তবে সার্চ কমিটির সুপারিশ করা কোনও নামে আপত্তি থাকলে মুখ্যমন্ত্রী বা আচার্যকে তা কারণসহ সাফ সাফ জানাতে হবে। সম্ভাব্য উপাচার্যের নাম নিয়ে আচার্য ও মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে মতানৈক্য উপস্থিত হলে বিষয়টি চলে যাবে সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ারে এবং তারাই সমস্যার সমাধান করবে। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে স্বভাবতই খুশি রাজ্য। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর প্রতিক্রিয়া, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীকেই আচার্যের আসন দেওয়া হোক। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ বস্তুত সেই দাবিকেই বৈধতা দিয়েছে।’ অবাঞ্ছিত জেদাজেদি ছেড়ে অবিলম্বে বেরিয়ে আসা উচিত রাজভবনের। শীর্ষ আদালতের নির্দেশ মেনে উপাচার্য নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতেই হবে। ইতিমধ্যেই রাজ্যের উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থার অনেক ক্ষতি হয়ে গিয়েছে এবং তা অপূরণীয়। এই ক্ষতি আর বাড়তে দেওয়া যায় না।
 
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রখর অনুমান ক্ষমতার গুণে কার্যোদ্ধার। ব্যবসা, বিদ্যা, দাম্পত্য ক্ষেত্রগুলি শুভ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৩২ টাকা১১১.৮৭ টাকা
ইউরো৯১.২৫ টাকা৯৪.৪৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা