সম্পাদকীয়

বোধোদয় হবে কি?

বলা হচ্ছিল, পাঁচ রাজ্যের ভোট নাকি আসলে ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের ‘সেমি ফাইনাল’। এই ভোটের যে ফলাফল উঠে এল তাতে ফাইনাল-এ নরেন্দ্র মোদির ললাট লিখন এখনই পড়ে ফেলতে পারছেন অনেকে। গেরুয়া শিবিরের অন্তত সেরকমই দাবি। যদিও এবছর কর্ণাটক ও হিমাচলপ্রদেশ হাতছাড়া হওয়ার পর মোদির ভাবমূর্তি নিয়ে বড়সড় প্রশ্ন উঠে গিয়েছিল। বিরোধীদের ‘ইন্ডিয়া’ জোটের সলতে পাকানোও তারপরেই শুরু। জোটের নড়াচড়া দেখে এই বার্তাই দৃঢ় হচ্ছিল যে, ‘আব কি বার মোদি সরকার’ বোধহয় পদ্মশিবিরের কাছে অধরাই থেকে যাবে। সন্দেহ নেই, সেই ভাবনায় আপাতত জল ঢেলে দিয়েছে সেমি ফাইনালের এই ফলাফল। ফের আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছে ‘মোদি ম্যাজিকের’ কথা। যদিও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, বিধানসভা ও লোকসভার ভোট এক নয়। তাছাড়া অতীতের একাধিক নজির বলছে, কোনও রাজ্যে বিধানসভা ভোটে ভালো ফল করেও লোকসভায় সেই দলকে চাঁদমারি ঠেকিয়েছে জনগণ। কিন্তু এই ব্যাখ্যার বাইরেও বাস্তব সত্যটা হল, পাঁচ রাজ্যের ফলাফলের পর ‘অ্যাডভান্টেজ’ বিজেপি। তাই লোকসভা ভোট নিঃসন্দেহে বিরোধীদের কাছে অত্যন্ত বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ ফলপ্রসূ করতে  হলে জোটের আঞ্চলিক দলগুলিকে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। জোট শরিকদের নিজ নিজ দলীয় ক্ষুদ্র স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফর্মুলা অক্ষরে অক্ষরে মেনে জোটবদ্ধ হয়েই লড়াই চালাতে হবে। মনে রাখা দরকার, এখনও বিজেপির হাতে রয়েছে অযোধ্যা রাম মন্দির উদ্বোধন। একথা সকলেরই জানা, মন্দির রাজনীতি মোদি-শাহদের অত্যন্ত পছন্দের বিষয়। যথাযথভাবে ধর্মীয় আবেগ উস্কে দিতে পারলে তা যে অনেকসময় আফিমের মতো কাজ করে তা বারবার প্রমাণিত। ভোটের বাজারে এই ব্রহ্মাস্ত্রকে কাজে লাগাতে অযোধ্যার রাম মন্দির উদ্বোধন তাই গেরুয়া শিবিরের সেরা বাজি। এবং এই অস্ত্রে শান দিতে দেড় মাস ধরে উৎসব করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে মোদি সরকারের ব্যর্থতা, বেকারি, মূল্যবৃদ্ধি, অপশাসন, অর্থনীতির অধোগতির প্রচার দিয়ে মোকাবিলা করতে হলে বিরোধী জোটকে সর্বশক্তি প্রয়োগের চ্যালেঞ্জই গ্রহণ করতে হবে। কারণ রাজনীতিতে অসম্ভব বলে কিছু নেই। 
প্রশ্ন হল, এই পাঁচ রাজ্যের ভোটে আসলে বিজেপি জিতল, নাকি কংগ্রেস হারল? গত দু’মাস ধরে এই পাঁচ রাজ্যের ভোটের গতি প্রকৃতি নজর করলে দেখা যাবে, জোটের বড় শরিক কংগ্রেসের মধ্যে একটা জমিদারি ভাব। একথা এখন স্পষ্ট যে, গো-বলয়ে বিজেপির সঙ্গে সরাসরি লড়াইয়ে কংগ্রেস প্রায় হেরে ভূত। কিন্তু এই সারসত্যটা ভোটের আগে বুঝে যদি জোট শরিকদের সঙ্গে আসন সমঝোতা করে বিজেপির মুখোমুখি হওয়া যেত, তাহলে হয়তো এমনভাবে মুখ পুড়ত না কংগ্রেসের। কিন্তু সমাজবাদী পার্টির মতো শরিকদের আবেদন অগ্রাহ্য করে কংগ্রেস আসলে নিজেই নিজের বিপদ ডেকে এনেছে। তাই রাহুল-প্রিয়াঙ্কা-মল্লিকার্জুন খাড়্গেরা এই পরাজয়ে নিজেদের ব্যর্থতা এড়িয়ে যেতে পারেন না। এখনও সময় আছে। কংগ্রেসকে এটা বুঝতে হবে, শক্তিশালী ও প্রভূত ক্ষমতাশালী বিজেপি’র বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হয়েই তাদের লড়াই করতে হবে। ছাড়তে হবে দাদাগিরির মানসিকতা ও ছুঁৎমার্গ। কংগ্রেসের অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতাই এই পরাজয়ের কারণ, ইন্ডিয়া জোটের নয়। তাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নীতি মেনে আসন সমঝোতা করে ‘একের বিরুদ্ধে এক’ ফর্মুলায় ইন্ডিয়া জোটকে লড়াই করা দরকার। সুতরাং, এই ভোটের ফলাফল থেকে শিক্ষা নিয়ে শীত ঘুম থেকে বেরিয়ে আসতে হবে কংগ্রেসকে। ইগো ছেড়ে এখন মমতার দেখানো পথেই হাঁটা উচিত কংগ্রেসের।
একথা ঠিক যে, ইন্ডিয়া জোটে সবচেয়ে বড় দল কংগ্রেস। একমাত্র তাদেরই সব রাজ্যে কম-বেশি সংগঠন আছে। কিন্তু এর পাশাপাশি এটাও ঠিক, বাংলায় পরপর তিনবার বিজেপিকে হারিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল প্রমাণ করেছে বিজেপি অপরাজেয় নয়। পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা ভোটে জোট গড়ে যদি কংগ্রেস লড়াই করত তাহলে হয়তো এই দিনটা দেখতে হতো না। ভোটের মধ্যে জোট বৈঠক ডাকলে তার একটা প্রভাব পড়ত ভোটারদের মনে। সে পথে না হাঁটায় এই ব্যর্থতার দায় বর্তাচ্ছে কংগ্রেসের উপর। এরজন্য ক্ষুব্ধ জোট শরিকদের কেউ কেউ। কংগ্রেসের ‘দাদাগিরি’ নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একথা ঠিক, একে অপরের বিরুদ্ধে কাদা ছোড়াছুড়ি করে নিজেদের পায়ে কুডুল না মেরে আশা করা যায় ইন্ডিয়া জোট পরিস্থিতি পর্যালোচনা করবে। কারণ মহাজোটের যে শক্তি আছে তার নিরিখেই ২০২৪-এ তারা লড়াই করে উঠে আসারও ক্ষমতা ধরে। এর জন্য সবার আগে চাই জনগণের আস্থা অর্জন। ৩৪ বছরের সিপিএম শাসন থেকে বাংলাকে মুক্ত করার জন্য লড়াকু নেত্রী মমতার লড়াই ভোলবার নয়। সে পথেই হেঁটে সত্যিই ইন্ডিয়া জোট মোদিবাহিনীকে একটা সত্যিকারের চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিতে পারবে কি না—সময়ই তা বলবে।
7Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা