সম্পাদকীয়

মোদির বিশ্বাসযোগ্যতা তলানিতে

আচ্ছে দিনের স্বপ্ন ফেরি করে কুর্সিতে বসেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির দেশ হবে ভারত। কমবে বেকারত্ব। বাড়বে কর্মসংস্থান। সেই দিন কবে আসবে, তা নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। এরই মধ্যে দেশের অর্থনীতির বহর এই প্রথম ৪ লক্ষ কোটি ডলার পেরিয়ে গিয়েছে বলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে এক বার্তা। জল্পনা আরও বেড়ে গিয়েছে মোদি সরকারের ‘ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত শিল্পপতি গৌতম আদানি, মহারাষ্ট্রের উপ মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবীশ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিশন রেড্ডি-সহ বহু বিজেপি নেতা সেই বার্তা ক্রমাগত ‘শেয়ার’ করে যাওয়ায়। সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর গুণগানও। সরকার অবশ্য এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে কে ছড়াল এই তথ্য? এই প্রশ্নের উত্তর এখনও না জানা গেলেও এটা স্পষ্ট, লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসবে ততই ছড়াবে এমন বহু তথ্য। অথচ, বাস্তবে ৪ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতির দেশে বেকারত্বের হার গত এক দশকে রেকর্ড হারে বেড়ে শীর্ষ স্তরে পৌঁছে গিয়েছে। অতিক্রম করেছে দশ শতাংশের চৌকাঠ। শিক্ষিত বেকারত্বের হার বেড়েছে চড়া হারে। স্নাতক বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছে ৪২ শতাংশ। সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি (সিএমআইই) বলছে, ২০০৮ থেকে ২০২৩, এই ১৫ বছরের মধ্যে দেশে সবথেকে বেশি বেকারত্বের হার বেড়েছে ২০২৩ সালে। আগে কখনও এই হারে বাড়েনি। রিপোর্টে বলা হয়েছে, যাঁদের বয়স ২৫ থেকে ২৯ বছরের মধ্যে, তাঁদের প্রায় ২২.৮ শতাংশ এখনও চাকরি পাননি। ৩০ থেকে ৩৪ বছর যাঁদের বয়স, তাঁদের মধ্যে বেকারত্বের হার ৯.৮ শতাংশ। যদিও প্রধানমন্ত্রী মোদি সাড়ম্বরে দাবি করে চলেছেন, তাঁর আমলে দেশের অর্থনীতির প্রসার ঘটছে এবং বেকারত্বের হার কমছে বিপুল হারে। মোদির সুরে সুর মিলিয়ে সম্প্রতি স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, দেশে বেকারত্ব নজিরবিহীন তলানিতে নেমেছে। শুধু তা-ই নয়, সেখানে সিএমআইই-র মতো উপদেষ্টার কর্মসংস্থান সংক্রান্ত সমীক্ষায় ত্রুটির কথাও বলা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, ওই সমীক্ষাগুলিতে অংশগ্রহণকারীদের নির্বাচন করার পদ্ধতিতে গোলমাল রয়েছে। সত্যিই কী তাই? আসলে, ২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন। সেই কারণেই মোদির দেশের বেকারত্বের হার কমিয়ে দেখানোর প্রয়োজন। তাতে অবশ্য আমআদমির কিছু যায় আসে না।
এ দেশের যুবসমাজের চোখের সামনে শুধুই অন্ধকার। মোদি সরকার ক্ষমতায় এসে বছরে ২ কোটি চাকরির যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তা আজ উধাও। মোদি জমানায় দেশের অর্থনীতির হাল যে ফেরেনি, তা বেকারত্বের হারে পরিষ্কার। বিশ্বকর্মা পুজোয় মহা সমারোহে নতুন কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে নতুন পিএম বিশ্বকর্মা প্রকল্প ঘোষণা হলেও মোদি ক্ষমতায় আসার পর থেকে দেশে এরকম কর্মসংস্থানের রকমারি প্রকল্পের ফানুস উড়েছে। এই সব প্রকল্প প্রচারের আলোয় কিছুকাল ভেসে থেকেছে। তারপরে আবার যে কে সেই। কোনও নতুন কাজের সন্ধান দিতে পারেনি সেই সব প্রকল্প। সিএমআইই তার সমীক্ষা রিপোর্টে জানাচ্ছে, ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল, এই ১৫ বছরে বেকারত্বের হার সর্বাধিক বেড়েছে ২০২৩ সালে। এই বছরগুলিতে বেকারত্বের হার ছিল যথাক্রমে শতাংশে ৫.১১, ৫.৫৪, ৫.৫৫, ৫.৪৩, ৫.৪১, ৫.৪২, ৫.৪৪, ৫.৪২, ৫.৩৬, ৫.৫৩৩, ৫.৩৭, ৮.০০, ৫.৯৮, ৭.৩৮ এবং ১০.০৯ (২০২৩)। বিশ্বব্যাঙ্কও জানিয়েছে, ২০২২ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী পড়শি দেশ পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও ভুটানের থেকেও ভারতে বেকারত্বের হার বেশি। 
বিরোধীরা ইতিমধ্যেই একে হাতিয়ার করে মাঠে নেমেছে। আর মোদি পিরিওডিক লেবার সমীক্ষা রিপোর্ট উল্লেখ করে বলেছেন, গত ছয় মাসে বেকারত্বের হার কমেছে। তাঁর আরও দাবি, ৫ হাজার নতুন আইটিআই তৈরি করায় শিল্প প্রশিক্ষণের সুযোগ বাড়ায় কর্মসংস্থান বেড়ে বেকারত্ব কমে গিয়েছে। কর্মসংস্থানের প্রশ্নটির রাজনৈতিক গুরুত্ব কেন্দ্রের শাসকরা বিলক্ষণ জানেন। গত দশ বছরে যে হাঁড়ির হাল হয়েছে, তা ধামাচাপা দিতে দেশজুড়ে রোজগার মেলা ইত্যাদির আয়োজন হচ্ছে। কিন্তু, নেহাত অন্ধ ভক্ত ছাড়া সকলেই এক বাক্যে স্বীকার করবেন যে, কয়েক লক্ষ সরকারি চাকরি দিয়ে দেশজোড়া বেকারত্বের সমস্যার সমাধান করা যায় না। যার মধ্যে আবার সিংহভাগই পুরনো পদ— কর্মী অবসর নেওয়ায় স্বাভাবিক নিয়মেই আসন খালি হয়েছে, এবং স্বাভাবিক নিয়মেই তাতে নতুন নিয়োগ হতো। তাতে অন্তত অর্থব্যবস্থার স্বাস্থ্যোদ্ধার হয় না। বেকারত্বের অসুখ লুকানোর চেষ্টা করে গেলে সমস্যা বাড়বেই। তাতে মোদির বিশ্বাসযোগ্যতা চলে যাবে আরও তলানিতে।
8Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা