ম্যাজিক মানে শুধুই খেলা? পড়ার লেশমাত্র নেই? মোটেও না, ম্যাজিকে এবার লেখাপড়ার বিষয়গুলোও ভরে দেওয়া হল। পড়াশোনার বিভিন্ন বিষয়ের ওপর দারুণ ম্যাজিক দেখাবেন থিম ম্যাজিশিয়ান সোমনাথ দে। আর প্রতি মাসের একটা করে রবিবার তোমাদের জন্য থাকবে ম্যাজিকে লেখাপড়া। এবারের বিষয়  ফিজিক্যাল ট্রেনিং। ম্যাজিশিয়ানের সঙ্গে কথা বলেছেন কমলিনী চক্রবর্তী।

পড়ার ম্যাজিক এবার প্রায় শেষ পর্যায়। ম্যাজিশিয়ান সোমনাথ দে পড়াশোনাকে থিম করে বহু ধরনের ম্যাজিক শিখিয়েছেন তোমাদের। লেখাপড়ার বিষয়গুলির মধ্যে থেকেই এবার ফিজিক্যাল ট্রেনিং বিষয়টিকে বেছে নিয়ে দু-দু’খানা মজার ম্যাজিক তৈরি ফেলেছেন তিনি। সেগুলো শিখে নিয়ে তোমরাও দেখাতে পার সবাইকে। শিখবে নাকি ম্যাজিক দুটো?

ম্যাজিক ১
প্রথম ম্যাজিকেই এবার বাজিমাত করলেন ম্যাজিশিয়ান সোমনাথ। একটি মহিলাকে শূন্যে ভাসিয়ে দিলেন তিনি। ভাবতেই অবাক লাগছে তো? কেমন করে আবার তা সম্ভব? ভাবছ নিশ্চয়ই সকলে। তাহলে বলি শোনো। ম্যাজিশিয়ান বললেন এতদিন ছোটদের ম্যাজিক শিখিয়েছেন তিনি। এই ম্যাজিকটি কিন্তু একটু বড়দের জন্য। এর জন্য দুটো চেয়ার আর একটা টেবিল লাগবে। একটা দেওয়াল লাগবে আর তার গায়ে স্ক্রু দিয়ে ফিক্সড করা একটা ‘এল’ অ্যাঙ্গেল লাগবে। ম্যাজিকটা শুরু করার আগেই গোটা সেটআপটা করে রাখতে হবে। যে টেবিলটা নেওয়া হবে তাতে কিন্তু কোনও পায়া থাকবে না। চেয়ার দুটো মুখোমুখি রাখতে হবে। তার ওপর পায়া ছাড়া টেবিলটা পেতে দিতে হবে। আর সেই টেবিলের ওপর শুয়ে থাকবে একজন মহিলা এবং তারপর চেয়ার দুটো আস্তে করে সরিয়ে নিলে দেখা যাবে টেবিল কিন্তু পড়ে যাবে না। বরং শূন্যে ভাসবে। আর তার ওপর শুয়ে থাকা মেয়েটিও ভেসে থাকবে। তোমরা তো এতক্ষণে চোখ গোলগোল করে ভাবছ এমনও আবার হয় নাকি। অবশ্যই হয়। আর সেই রহস্য ফাঁস করলেন জাদুকর। 
পদ্ধতি: এই ম্যাজিকের মূল রহস্য রয়েছে ওই অ্যাঙ্গেলটিকে ঘিরেই। একটা দেওয়ালে অ্যাঙ্গেলটা লাগানোর পর টেবিলটা তার ওপর বসিয়ে এপাশে ওপাশে চাপ দিয়ে দেখে নিতে হবে যে তা ঠিকমতো ব্যালান্স করা হয়েছে কি না। এরপর দু’পাশ থেকে দুটো চেয়ার টেবিলের মুখে মুখে এনে রাখতে হবে। এবং একজন মহিলাকে ওই টেবিলের ওপর শুইয়ে রাখতে হবে। দূর থেকে দর্শকরা দেখবেন পায়া ছাড়া টেবিলের ওপর মহিলা শুয়ে আছেন। আর সেই টেবিলের সাপোর্ট রয়েছে দুটো চেয়ার। এরপর ম্যাজিসিয়ান ম্যাজিকটা নিয়ে গল্প বলতে বলতে আস্তে করে চেয়ার দুটো সরিয়ে নেবেন। টেবিল কিন্তু যেমনকার তেমনই অ্যাঙ্গেলের ওপর ব্যালান্স করে আটকে থাকবে। আর তার ওপর শুয়ে থাকবেন একজন মহিলা। দর্শকরা দেখে ভাববেন মহিলাটি ভেসে রয়েছেন। আলোর খেলায় অ্যাঙ্গেল সাপোর্ট দেখা যাবে না। বরং দেখা যাবে শবাসনে ভেসে থাকা মহিলাটিকে।

ম্যজিক ২
দ্বিতীয় ম্যাজিকটাও ভেসে থাকারই ম্যাজিক। তবে এটা শুয়ে ভাসার ম্যাজিক নয়। বরং বসে ভাসার ম্যাজিক। একটা বড় লম্বা লোহার পাইপের ওপর পদ্মাসনে একজন মানুষকে বসিয়ে রাখা যায় এই ম্যাজিকের সাহায্যে। এই ম্যাজিকটার জন্য একটা তিন ফুটের পাইপ লাগবে, একটা লোহার শিট লাগবে আর একটা কার্পেট লাগবে দু’ফুট বাই দু’ফুট মাপের। লোহার শিটটাও কার্পেটের মাপেরই হওয়া চাই। প্রথমে লোহার শিটটা মাটিতে পাততে হবে। তাতে একটা গর্ত করা থাকবে এবং ওই শিটটা কার্পেট দিয়ে চাপা দিতে হবে। এবার তার ওপর পাইপটা আটকে দিতে হবে। যিনি ওই পাইপের ওপর নিজেকে ব্যালান্স করে তুলে ধরবেন তিনি পদ্মাসনে মাটি থেকে পা তুলে বসলেও কখনওই পড়ে যাবেন না।
পদ্ধতি: আসলে মূল রহস্যটা লুকিয়ে আছে ওই লোহার পাইপের ওপর। পাইপটার মুখের কাছে একটা গোল রিং লাগানো থাকবে। আর লোহার শিট বা পাতের ভেতর গর্ত করে রডটা লাগানো থাকবে।  ওই রিংটা কার্পেট দিয়ে ঢাকা থাকবে। যেন কার্পেটটা রডের মাথায় শূন্যে ভাসমান। এবার ওই রডের ওপর যখন  কেউ বসবেন তখন রিংয়ের সাপোর্টে তিনি পড়েও যাবেন না, আবার দূর থেকে দেখলে মনে হবে যেন তিনি মহাশূন্যে ভাসছেন। শুধু পোশাকের ক্ষেত্রে একটু সচেতন থাকতে হবে। কারণ এখানে একটু ধুতি স্টাইলের কাপড় পড়লে রড ও রিং দুটোই ঢাকা পড়ে যাবে।