সম্পাদকীয়

যোগীর গর্জনই সার 

মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ দমনে মোদি সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি ঘোষণা করেছে। সেইমতো, একটি স্পেশাল পোর্টাল চালু করে এনসিআরবি। ইনভেস্টিগেশন ট্র্যাকিং সিস্টেম ফর সেক্সুয়াল অফেন্সেস (আইটিএসএসও বা ইটসো) নামে ওই পোর্টাল চালু করার উদ্দেশ্য—নির্দিষ্ট কেসগুলির উপর গুরুত্বসহকারে নজরদারি করা। বলা বাহুল্য, সারা দেশের থানাগুলিতে নিবন্ধিত নারীধর্ষণ এবং শিশুদের উপর যৌননির্যাতনের অভিযোগগুলিই এই পোর্টালে জায়গা পায়। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে অভিযোগগুলির অত্যন্ত দ্রুত নিষ্পত্তির উপরও জোর দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ নিষ্পত্তির সংখ্যা এবং শতাংশ হারের ভিত্তিতে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশংসিত অথবা ভর্ৎসিত হয়ে থাকে। এই উদ্দেশ্যে দেশের প্রতিটি জেলায় এসপিদের নেতৃত্বে সক্রিয় নারী ও শিশু নিরাপত্তা সংগঠন। নিবন্ধিত অভিযোগগুলির নিষ্পত্তির ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে জেলাভিত্তিক ইউনিটগুলি। জেলা পুলিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারগণ পুরো বিষয়টির উপর দৈনিক পর্যালোচনাও করে থাকেন। তাঁরা নিয়মিত যোগাযোগ করেন আইও, এফএসএল এবং সরকারি আইনজীবীর সঙ্গে। নির্দেশমতো প্রতিমাসে রাজ্য পুলিসের ডিজির কাছে পেশ করা হয় রিভিউ রিপোর্ট।
এই ব্যবস্থা বাস্তব হলে ভারতের চেয়ে সোনার দেশ আর কোথায় আছে? নারী ও শিশুরা এই দেশের চেয়ে সুরক্ষিত ও সুখী আর কোথায় হতে পারে? চলতি বছরের গোড়ার দিকে (৬ ফেব্রুয়ারি) উত্তরপ্রদেশ রাজ্য পুলিসের উওমেন অ্যান্ড চাইল্ড সিকিউরিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত এডিজি নীরা রাওয়াত এক সাংবাদিক বৈঠকে দাবি করেন যে, নারী ও শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে তাঁরা দিনরাত এক করে ফেলেছেন! আর তারই ফলে ওই রাজ্যে এই ধরনের কেসগুলির অত্যন্ত দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে। উক্ত সময়কালে নিষ্পত্তির হার ছিল প্রায় ৯৮ শতাংশ—প্রায় ৭৬ হাজার কেসের মধ্যে নিষ্পত্তি হয়েছিল ৭৪ হাজারের বেশি। সাফল্যের নিরিখে যোগীরাজ্যই যে ‘দেশের মধ্যে সেরা’, সেটি নিয়ে গর্ব করতেও দেরি করেননি পুলিসকর্তাটি। আমরা আরও জানি, মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নিজেকে ‘বুলডোজার শাসক’ হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছেন। বস্তুত, এই ইমেজটাই তাঁর ইউএসপি। তাঁর এনকাউন্টার-রাজের বিরুদ্ধ সমালোচনাও দুরমুশ করা হয় গুণগ্রাহীদের মুহুর্মুহু হাততালিতে। 
আর এখানেই প্রশ্ন, ধেহরা গ্রামটি কি এই ভারতের নয়? কৌশাম্বী জেলা কি যোগীর ইউপির বাইরে? স্থানটি ভারতের এবং ইউপির হলে ধর্ষণের বিচার চাইতে নেমে ধেহরায় এক তরুণী খুন হলেন কী করে? কী জবাব আছে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে? অভিযোগ অনুসারে, বছর তিনেক আগে বছর ষোলোর একটি মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়। স্বভাবতই অভিযুক্ত পবন নিশাদকে শ্রীঘরে কাটাতে হয়েছে কিছুকাল। সম্প্রতি সেই গুণধর জামিনে ছাড়াও পেয়েছে। পবনের এক ভাই অশোক অভিযুক্ত অন্য একটি (খুন) মামলায়। সম্প্রতি জেলের বাইরে বেরিয়েছে সেও। অন্যদিকে, ধেহরার ধর্ষিতা কন্যাটি এখন ১৯ বছরের তরুণী। জামিনে মুক্ত পবন ও অশোক দিন কয়েক আগে মেয়েটির বাড়িতে চড়াও হয়ে ধর্ষণের অভিযোগ প্রত্যাহার করতে বলে। ওইসঙ্গে তাঁকে খুন করারও হুমকি দেওয়া হয়। মেয়েটি এবং তাঁর পরিবার অবশ্য লড়াই জারি রাখারই কথা শুনিয়ে দেন। বলা বাহুল্য, তরুণীকে হত্যার ঘটনাটি তারই পরিণতি। পবন এবং অশোক মিলে মেয়েটিকে ব্যস্ত রাস্তার উপর ফেলে কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। দুষ্কৃতীদের ইমেজ এলাকায় এমনই যে, কিছু লোক ওই নৃশংস কাণ্ড দেখেও মেয়েটিকে বাঁচাতে এগয়নি এবং ঘটনার পরও পাকড়াও করেনি খুনিদের। দুষ্কৃতীরা বরং রক্তাক্ত রাস্তার উপর দিয়েই চলে গিয়েছে বুক ফুলিয়ে! এমন ঘটনার পর এদেশে সাধারণভাবে যা ঘটে থাকে, ধেহরা-কাণ্ডেও তার ব্যতিক্রম কিছু দেখা গেল না। স্থানীয় পুলিস সুপার ঘটনাটিকে ‘পারিবারিক বিবাদের জের’ বলে লঘু করে দিয়েছেন তদন্ত শুরু হওয়ার আগেই। অতএব, এই মামলায় দোষীদের সাজা কবে এবং কতটা হবে, সেই সংশয় জাগিয়ে দিয়েছে খোদ প্রশাসনই। বুঝতে অসুবিধা হয় না—কেন যোগীরাজ্য উন্নাও, হাতরাস, আগ্রার মতো শত শত নারীনির্যাতনের ঘটনার কলঙ্কে অত্যন্ত কুৎসিত দেখাচ্ছে! ভাবতে লজ্জা হয়—নারীর অমর্যাদার প্রশ্নে মোদি-শাহ-যোগীরা এরপরও অন্য রাজ্যের দিকে আঙুল তুলবেন। সত্যিই তো, দিল্লির কুর্সি পুনর্দখলের খেলায় মিথ্যা ছাড়া আর কোন নিরাপদ আশ্রয়ই-বা আছে এঁদের সামনে! 
8Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা