বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
তাঁদের অভিযোগ, মহিলা স্টেশন করার উদ্যোগ নেওয়া হলেও পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও পরিকাঠামো ছাড়াই এখানে কাজ করতে হচ্ছে। আরপিএফ পোস্ট বা ব্যারাক এখানে নেই। রেল পুলিস থাকলেও সর্বক্ষণের জন্য তাদের পাওয়া যায় না। এই পরিস্থিতিতে রাতে বিভিন্ন ট্রেনের চালকদের ‘মেমো’ দেওয়ার জন্য মহিলা কর্মীদের শুনশান প্লাটফর্ম দিয়ে অনেকটা পথ হেঁটে যেতে হয়। চারদিক উন্মুক্ত স্টেশনে একজন মহিলা কর্মীর পক্ষে রাতে একাজ যথেষ্ট ঝুঁকির বলেই তাঁরা জানিয়েছেন।
বহু পুরনো এই স্টেশনের চার পাশে রেলের জমি দখল করে একের পর এক বাজার, দোকান, হোটেল গড়ে উঠেছে। সন্ধ্যা হতেই দুষ্কৃতীদের অবাধ বিচরণ পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মহাবীর স্থানে লেভেল ক্রসিংয়ের গেট পয়েন্টে ২৪ ঘণ্টা মহিলা কর্মী দিয়ে কাজ করানোর মতো নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখনও গড়ে ওঠেনি। এক দিকে নিউ জলপাইগুড়ি, আর এক দিকে রয়েছে শিলিগুড়ি জংশন স্টেশন। এই দুই গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনের মাঝে শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনের উপর দিয়ে ২৪ ঘণ্টায় মালগাড়ি সহ ৩০ টি ট্রেন চলাচল করে। এরমধ্যে মাত্র তিনটি ট্রেন দাঁড়ায়। আলিপুরদুয়ার, বামন হাট প্যাসেঞ্জার এবং হলদিবাড়ি প্যাসেঞ্জার। যাত্রী সংখ্যা কমে থাকায় ঝুঁকি আরও বেড়ে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন এখানকার রেল কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, জিআরপি পোস্ট স্টেশনে থাকলেও সেটি অনেকটা দূরে হওয়ায় রাত-বিরেতে বিপদের সময় ডেকে সময়মতো তাদের কাছে পাওয়া যায় না। সন্ধ্যা হলেই অফিসের গেটে কর্তব্যরত জিআরপি কর্মীরা তাঁদের নাম ও ফোন নম্বার লিখে ঝুলিয়ে দিয়ে যান। এক কর্মী বলেন, ওই ফোন নম্বর ধরে রাতে কর্তব্যরত জিআরপি বা সিভিক ভলান্টিয়ারকে ডেকে পরিস্থিতি সামাল দিতে অনেকটা সময় চলে যায়। ফলে রাতে বিপদ কাটিয়ে ওঠার ক্ষেত্রে তাদের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। ট্রেন না থামলেও সন্ধ্যা র পর প্রচুর মানুষের উপস্থিতি বেড়ে যায়। অভিযোগ,অবাঞ্ছিত লোক স্টেশন চত্বর থেকে সরিয়ে দেওয়া হলে স্টেশন স্টেশন ঘেঁষে বস্তি গড়ে উঠেছে। সঙ্গে রয়েছে বাসস্ট্যান্ড। ফলে এরকম একটি জটিল পরিবেশে এই শিলিগুড়ি টাউন স্টেশন মহিলা কর্মী দ্বারা পরিচালিত মডেল স্টেশন হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে কতটা নিরাপদ ও অনুকূল হবে তা নিয়ে সব মহলেই সংশয় রয়েছে। বিভিন্ন সময় টাউন স্টেশনকে হেরিটেজ ঘোষণা করার প্রস্তাব যায়। মহিলা দ্বারা পরিচালিত মডেল স্টেশন করা হলেই শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনের ঐতিহাসিক গুরুত্বকে মর্যাদা দেওয়া হবে এমনটা মানছেন না শহরের প্রবীণ নাগরিকরা। তাঁদের কথায়, প্রথম থেকেই শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনের প্রতি রেল কর্তৃপক্ষ উদাসীন। উত্তরপূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক প্রণবজ্যোতি শর্মা বলেন, ওই স্টেশনের নিরাপত্তা এবং মহিলা কর্মীদের নিরাপত্তার দিকটি আমাদের মাথায় আছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হয়েছে। ঐতিহাসিক গুরুত্ব মাথায় রেখেই শিলিগুড়ি টাউন স্টেশনকে সাজিয়ে তোলা হচ্ছে। বৃক্ষরোপণ করা হয়েছে স্টেশন চত্বরে। এই স্টেশন নিয়ে রেলের বিশেষ ভাবনা রয়েছে বলেই একে পুরোপুরি মহিলা পরিচালিত করার সিদ্ধান্ত নিয়ে সেই মতো কাজ চলছে। সামান্য কিছু কাজ বাকি রয়েছে। (চলবে)