পিতার স্বাস্থ্যহানী হতে পারে। আর্থিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব হবে না। পঠন-পাঠনে পরিশ্রমী হলে সফলতা ... বিশদ
হাতে আর মাত্র ১০দিন। আগামী ২৪ডিসেম্বর ঐতিহ্যপূর্ণ পৌষমেলা শুরু হওয়ার কথা। মেলা নিয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক সেরে ফেলেছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। শনিবার দুপুর তিনটে থেকে বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সঙ্গে বৈঠকে বসে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, সেই বৈঠক থেকে এবছর মেলা হওয়া নিয়ে কোনও সমাধানসূত্র মিলল না। যার জেরে ফের অনিশ্চয়তার মুখে এবারের পৌষমেলার ভবিষ্যৎ।
মেলা থেকে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ তুলে পরিবেশ আদালতে মামলা করেছিলেন পরিবেশবিদ সুভাষ দত্ত। সেই মামলা চলাকালীন এই বছরের জুন মাসে বিশ্বভারতী তরফ থেকে নির্দেশিকা জারি করে জানিয়ে দেওয়া হয় কর্তৃপক্ষ মেলা করতে অক্ষম। সেই সময় মেলার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। পরবর্তীতে শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যৌথভাবে মেলা পরিচালনা করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু, এবছর থেকে মেলায় বেশকিছু নতুন নিয়ম আরোপ করা হয়। মেলায় স্টল বুকিংয়ের ক্ষেত্রে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় এবছর থেকেই মেলায় স্টল বুকিং সহ বাকি সমস্তরকম প্রক্রিয়া অনলাইন করে দেওয়া হয়। তার সঙ্গে স্টলের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয় ও প্রত্যেক ব্যবসায়ীর কাছে সিকিউরিটি মানি নেওয়ার কথা স্থির হয়। অনলাইন প্রক্রিয়ার ফলে যে কেউ দূরদূরান্ত থেকে মেলার জন্য স্টল বুকিং করতে পারেন। সেক্ষেত্রে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের কাছে বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি চার দফা দাবি পেশ করে। সেই দাবি না মানা হলে মেলায় কোনও স্টলের প্যান্ডেল করতে দেবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। সেইমতো শনিবার পর্যন্ত মেলার মাঠে একটিও স্টল তৈরির জন্য সরঞ্জাম পড়েনি। শুধুমাত্র শুক্রবার থেকে মেলার স্টলের লে-আউট করার কাজ শুরু হয়েছে। এদিন বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতি ও বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠক করলেও মেলা নিয়ে কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি।
ব্যবসায়ী সমিতির দাবি, বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে তারা মেলা করতে চায় না। কর্তৃপক্ষ তাদের কোনও দাবি মেনে নেননি। এছাড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী দুর্ব্যবহার করেছেন বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা।
অন্যদিকে, বিশ্বভারতীর পক্ষ থেকে জানা গিয়েছে, অনলাইন প্রক্রিয়াতেই মেলা করা হবে। তার সঙ্গে এবছর থেকে মেলা চারদিনের হবে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা মেলার মাঠ পরিষ্কার করার জন্য সময় দেওয়া হবে।
বোলপুর ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক সুনীল সিং বলেন, আমাদের যে চার দফা দাবি রয়েছে তা বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মানতে চাইছে না। উপাচার্য ব্যবসায়ীদের চূড়ান্ত অপমান করেছেন। এটা তিনি করতে পারেন না। আমাদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করার পরও কোনও সমাধানে আসেননি। তাঁর মনোভাব দেখে মনে হচ্ছে পৌষমেলা করতেই তিনি চান না। আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব মেলায় আমরা অংশ নেব কি না।
বৈঠক শেষে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত জনসংযোগ আধিকারিক অনির্বাণ সরকার বলেন, ব্যবসায়ীদের দাবি মেনে আমরা স্টলের ভাড়া ও সিকিউরিটি মানিতে ৫০শতাংশ ছাড় দিয়েছি। তবে মেলার সমস্ত ধরনের প্রক্রিয়া অনলাইন হবে। পাশাপাশি চারদিনের পৌষমেলা হবে। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে, তাঁরা সিদ্ধান্ত নিয়ে জানালে আমরা মেলা নিয়ে ভাববো। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনও দুর্বব্যহার করা হয়নি।