পিতার স্বাস্থ্যহানী হতে পারে। আর্থিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব হবে না। পঠন-পাঠনে পরিশ্রমী হলে সফলতা ... বিশদ
চিলেকোঠায় থাকতে আমার কোনও অসুবিধাই নেই। গরমে দখিনা হাওয়া, শীতে রোদ্দুরের ওম পাই। আমি দেখেছি ভালো লাগাটা মনের ব্যাপার, না হলে বড় বড় ঘরে থেকেও কাকু-জেঠুরা খুশি কোথায়? অধুনা ছাদের ভাগাভাগি নিয়ে মন কষাকষি চলছে তো দু’পক্ষে। আমি তো ফেকলু পার্টি, আমাকে নিয়ে ওদের টেনশন নেই। বাপ-মায়ের শোক আর টাইফয়েডে আমার মাথাটা নাকি গোলমাল হয়ে এই বে-হাল। পড়াশোনায় জুত হল না। কাকু-জ্যাঠার উত্তর-পুরুষরা ‘ক্যাট’ ‘ম্যাটে’র দৌলতে আধুনিক ট্রেন্ড অনুসারে পশ্চিমবাংলা ছেড়ে ভাগলবা। কেবল আমি অভাগা, সকলের ঝেড়ে ফেলা ‘মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ’কে জাপটে কোনও মতে টিকে আছি। পাড়ার যত হিংলিশ ছেলেপুলেরা আমার ছাদ-ঘরের টিউশনের আখড়ায় বসলেই বাংলায় পাশ। প্রাণপণ প্রচেষ্টায় বোঝাতে চাই ওদের শুধু নম্বরের জন্য নয়, বাংলাকে ভালোবাসলে মধু কবির মতন বাছারা পেলেও পেতে পারিস ‘অমূল্য রতন’, কিন্তু দেখছি জয়েন্ট এন্ট্রান্সে ফোকাসড সুপার ইন্টেলিজেন্ট প্রজন্মকে বাগে আনা আমার পক্ষে প্রায় ‘না মুমকিন হ্যায়’। তবে আশা ছাড়িনি, নানাবিধ হীনতার কারণে প্রচুর দীনতা থাকলেও আমি আশাবাদী। জেঠি বলেন, ‘বোকারা আকাশ-কুসুম কল্পনার জগতে থাকে’, আমাকে আড়ালে এ বাড়িতে বোকা বলা হয়। বোকাই বটে! না হলে দুই সেট বুড়ো-হাবড়াদের দেখাশোনার জন্য আমাকে সেট করে দিয়ে কাজিনরা তাদের জেট-সেট জীবনে উধাও হয়? হাঁপানি, গেঁটে ব্যথা, হাই সুগার, বিকল হার্ট— তিন মাস অন্তর বুড়ো-বুড়িদের ডাক্তারি চেক-আপ, এ বাড়ির ও তার বাসিন্দাদের মেইন্টেন্যান্সের যাবতীয় কর্মে ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো এই অভাগা। তবে এই জীবনে আমি দিব্যি আছি। খোলামেলা ছাদ-ঘর। মাথার উপর মুক্ত আকাশ। বসের চাঁটা নেই, মাথার ঘাম পায়ে ফেলা ইঁদুর-দৌড় নেই, এমনকি বউয়ের খিঁচুনিও নেই। বউ প্রসঙ্গে বলি, জেঠির মতে আমাকে তো কেউ মেয়ে দেবে না। কথাটা ভুল। বাংলাদেশে আমার মতন বোকাদেরও বউ জোটে। আদতে বিয়ে দিতে গুরুজনদের কারও চাড় ছিল না, আমারও না। কেন সেটা এবার বলি।
আমার জীবনেও একটু-আধটু রসের জোগান আছে, আছেন এক বনলতা সেন। কবিতার নয়, একেবারে জলজ্যান্ত। পাশের বাড়ির তিনতলায় থাকেন, মিঃ সেন বিখ্যাত হার্ট স্পেশালিস্ট ছিলেন। রাশি রাশি গোলমেলে হার্ট সামলানোর কঠিন চক্করে নিজের হার্টটিকে অকালে উৎসর্গ করেছেন বেচারা।
আমি যখন হাফপ্যান্ট থেকে ফুল প্যান্টে প্রমোটেড হলাম, গোঁফের রেখা আসি আসি, তখন পাশের বাড়িতে বনলতা বধূ বেশে গাড়ি থেকে নামলেন। হাঁ করে দেখতে দেখতে সেই যে টালমাটাল হলাম এখনও এই আধা বুড়ো বয়সেও আর তালে ফিরতে পারিনি। বাপরে! রূপসী হো তো অ্যায়সা! ডানাকাটা পরী তায় বিদুষী। বনলতার রূপ আর ডাক্তারকাকুর অঢেল টাকা, ফলে তাদের ড্রইংরুম ভরে থাকত স্তাবকে। স্বরচিত কবিতা পাঠ করতেন বনলতা আর ফ্রি সুরায় আচ্ছন্ন স্তাবকদের ‘আহা’র বন্যায় ভাসতেন। ওই মেহফিলে যোগ দেবার প্রবল বাসনা বুকে চেপে আমার দিন কাটত। কবিতা আমিও ভালোবাসি, কিন্তু গর্বিত রাজহংসীটির কাছাকাছি যাবার যোগ্যতাই কোনদিন হল না। অগত্যা ‘আকাশ কুসুম’ হয়ে রয়ে গেলেন বনলতা।
ছেলেবেলায় দুষ্টুমি করে সেনেদের খোলা ছাদে বল ফেলে ‘কাকিমা’কে ডাকলে উনি শোবার ঘর থেকে আলুথালু বেরিয়ে বলটা ফিরিয়ে দিতেন। কোনওদিন রাগেননি। ‘এত জোরে ছুঁড়িস কেন? তোর বল এবার হারাবে!’ হায়রে, বল তো তুচ্ছ, আমিই বলে হারিয়ে বসে আছি! এইভাবে কেটে গেল এতগুলো বছর! বনলতার সংসার জীবনের সম্পৃক্ত দর্শক হয়ে অপরিবর্তনের পাঁকে বুঁদ হয়ে পড়ে আছি। আমার সামনে তিনি বয়স্কা হলেন, বিধবা হলেন, ছেলে বিদেশে গেল, স্তাবক দল হাওয়ায় মেলাল। জেঠির বনলতাকে ভারী অপছন্দ। আমি কারণ জিজ্ঞাসা করলে বলতেন, ‘বড্ড দেমাকি আর বাউন্ডুলে মহিলা! অসংসারী। ডাক্তার ঠাকুরপোকে যত্ন করেনি একটুও। ছেলেটাকে তো আয়াই মানুষ করেছে। তাই ছেলেরও টান নেই মায়ের উপর, ফিরিঙ্গি মেয়ে বিয়ে করে এ মুখো হবার আর মুখ নেই ছেলের।’ ‘আমি জানি, উনি তোমার সত্যনারায়ণের পূজায় আসেন না তাই তোমার রাগ।’ আমি জেঠিকে খোঁচা মারি।
‘রাগ হবে না? বারের পুজো বলে কথা। তবে কোথাওই যায় না তো। কোন লৌকিকতা মানে? কীসের যে এত গর্ব! শরীর খারাপ শুনি, কিন্তু কী হয়েছে কেউ জানে না। আগে তো পার্টি, কবিতার আসর, ফুর্তিতে মেতে থাকত, এখন তিনতলার টঙে উঠে বসে আছে। একা একা থাকিস একটু তো প্রতিবেশীদের সঙ্গে মানিয়ে চলবি বাপু!’ ওঁর এই একা একা ভাবটাই তো আমায় টানে। একা থাকাটা একটা আর্ট। নিজেকেই হতে হবে নিজের বন্ধু। ক’জন পারে সেটা? বনলতা পেরেছেন। সাধারণ মানুষ বোঝে না উদাসীন বনলতাদের। উনি নিয়মের খাঁচায় বদ্ধ তোতা পাখি হয়ে বাঁচতে চাননি।
আমি তো দেখি ঘণ্টার পর ঘণ্টা উনি বেডরুম লাগোয়া ছোট ছাদটায় ফুলগাছের পরিচর্যা করেন। কত ফুল ফোটান। পূর্ণিমা রাতে মোমের পুতুল হয়ে চাঁদের আলোয় ভাসেন। ঘরময় ছড়ানো নিজের পয়সায় ছাপানো পুরনো কবিতার বই নিয়ে ডুবে থাকেন নির্জন দুপুরে। উনি একজন আত্মস্থ মানুষ, আমি ওঁকে বেশ বুঝি। তবে আমি যে ওকে দেখি সেটা বুঝতে দিই না পাছে উনি অস্বস্তিতে পড়েন।
একা বাঁচা কাকে বলে সে আমিও বেশ জানি। আমি যখন বারো, দোলে গাড়ি নিয়ে শান্তিনিকেতন গেলেন বাবা-মা। খুড়তুতো ভাই-বোনদের সঙ্গে রং খেলার আকর্ষণ ছেড়ে যাওয়া তখন আমার কাছে অসম্ভব। বাবা-মা ফেরেননি, ফিরল দুটো ডেডবডি। সেই থেকে সংসারকে নতুন করে চেনার শুরু। আশপাশের মানুষদের বদলাতে দেখলাম ধীরে ধীরে। বাস্তব সম্পর্ক বদলায়, কল্পনার সম্পর্কের বদল হয় না। তার চাবিকাঠিটা যে আমারই হাতে। আমার বনলতা তাই পার্মানেন্ট হয়ে রয়ে গেলেন আমার জীবনে।
‘ফেসবুকে’ আমি একদিন বনলতাকে পেলাম। ছবিটা আগের, তাঁর চোখ দুটিতে তখন পাখির নীড়ের আশ্রয়, মুখের স্থাপত্যে শ্রাবস্তীর কারুকার্য। এই পুরনো বনলতাকে খুব চিনি। ‘জয় মা’ বলে পাঠালাম বন্ধুত্বের অনুরোধ! কী কাণ্ড? ‘বহুদিনের প্রতিবেশী’কে বনলতা গ্রহণ করলেন। মন বলল, অবশেষে স্বপ্ন সফল হল, ওঁর জৌলুসহীন আলো নেভা মেহফিলে পা রাখলাম আমি। বনলতা ‘ফেসবুকে’ কবিতা লেখেন। আমি তৎক্ষণাৎ পড়ে ভালোলাগা জানাই। কখনও মন্তব্য করি, উনি উত্তর দেন। সবই হয় বাতাসে উড়ে উড়ে, সামনাসামনি রয়ে যায় সেই আবাল্যের দূরত্ব। বুঝি না আদৌ জানেন কি আমার পরিচয়? খেয়াল করেছেন কি আমার নীরব অস্তিত্ব? আমি তার কবিতায় তাকে ঘিরে থাকা ঝুমকো লতা, একলা ছাতিম গাছ, কার্নিসের নিঃসঙ্গ ঘুঘুদের দিব্যি শনাক্ত করি, ঘ্রাণ পাই ওঁর যাপন বৃত্তান্তের।
কবিতা কিন্তু তিনি ভালোই লেখেন। সামাজিক অবক্ষয়, ক্ষয়িষ্ণু মানবিকতার কথা লেখেন। ধীরে ধীরে তার পাঠক দল ভারী হচ্ছে। অল্প বয়সে প্রশংসায় না ভেসে, খেটেখুটে মন দিয়ে লিখলে তিনি কবি হিসাবে এতদিনে দাঁড়িয়ে যেতে পারতেন।
আজ কিছুদিন ধরে দেখছি ‘ফেসবুকে’ তাঁর পোস্ট করা কবিতা নিঃসঙ্গতার সুরে ম্রিয়মাণ। বড্ড নিরাশার কথা বলে তাঁর আজকের কবিতা ‘একলা কাঙাল’। এমন তো বড় ঘটে না। গুণমুগ্ধরা তাঁর ভেঙে পড়া মানসিকতাকে পজিটিভ করে তোলার উপদেশ দিয়েছেন দেখলাম। আমি কিছুই লিখিনি, কবিতাটা পড়ে আমার মন খারাপ হয়ে গেল।
ঘর থেকে বেরিয়ে আসি। রাতের নির্জনতাকে ভেঙে দেয় মেঘের গভীর গর্জন, ছাদের পাশে এসে দেখি আকাশ ছেয়ে কালো মেঘ, বিদ্যুতের রেখা এঁকেবেঁকে সাপের জিভের মতন ছোবল মারছে। প্রবল হাওয়ার ঝাপটায় ধুলো উঠছে কুণ্ডলী পাকিয়ে। সামনেই বনলতার শোবার ঘর। ভাবছি তাঁরই কথা আর তখনই দমকা বাতাসে উড়ে গেল বনলতার জানলার পর্দা, আমি দেখলাম এক অলৌকিক অবিশ্বাস্য দৃশ্য। খাটের উপর টুল, তার উপরে বনলতা। গলা পেঁচিয়ে শাড়ির ফাঁস উঠে গেছে ফ্যানের উচ্চতায়। আমি এত চমকে যাই যে কথা বলতে পারি না, বনলতা দমকা বাতাসের ধাক্কায় দুলে উঠে জানলার দিকে মুখ ফেরান। যে কোনও মুহূর্তে এখন অঘটন ঘটে যেতে পারে, হাতে সময় নেই, আমি চেঁচাই— ‘কাকিমা, এমন করবেন না প্লিজ—’
আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে রইলেন এইদিকে, শ্রাবস্তীর ধ্বংসস্তূপকে দেখি জীবন আর মৃত্যুর মাঝখানে মাত্র কয়েক মিটারের দূরত্বে। হাওয়ায় পর্দা সরে যাওয়ায় পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি একে অপরকে। অপ্রত্যাশিত ঘটনার আকস্মিকতায় বিমূঢ় বনলতা থমকে আছেন!
‘প্লিজ, প্লিজ— নেমে আসুন!’
আমি ঝুঁকে পড়ি, পারলে লাফ মেরে পৌঁছে যাই। দাঁড়িয়ে রইলেন। কয়েক মিনিটই হবে, আমার কাছে সেকেন্ডরা এখন ঘণ্টার মতন দীর্ঘ। তারপর ধীর হাতে ফাঁসটা খুলে সাবধানে নেমে এলেন মেঝেতে। হাওয়ায় এলোমেলো চুল, রক্তশূন্য মুখে এগিয়ে এলেন। জানলার মুখ চেপে বিস্ফারিত চোখে চেয়ে বললেন, ‘আরেকটু হলে মরে যেতাম’—
‘আপনি এটা কী করছিলেন?’— আমি রাগই করে ফেলি, আসলে তো বুক কাঁপছে।
‘তুমি তো আজ আমার কবিতার কমেন্ট করনি তপেন।’
‘আপনি আমার নাম জানেন?’
‘সবাই ক্রিটিসাইজ করল, কেউ বুঝল না, আমি আর বাঁচতে চাই না তপেন।’
‘আপনি তো কোনওদিন এত ভেঙে পড়েন না, কী হয়েছে? খুব কষ্টে আছেন মনে হল।’
‘তুমি কি টের পেয়েছিলে আমার কষ্ট?’
‘আপনার কবিতায় কিছু দিন ধরেই দেখছি অবসাদ, আপনি ভালো নেই। আমার মন খারাপ করছিল, আপনার জন্য চিন্তা হচ্ছিল। ভাবলাম আপনার কাছে একবার যাই, কিন্তু এত রাত, খারাপ দেখায়, চেনেনও না।’
‘আসলে পারতে, বড্ড ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। বুঝলাম মানুষ নিজেকেই সবথেকে বেশি ভালোবাসে। কত শোক সামলেছি, নিজেকে শক্তও ভাবতাম। জানো আজ— ডাক্তার আমার বায়োপ্সি রিপোর্ট দিল— ব্রেস্ট ক্যান্সার— সেকেন্ড স্টেজ।’
আমি ভিতরে কেঁপে যাই।
‘তো? ক্যান্সার এখন জলভাত, কত ওষুধ বেরিয়েছে, ঠিক হয়ে যাবেন।’
‘লম্বা যুদ্ধ তপেন, ছেলে এলেও বেশিদিন থাকবে কি? একা টানতে পারব না তপেন, আমার ভয় করছে।’
হাওয়ার সঙ্গে লড়ে অনর্গল কথা বলছেন বনলতা, আমি দেখছি ওঁর গাল বেয়ে নামছে জলের ধারা। টের পাই বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি নেমে আমার চোখ-মুখে পড়ছে। বৃষ্টির জল কী লোনা হয়?
আমি লবণাক্ত জলের ধারা মুছে বলি, ‘কীসের ভয়? আরে আমি তো আছি, একদম ভাববেন না, ডাক্তার-বদ্যিতে আমি এক্সপার্ট! কাল সকালেই আমি আসছি, এখন লক্ষ্মী মেয়ের মতন ঘুমিয়ে পড়ুন। আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে তো আপনার?’
‘তা হচ্ছে তপেন। কবে থেকে দেখছি তো তোমাকে— কত বড় হয়ে গেছ, সকলের খেয়াল রাখো তুমি, তোমার বাবা-মা বেঁচে থাকলে তোমার জন্য গর্বিত হতেন—’
আমি তপেন বাগচি, বোকাটে সংসারে উদ্বৃত্ত, আকাশ-কুসুম কল্পনার জগতের বাসিন্দা, একটা ফেকলু অস্তিত্ব, তাকে এসব কী বলছেন মিসেস সেন? বহু যুগ ওপারে, আবছা হয়ে আসা, আমার বাবা-মায়ের মুখ মনে পড়ল। আমার রুক্ষ অস্তিত্বে কত কত বছর পর মায়ের আদরের নরম স্পর্শের অনুভূতি ফিরে এল। আমার নিঃসঙ্গ ছাদ-ঘর বিদ্যুতের তীব্র ঝলকে ক্ষণে ক্ষণে আলোকিত হচ্ছে— তপ্ত রাতের শরীরে করুণার মতন ঝরে পড়ছে বৈশাখী জলের শীতল ধারা, এ এক আশ্চর্য রাত— আজ আমার এতটুকু একা লাগছে না আর— বনলতা গ্রিল ধরে বৃষ্টির ধারাপাতের দিকে চেয়ে আছেন— এখন নৈঃশব্দ্য— এখন বর্ষণ—ভিতরে বাইরে...
অলংকরণ : সুব্রত মাজী