সম্পত্তিজনিত বিষয়ে অশান্তি বৃদ্ধির আশঙ্কা। আত্মীয়-পরিজনের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি। শেয়ার, ফাটকা, লটারিতে অর্থাগম, কর্মক্ষেত্রে গোলযোগের ... বিশদ
যে উন্নতিকামী ‘ভূতিমিচ্ছতা’, সে কমপ্লেক্স থেকে দূরে থাকবার চেষ্টা করে। যেমন, সবাই পরমপুরুষের সন্তান; তবুও কিছু মানুষ মনে করে যে যেহেতু তার বিদ্যা নেই, বুদ্ধি নেই, তার অর্থ নেই, তার শারীরিক শক্তি নেই, সুতরাং সে অন্যের চেয়ে ছোট। এই ছোট বোধ তাকে সঙ্কুচিত করে দেয় যার ফলে তার এগিয়ে চলাটা বাধাপ্রাপ্ত হয়। সুতরাং হীনম্মন্যতা ত্যাগ করতে হবে। ভীতম্মন্যতা(fear complex)তার চেয়েও শক্তিশালী বা তার চেয়েও ভয়ঙ্কর। কোন জিনিসকে দেখে মানুষ কী করে? না, ভীতম্মন্যতায় ভুগতে থাকে। মানুষ অহেতুক ভীতম্মন্যতায় ভোগে অনেক সময়। ভূতের ভয়েই সেইখানেই সে সঙ্কুচিত হয়ে থাকে। অথচ সে যদি এগিয়ে যায়, দেখে ভূত বলে কোন জিনিস নেই। ভয় জিনিসটা, ভীতম্মন্যতা জিনিসটা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অমূলক। সাহসের সঙ্গে এগিয়ে গেলেই দেখতে পাবে যে যার থেকে ভয় পাচ্ছিলুম তার থেকে ভয় পাবার কোন কারণই ছিল না।
আমার পরিচিত, বিশেষ পরিচিত এক ভদ্রলোক ছিলেন। তাঁর বাড়ীর উঠোনটা খুব বড়। একদিন রাত্রে তাঁর স্ত্রী দেখলেন যে উঠোনের এক কোণে একটা পেত্নী রয়েছে। বিহারে হিন্দীতে পেত্নীকে বলে ‘চুড়েইল’। দেখলেন, একটা পেত্নী রয়েছে। সেই দেখে তিনি ভয়ে চীৎকার করে অজ্ঞান হয়ে গেলেন। জ্ঞান ফিরে এল না। মরেই গেলেন। তার পরের দিন রাত্রে আবার সেই ভদ্রলোক বেড়িয়ে এসেছেন সেই সময়ে। দেখছেন, হ্যাঁ সেখানেই তো সেই পেত্নীটা রয়েছে। তখন তিনি বললেন যে এইভাবে কি রোজ রোজ মরব? এ তো ঠিক নয়। তিনি লাঠি নিয়ে মারলেন পেত্নীটার ওপর। দেখলেন, একটা ঝোপ এমন ভাবে রয়েছে যে চাঁদের আলোতে মনে হচ্ছিল একজন মানুষ। অকারণে তাঁর স্ত্রীর মৃত্যু হ’ল।
তা ভূত হ’ল এই রকম। অনেক সময় মার্স গ্যাস উৎপন্ন হয়। মার্স গ্যাস হাওয়ার অক্সিজেনের সংস্পর্শে এসে দপ করে জ্বলে ওঠে—যাকে বাংলায় ‘আলেয়া’ বলে। আলেয়াকেও অনেকে ভূত বলে মনে করে। তা, এইভাবে ভীতম্মন্যতা আসে। এরপর পরাজিতসুলভ মানসিকতা। আমি কি যুঝতে পারব? আমরা দ্বারা কি সম্ভব? আগে থেকেই এসব ভেবে বসে। তার ফলে কাজে নামবার সময় দেখা যায়— পারছে না। কারণ, তার ওই ভীতম্মন্যতাটাই তাকে হারিয়ে দিচ্ছে, নইলে হয়তো সে জিতে যেত। যাই হোক, সমস্ত কমপ্লেক্সই বর্জনীয়। আধ্যাত্মিক ভূমিতে, জাগতিক ভূমিতে মানুষের সব কমপ্লেক্সই বর্জনীয়, সব কমপ্লেক্সই নিন্দনীয়। আধ্যাত্মিক ভূমিতেও সব কমপ্লেক্স খারাপ কিন্তু সব চেয়ে খারাপ মহাম্মন্যতা অর্থাৎ নিজেকে খুব বড় মনে করা, খুব বড় পণ্ডিত মনে করা। আমি অনেক কিছু জানি, অনেক কিছু বুঝি—এইসব ভাবা। অন্যের চেয়ে নিজেকে শ্রেষ্ঠ ভাবা।