বিতর্ক বিবাদ এড়িয়ে চলা প্রয়োজন। প্রেম পরিণয়ে মানসিক স্থিরতা নষ্ট। নানা উপায়ে অর্থ উপার্জনের সুযোগ। ... বিশদ
বেশ কয়েক বছর আগে কেন্দ্র সাগরদ্বীপকে মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত করতে মুড়িগঙ্গা নদীর উপর একটি রেল-সড়ক সেতু তৈরির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। একটি কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থাকে দিয়ে এব্যাপারে সমীক্ষাও করানো হয়েছিল। সাগরে প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্র বন্দর প্রকল্পের অন্যতম অংশ ছিল সেটি। কেন্দ্রে ইউপিএ সরকারের সময় সাগরে গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরির ব্যাপারে মন্ত্রিসভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু নরেন্দ্র মোদি সরকার কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর সাগরের বন্দর প্রকল্পটি স্থগিত রেখে পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ অংশীদারিত্বে একটি বন্দর গড়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তারপরই কেন্দ্র সেতু তৈরির ব্যাপারে আগ্রহ হারায়। মুখ্যমন্ত্রী এদিনের সভায় তাজপুরে বন্দরের প্রসঙ্গটি টেনে বলেন, ওই বন্দরের ৭৪ শতাংশ অংশীদারি কেন্দ্রীয় সরকারকে ছেড়ে দিয়েছিল রাজ্য। শেয়ার ছেড়ে দেওয়ার বিনিময়ে কেন্দ্র মুড়িগঙ্গার উপর লোহার বা কংক্রিটের সেতু তৈরি করে দেবে, এমনটাই ঠিক হয়েছিল। কিন্তু তিন-চার বছর কেটে গেলেও কেন্দ্র কিছুই করছে না। আমরা কেন্দ্রের কাছ থেকে ‘ভিক্ষা’ চাই না। আমরা নিজেরাই টাকা জোগাড় করে ওই সেতু গড়ব বলে ঠিক করেছি।
এখন জলপথে মুড়িগঙ্গা পার হয়ে সাগরদ্বীপে পৌঁছতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় যাত্রীদের। নদীতে চরা পড়ে যাওয়ার জন্য ভাটার সময় বড় ভেসেল তো বটেই, এমনকী অনেক সময় ছোট লঞ্চও চালানো যায় না। দিনের মধ্যে বেশ কয়েক ঘণ্টা সাগরদ্বীপে যাতায়াত বন্ধ থাকে। ফলে সেখানকার লক্ষাধিক স্থানীয় মানুষ ও কপিলমুনির মন্দির দর্শন করতে যাওয়া তীর্থযাত্রীদের দুর্ভোগের মধ্যে পড়তে হয়। সাগরমেলার সময় লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রীকেও সমস্যায় পড়তে হয়। এখন ড্রেজিং করে মুড়িগঙ্গার পলি তোলার কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার। একশো কোটি টাকার বেশি খরচ হবে এতে। সময় লাগবে সাত বছর।
সাগরমেলায় তীর্থযাত্রীদের মধ্যে বেশিরভাগই ভিনরাজ্যের বাসিন্দা। বাবুঘাটের শিবিরে থাকা তীর্থযাত্রীর প্রায় সবাই অন্য রাজ্যের বাসিন্দা হওয়ায় তাঁদের উদ্দেশে হিন্দিতে ভাষণ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, কুম্ভের থেকেও সাগরমেলায় যাওয়া কঠিন। কারণ এখানে জলপথ পার হয়ে যেতে হয়। সাগরমেলাকে সামনে রেখে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ তাঁর সরকার করেছে। আগের সরকার যে তীর্থ কর বসিয়েছিল, সেটাও তাঁরা তুলে নিয়েছেন। সেখানে এখন কোনও সমস্যা নেই। তবে তীর্থযাত্রীরা যাতে মেলায় গিয়ে ধর্মীয় ভেদাভেদের চক্রান্তের শিকার না হন, তার জন্য এদিন সতর্ক করে দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, কেউ অশান্তি বাধাতে চাইলে পাত্তা দেবেন না। কোনও অসুবিধা হলেই পুলিস-প্রশাসনের নজরে আনবেন। নাম না করে বিজেপি’র সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের এই অবস্থা আগে ছিল না। এভাবে ঘৃণা ছড়ানোর চেষ্টা আগে হয়নি। এটাকে আমরা অপসংস্কৃতি বলি। আমরা সবাইকে নিয়ে চলি।