পিতার স্বাস্থ্যহানী হতে পারে। আর্থিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব হবে না। পঠন-পাঠনে পরিশ্রমী হলে সফলতা ... বিশদ
রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের তরফে সদস্য সচিব দুর্গা খৈতান ও সংস্থার ডেপুটি সেক্রেটারি অরিন্দম দত্ত বলেন, অসহায় এই পরিবার যদি আইনি পরিষেবার জন্য সহযোগিতা চায়, তাহলে আমরা তা দিতে প্রস্তুত। ঘটনাটি অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং দুর্ভাগ্যজনক।
রাজ্য আইনি পরিষেবা সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার পর ক্রিমিনাল ইনজুরিস কম্পেনসেশন বোর্ডের (পূর্ব মেদিনীপুর) কাছে ক্ষতিপূরণের আবেদন জানিয়েছিলেন ওই মহিলা। এই স্পর্শকাতর ও মর্মান্তিক ঘটনার গুরুত্ব বিচার করে এই বোর্ডের সদস্য, জেলার আইনি পরিষেবার সভাপতি, পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা ও দায়রা জজ, জেলার পুলিস সুপার, জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের মুখ্য মেডিক্যাল অফিসার ৩৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তে সম্মতি জানিয়ে রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণ দিতে আবেদন জানানো হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ অ্যাসিড আক্রান্তের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ৩৫ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই মহিলার জন্য ১৫ লক্ষ এবং তাঁর দুই শিশুকন্যার জন্য ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে। কলকাতা নগর দায়রা আদালতের সরকারি আইনজীবী মিঠু দাস শনিবার বলেন, রাজ্য আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতে হয়।
আদালত ও পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব মেদিনীপুরের খেজুরির দক্ষিণতলা গ্রামে অ্যাসিড হানার ঘটনা ঘটে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে। ওই ঘটনায় ২২ বছরের ওই গৃহবধূ ও তাঁর ছয় এবং দেড় বছরের দুই শিশুকন্যা গুরুতর জখম হন। অভিযুক্ত মহিলার স্বামী সহ তিনজন। অভিযোগ, ওই তিনজন অ্যাসিড ছুঁড়ে দিয়ে চম্পট দেয়। গুরুতর জখম অবস্থায় প্রথমে তাঁদের হেঁড়িয়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে মহিলাকে কলকাতার এমআর বাঙুর এবং দুই শিশুকন্যাকে এসএসকেএমে ভর্তি করা হয়। ঘটনার পর খেজুরি থানায় ওই মহিলার পরিবার এফআইআর দায়ের করে। তারপরই আক্রান্তের পরিবার ক্রিমিনাল ইনজুরিস কম্পেনসেশন বোর্ডের কাছে ক্ষতিপূরণের আবেদন জানায়। আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃতদের বিরুদ্ধে হুমকি, খুনের চেষ্টা, অ্যাসিড ছুঁড়ে মারা সহ একাধিক ধারায় মামলা দায়ের করে পুলিস। পরে তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট পেশ করা হয়। নিম্ন আদালত থেকে মামলাটি বিচারের জন্য যায় দায়রা কোর্টে। সেখানেই বর্তমানে অভিযুক্তদের বিচার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান রাজ্য আইনি পরিষেবার ডেপুটি সেক্রেটারি অরিন্দম দত্ত। প্রবীণ আইনজীবী নবকুমার ঘোষ ও দায়রা বিশেষজ্ঞ জগদীশচন্দ্র মজুমদার বলেন, আইন আইনের পথেই চলবে। কিন্তু এই ঘটনায় বিভিন্ন মহল থেকে যে নিন্দা করা হয়েছিল, তা যুক্তিসঙ্গত। অসহায় এই পরিবারের পাশে আইনি পরিষেবা কর্তৃপক্ষ এগিয়ে আসায় সমাজে একটা আলাদা বার্তা গেল।