Bartaman Patrika
গল্পের পাতা
 

ফেসবুকে বনলতা
শুচিস্মিতা দেব 

আমি তপেন বাগচি। পেশাহীন এবং নেশাহীন ছাপোষা মানুষ। পেশার অভাবে নেশা করার হিম্মত হয়নি কখনও। অভিজাত পাড়ায় ঠাকুরদার আমলের দোতলা বাড়িতে বিনা পয়সার বাসস্থান। বাবা ছিলেন ব্যারিস্টার ঠাকুরদার ল ফার্মের যোগ্য উত্তরাধিকারী। অ্যাক্সিডেন্টে তিনি সহধর্মিণী সহ স্বর্গে গেলে, জ্যাঠামশাই কোন মতে এখন ফার্মের হাল ধরে আছেন। কাকু-কাকি দোতলায়, দু’জনেই রিটায়ার্ড প্রফেসর। একতলায় মাতৃসমা জেঠিমার হেঁশেলে তিনবেলা খাওয়াটা জোটে। যেহেতু পঁয়তাল্লিশেও অকৃতদার, ছাদ-ঘর আমার ঠিকানা।
চিলেকোঠায় থাকতে আমার কোনও অসুবিধাই নেই। গরমে দখিনা হাওয়া, শীতে রোদ্দুরের ওম পাই। আমি দেখেছি ভালো লাগাটা মনের ব্যাপার, না হলে বড় বড় ঘরে থেকেও কাকু-জেঠুরা খুশি কোথায়? অধুনা ছাদের ভাগাভাগি নিয়ে মন কষাকষি চলছে তো দু’পক্ষে। আমি তো ফেকলু পার্টি, আমাকে নিয়ে ওদের টেনশন নেই। বাপ-মায়ের শোক আর টাইফয়েডে আমার মাথাটা নাকি গোলমাল হয়ে এই বে-হাল। পড়াশোনায় জুত হল না। কাকু-জ্যাঠার উত্তর-পুরুষরা ‘ক্যাট’ ‘ম্যাটে’র দৌলতে আধুনিক ট্রেন্ড অনুসারে পশ্চিমবাংলা ছেড়ে ভাগলবা। কেবল আমি অভাগা, সকলের ঝেড়ে ফেলা ‘মাতৃভাষা মাতৃদুগ্ধ’কে জাপটে কোনও মতে টিকে আছি। পাড়ার যত হিংলিশ ছেলেপুলেরা আমার ছাদ-ঘরের টিউশনের আখড়ায় বসলেই বাংলায় পাশ। প্রাণপণ প্রচেষ্টায় বোঝাতে চাই ওদের শুধু নম্বরের জন্য নয়, বাংলাকে ভালোবাসলে মধু কবির মতন বাছারা পেলেও পেতে পারিস ‘অমূল্য রতন’, কিন্তু দেখছি জয়েন্ট এন্ট্রান্সে ফোকাসড সুপার ইন্টেলিজেন্ট প্রজন্মকে বাগে আনা আমার পক্ষে প্রায় ‘না মুমকিন হ্যায়’। তবে আশা ছাড়িনি, নানাবিধ হীনতার কারণে প্রচুর দীনতা থাকলেও আমি আশাবাদী। জেঠি বলেন, ‘বোকারা আকাশ-কুসুম কল্পনার জগতে থাকে’, আমাকে আড়ালে এ বাড়িতে বোকা বলা হয়। বোকাই বটে! না হলে দুই সেট বুড়ো-হাবড়াদের দেখাশোনার জন্য আমাকে সেট করে দিয়ে কাজিনরা তাদের জেট-সেট জীবনে উধাও হয়? হাঁপানি, গেঁটে ব্যথা, হাই সুগার, বিকল হার্ট— তিন মাস অন্তর বুড়ো-বুড়িদের ডাক্তারি চেক-আপ, এ বাড়ির ও তার বাসিন্দাদের মেইন্টেন্যান্সের যাবতীয় কর্মে ছাই ফেলতে ভাঙা কুলো এই অভাগা। তবে এই জীবনে আমি দিব্যি আছি। খোলামেলা ছাদ-ঘর। মাথার উপর মুক্ত আকাশ। বসের চাঁটা নেই, মাথার ঘাম পায়ে ফেলা ইঁদুর-দৌড় নেই, এমনকি বউয়ের খিঁচুনিও নেই। বউ প্রসঙ্গে বলি, জেঠির মতে আমাকে তো কেউ মেয়ে দেবে না। কথাটা ভুল। বাংলাদেশে আমার মতন বোকাদেরও বউ জোটে। আদতে বিয়ে দিতে গুরুজনদের কারও চাড় ছিল না, আমারও না। কেন সেটা এবার বলি।
আমার জীবনেও একটু-আধটু রসের জোগান আছে, আছেন এক বনলতা সেন। কবিতার নয়, একেবারে জলজ্যান্ত। পাশের বাড়ির তিনতলায় থাকেন, মিঃ সেন বিখ্যাত হার্ট স্পেশালিস্ট ছিলেন। রাশি রাশি গোলমেলে হার্ট সামলানোর কঠিন চক্করে নিজের হার্টটিকে অকালে উৎসর্গ করেছেন বেচারা।
আমি যখন হাফপ্যান্ট থেকে ফুল প্যান্টে প্রমোটেড হলাম, গোঁফের রেখা আসি আসি, তখন পাশের বাড়িতে বনলতা বধূ বেশে গাড়ি থেকে নামলেন। হাঁ করে দেখতে দেখতে সেই যে টালমাটাল হলাম এখনও এই আধা বুড়ো বয়সেও আর তালে ফিরতে পারিনি। বাপরে! রূপসী হো তো অ্যায়সা! ডানাকাটা পরী তায় বিদুষী। বনলতার রূপ আর ডাক্তারকাকুর অঢেল টাকা, ফলে তাদের ড্রইংরুম ভরে থাকত স্তাবকে। স্বরচিত কবিতা পাঠ করতেন বনলতা আর ফ্রি সুরায় আচ্ছন্ন স্তাবকদের ‘আহা’র বন্যায় ভাসতেন। ওই মেহফিলে যোগ দেবার প্রবল বাসনা বুকে চেপে আমার দিন কাটত। কবিতা আমিও ভালোবাসি, কিন্তু গর্বিত রাজহংসীটির কাছাকাছি যাবার যোগ্যতাই কোনদিন হল না। অগত্যা ‘আকাশ কুসুম’ হয়ে রয়ে গেলেন বনলতা।
ছেলেবেলায় দুষ্টুমি করে সেনেদের খোলা ছাদে বল ফেলে ‘কাকিমা’কে ডাকলে উনি শোবার ঘর থেকে আলুথালু বেরিয়ে বলটা ফিরিয়ে দিতেন। কোনওদিন রাগেননি। ‘এত জোরে ছুঁড়িস কেন? তোর বল এবার হারাবে!’ হায়রে, বল তো তুচ্ছ, আমিই বলে হারিয়ে বসে আছি! এইভাবে কেটে গেল এতগুলো বছর! বনলতার সংসার জীবনের সম্পৃক্ত দর্শক হয়ে অপরিবর্তনের পাঁকে বুঁদ হয়ে পড়ে আছি। আমার সামনে তিনি বয়স্কা হলেন, বিধবা হলেন, ছেলে বিদেশে গেল, স্তাবক দল হাওয়ায় মেলাল। জেঠির বনলতাকে ভারী অপছন্দ। আমি কারণ জিজ্ঞাসা করলে বলতেন, ‘বড্ড দেমাকি আর বাউন্ডুলে মহিলা! অসংসারী। ডাক্তার ঠাকুরপোকে যত্ন করেনি একটুও। ছেলেটাকে তো আয়াই মানুষ করেছে। তাই ছেলেরও টান নেই মায়ের উপর, ফিরিঙ্গি মেয়ে বিয়ে করে এ মুখো হবার আর মুখ নেই ছেলের।’ ‘আমি জানি, উনি তোমার সত্যনারায়ণের পূজায় আসেন না তাই তোমার রাগ।’ আমি জেঠিকে খোঁচা মারি।
‘রাগ হবে না? বারের পুজো বলে কথা। তবে কোথাওই যায় না তো। কোন লৌকিকতা মানে? কীসের যে এত গর্ব! শরীর খারাপ শুনি, কিন্তু কী হয়েছে কেউ জানে না। আগে তো পার্টি, কবিতার আসর, ফুর্তিতে মেতে থাকত, এখন তিনতলার টঙে উঠে বসে আছে। একা একা থাকিস একটু তো প্রতিবেশীদের সঙ্গে মানিয়ে চলবি বাপু!’ ওঁর এই একা একা ভাবটাই তো আমায় টানে। একা থাকাটা একটা আর্ট। নিজেকেই হতে হবে নিজের বন্ধু। ক’জন পারে সেটা? বনলতা পেরেছেন। সাধারণ মানুষ বোঝে না উদাসীন বনলতাদের। উনি নিয়মের খাঁচায় বদ্ধ তোতা পাখি হয়ে বাঁচতে চাননি।
আমি তো দেখি ঘণ্টার পর ঘণ্টা উনি বেডরুম লাগোয়া ছোট ছাদটায় ফুলগাছের পরিচর্যা করেন। কত ফুল ফোটান। পূর্ণিমা রাতে মোমের পুতুল হয়ে চাঁদের আলোয় ভাসেন। ঘরময় ছড়ানো নিজের পয়সায় ছাপানো পুরনো কবিতার বই নিয়ে ডুবে থাকেন নির্জন দুপুরে। উনি একজন আত্মস্থ মানুষ, আমি ওঁকে বেশ বুঝি। তবে আমি যে ওকে দেখি সেটা বুঝতে দিই না পাছে উনি অস্বস্তিতে পড়েন।
একা বাঁচা কাকে বলে সে আমিও বেশ জানি। আমি যখন বারো, দোলে গাড়ি নিয়ে শান্তিনিকেতন গেলেন বাবা-মা। খুড়তুতো ভাই-বোনদের সঙ্গে রং খেলার আকর্ষণ ছেড়ে যাওয়া তখন আমার কাছে অসম্ভব। বাবা-মা ফেরেননি, ফিরল দুটো ডেডবডি। সেই থেকে সংসারকে নতুন করে চেনার শুরু। আশপাশের মানুষদের বদলাতে দেখলাম ধীরে ধীরে। বাস্তব সম্পর্ক বদলায়, কল্পনার সম্পর্কের বদল হয় না। তার চাবিকাঠিটা যে আমারই হাতে। আমার বনলতা তাই পার্মানেন্ট হয়ে রয়ে গেলেন আমার জীবনে।
‘ফেসবুকে’ আমি একদিন বনলতাকে পেলাম। ছবিটা আগের, তাঁর চোখ দুটিতে তখন পাখির নীড়ের আশ্রয়, মুখের স্থাপত্যে শ্রাবস্তীর কারুকার্য। এই পুরনো বনলতাকে খুব চিনি। ‘জয় মা’ বলে পাঠালাম বন্ধুত্বের অনুরোধ! কী কাণ্ড? ‘বহুদিনের প্রতিবেশী’কে বনলতা গ্রহণ করলেন। মন বলল, অবশেষে স্বপ্ন সফল হল, ওঁর জৌলুসহীন আলো নেভা মেহফিলে পা রাখলাম আমি। বনলতা ‘ফেসবুকে’ কবিতা লেখেন। আমি তৎক্ষণাৎ পড়ে ভালোলাগা জানাই। কখনও মন্তব্য করি, উনি উত্তর দেন। সবই হয় বাতাসে উড়ে উড়ে, সামনাসামনি রয়ে যায় সেই আবাল্যের দূরত্ব। বুঝি না আদৌ জানেন কি আমার পরিচয়? খেয়াল করেছেন কি আমার নীরব অস্তিত্ব? আমি তার কবিতায় তাকে ঘিরে থাকা ঝুমকো লতা, একলা ছাতিম গাছ, কার্নিসের নিঃসঙ্গ ঘুঘুদের দিব্যি শনাক্ত করি, ঘ্রাণ পাই ওঁর যাপন বৃত্তান্তের।
কবিতা কিন্তু তিনি ভালোই লেখেন। সামাজিক অবক্ষয়, ক্ষয়িষ্ণু মানবিকতার কথা লেখেন। ধীরে ধীরে তার পাঠক দল ভারী হচ্ছে। অল্প বয়সে প্রশংসায় না ভেসে, খেটেখুটে মন দিয়ে লিখলে তিনি কবি হিসাবে এতদিনে দাঁড়িয়ে যেতে পারতেন।
আজ কিছুদিন ধরে দেখছি ‘ফেসবুকে’ তাঁর পোস্ট করা কবিতা নিঃসঙ্গতার সুরে ম্রিয়মাণ। বড্ড নিরাশার কথা বলে তাঁর আজকের কবিতা ‘একলা কাঙাল’। এমন তো বড় ঘটে না। গুণমুগ্ধরা তাঁর ভেঙে পড়া মানসিকতাকে পজিটিভ করে তোলার উপদেশ দিয়েছেন দেখলাম। আমি কিছুই লিখিনি, কবিতাটা পড়ে আমার মন খারাপ হয়ে গেল।
ঘর থেকে বেরিয়ে আসি। রাতের নির্জনতাকে ভেঙে দেয় মেঘের গভীর গর্জন, ছাদের পাশে এসে দেখি আকাশ ছেয়ে কালো মেঘ, বিদ্যুতের রেখা এঁকেবেঁকে সাপের জিভের মতন ছোবল মারছে। প্রবল হাওয়ার ঝাপটায় ধুলো উঠছে কুণ্ডলী পাকিয়ে। সামনেই বনলতার শোবার ঘর। ভাবছি তাঁরই কথা আর তখনই দমকা বাতাসে উড়ে গেল বনলতার জানলার পর্দা, আমি দেখলাম এক অলৌকিক অবিশ্বাস্য দৃশ্য। খাটের উপর টুল, তার উপরে বনলতা। গলা পেঁচিয়ে শাড়ির ফাঁস উঠে গেছে ফ্যানের উচ্চতায়। আমি এত চমকে যাই যে কথা বলতে পারি না, বনলতা দমকা বাতাসের ধাক্কায় দুলে উঠে জানলার দিকে মুখ ফেরান। যে কোনও মুহূর্তে এখন অঘটন ঘটে যেতে পারে, হাতে সময় নেই, আমি চেঁচাই— ‘কাকিমা, এমন করবেন না প্লিজ—’
আশ্চর্য হয়ে তাকিয়ে রইলেন এইদিকে, শ্রাবস্তীর ধ্বংসস্তূপকে দেখি জীবন আর মৃত্যুর মাঝখানে মাত্র কয়েক মিটারের দূরত্বে। হাওয়ায় পর্দা সরে যাওয়ায় পরিষ্কার দেখতে পাচ্ছি একে অপরকে। অপ্রত্যাশিত ঘটনার আকস্মিকতায় বিমূঢ় বনলতা থমকে আছেন!
‘প্লিজ, প্লিজ— নেমে আসুন!’
আমি ঝুঁকে পড়ি, পারলে লাফ মেরে পৌঁছে যাই। দাঁড়িয়ে রইলেন। কয়েক মিনিটই হবে, আমার কাছে সেকেন্ডরা এখন ঘণ্টার মতন দীর্ঘ। তারপর ধীর হাতে ফাঁসটা খুলে সাবধানে নেমে এলেন মেঝেতে। হাওয়ায় এলোমেলো চুল, রক্তশূন্য মুখে এগিয়ে এলেন। জানলার মুখ চেপে বিস্ফারিত চোখে চেয়ে বললেন, ‘আরেকটু হলে মরে যেতাম’—
‘আপনি এটা কী করছিলেন?’— আমি রাগই করে ফেলি, আসলে তো বুক কাঁপছে।
‘তুমি তো আজ আমার কবিতার কমেন্ট করনি তপেন।’
‘আপনি আমার নাম জানেন?’
‘সবাই ক্রিটিসাইজ করল, কেউ বুঝল না, আমি আর বাঁচতে চাই না তপেন।’
‘আপনি তো কোনওদিন এত ভেঙে পড়েন না, কী হয়েছে? খুব কষ্টে আছেন মনে হল।’
‘তুমি কি টের পেয়েছিলে আমার কষ্ট?’
‘আপনার কবিতায় কিছু দিন ধরেই দেখছি অবসাদ, আপনি ভালো নেই। আমার মন খারাপ করছিল, আপনার জন্য চিন্তা হচ্ছিল। ভাবলাম আপনার কাছে একবার যাই, কিন্তু এত রাত, খারাপ দেখায়, চেনেনও না।’
‘আসলে পারতে, বড্ড ঘাবড়ে গিয়েছিলাম। বুঝলাম মানুষ নিজেকেই সবথেকে বেশি ভালোবাসে। কত শোক সামলেছি, নিজেকে শক্তও ভাবতাম। জানো আজ— ডাক্তার আমার বায়োপ্সি রিপোর্ট দিল— ব্রেস্ট ক্যান্সার— সেকেন্ড স্টেজ।’
আমি ভিতরে কেঁপে যাই।
‘তো? ক্যান্সার এখন জলভাত, কত ওষুধ বেরিয়েছে, ঠিক হয়ে যাবেন।’
‘লম্বা যুদ্ধ তপেন, ছেলে এলেও বেশিদিন থাকবে কি? একা টানতে পারব না তপেন, আমার ভয় করছে।’
হাওয়ার সঙ্গে লড়ে অনর্গল কথা বলছেন বনলতা, আমি দেখছি ওঁর গাল বেয়ে নামছে জলের ধারা। টের পাই বড় বড় ফোঁটায় বৃষ্টি নেমে আমার চোখ-মুখে পড়ছে। বৃষ্টির জল কী লোনা হয়?
আমি লবণাক্ত জলের ধারা মুছে বলি, ‘কীসের ভয়? আরে আমি তো আছি, একদম ভাববেন না, ডাক্তার-বদ্যিতে আমি এক্সপার্ট! কাল সকালেই আমি আসছি, এখন লক্ষ্মী মেয়ের মতন ঘুমিয়ে পড়ুন। আমার কথা বিশ্বাস হচ্ছে তো আপনার?’
‘তা হচ্ছে তপেন। কবে থেকে দেখছি তো তোমাকে— কত বড় হয়ে গেছ, সকলের খেয়াল রাখো তুমি, তোমার বাবা-মা বেঁচে থাকলে তোমার জন্য গর্বিত হতেন—’
আমি তপেন বাগচি, বোকাটে সংসারে উদ্বৃত্ত, আকাশ-কুসুম কল্পনার জগতের বাসিন্দা, একটা ফেকলু অস্তিত্ব, তাকে এসব কী বলছেন মিসেস সেন? বহু যুগ ওপারে, আবছা হয়ে আসা, আমার বাবা-মায়ের মুখ মনে পড়ল। আমার রুক্ষ অস্তিত্বে কত কত বছর পর মায়ের আদরের নরম স্পর্শের অনুভূতি ফিরে এল। আমার নিঃসঙ্গ ছাদ-ঘর বিদ্যুতের তীব্র ঝলকে ক্ষণে ক্ষণে আলোকিত হচ্ছে— তপ্ত রাতের শরীরে করুণার মতন ঝরে পড়ছে বৈশাখী জলের শীতল ধারা, এ এক আশ্চর্য রাত— আজ আমার এতটুকু একা লাগছে না আর— বনলতা গ্রিল ধরে বৃষ্টির ধারাপাতের দিকে চেয়ে আছেন— এখন নৈঃশব্দ্য— এখন বর্ষণ—ভিতরে বাইরে...
অলংকরণ : সুব্রত মাজী 
01st  December, 2019
আজও তারা জ্বলে
পর্ব-৩ 

বাংলা ছবির দিকপাল চরিত্রাভিনেতারা একেকটা শৈল্পিক আঁচড়ে বঙ্গজীবনে নিজেদের অমর করে রেখেছেন। অভিনয় ছিল তাঁদের শরীরে, মননে, আত্মায়। তাঁদের জীবনেও ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেক অমূল্য রতন। তাঁরই খোঁজে সন্দীপ রায়চৌধুরী। আজ ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়-তৃতীয় কিস্তি। 
বিশদ

অথৈ সাগর 
বারিদবরণ ঘোষ

আগামী বছর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতজন্মবর্ষ। তার প্রাক্কালে মাইলফলক দেখে ইংরেজি সংখ্যা শেখাই হোক বা বিধবা বিবাহ প্রচলনের জন্য তীব্র লড়াই— বিদ্যাসাগরের জীবনের এমনই নানা জানা-অজানা কাহিনী দিয়ে সাজানো এ ধারাবাহিকের ডালি। 
বিশদ

কন্যে কথন
নিয়তি রায়চৌধুরী 

—তোমার সঙ্গে একটা কথা আছে মা।
—আবার কী হল? রুমির একটা কথা মানে একশোটি কথার বাঞ্চ। সবটাই বিভাস বিষয়ক। এটা সবিতা জানেন। বনিবনা হচ্ছে না। শ্বশুরবাড়ির সহায়তা নেই। পরপর দুটি মেয়ের কারণে বিভাসের বাবা-মা’র নাতির আশায় ছাই পড়েছে। ছেলে-বউয়ের লাগাম ছাড়া কোন্দলে তাই উদ্বেগ নেই। 
বিশদ

মানুষ গড়ার কারিগর
সৌমিত্র চৌধুরী

 চোখের জল মুছে বাবা বলল, ‘ঠিক আছে স্যার, আপনার কথা রাখলাম। তবে ঋণ বাড়াব না। ফেল করলে ওর কিন্তু পড়া বন্ধ।’ এত দূর বলে আমাদের পিসিএম থামল। আমার চোখে বিস্ময়। জম স্যার নিজে গেল হাটখোলায়? একটু অবাক হয়েছিলাম সেদিন। কিন্তু কয়েকমাস পরে ক্লাসের সবাইকে, এমনকী গোটা স্কুলকে অবাক করে দেবার মতো ঘটনা ঘটল। অঙ্কে আশি নম্বর পেয়ে বার্ষিক পরীক্ষায় চার নম্বর স্থানটা দখল করেছে প্রদীপ। বিশদ

08th  December, 2019
অথৈ সাগর

 আগামী বছর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতজন্মবর্ষ। তার প্রাক্কালে মাইলফলক দেখে ইংরেজি সংখ্যা শেখাই হোক বা বিধবা বিবাহ প্রচলনের জন্য তীব্র লড়াই— বিদ্যাসাগরের জীবনের এমনই নানা জানা-অজানা কাহিনী দিয়ে সাজানো এ ধারাবাহিকের ডালি। বিশদ

08th  December, 2019
আজও তারা জ্বলে
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়
সন্দীপ রায়চৌধুরী

 ওপার বাংলা থেকে আসা ‘বাঙাল’ ভানুকে শুধু চেহারা দেখেই নাকি ‘জাগরণ’ ছবির জন্য নির্বাচন করেছিলেন বিভূতি চক্রবর্তী। কারণ হিসেবে বলেছিলেন, ‘আমার ছবিতে দুর্ভিক্ষপীড়িত চিমসে চেহারার একটা চরিত্র আছে, সেটা তুমি করবে।’ বিশদ

08th  December, 2019
ভানু বন্দ্যোপাধ্যায় পর্ব * ১
সন্দীপ রায়চৌধুরী

উজ্জ্বল জ্যোতিষ্কের দ্যুতিতে ভাস্বর। এই লাইনটা বললে হয়তো এক রকম অপমানই করা হয় তাঁদের। কারণ অন্যের আলোয় আলোকিত হওয়ার প্রয়োজন এঁদের কারও কখনও হয়নি। এঁরা নিজেরাই এক একজন কিংবদন্তি।   বিশদ

01st  December, 2019
অথৈ সাগর
বারিদবরণ ঘোষ

আগামী বছর ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের দ্বিশতজন্মবর্ষ। তার প্রাক্কালে মাইলফলক দেখে ইংরেজি সংখ্যা শেখাই হোক বা বিধবা বিবাহ প্রচলনের জন্য তীব্র লড়াই— বিদ্যাসাগরের জীবনের এমনই নানা জানা-অজানা কাহিনী দিয়ে সাজানো এ ধারাবাহিকের ডালি। 
বিশদ

01st  December, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধুলোয়
মহাকালীর কালীমঠ
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়  

পর্ব-৩৭

হিমালয়ের পবিত্র দেবস্থানগুলি বারে বারে পরিব্রজন করলেও গুপ্তকাশীর অদূরে কালীমঠে আর যাওয়াই হয় না। তাই সেবার গৌরীকুণ্ডের পথে ত্রিযুগীনায়ারণ হয়ে গুপ্তকাশীতে এসে রাত্রিবাস করলাম। 
বিশদ

24th  November, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়  

৩৭

ছিলেন বিজ্ঞানের ছাত্র, বিষয় ছিল রসায়ন। তিনি নিজের সম্পর্কে বলতেন, ‘আমি বিজ্ঞানের ছাত্র। আচারে-ব্যবহারে, ভ্রমণে-পর্যটনে, খাদ্যে-পানীয়ে কালাপাহাড় বলিয়া পরিচিত মহলে আমার অখ্যাতি আছে; তবু আজ অস্বীকার করিতে পারি না, অলৌকিক শ্রেণীর দুইটি ঘটনার আমি সাক্ষী হইয়া আছি। 
বিশদ

24th  November, 2019
বীরবল
তপন বন্দ্যোপাধ্যায়

 বাদশাহের মর্জিতেই তাকে নামানো হয়েছে লড়াইতে, কিন্তু তাকে কিছুতেই বাগ মানাতে পারছে না তার পিলবান। কিছুক্ষণের মধ্যেই সে প্রতিদ্বন্দ্বী হাতিকে ছেড়ে তাড়া করল এক জওয়ান লেড়কা দর্শককে, সেই লেড়কা দ্রুত পালিয়ে ঢুকে গেল আম-আদমির ভিড়ের মধ্যে। হাতিটা তখন দূর থেকে দেখছে বীরবরের লাল বেনিয়ান পরা চেহারাটা। বিশদ

17th  November, 2019
 বন্ধুত্ব
তপনকুমার দাস

দীনবন্ধুর যে ক’জন বন্ধু ছিল, তাদের সবাই প্রায় হারিয়ে গেছে। কলেজবেলার পর চাকরিবেলার শুরুতেই হারানোর পালা শুরু হতে হতে সংসারবেলায় পৌঁছে একেবারে ফেড আউট হয়ে গেছিল যাবতীয় বন্ধুত্ব। একে অপরকে ভুলে যেতে যেতে একসময় গল্পের উঠোনে গিয়ে দাঁড়িয়েছিল সব বন্ধুত্ব।
বিশদ

17th  November, 2019
পুণ্য ভূমির পুণ্য ধুলোয়
পুষ্করের সাবিত্রী মা
ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায় 

পর্ব-৩৫

রাজস্থান ভ্রমণে এসে পুষ্কর তীর্থে স্নান করে ভারতের একমাত্র ব্রহ্মা মন্দিরে পুজো দিয়ে সাবিত্রী পাহাড়ে সাবিত্রী মাতাকে দর্শন করেন না এমন যাত্রী নেই বললেই চলে।
আজমির থেকে পুষ্করের দূরত্ব ১১ কিমি।  
বিশদ

10th  November, 2019
ছায়া আছে কায়া নেই
অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়  

৩৫

ঔপন্যাসিক উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়। ১৩৩৪ বঙ্গাব্দের আষাঢ় মাসে ‘বিচিত্রা’ পত্রিকা প্রতিষ্ঠার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হল এক নতুন যুগের। জন্ম হল উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায় নামে এক স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিষ্ঠানের। সম্পর্কে তিনি ছিলেন কথা সাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মামা।   বিশদ

10th  November, 2019
একনজরে
সংবাদদাতা, কুমারগ্রাম: আগামী ২৭-২৯ ডিসেম্বর তুফানগঞ্জ-১ ব্লক কৃষি দপ্তরের উদ্যোগে এবং ব্লক প্রশাসনের সহযোগিতায় একটি কৃষি মেলা আয়োজিত হবে। তুফানগঞ্জ-১ ব্লকের চিলাখানা ফুটবল মাঠে এই মেলা হবে।   ...

সংবাদদাতা, কাঁথি: জমির রেকর্ড নিজের নামে না থাকায় চাষিদের অনেকেই বুলবুলের ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এনিয়ে কৃষক মহলে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রীর কাছে চিঠি দিল পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কৃষক সংগ্রাম পরিষদ।   ...

 ওয়াশিংটন, ১৪ ডিসেম্বর (পিটিআই): ‘আমার কোনও দোষ নেই। তবু আমাকে ইমপিচ করা হচ্ছে। এটা অন্যায়।’ শুক্রবার ট্যুইটারে এভাবেই ইমপিচমেন্ট বিতর্কে ক্ষোভ উগরে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন কংগ্রেসের জুডিশিয়ারি কমিটি ট্রাম্পের ‘অপসারণ’ অনুমোদন করে দেওয়ায় তা এখন হাউস অব ...

 নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নোটবন্দির ফাঁদে রাজ্যের বহু আদালত। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে আদালতে জমা থাকা পুরনো ৫০০ বা ১০০০ টাকার নোট ব্যাঙ্কে জমা না করায় এমনই জটিল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এই সমস্যার সমাধানে কলকাতা হাইকোর্ট প্রশাসন এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

পিতার স্বাস্থ্যহানী হতে পারে। আর্থিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব হবে না। পঠন-পাঠনে পরিশ্রমী হলে সফলতা ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

আন্তর্জাতিক চা দিবস
১৮৭৭- টমাস এডিসন ফোনোগ্রাফের পেটেন্ট নিলেন,
১৯০৮- রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের স্বামী রঙ্গনাথানন্দের জন্ম,
১৯৫০- সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের মৃত্যু,
১৯৭৬- ফুটবলার বাইচুং ভুটিয়ার জন্ম



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৬৯.৮০ টাকা ৭১.৪৯ টাকা
পাউন্ড ৯৩.৪৩ টাকা ৯৬.৮০ টাকা
ইউরো ৭৭.৪৪ টাকা ৮০.৪৩ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
14th  December, 2019
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৩৮, ৪৫৫ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৩৬, ৪৮৫ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৩৭, ০৩০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৪৪, ০০০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৪৪, ১০০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]

দিন পঞ্জিকা

২৮ অগ্রহায়ণ ১৪২৬, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, রবিবার, তৃতীয়া ২/৪৫ দিবা ৭/১৮ পরে চতুর্থী ৫৮/২৫ শেষরাত্রি ৫/৩৫। পুষ্যা ৫৪/৩০ রাত্রি ৪/১। সূ উ ৬/১২/৩৫, অ ৪/৫০/১৭, অমৃতযোগ দিবা ৬/৫৪ গতে ৯/১ মধ্যে পুনঃ ১১/৫২ গতে ২/৪২ মধ্যে। রাত্রি ৭/৩০ গতে ৯/১৭ মধ্যে পুনঃ ১১/৫৮ গতে ১/৪৪ মধ্যে পুনঃ ২/৩৮ গতে উদয়াবধি, বারবেলা ১০/১২ গতে ১২/৫১ মধ্যে, কালরাত্রি ১/১১ গতে ২/৫১ মধ্যে। 
২৮ অগ্রহায়ণ ১৪২৬, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, রবিবার, তৃতীয়া ৫/৩৫/৫৭ দিবা ৮/২৮/৫০। পুনর্বসু ১/১৯/৩২ প্রাতঃ ৬/৪৬/১৬ পরে পুষ্যা ৫৮/৫৩/৩৭ শেষরাত্রি ৫/৪৭/৫৪, সূ উ ৬/১৪/২৭, অ ৪/৫০/২৪, অমৃতযোগ দিবা ৭/৪ গতে ৯/১১ মধ্যে ও ১২/১ গতে ২/৫১ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩৯ গতে ৯/২৬ মধ্যে ও ১২/৭ গতে ১/৫৪ মধ্যে ও ২/৪৭ গতে ৬/১৫ মধ্যে, কালবেলা ১১/৩২/২৬ গতে ১২/৫১/৫৫ মধ্যে, কালরাত্রি ১/১১/৫৬ গতে ২/৫৩/২৬ মধ্যে। 
মোসলেম: ১৭ রবিয়স সানি 

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
আজকের রাশিফল
মেষ: পঠন-পাঠনে পরিশ্রমী হলে সফলতা মিলবে। বৃষ: ব্যবসা শুরু করলে ভালো হবে। ...বিশদ

07:11:04 PM

ইতিহাসে আজকের দিনে
 আন্তর্জাতিক চা দিবস১৮৭৭- টমাস এডিসন ফোনোগ্রাফের পেটেন্ট নিলেন,১৯০৮- রামকৃষ্ণ মঠ ...বিশদ

07:03:20 PM

প্রথম একদিনের ম্যাচ: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে জিতল 

09:55:39 PM

প্রথম একদিনের ম্যাচ: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২৩২/২ (৪০ ওভার) 

09:12:17 PM

প্রথম একদিনের ম্যাচ: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৬১/১ (৩০ ওভার) 

08:23:30 PM

মাথাভাঙায় জলাশয় থেকে পচাগলা দেহ উদ্ধার 

08:10:00 PM