সম্পাদকীয়

হায়, মুমকিন ও গ্যারান্টি!

চমক, চমক আর চমক! এটাই হল মোদি সরকারের আসল মূলধন। জাতীয় রাজনীতিতে নরেন্দ্র মোদির পদার্পণটাই ছিল ভারতের ক্ষমতার অলিন্দে সবচেয়ে বড় চমক। বিজেপি চমক দিয়েছিল প্রধানমন্ত্রীর কুর্সিতে মোদিকে বসিয়ে। আর সেই কুর্সি রক্ষা করার জন্য লাগাতার এবং বর্ণময় চমক দিয়ে চলেছেন মোদি স্বয়ং। তাঁর রাজনীতির একটি বড় দিক হল পূর্বসূরিদের যাবতীয় অবদান নস্যাৎ করা। আর তার প্রেক্ষিতে তিনি বরাবর এটাই প্রমাণ করতে মরিয়া যে, ভারতের শ্রীবৃদ্ধির সবটুকুই হয়েছে তাঁর হাত ধরে। যেহেতু তিনি একটি মেহনতি পরিবারের সন্তান এবং তাঁর এই বিস্ময়কর উত্থান বহু কষ্টে অর্জিত, তাই তাঁর সরকারের প্রধান অগ্রাধিকারের নাম গরিব শ্রেণি। দ্রুত দারিদ্র্যদূরীকরণ এবং গরিব মানুষের জন্য সেরা সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করাই তাঁর ধ্যানজ্ঞান। এই ঘোষিত অঙ্গীকারের অনুষঙ্গ হয়েই মোদিযুগের প্রারম্ভে ভারতভূমিতে ‘অবতীর্ণ’ হয়েছিল তিনটি বিমা প্রকল্প: প্রধানমন্ত্রী জনসুরক্ষা বিমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী জীবনজ্যোতি বিমা এবং অটল পেনশন যোজনা। এই তিনটির মধ্যে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় হয় প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা। কারণ ২০১৫ সালে বিমার প্রিমিয়াম ছিল বছরে মাত্র ১২ টাকা! কিন্তু পাবলিক টোপ গিলতেই প্রিমিয়ামের অঙ্কটি বিনা নোটিসে বাড়িয়ে করা হয় ২০ টাকা। বৃদ্ধির আর্থিক পরিমাণ বছরে ‘৮ টাকা মাত্র’ মনে হলেও ক্রয়মূল্যের বাস্তব বৃদ্ধি কিন্তু ৬৭ শতাংশ। কিন্তু তার বিনিময়ে গ্রাহক কি ওই হারে কোনও বেনিফিট পাবেন? উত্তর আম আদমি অন্তত জানে না। 
এরপর আরও চাঞ্চল্যকর অভিযোগ হল, সরকারি বিমা হওয়া সত্ত্বেও বহু ক্ষেত্রে ক্লেমের টাকাই মিলছে না! অথচ দুঃসময়ে টাকা পাওয়া বা আর্থিক সুরাহাই বিমার একমাত্র উপযোগিতা। কিন্তু সেটাই অনেকের ক্ষেত্রে খারিজ কিংবা বিলম্বিত হচ্ছে। এই মারাত্মক অভিযোগ গিয়েছে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের কাছেও। বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখারই আশ্বাস দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনার নিয়ম কেন্দ্র একাধিকবার পাল্টেছে। কিন্তু আসল যেটা দরকার, সেই ক্লেম মেটানোর নির্দেশনামায় স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে বলেই মনে করছেন ব্যাঙ্ক এবং ডাকঘরের অনেক কর্তা। সুরাহা চেয়ে শ্রমমন্ত্রকে একাধিকবার চিঠিও লিখেছেন শ্রমিক সংগঠন টিইউসিসির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক শিবপ্রসাদ তেওয়ারি। কেননা, শুধু ওই একটি সংগঠনের কাছেই ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা হয়েছে। অভিযোগ তারা পাচ্ছে প্রতিদিনই। অভিযোগ জমা হচ্ছে বাংলার প্রতিটি জেলা থেকে। ক্লেম না-পাওয়ার অসংখ্য অভিযোগ গিয়েছে সংগঠনের অসম শাখাতেও। শিবপ্রসাদবাবুর দাবি, চারশো-ছ’শো অভিযোগও পেয়েছেন তাঁরা কোনও কোনও জেলা থেকে। এই ব্যাপারে অন্য শ্রমিক সংগঠনগুলির অভিজ্ঞতাও অভিন্ন। প্রাক-বাজেট আলোচনার জন্য সম্প্রতি দিল্লিতে বৈঠক ডেকেছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেখানে অর্থসচিবের সঙ্গে শ্রমসচিবও ছিলেন। বিষয়টি উত্থাপন করেন শিবপ্রসাদবাবু। অভিযোগের জবাবে অর্থমন্ত্রী দাবি করেন, তাঁরা ইতিমধ্যেই কয়েক লক্ষ ক্লেম মিটিয়েছেন। তখন শ্রমিক সংগঠনের তরফে তথ্যসহ সমস্যাটির বাস্তবতার প্রতি অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়। তার প্রেক্ষিতে বিষয়টি সম্পর্কে শ্রমসচিবের কাছে জানতে চান নির্মলা সীতারামন। তখন শ্রমসচিবও মেনে নেন যে, এই তিন বিমার ক্লেম মেটানোর ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা রয়েছে। তখনই সমস্যাটি খতিয়ে দেখে দ্রুত উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। এই কাজে সব জেলার জন্য নোডাল অফিসার নিয়োগেরও দাবি জানিয়েছে শ্রমিক সংগঠন। এই বিষয়ে রাজ্যসভার তৃণমূল কংগ্রেস সদস্য দোলা সেনেরও দাবি, জনসুরক্ষা বিমা যোজনার ক্লেমের টাকা না-মেটানোর অগুনতি অভিযোগ তিনিও পাচ্ছেন। কিন্তু সরকারের উপযুক্ত জায়গায় বিষয়টি জানিয়েও যুক্তিগ্রাহ্য জবাব মিলছে না। 
ঘুরে ফিরে আসছে সেই প্রশ্নটাই—এসব প্রকল্প কি আদৌ কোনও সুষ্ঠু পরিকল্পনার অংশ, নাকি ভোটসর্বস্ব চমকজাত? এই আশঙ্কার কারণ, মোদি জমানায় ভারতবাসী মাত্রই ঘরপোড়া...বছরে ২ কোটি চাকরি এবং সবার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে এককালীন ১৫ লক্ষ টাকার ‘গুল’ হজমই হচ্ছে না। হায় রে, ‘মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়’; হায় রে, ‘মোদি কি গ্যারান্টি’! 
1Month ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

উপস্থিত বুদ্ধি ও প্রখর অনুমান ক্ষমতার গুণে কার্যোদ্ধার। ব্যবসা, বিদ্যা, দাম্পত্য ক্ষেত্রগুলি শুভ।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.১৩ টাকা৮৪.৮৭ টাকা
পাউন্ড১০৮.৩২ টাকা১১১.৮৭ টাকা
ইউরো৯১.২৫ টাকা৯৪.৪৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
5th     September,   2024
দিন পঞ্জিকা