পিতার স্বাস্থ্যহানী হতে পারে। আর্থিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব হবে না। পঠন-পাঠনে পরিশ্রমী হলে সফলতা ... বিশদ
শুক্রবার বিকেলের পরেও শনিবার বিপর্যস্ত হয়ে পড়ল দক্ষিণ-পূর্ব রেলের পরিষেবা। এদিন বাউড়িয়া, নলপুর ও সাঁকরাইল ষ্টেশন সংলগ্ন এলাকায় রেল অবরোধ হয়। উলুবেড়িয়ার কালীগনগর, গরুহাটা মোড়, কলেজ মোড়, শ্যামপুর, বাগনানের একাধিক জায়গায় রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ হয়। উলুবেড়িয়া মহকুমা কার্যত বন্ধের চেহারা নেয়। তবে বিক্ষোভ সবচেয়ে বেশি হিংসাত্মক হয়ে ওঠে সাঁকরাইলে। ষ্টেশন ভাঙচুর করার পাশাপাশি ষ্টেশন মাস্টারের ঘরও ভেঙে দেওয়া হয়। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় টিকিট কাউন্টার ও কেবিনে। লেবেল ক্রশিং ভাঙচুর করে প্যানেল ভেঙে গুড়িয়ে দেওয়া হয়। বিক্ষোভকারীদের রোশের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে একের পর এক সরকারি সম্পত্তি। বিক্ষোভের আগুন ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকাতেও। রেললাইনের পাশাপাশি চাঁপাতলায় রাস্তার উপরে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে বিক্ষোভকারীরা। এমনকী আশেপাশের বাড়িতেও ইট ছোঁড়ার অভিযোগ ওঠে। শনিবার দুপুরে সাঁকরাইল ষ্টেশনে গিয়ে দেখা গেল গোটা ষ্টেশনটাই নিজের পরিচয় হারিয়ে ফেলেছে। চারিদিকে পোড়া জিনিসপত্র, ষ্টেশন জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে ভাঙা চেয়ার ও আসবাবপত্র। দূরে দাড়িয়ে রেলপুলিশ ও রাজ্য পুলিশ। ষ্টেশনের কাছে গিয়ে দেখা গেল টিকিট কাউন্টার থেকে ষ্টেশন মাস্টারের ঘর কোনকিছুরই অস্তিত্ব নেই। নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক রেল কর্মী জানান, যেভাবে উত্তেজিত জনতা ষ্টেশনে হামলা চালিয়েছে, তাতে আমরা যে প্রাণে বাঁচতে পেরেছি সেটাই অনেক। অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দা অর্পণা কাঁড়ার জানান, বিক্ষোভকারীরা যেভাবে তাদের বাড়ি লক্ষ করে ইট ছুঁড়েছে তাতে তারা যথেষ্ট আতঙ্কিত।
শনিবার সকাল থেকে পুনরায় ট্রেন চলাচল স্তব্ধ হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েন নিত্যযাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। কলকাতার রাজাবাজারের বাসিন্দা সন্ধ্যা ঘোষ জানান, শনিবার সকালে বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।এদিন ষ্টেশনে এসে জানতে পারি ট্রেন চলাচল বন্ধ। এদিন সকালে পাশকুড়া-হাওড়া লোকালে করে হাওড়ায় ফুল বিক্রি করতে আসা ফুল ব্যবসায়ীরা উলুবেড়িয়া ষ্টেশনে আটকে পড়ায় বাধ্য হয়ে সমস্ত ফুল ট্রেনলাইনে ফেলে দেয়। ফুল ব্যবসায়ী গৌতম হাজরা জানান, যেভাবে ট্রেন অবরোধ করে বিক্ষোভ চলছে তাতে সঠিক সময় বাজারে ফুল না নিয়ে গেলে বিক্রি হবে না। তাই সমস্ত ফুল ফেলে দিলাম। অন্যদিকে শিক্ষক উমাশঙ্কর গুচ্ছাইত জানান, সকালে ষ্টেশনে আসলেও ট্রেন বন্ধ থাকায় স্কুলে যেতে পারলম না।
এদিকে শনিবার সাঁকরাইল ষ্টেশনে ভাঙচুর অগ্নিসংযোগের পর পুরোপুরি স্তব্ধ হয়ে পড়ে রেল পরিষেবা। সাঁকরাইলের ষ্টেশন মাস্টার নির্মাল্য চট্টোপাধ্যায় জানান, যেভাবে প্যানেলে ভাঙচুর করা হয়েছে তাতে রেল পরিষেবা স্বাভাবিক করার কাজ খুবই কঠিন। আমরা চেষ্টা করছি সেটাকে সারিয়ে ট্রেন পরিষেবা স্বাভাবিক করার। অন্যদিকে সাকঁরাইল ষ্টেশনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা সর্ম্পকে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ জানান, প্রতিক্রিয়া দেওয়ার মত কোনও ভাষা নেই।