সম্পাদকীয়

যে বৃদ্ধি অবাঞ্ছিত

বৃদ্ধিই কাম্য। ভারতও কিছু ক্ষেত্রে বৃদ্ধির মধ্যে আছে। যেমন—জনসংখ্যা, ক্ষুধা, বেকারত্ব এবং অবশ্যই নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। কিন্তু এগুলির সব যে কাম্য নয়! জনসংখ্যার বৃদ্ধি ততক্ষণই ভালো, যতক্ষণ মানুষের সামনে মানবসম্পদে উত্তরণের সুযোগ রয়েছে। কিন্তু ভারতবাসীর দুর্ভাগ্য এই যে, মানুষকে মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তোলার উপায় এখানে ভীষণভাবে সঙ্কুচিত। মানবসম্পদে রূপান্তরের কাজটা শুরু হয় মাতৃগর্ভ থেকেই। সার্বিকভাবে সুস্থ একটি দম্পতির পক্ষেই স্বাভাবিক সুন্দর শিশুর জন্ম দেওয়া সম্ভব। বিশেষভাবে জরুরি যে-নারী গর্ভধারণ করছেন তাঁর সুস্থতা। কিন্তু এদেশে এখনও সকলে দু’বেলা পেটভরা খাবার জোটাতে পারেন না। তাই ১২৫টি দেশকে নিয়ে প্রস্তুত বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ১১১তম স্থানে নেমে গিয়েছে ভারত। ভয়াবহ ক্ষুধা-পীড়িত ৪০টি দেশের গ্রুপে অবস্থান করে আমাদের দেশ। আন্তর্জাতিক রিপোর্ট অনুসারে, অপুষ্টির শিকার শিশু সবচেয়ে বেশি ভারতেই। এখানে নানা বয়সি মানুষের মধ্যে অপুষ্টির শিকার প্রায় ১৭ শতাংশ। ১৫-২৪ বছর বয়সি নারীদের রক্তাল্পতার সমস্যা মারাত্মক। কিশোরীসহ নারীদের অর্ধেকের বেশিই রক্তাল্পতার সমস্যায় ভোগেন। সমস্যাটি সারা পৃথিবীর মধ্যে ভারতেই সর্বোচ্চ বলে মনে করে আন্তর্জাতিক মহল। 
অতএব, গোড়ার গলদ মেনে নিয়েই মানবসম্পদ সৃষ্টির প্রক্রিয়া শুরু হয় ‘মহান’ ভারতে। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ সবল একটি শিশু উপযুক্ত প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়েই কর্মজগতে প্রবেশের যোগ্য হয়ে ওঠে। কিন্তু উপযুক্ত শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ গ্রহণের আর্থিক সহায়তা সব শিশুকে পরিবার দিতে পারে না। বিকল্প হিসেবে সরকারও যে সদয়, এমনটা নয়। কারণ স্বাস্থ্য এবং শিক্ষা খাতে বাজেট বরাদ্দ ভীষণ কম। এই দুই তহবিলের চেহারা—ধনী তো বটেই, মধ্য আয়ের দেশগুলির পাশেও ভীষণ ক্ষুদ্র। কল্যাণকামী সমাজ-অর্থনীতির পণ্ডিতরা দশকের পর দশক ধরে দাবি জানিয়েও সরকারের টনক নড়াতে পারেননি। তারপর আছে কৃষি, শিল্প প্রভৃতির বিকাশে অদক্ষতা। সবচেয়ে বড় সমস্যা হল—আঞ্চলিক বৈষম্য এবং সঙ্কীর্ণ রাজনীতি ও সীমাহীন অস্বচ্ছতা। তারই টাটকা পরিণাম দেশে সার্বিক বেকারত্বের ঊর্ধ্বমুখী হার—এখন ১০.০৫ শতাংশ। সংখ্যাটি সেপ্টেম্বর মাসেও ছিল ৭.০৯। কাজের সুযোগ সবচেয়ে কমেছে গ্রাম ভারতে—বেকারত্বের হার ৬.২ শতাংশ থেকে বেড়ে হয়েছে ১০.৮২ শতাংশ। সিএমআইই’র হিসেবে, বেকারত্বের এই হার ২০২১ সালের মে পরবর্তীকালের মধ্যে সর্বোচ্চ! 
‘আচ্ছে দিন’ নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পার্টি বিজেপি কেন আর উচ্চবাচ্য করে না, তা বুঝতে অসুবিধা হয় না। বছরে ২ কোটি চাকরি দেওয়ার দাবিটিও তাদের চুপসে গিয়েছে। সাধারণ মানুষের আয় বেড়েছে, সরকারি পিএলএফএস সমীক্ষার আলোকে এমন দাবিও বিজেপি এখন করতে পারে না। ২০১৭-১৮ থেকে ২০২২-২৩ সাল—এই ছ’বছরে গরিবরা গরিবই রয়ে গিয়েছে। বিভিন্ন শ্রেণির শ্রমিক-কর্মচারীর গড় মাসিক আয় বেড়েছে নামমাত্র। উল্টোদিকে, বার্ষিক ভোগ্যপণ্যের যে গড় মূল্যস্ফীতি ঘটেছে তার সঙ্গেই কাটাকুটি হয়ে গিয়েছে আয়ের ওই সামান্য বৃদ্ধির সংখ্যা। ভোজ্য তেল এবং সব্জির দাম সম্প্রতি কিছুটা কমেছে, বাদবাকি খাদ্যদ্রব্যের বেশিরভাগই এখনও মহার্ঘ অগ্নিমূল্যের কারণে। ভোজ্য তেলের দামে যে লাগাম পড়েছে তার জন্য মোদি সরকার কোনও কৃতিত্ব দাবি করতে পারে না। এজন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য আন্তর্জাতিক বাজারের। বিশ্ব বাজারে ভোজ্য তেলের দামের পতনের কারণেই এইটুকু স্বস্তি ফিরেছে। আর সব্জির দাম সাধারণের নাগালে এসেছে প্রকৃতি সহায় হয়েছে বলে। অন্যদিকে চাল, ডাল, আটা, দুধ, চিনি, ডিম, পাউরুটি, বিস্কুট, চা, পেঁয়াজ, মাছ, মাংস প্রভৃতির দামেই ছ্যাঁকা অনুভূত হয়। একাধিক রাজ্যে বিধানসভা ভোট চলছে। ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছে লোকসভা নির্বাচন। সব মিলিয়ে জিনিসের দাম কমানোর জন্য কিছু পদক্ষেপ করতে সরকার বাধ্যই হয়েছে। কিন্তু তা যে ততটা ফলপ্রসূ হয়নি, বাজারের ছবিতেই তা পরিষ্কার। ‘আচ্ছে দিন’ নিয়ে ভাববার অবকাশ আর নেই, আপাতত কোনওক্রমে পেট ভরাবার চিন্তাতেই কাটছে সকলের। এই আশু দুশ্চিন্তা দূর করার ব্যাপারে সরকার বাহাদুর আরও কী কী করতে পারেন, ভাবুন দয়া করে। 
8Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা