সম্পাদকীয়

আরও বড় দুর্নীতি ও অপদার্থতা 

এই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ব্যাধির নাম নিঃসন্দেহে দুর্নীতি। সেটা সরকারি ক্ষেত্রে ঘটলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে হয় সমাজের সকলকেই এবং প্রত্যক্ষভাবে। কারণ সরকারি অর্থ ও সম্পদের মালিক কোনও ব্যক্তি বা নেতা নন, দেশের সকলে। সাধারণ মানুষ সারাজীবন ধরে নানাধরনের কর প্রদান করেন। সেসব অর্থ রাজস্ব হিসেবে রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়। কোষাগারের পরিস্থিতি ও স্বাস্থ্য অনুসারেই প্রতিবছরের বাজেট রচনা করে সরকার। বাজেট তৈরি হয় সমস্ত ক্ষেত্রের উন্নয়ন এবং সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়ে। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সম্পদের বণ্টন এবং ব্যয় অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গেই হওয়া প্রয়োজন। তার জন্য শুধু দক্ষতাই যথেষ্ট নয়, এই গুরুত্বপূর্ণ এবং অত্যন্ত স্পর্শকাতর কাজের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের আন্তরিকতা ও সততাও আবশ্যক। এই মাপকাঠিতে সামান্য ঘাটতি হলেই অস্বচ্ছতা বা দুর্নীতির আশঙ্কা থাকে। আমাদের দেশে সরকারি অর্থ ব্যয়ের সঙ্গে বহু মানুষ অনেকগুলি স্তরে যুক্ত থাকেন। তাঁদের কেউ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, কেউ সাধারণ কর্মী, কেউ-বা উচ্চ পর্যায়ের অফিসার। তাঁদের কাজের মধ্যে সমন্বয় এবং অন্তরের একসুর থাকা জরুরি। তবেই দুর্নীতিতে লাগাম পরানো সম্ভব।
কিন্তু সরকারি কাজকর্মের প্রকৃতি এতটাই জটিল যে দুর্নীতিদমনের চেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ কিছু হয় না। প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু দুর্নীতিবাজদের শেষ দেখে ছাড়ার হুঙ্কার দিয়েছিলেন। এই প্রশ্নে একরোখা মনোভাব ছিল ইন্দিরা গান্ধীরও। একের পর এক সরকার পাল্টেছে ঠিকই, কিন্তু দুর্নীতি রয়ে গিয়েছে তার জায়গাতেই। তাই উত্তরকালের আর এক প্রধানমন্ত্রীকে (রাজীব গান্ধী) দুর্নীতিরাজের সামনে নিজের অসহায়তাই প্রকাশ করতে দেখা গিয়েছিল প্রকাশ্যে! ট্র্যাডিশন যে তারপরেও ভাঙেনি, এই অনুমান ভ্রান্ত নয়। কিন্তু দুর্নীতি এবং অস্বচ্ছতা আছে বলে উন্নয়নের কাজ, মানুষের সেবার কাজ স্থগিত বা বাতিল করা চলে না। কড়া নজরদারির ভিতরেই চালিয়ে যাওয়া দরকার গরিবের উন্নয়নের কর্মসূচিগুলি। যেমন তাদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য বণ্টন, গৃহনির্মাণ, স্বাস্থ্যকর পানীয় জলের সংস্থান, চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ইত্যাদি। নজরদারির নামে এই কাজগুলি নানাসময়ে থমকে গেলে সার্বিকভাবে দেশকেই পিছিয়ে দেওয়া হবে। মনে রাখতে হবে, স্বাধীনতার ৭৫ বছর পরেও ভারত নিম্ন মধ্য আয়ের দেশের পংক্তিতে রয়েছে। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার, বিশ্ব ব্যাঙ্ক প্রভৃতি সংস্থা আশা প্রকাশ করেছে, ভারত যদি তার উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় গতি আনতে সক্ষম হয় তবে আগামী একদশকের ভিতরে মধ্য আয়ের দেশের স্তরে উন্নীত হতে পারবে। 
সব দেশই ‘উন্নত’ বিশ্বের অংশ হওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু ভারতের সামনে সেই পথটি এখনও সুদীর্ঘ। অগ্রযাত্রাপথটিকে হ্রস্ব করে আনার উপায় হল গরিবসহ সকলের নিরন্তর উন্নতি। কিন্তু ভারত এই ক্ষেত্রে দক্ষতার পরিচয় দিতে পদে পদে ব্যর্থ হচ্ছে। যেমন দুর্নীতি হচ্ছে ধরে নিয়ে মনরেগার কাজ একাধিক রাজ্যে রুখে দেওয়া হয়েছে। গরিব পরিবারের মাথার উপর ছাদের ব্যবস্থা করতে নেওয়া হয়েছে আবাস যোজনা। দুর্নীতির অভিযোগ সামনে রেখে রাজ্য বিশেষের ক্ষেত্রে সেখানেও চলছে দীর্ঘ টালবাহানা। এই অদ্ভুত কেন্দ্রীয় নীতির শিকার পশ্চিমবঙ্গ। খেয়াল করার বিষয় হল, পশ্চিমবঙ্গে দীর্ঘকাল যাবৎ বিরোধী দলের সরকার প্রতিষ্ঠিত। ইউপিএ আমলের থেকে নরেন্দ্র মোদির এনডিএ জমানায় চেনা বঞ্চনা মাত্রাছাড়া হয়ে গিয়েছে। একবছর যাবৎ বাংলাকে মনরেগার বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে না এবং আবাস যোজনায় বঞ্চিত হচ্ছে লক্ষ লক্ষ গরিব পরিবার। কেন্দ্রের অভিযোগ খণ্ডন করে রাজ্য সরকার বারবার সদুত্তর দেওয়ার পরেও দিল্লি হাত গুটিয়ে বসে রয়েছে। এতে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের চেয়ে মোদি সরকারের রাজনৈতিক সঙ্কীর্ণতার নীতিই প্রকট হচ্ছে বেশি। গরিবের সঙ্গে এই বঞ্চনা যে আরও বড় দুর্নীতি, তৎসহ অপদার্থতাও এই বোধ দিল্লির আর কবে হবে?
16Months ago
কলকাতা
রাজ্য
দেশ
বিদেশ
খেলা
বিনোদন
ব্ল্যাকবোর্ড
শরীর ও স্বাস্থ্য
বিশেষ নিবন্ধ
সিনেমা
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
আজকের দিনে
রাশিফল ও প্রতিকার
ভাস্কর বন্দ্যোপাধ্যায়
mesh

পারিবারিক অশান্তির অবসানে গৃহ সুখ ও শান্তি বাড়বে। প্রেমের ক্ষেত্রে শুভ। কর্মে উন্নতি। উপার্জন বৃদ্ধি।...

বিশদ...

এখনকার দর
ক্রয়মূল্যবিক্রয়মূল্য
ডলার৮৩.২৬ টাকা৮৪.৩৫ টাকা
পাউন্ড১০৬.৪৬ টাকা১০৯.১২ টাকা
ইউরো৮৯.৭৬ টাকা৯২.২০ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
*১০ লক্ষ টাকা কম লেনদেনের ক্ষেত্রে
দিন পঞ্জিকা