বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
রাজনীতির প্রসঙ্গে আসা যাক। পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন দেখিয়ে দিল, কীভাবে বিজেপির ভোট ক্ষয় হয়েছে। এই নির্বাচনকে সেমিফাইনাল বলে চিহ্নিত করা হয়েছিল। তাই বিজেপি এখন বেশ চিন্তায়। চলতি বছরেই হবে লোকসভার নির্বাচন। দেশের মানুষের কাছে তাই এখন বড় প্রশ্ন, কে আসবে ক্ষমতায়? বিজেপি না কংগ্রেস, নাকি তৃতীয় জোট? অবশ্য এখনই নতুন করে কিছু বলার নেই। জোট সমীকরণ কোনদিকে গড়াতে পারে, তা এখনই বলার মতো সময় আসেনি। সেদিক থেকে বলা যায় ২০১৯ দেশের মানুষের কাছে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তান আমাদের মাথাব্যথার কারণ। কাশ্মীরেই শুধু নয়, সারা দেশে জঙ্গি নাশকতার ছক তারা করেই চলেছে। সীমান্তে পাক সেনারা বিনা প্ররোচনায় গুলি চালিয়ে বারবার যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করেছে। এখন আবার সীমান্তে সামরিক সজ্জার মাধ্যমে ভারতকে উত্ত্যক্ত করতে চাইছে। কিন্তু এটা বোধহয় ওরা ভুলে গিয়েছে যে আঘাত এলে ভারত পাল্টা যোগ্য জবাব দিতে সদা প্রস্তুত। চীন ঋণভারে জর্জরিত পাকিস্তানকে তার অস্ত্র বিক্রি করতে যুদ্ধের কুমন্ত্রণা দিচ্ছে। কিন্তু পাকিস্তানেরও আর কিছু করার নেই, দেশটা চীনের কাছে একরকম বাঁধা পড়ে গিয়েছে। কীভাবে এর থেকে মুক্তি মিলবে, তারাও জানে না। পাকিস্তানে নতুন সরকার ক্ষমতায় এসেছে, বাংলাদেশেও ভোটে বিপুল সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় ফিরলেন শেখ হাসিনা। এবছর ভারতের রাজনৈতিক ভাগ্য নির্ধারিত হবে। সুতরাং তিন দেশের নতুন সরকার নতুন ভাবনায় উজ্জীবিত হয়ে পথ চলুক। শান্তির থেকে আর বড় মহৌষধি কিছু হয় না। মৌলবাদী শক্তির উত্থান যে কোনও দেশের পক্ষেই ক্ষতিকর। সে মুসলিম মৌলবাদই হোক কিংবা হিন্দু মৌলবাদই হোক। আমরা তো প্রতিদিনই তিল তিল করে সেই ক্ষতিকর দিকগুলিই অনুভব করছি। মৌলবাদ দূর হোক। শুভশক্তির উত্থান হোক। মানুষের জীবনে শান্তি আসুক। নতুন বছরে এটুকু ছাড়া দেশের মানুষ আর কীই বা চাইতে পারেন।
দেশের সাধারণ মানুষের চাহিদা খুবই কম। পরনে পোশাক চাই, পেটে খাবার চাই, মাথার ওপর ছাদ চাই, অসুস্থতায় চিকিৎসা চাই। আর জীবনে শান্তি চাই। কিন্তু তাদের নিয়ে যে রাজনীতি হয়, সেটা সকলে বোঝেন না। তাই ভোটের লক্ষ্যে ভাগ হয়ে যায় ধর্ম, সম্প্রদায়, জাতপাত। পাশাপাশি চলে মানুষে মানুষে বিভেদের রাজনীতি আর বিভক্তিকরণের অশুভ প্রয়াস। নতুন বছরে বন্ধ হোক রাজনীতিকদের যত সব অশুভ উদ্দেশ্য। রাজনীতির লক্ষ্য হোক মানুষ। ‘শতফুল বিকশিত হোক, যত আগাছা নির্মূল হোক।’
নতুন বছরে সকলের জন্য রইল শুভ কামনা। আমাদের আশা ২০১৯ সাল দেখুক নতুন এক পৃথিবী। অনেকদিন আগে ‘দ্য গ্রেট ডিক্টেটর’ ছবিতে সেই সুন্দর পৃথিবীর কথাই বলে গিয়েছিলেন চ্যাপলিন। হিটলারের অত্যাচারে বিধ্বস্ত দেশের বুকে দাঁড়িয়ে চ্যাপলিন তাঁর অভিনীত চরিত্রের মধ্য দিয়ে শুভ বার্তা দিয়েছিলেন, ‘মেঘ সরে যাচ্ছে, সূর্য আবার আলো মেলে ধরেছে। অন্ধকার কেটে যাচ্ছে। আমরা এক নতুন জগতের দিকে হেঁটে যাচ্ছি। সেখানে কোনও ঘৃণা নেই, লোভ নেই, হিংসা নেই। আছে শুধু প্রেম। আমরা সবাই উড়ে যাব এক নতুন প্রত্যাশার দিকে। রঙিন রামধনুর দিকে।’
নতুন বছরে বিশ্বজুড়ে সেই রামধনুর রং ছড়িয়ে পড়ুক। যে রামধনু সব পাপ ধুয়ে মুছে সাফ করে গড়ে তুলবে এক ভালোবাসার পৃথিবী। সেই আশাতেই বুক বেঁধে বলি, স্বাগত ২০১৯।