উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
কেন অস্থিরভাবে লেখকের খোঁজ করছে যুবকটি?
সেই প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার আগেই কাটশটে দর্শক চলে যায় একটি গল্পের বই-এর পৃষ্ঠার কাহিনীতে। সেই অধ্যায়ের গল্পে দেখা যায় সদ্য যৌবনে পা রাখা দুই তরুণ-তরুণীকে। ছেলেটির নাম ঋত্বিক আর মেয়েটির নাম মৌসুমি। ভিন্ন এই অধ্যায়ে ধরা পড়ে প্রেমিক-প্রেমিকার মিষ্টি কলেজ প্রেম। সরস্বতী পুজোয় বন্ধুর বাড়িতে প্রহরবাস, প্রথম সাহসী স্পর্শ!
এই প্রেমজ দৃশ্যালাপের মধ্যেই ফের কাটশটে ফিরে আসে সেই যুবক। বিশ্রামহীনভাবে সে তখনও লেখকের খোঁজ করে চলেছে। আর তখনই কাকতালীয়ভাবে তার সঙ্গে দেখা হয় শ্রেয়া নামের এক যুবতীর। মহিলা এই যুবকের পূর্বপরিচিত। শ্রেয়ার মুখ থেকেই জানা যায়, এই যুবকের নাম কৌশিক। শ্রেয়ার কাছে এস কে মুখোপাধ্যায় সম্পর্কে জানতে চায় কৌশিক। শ্রেয়া লেখকের ঠিকানা জানায়।
ঠিকানায় পৌঁছে কৌশিক দেখে, একটা বড় পাথরের ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে লেখকের লাঠি, টুপির কিয়দংশ এবং চুরুটের ধোঁয়া। কৌশিক ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে আর গুলি চালায় এস কে মুখোপাধ্যায়ের মাথা লক্ষ্য করে!
প্রশ্ন হল, কেন লেখককে খুন করতে চায় কৌশিক? শ্রেয়াই বা কে? আর মূল কাহিনীর সমান্তরালে যে অল্পবয়সি ছেলে-মেয়ের প্রেমের গল্প বলা হচ্ছে, তাদের সঙ্গে কৌশিক আর শ্রেয়ার যোগাযোগটা ঠিক কোথায়? সব প্রশ্নের উত্তর মিলবে প্রেক্ষাগৃহের পর্দায়। তাই টিকিট কাটা ছাড়া গত্যন্তর নেই।
মনোজ মিচিগান পরিচালিত ‘তৃতীয় অধ্যায়’ আদ্যোপান্ত একটি ‘রোমান্টিক থ্রিলার’। কৌশিকের ভূমিকায় রয়েছেন আবির চট্টোপাধ্যায়। শ্রেয়ার ভূমিকায় পাওলি দাম। ঋত্বিকের চরিত্রে সৌরভ দাস এবং মৌসুমির চরিত্রে অরুণিমা হালদার। সকলেই যথেষ্ট ভালো অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে আবিরের শারীরিক ভঙ্গিমায় অস্থিরতা, চেহারার রুক্ষতা গল্পের জার্নির সঙ্গে মিলে গিয়েছে যথাযথভাবেই। অন্যদিকে পাওলি শুধু চোখ দিয়েই অভিনয় করে গিয়েছেন সাবলীলভাবে!
অভিনয় নিয়ে দ্বিধা নেই। ছবির গানগুলিও শ্রুতিমধুর। খটকা নেই ক্যামেরার কাজ নিয়েও। বিশেষ করে ড্রোন ক্যামেরায় তোলা মনোলোভা বিস্তীর্ণ মালভূমি, ধাপ চাষ, ক্যানেলের পাশে মাটির রাস্তার ছবি মনে থাকবে অনেকদিন। শুধু হতাশা রয়েছে ছবির দ্বিতীয়ার্ধ নিয়ে। প্রথমার্ধের টানটান ভাব, বিরতির পরে ধরে রাখতে সফল হননি পরিচালক। গল্পটি তাঁরই লেখা। সেই গল্পের বুননে দক্ষতার অভাব স্পষ্ট হয়েছে ছবিতেও। দ্বিতীয়ার্ধ জুড়ে শুধু কৈফিয়ৎ দেওয়ার ঢঙে গল্প এগিয়ে চলে। গতিও হয়ে যায় অনেক ধীর। অ্যাড্রিনালিন ক্ষরণ করার মতো মোচড়ের অভাবে খতম হয়ে যায় উৎসাহ। এ যেন ‘ড্র’ হবে জেনেও সারাদিন ধরে টেস্ট ম্যাচ দেখা! তারপরেও বলতে হয়, রোমান্টিক থ্রিলার হিসেবে ‘তৃতীয় অধ্যায়’ অন্যরকম অভিজ্ঞতা দেবে দর্শককে।