ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
—মা... মা... মানে? কী খাইলাম ডাক্তারবাবু?
—কেন, সত্যনারায়ণ মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের মালপোয়া?
বাগবাজারের আড্ডায় থতমত খেয়ে গিয়েছেন ঢাকার বাঙাল ফটিক রায়।
—কী হল! সত্যনারায়ণের মালপোয়া নাকি খুব টেস্টফুল? চেম্বার সেরে আড্ডায় বসে যাওয়া ডাক্তার নির্ভয় বৈদ্য মিটিমিটি হাসছেন।
—আপনে ডাক্তার না, সাক্ষাইত ভগবান। আসলে নাতির জন্য কিনতে গিয়া লুভ সামলাইতে পারি নাই!
—আর মালপোয়া সাটানোর পর চোখ বুঁজে চুকচুক করে একপ্লেট রসমালাই! সেটা কার? নাতনির?
—আপনে দেখতাছি চেম্বারে বইসাই বিশ্বরূপ দেইখা ফালান!
—বাজারে পাশের দোকানে মাখন কিনতে গিয়ে হঠাৎ চোখ চলে গেল।
—সময় খারাপ যাচ্ছে আপনার! ফুট কাটল কম্বল।
—খারাপ কেন যাবে! কাল দেখিয়ে গিয়েছেন। পিপি সুগার তিনশো বিশ। আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। এতকালের ডায়াবেটিক, দিনটাকে উদযাপন করতে হবে না!
ব্যাপক ফর্মে আছেন নির্ভয় ডাক্তার।
—খেয়ে নিন, খেয়ে নিন, কোন দিন ফুটে যাবেন, কেউ জানে না!
—তুমি আর মুখ খুইলো না মাধব, রুজ রাইতে ফ্রিজ খুইলা চুরি কইরা মিষ্টি খাও, তোমার পোলায় কইছে।
—বেশিরভাগ সুগার রোগীই চোর!
ফুলটস বল ছুঁড়ে বসলেন ডাঃ বৈদ্য।
—শ্যাষে চুর বানাইয়া দিলেন!
গম্ভীর ফটিক বাঙাল।
—অল্পের ওপর পার পেয়ে গেলেন। আপনি চোর হলে মাধববাবু ডাকাত।
—কেন আমি আবার কী করলাম ডাক্তারবাবু?
—রোজ অটো ধরে সিমলেপাড়া গিয়ে বিকেলে মুঠোসন্দেশ! সুগার তো অনেককাল ডেঞ্জার জোনে!
একলাফে রাস্তায় গিয়ে আচমকা কান ধরে ওঠবোস শুরু করে দিয়েছেন মাধব মল্লিক! ‘আর একদিনও খাব না, দু’দিকের পা-ই গেছে। বাঁচান।’
—বাঁচবা না মাধব। চালুনি হইয়া শুইচের পিছনে লাগতাছিলা না! আমি খাই নয় মাসে ছয় মাসে! তুমি তিনশো পয়ষট্টি দিন! ডাকাইত!
বলেই হো হো করে যাত্রার স্টাইলে হেসে উঠছেন দর্জিপাড়ার আনপ্যারালাল ফটিক বাঙাল।
দুম করে টাইম মেশিনে চড়ে পৌঁছে গেলাম চৌত্রিশ বছর আগের পি জি হাসপাতালে। হাসপাতালের ম্যাটারনিটি ওয়ার্ডে ভর্তি রুচিরা বসু। আগের বাচ্চাটা আট মাসে মারা গিয়েছে পেটে। এবার প্রফেসর মিত্র ভর্তি করিয়ে দিয়েছেন ছ’মাস যেতেই। রুচিরার রক্তে থিকথিক করছে চিনি। আমি দোর্দণ্ডপ্রতাপ প্রফেসর মিত্রের সিনিয়র হাউস সার্জেন। স্যারের নির্দেশে ডায়েট চার্ট বানিয়ে দিলাম।
—একেবারে এই চার্ট মেনে খাবেন। সঙ্গে ওষুধগুলো।
—আচ্ছা ডাক্তারবাবু।
—আপনার জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস। বাচ্চা হু হু করে বড় হচ্ছে। সুগার কন্ট্রোলে রাখা আপনার হাতে।
—জানি ডাক্তারবাবু।
ডায়েট কন্ট্রোল, ওষুধ চলছে। রুচিরার রক্তে সুগার কেশব নাগের তৈলাক্ত বাঁশে বাঁদরের ওঠানামার মতো আজ দশ ওঠে তো কাল আট নামে। স্যার বললেন, ‘ডায়েট চেক করো।’
বাড়ি থেকে আনা খাবার চেক করছি রোজ দু’বেলা। তবু সুগার আর কমে না। আমরা টেনশনে জেরবার।
রেসকোর্সের মাঠের উল্টোদিকের গেট দিয়ে ঢুকে স্যারের কোয়ার্টার দোতলায়। রোজকার মতো সেদিনও সকাল আটটায় পৌঁছে গিয়েছি। স্যার ব্রিফকেসটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছেন প্রায় দৌড়ে।
—তাড়াতাড়ি চলো। আজ একটা এক্সট্রা কাজ আছে।
—কী কাজ স্যার?
—একটা কাকের বাসা ভাঙতে হবে।
—গাইনি বাড়ির আশপাশে তো তেমন কোনও গাছ নেই। বাসা...
—বত্রিশ নম্বর বেডের ডায়াবেটিক পেশেন্ট প্রপার ডায়েট খাচ্ছে?
—হ্যাঁ স্যার। রোজ চেক করছি।
প্রথমে গাইনি ওয়ার্ডে না গিয়ে সেদিন স্যার গটগট করে ঢুকে গেলেন মেটার্নিটি ওয়ার্ডে।
—প্রেশার কত দেখেছ সকালে?
—একশো ত্রিশ, আশি।
—সুগার কত এসেছে?
—দু’শো পাঁচ স্যার। শুনতে শুনতে প্রফেসর মিত্র রোগী দেখছেন। হঠাৎ ঘুরে দাঁড়ালেন রোগিণীর দিকে।
—দেখি মা চাবিটা আমাকে দাও।
—চা...চা...চাবি ... কীসের চাবি?
—বুঝতে পারছ না কীসের চাবি? মৌচাকের।
কাঁপছেন মিসেস রুচিরা বসু। বালিশের খোলের ভেতর থেকে ছোট্ট একটা চাবি বের করে দিলেন।
—ভাঙো কাকের বাসা। মিটসেফের ছোট্ট তালার মিনি চাবি স্যার দিলেন আমার হাতে। ব্যাঙের মতো বসে চাবি খুলে মিটসেফের দরজার পাল্লা খুলতেই চিচিং ফাঁক!
একের পর এক মিষ্টির প্যাকেট বেরিয়ে আসছে। সন্দেশ, চমচম, কালোজাম, মিহিদানা, আমসন্দেশ... ভাঁড়ে রসমালাই, রাবড়ি।
—সিজ করো সব মাল।
আমার দিকে তাকালেন প্রফেসর মিত্র। জুনিয়র ডক্টরস রুমের মালখানায় যাবে। স্যারের গলায় গনগনে আঁচ।
—এত মিষ্টি দিয়ে তুমি কী করতে? বিকেলে গেস্ট এলে খাওয়াতে? নাকি নিত্যপুজো করতে? গেট আউট ফ্রম দিস হসপিটাল। সবুজ, তুমি পেশেন্ট পার্টি সেই পুলিস অফিসারকে ফোন করো। আজই ডিসচার্জ করে দাও।
—ছে...ছেড়ে দিন স্যার। আ...আ...র ভু...ভুল হবে না।
—ভুল! তোমার হাজব্যান্ড যেন কোন থানার ওসি?
—গড়িয়াহাট স্যার।
—চোরকে ছেড়ে দেয় নাকি ওসি সাহেব। সোজা লকআপে পুরে দেয়। ইউ আর লাকি এনাফ। ছেড়ে, আই মিন ডিসচার্জ করে দিচ্ছি। কাল সকালে যেন এই চোরের মুখ আমাকে আর দেখতে না হয়।
গমগম করছে গোটা ওয়ার্ড। একটু দূরে দাঁড়িয়ে ওয়ার্ড সিস্টার অনিতাদি।
—সিস্টার, কে এনে দিত মিষ্টি? আপনি জানেন না, তাই তো! জেগে ঘুমালে জানবেন কী করে?
—মা, কে আনত মিষ্টি?
—শিয়ারাম স্যার। আমার কোনও দোষ নেই। শুধু টাকাটা দিতাম! কাঁদতে কাঁদতে বলে দিলেন আসামি।
—শিয়ারাম, ইধার আও, কুইক... গলা দিয়ে আগুন বেরচ্ছে স্যারের।
দূর থেকে ওয়ার্ডের ফ্লোরে শুয়ে দণ্ডী কাটতে কাটতে স্যারের দিকে এগিয়ে আসছে শিয়ারাম! স্যারের কাছে এসেই নাকখত দিতে শুরু করল।
—নাটক করে লাভ নেই। সার্জেন সুপারকে বলে দিচ্ছি, কাল থেকে সেপটিক ওয়ার্ডে ডিউটি। সিস্টার ওকে বের করে দিন, এখনই।
শিয়ারাম পগারপার। মিষ্টির প্যাকেট হাতে জুনিয়র উন্মেষ পিছনে। আমি স্যারের পাশে। গোলাগুলি ছুটে আসছে একের পর এক।
—হায়ার সেকেন্ডারিতে স্ট্যান্ড করলেই ভালো ডাক্তার হওয়া যায় না... স্টুপিড... অন্যদের মিটসেফে তালা নেই, ওরটাতেই তালা... চোখ নেই তোমার!.. রোগী দেখতে গিয়ে চোখ নাক কান মাথা লক করে রাখো... ওই বিএসসি নার্সিংয়ের হলুদ পরীদের দেখতে দেখতে মাথাটা তোমার গোবরে ভরে যাচ্ছে মূর্খ। আমার আন্ডারে কাজ করতে হলে যা ঘিলু লাগে, তোমার তা নেই!
নাটকের শেষ অঙ্ক রসে ভরিয়ে দিলেন স্যারই। জুনিয়র ডক্টরস রুমে একবার উঁকি মারলেন প্রফেসর মিত্র। ‘আমার এই গাধাটাকে একটু বেশি দিও... সকাল থেকে আমার বকা ছাড়া কিছুই খায়নি বেচারা।’
—আপনাকেও দুটো খেতে হবে।
—ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ডে-তে কাজটা ঠিক হবে?
—এই তো সুগার মাপলেন। একশো ষাট ছিল। আজ দুটো খেতেই হবে।
—আমার সিনিয়র হাউস সার্জেন যখন বলছে... একশো আশিকে কুড়ি কমিয়ে বলায় প্রফেসর মিত্রর হাসিমুখ, চোখ চকচক করছে।
স্যারের চেম্বারে সন্দেশ নিয়ে ঢুকলাম। দরজা আটকে বসতে বললেন। ওসি ফোন করেছিলেন। স্যার মিষ্টি খাচ্ছেন চোখ বুজে। ‘কী করবে ওই পেশেন্টের?’ ‘আর করবে না বলেছে। বন্ড লিখিয়ে নিচ্ছি। ইনসুলিন চালু করে দিই স্যার?’ ‘এগজ্যাক্টলি...আজ থেকেই...এইজন্য তোমার উপর এত ডিপেন্ড করি। আরে ওয়ার্ল্ড ডায়াবেটিস ডে-তে আমরা সবাই খাচ্ছি চোরাই মিষ্টি! চোরের হাতে একটা সুস্থ বাচ্চা তুলে দিতে পারবে না?’ ‘পারব স্যার।’ পেরেছিলাম। আজ চোদ্দোই নভেম্বর, মনে পড়ে গেল। স্যারের শেষ কথাটা ছিল বাঁধিয়ে রাখার মতো...
—তুমি তো আবার অল ইন্ডিয়া রেডিও। তোমার বউদি যেন মিষ্টি খাওয়াটা...
—জানতে পারবে না স্যার।
—ইউ আর কোয়াইট ইন্টেলিজেন্ট, তবু...।
পার্ট টাইম গণৎকার লিন্টন ওরফে জ্যোতিষাচার্য অব্যর্থ শাস্ত্রী আমার আগের পাড়ার বাসিন্দা। বাড়ি ভাড়া নিয়ে পাড়ায় আসার পর বাড়ির চেম্বারে দু’-চারজন যেত হাত দেখাতে। পরে লিফলেটে জানা গেল, অব্যর্থ গণৎকার ভূতনাথ জুয়েলার্সে সপ্তাহে তিনদিন সন্ধ্যায় একঘণ্টা বসেন ও হস্তরেখা বিচার করে গ্রহরত্নের নিদান দেন। আমার বাড়িতে এলেন একদিন, ততদিনে ড্রাইভার পুপার কল্যাণে জানা হয়ে গিয়েছে, দিনের বেলায় লিন্টন কর ক্যানিং রুটে অটো চালান!
—ডায়াবেটিসে ধরেছে। আপনার ‘হাতের রেখায় ডায়াবেটিস’ বইটা পড়লাম।
—বইটা ‘হাতের মুঠোয়’, ‘হাতের রেখায়’ নয়।
—একই ব্যাপার।
—আচ্ছা, কালমেঘ মধু দিয়ে খেলে সুগার কমবে, নাকি রস করে খেলে?
—কোনওটাতেই না। হাজার তেতো খান, ব্লাড সুগার কমবে না।
—তাহলে লোকে খায় কেন?
—আপনাকে হাত দেখিয়ে লোকে আঙুলে পাথর পরে কেন?
—ঠিক। ‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু!’
বাজার খুব খারাপ যাচ্ছে স্যার। ডায়াবেটিসের একটা পাথর ছাড়ব ভাবছি। ‘সুগারস্টোন’ নামটা কেমন হবে? আপনি তো লেখেন। বার্নিশ করা পাতি বেলেপাথর স্যার।
—‘গ্লুকোনাশ’ চলবে?
—চলবে মানে! দৌড়াবে! আচ্ছা ‘হাতের রেখায় ডায়াবেটিস’, নামে একটা বই লিখলে কেমন হয়?
—দেরি না করে লিখে ফেলুন! ‘হাত দেখে ডায়াবেটিস’ ধরা চালু করলে আরও জমে যাবে।
আমার প্রতিবেশী দিলীপবাবু কারও বাড়ি গেলেই ভুলে যান উনি ডায়াবেটিক! চিনি দেওয়া চা, নাড়ু, মিষ্টি, শিঙাড়া—সব চলে! তৃপ্তি সেন বাড়ির গোপালকে মিষ্টি দিয়ে নাতিকে খাওয়াতে খাওয়াতে টপাটপ নিজের মুখে পোরেন! ভিকি রয় সব মিষ্টি খান, খাওয়ার আগে ইনসুলিন পাঁচ ইউনিট বাড়িয়ে নেন!
ডায়াবেটিস ধরা পড়তেই এক বন্ধুপত্নী ভাত, রুটি সব বন্ধ করে দিয়েছেন! দিনরাত শুধু সব্জি আর ছোলাসেদ্ধ।
—বউটা একদিন না হাম্বা হাম্বা করে ডেকে ওঠে! তুই কিছু বল!
বলল তথাগত।
—লাভ নেই বলে, ঘরে ঘরে বিধান রায়! খুব খারাপ হবে না ব্যাপারটা! তুই কলাটা খেয়ে খোসাটা ওর মুখের সামনে ধরলেও খেয়ে নেবে!
—এত বাড়ছে কেন ডায়াবেটিস, একটু বলবেন?
—কারণ মধ্যপ্রদেশ!
—মানে? এই তো তিন বছর আগেই ঘুরে এলাম!
—রিকশওয়ালারও নোয়াপাতি ভুঁড়ি! দেখেছেন?
—হগলেরই ভুঁড়ি। ক্যান কন তো?
—জিন।
—রাম রাম রাম। রাইতে উনাগো নাম নিবেন না।
—মহা মুশকিল! জিন, রাম, হুইস্কির মতো অসংসদীয় কথা আড্ডায় কেন?
—এ জিন থাকে শরীরে।
—খাইছে! আমাগো ভূতে ধরছে?
—এতদিনে বুঝলেন? বলছি কৃপণ জিনের কথা।
—সেটা আবার কী? নেটে নেই তো?
—সেল-এ আছে।
—বুঝেছি। কোষ। যাতে থাকে জিন।
—একটা জিন খুব কৃপণ। মাধবদার মতো। খরচ করে কম, জমায় বেশি। ভারতীয়দের শরীরে তাই খাবার খরচ হয় কম, জমে বেশি।
—ভুঁড়ি যে কমতেই চায় না।
—কমবে। লালজামা পরে পিছনে খ্যাপা ষাঁড় ছেড়ে দিন। সাতদিনে কুমড়ো থেকে লাউ হয়ে যাবেন!
অনেকদিন আগে দেখাতে আসতেন এক প্রৌঢ় ডায়াবেটিক মধু পাল। একবার অনেকদিন আসেননি। হঠাৎ করে চলে এলেন একদিন। সুগারের রিপোর্ট দেখালেন। একদম নর্মাল।
—বা! এত ওজন কমালেন কী করে?
—দুই বউমা মিলে কমিয়ে ছাড়ল!
বাড়িতে চরম ডায়েট কন্ট্রোল। অবসর জীবন। দুই ছেলেই ভালো চাকরি করেন। বিকেলে হাঁটতে বেরতেন। একটু হেঁটে বাস ধরে সোজা দক্ষিণ কলকাতা থেকে উত্তরে। শ্যামবাজারে নেমে হেঁটে বাগবাজার। সেদিন সবে গিয়ে বসেছেন চিত্তরঞ্জন সুইটসে। রাবড়ি অর্ডার দিয়েছেন।
—রাবড়ি খাওয়া শেষ। মধুপর্ক নিয়ে মোটে একপিস খেয়েছি। দরজায় চোখ চলে গেল। সর্বনাশ!
—কীসের সর্বনাশ?
—কাচের দরজা ঠেলে ঢুকছে দুই বউমা। পৌলমী আর বিদিশা। মার্কেটিং করতে এসেছিল এ তল্লাটে। দূর থেকে নজর রাখছিল আমার ওপর।
—তারপর?
—হাসতে হাসতে বলল, আগে তো মধুপর্ক আর রাবড়ি খাওয়ান বাবা। পরে বাকিটা।
—বাকিটা কী?
—সেদিন দু’জনে দুটো মুর্শিদাবাদ সিল্কের শাড়ি নিল। বলল, আপনার দুই ছেলে জানতে পারলে কিন্তু বাড়ি থেকে বেরনো বন্ধ করে দেবে।
—তারপর?
—তার আর পর নেই! মাঝে মাঝেই বিকেলে ডাক পড়ে, চলুন বাবা, একটু মার্কেটিং করে আসি! আমি বাধ্য শ্বশুর, যেতেই হয়! একটা ফতুয়া কিনে দিয়ে একদিন দু’জনে দুটো দামি ঘড়ি কিনিয়ে নিল দু’জনের জন্য।
—এ তো নিদারুণ ব্ল্যাকমেল।
—যেতে না চাইলেই ছেলেদের বলে দেবার ভয় দেখায়।
—আহা রে!
—ডায়াবেটিসে লোভে পাপ। পাপে দেউলিয়া। ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙছি একের পর এক। মিষ্টি খাওয়ার সাধ চুকে গেছে। শরীর শুকিয়ে হরীতকী।
—মেয়ে ডাকাতে ধরেছে দেখছি!
—মা সারদার বাণী শোনায়! বলে, ‘যাকে রাখো, সেই রাখে।’
—বাপ রে!
—আমাকে বাঁচান! আমার হাত দুটো চেপে ধরেছেন মধু পাল।
...
সব চরিত্র কাল্পনিক নয়।
সহযোগিতায় : স্বাগত মুখোপাধ্যায়