উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
তবু প্রশ্ন ওঠে, সত্যিই কী অসম্ভব! মানুষের ভালোবাসা, তর্ক ছাড়াই হাত বাড়িয়ে দেওয়া অন্যের সাহায্যার্থে— সমস্ত কিছুই কি এখনও অবিশ্বাস্য! সবটা বোধহয় নয়। না হলে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক ছবি বানাবেন বলে গোটা গ্রাম ঝাঁপিয়ে পড়ে? চাঁদা তোলে? আর সেই চাঁদার টাকাতেই উজ্বলবাবু বানিয়ে ফেলেন আদ্যপান্ত একখানা ছবি!
‘হ্যাঁ ঠিক তাই। নদীয়া জেলার আড়ংঘাটা গ্রামের ৯৫০টি পরিবার প্রায় ১৯ লক্ষ টাকা দিয়েছেন ছবিটা করার জন্য। গ্রামের প্রতিটি পরিবারের কাছে আমি কৃতজ্ঞ!’— স্বীকার করলেন পরিচালক উজ্জ্বল বসু।
তা কেমন সেই ছবি?
‘আসলে আমরা তো বিশ্বাস নিয়েই বাঁচতে চাই! ছোটবড় সকলের বেঁচে থাকার মূল অবলম্বন আসলে বিশ্বাস। কখনও কখনও সেই বিশ্বাস ভাঙেও হয়তো! ছবিটি সেই বিশ্বাস ঘিরেই তৈরি করা।’ ছবির নাম ‘দুধ পিঠের গাছ’। গ্রামের এক ছোট্ট ছেলে গৌর। বয়স মাত্র ছয় বছর। দুরন্ত গৌর সবসময় দুষ্টুমি করে। বড্ড চঞ্চল। মুশকিল একটাই, গৌরের বাকশক্তির সমস্যা রয়েছে। ফলে ঠিক করে কথা বলতে পারে না সে। তবে এই দুরন্ত ছেলেটির মনের ভিতরে রয়েছে অন্য এক অচেনা জগত। সে বিশ্বাস করে আম-জাম-কাঁঠালের মতো পিঠের গাছ হয়। সেই বিশ্বাসে সে মাটিতে পুঁতে রাখে পিঠে। রোজ জল দেয় আর অপেক্ষা করে— এই বুঝি পিঠের গাছ মাথা তুলে দাঁড়ালো! ‘একসময় সে একটা নতুন দেশের সন্ধান পায়। সেই দেশ ঈশ্বরের দেশ, সেখানে নানারকম পিঠের গাছ আছে। তার বিশ্বাস, যে কোনও একটা রেলগাড়িতে চড়ে বসলেই সে পৌঁছে যাবে দুধপিঠের গাছের দেশে!’, বললেন উজ্জ্বলবাবু।
তাঁর কাছেই জানা গেল ৬৫টি বাচ্চা অভিনয় করছে ছবিতে। গুরত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছেন বেণী বসু, কৌশিক রায়, ছন্দা চট্টোপাধ্যায়ের মতো অভিনেতা। গৌরের চরিত্রটি করেছে হর্ষিল দাস।
পরিচালক আরও জানালেন, আপাতত পোস্ট প্রোডাকশনের কাজ চলছে। এরপর বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবে পাঠানো হবে এই ছবি। মুক্তি পেতে পারে নভেম্বর মাসে।
অতএব গৌর আদৌ ঈশ্বরের দেশের সন্ধান পাবে কি না তা জানতে ছবি মুক্তি পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে দর্শককে। তখনই বোঝা যাবে অ্যালিসের মতোই গৌর তার বিশ্বাসের দেশে পৌঁছতে পারবে, নাকি ছেলেটির এই সন্ধান আসলে খুলে দেবে প্যানডোরাজ বক্সের ডালা!