Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

নানা রূপে দুর্গা
তরুণ চক্রবর্তী

সাধক গাইলেন, ‘ত্রিনয়নী দুর্গা, মা তোর রূপের সীমা পাই না খুঁজে।’ সত্যিই মায়ের রূপের যেন সীমা নেই। আর এমনটি হওয়াই স্বাভাবিক। শ্রীশ্রী চণ্ডীতে দেবী দুর্গার মাহাত্ম্য বর্ণনায় আছে,—‘নিঃশেষ দেবগণশক্তি সমূহ মূর্ত্যাঃ’, অর্থাৎ সব দেবতার সমস্ত শক্তির সম্মিলিত প্রতিমূর্তিই দেবী দুর্গা। নানা দেবতার তেজোজাতা এই দেবীর রূপও তাই নানাবিধ। দেবীর দশভুজা রূপটিই বেশি জনপ্রিয় হলেও, কোথাও তিনি দ্বিভুজা, কোথাও ত্রিভুজা, চতুর্ভুজা, ষড়ভুজা, অষ্টভুজা এমনকী সহস্রভুজাও। দেশে দেশে, দিশে দিশে মা দুর্গার রূপের অজস্রতা আজও আমাদের কৌতূহলী করে।
বৈদিক সাহিত্যের যে শক্তিদেবীকে দুর্গা জ্ঞানে আমরা পূজা করি, তন্ত্র ও পুরাণে তাঁর বিশেষ বিবরণ ও পূজা-পদ্ধতির উল্লেখ আছে। এ দেবী যেমন মহিষমর্দিনী, শূলিনী, জয়দুর্গা, বনদুর্গা, জগদ্ধাত্রী, গন্ধেশ্বরী ইত্যাদি নানা নামে পূজিতা হন। এঁদের আকৃতিতেও ভিন্নতা আছে অনেক। বাংলায় প্রচলিত পৌরাণিক পদ্ধতি অনুসারে ইনি অতসীপুষ্পবর্ণকা, দশভুজা, জটাজুট সমাযুক্তা। অর্ধচন্দ্র এঁর শিরোভূষণ। দেবীর পাদদেশে ছিন্নমস্তক মহিষ। মহিষের দেহ থেকে খড়্গ হাতে বেরিয়ে এসেছে যে দানব, তাকে বিদ্ধ করেছে দেবীর শূল। দেবীর ডান পা সিংহের পিঠে, আর বাঁ পায়ের আঙুল, একটু ওপরে মহিষের দেহ ছুঁয়েছে। অষ্টশক্তি ও দেবগণ ঘিরে আছেন দেবীকে। তাঁর দু’পাশে কার্তিক-গণেশ এবং লক্ষ্মী-সরস্বতী, কিংবা কোথাও এঁদের পরিবর্তে জয়া-বিজয়ার যে মূর্তি দেখা যায়, তার বিধান আছে কালীবিলাস তন্ত্রে।
তন্ত্রসার মতে, দেবী দুর্গা চতুর্ভুজা। প্রাচীন গ্রন্থ দেবী ভাগবত পুরাণ অনুসারে দেবীর বাহুসংখ্যা ১৮। কিংবদন্তি পুরাণ মতে ১৬, বরাহ পুরাণ মতে ২০, দেখা গেল, রামায়নেও ইনি চতুর্ভুজা। দুর্গাভক্তি তরঙ্গিনীতে আবার অষ্ট ও চতুর্ভুজা।
বাংলার প্রায় সর্বত্রই দেবী ত্রিনয়নী এবং দশভুজা হলেও, কোথাও কোথাও আজও ব্যতিক্রমী মূর্তি চোখে পড়ে।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পিংলার অদূরে ভাসানপুকুর গ্রাম। গ্রামের তিনটি পারিবারিক দুর্গোৎসবের বিগ্রহই দ্বিভুজা। সেখানকার পাল বাড়ির দুর্গা প্রতিমার রূপ বাংলার চিরকালীন শ্যামস্নিগ্ধ বঙ্গলক্ষ্মীর। অভয়া এই দেবীর হাতে কোনও অস্ত্র নেই, আছে বরাভয়ের আশ্বাস। প্রায় পাঁচশো বছর আগে জনৈক কৃপারাম পাল হুগলি থেকে সেখানে গিয়ে বসতবাড়ি তৈরি করেন। তিনিই এই অভয়া দেবীমূর্তির প্রতিষ্ঠা করেন। দ্বিভুজা এই দুর্গাপুজোর বৈশিষ্ট্য হল, ষষ্ঠী থেকে দশমীর দিন পর্যন্ত চণ্ডীমঙ্গল কাব্যের বণিকখণ্ড গান করা হয়।
ভাসানপুকুরের জিতনরাম পাল এবং কালীতলার লালপাকাতে চৌধুরী বাড়ির দুর্গা প্রতিমাও দ্বিভুজা। এই তিন দ্বিভুজা দুর্গাকে মহাকালী, মহালক্ষ্মী ও মহাসরস্বতীরই ত্রিবিধ রূপের বহিঃপ্রকাশ বলে অনেকে মনে করেন।
হুগলি জেলার বলাগড় থানার অধীনস্থ একটি গ্রাম সোমড়া। গ্রামের নামেই স্থানীয় রেল স্টেশনের নাম সোমড়া বাজার। ব্যান্ডেল-কাটোয়া লাইনের এই স্টেশন থেকে কয়েক কদম হেঁটে গেলেই চোখে পড়বে সেন পরিবারের পুরনো অট্টালিকা। এ বাড়ির দুর্গাপুজোয় মায়ের ত্রিভুজা মূর্তি দর্শন করা যায়। তাঁর ওপরের ডান হাতে জ্বলে খড়্গ, নীচের ডান হাতে ঝলকায় ত্রিশূল। দেবীর বাঁ হাতের মুঠোয় একই সঙ্গে ধরা থাকে অসুরের কেশ আর সাপ।
কিছু ইতিহাসও মেলে এই পারিবারিক দুর্গোৎসবের। বংশের পূর্বপুরুষ রাজা রামচন্দ্র সেন ১৭৪২ খ্রিস্টাব্দে দিল্লির সম্রাট মহম্মদ শা’র কাছ থেকে ‘রায়রাহান’ উপাধি পেয়েছিলেন। দেবদ্বিজে তাঁর প্রগাঢ় ভক্তি ছিল। সারা বছর ধরেই গৃহদেবতা হিসেবে পূজিত হতেন লক্ষ্মীনারায়ণ শ্রীধরনারায়ণ, পার্বতী, মহাদেব, মনসা, ষষ্ঠী, মঙ্গলচণ্ডীর মতো অনেক দেবতাই। ১৭৬০ খ্রিস্টাব্দে রাজা রামচন্দ্র সেন তাঁদের পারিবারিক দুর্গোৎসবের প্রচলন করেন। মায়ের পুজোর জন্য তিনি কাঠের অপূর্ব কারুকার্য খচিত দুর্গাদালান তৈরি করিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যবশত তাঁর জীবদ্দশাতেই কোনও এক বিজয়া দশমীর সন্ধ্যায় বর্গিরা এসে সেই দুর্গাদালানটি ধ্বংস করে দিয়ে চলে যায়। রাজ পরিবারের সবাই তখন দেবীমূর্তি নিয়ে গঙ্গায় বিসর্জন দিতে গিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে নতুন করে দুর্গাদালান তৈরি হয়। তবে যে মাটির বেদীতে রাজা মূর্তি স্থাপন করেছিলেন, আজও সেখানেই মা বিরাজ করেন। পুজোর সময় দুর্গাদালানে সাজিয়ে রাখা হয় গৃহদেবতাদের।
এই ত্রিভুজা দুর্গাপুজোয় ফল বলি দেওয়া হয়। দুর্গাদালানের সামনের প্রাঙ্গণে একটি মাটির স্তম্ভে কর্মকার বলিদান করেন।
অভিনব আর একটি দুর্গাপুজোর কথা উল্লেখ্য। হুগলি জেলার বলাগড়ের পাটুলিতে কয়েকশো বছর ধরে ব্যতিক্রমী এক দ্বিভুজা দুর্গা পূজিতা হয়ে আসছেন। সেখানে দেবী ‘মঠের মা’ নামেই পরিচিত। পুজোটি মঠবাড়ির বলেই এর নাম। প্রাচীনকালে সেখানে একটি বৌদ্ধমঠ ছিল। পরবর্তীকালে বৌদ্ধধর্মের অবক্ষয়ের দরুন বহু বৌদ্ধ দেব-দেবী হিন্দুদের লৌকিক দেব-দেবীতে রূপান্তরিত হয়েছিলেন। সমাজ-সংস্কৃতি বিজ্ঞানী বিনয় ঘোষের লেখা থেকে জানা যায়, ‘এই মঠবাড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন এক বৌদ্ধ তান্ত্রিক। আজও মঠবাড়ির পুজোয় দেখা যায় বৌদ্ধ তন্ত্রাচারের বিবর্তিত রূপ।’
এ পুজোর প্রচলন নিয়ে অন্য কাহিনিও আছে। খ্যাতনামা পণ্ডিত মদনমোহন তর্কালঙ্কার নদীয়ার মহারাজার কাছ থেকে ‘আয়মা পাটুলি’ গ্রামটি লাভ করেন। সেখানে তিনি বসবাসও শুরু করেন এবং একসময় বৌদ্ধ তান্ত্রিক প্রভাবযুক্ত এই দেবী পুজোর প্রচলন করেন। 
মঠের মা’র প্রতিমা নিমার্ণের কাজ শুরু হয় জন্মাষ্টমীর দিন, কাঠামো পুজোর মধ্যে দিয়ে। মূর্তি নির্মাণ করেন বংশপরম্পরায় মৃৎশিল্পীরা। এই মা দুর্গার মূর্তিটির বৈশিষ্ট্য হল—দেবী দশভুজা হলেও তাঁর সামনের হাত দুটিই কেবল দেখা যায়। বাকি আটটি হাত আঙুলের মতো। সেগুলি চুল দিয়ে ঢাকা থাকে। ডাকের সাজের এই প্রতিমার গায়ের রং শিউলি ফুলের বোঁটার মতো। তাঁর চোখ দুটি বাঁশপাতার মতো টানা টানা। দেবীর ডানদিকে কার্তিক, বাঁ দিকে গণেশ। তাঁর বাহন, পৌরাণিক সিংহটি।
বৌদ্ধ তান্ত্রিক কিছু আচার-অনুষ্ঠান আজও এ পুজোয় রয়ে গিয়েছে। অতীতে মাঝরাতে সেখানে নরবলি হতো এবং বলিপ্রদত্ত মানুষটি নাকি স্বেচ্ছায় আসতেন। ইংরেজ আমলে নরবলি নিষিদ্ধ ঘোষিত হলে এ প্রথা বন্ধ হয়ে যায়। তারপর চালের গুঁড়ো দিয়ে তৈরি নরমূর্তি বলি দেওয়া হতো। পাঁঠাবলিও হতো। পাঁঠার মাংসের সঙ্গে মাসকলাই ও দূর্বা দিয়ে তা চৌষট্টি যোগিনীর উদ্দেশ্যে নিবেদন করা হতো। বর্তমানে পশুবলি না হলেও, চালগুঁড়োর নরমূর্তি বলির পর একইভাবে দেবীকে নিবেদন করা হয়।
অতীতে তালপাতার পুঁথি দেখে পুজো হতো। প্রতিবছর দশ-বারো জন বাহক বিসর্জনের দিন প্রতিমা কাঁধে করে গঙ্গার দিকে নিয়ে যান। পথে কয়েক জায়গায় প্রতিমা নামানো হয়। স্থানীয় গৃহবধূরা তখন দেবীকে আলতা, সিঁদুর পরিয়ে বিদায় জানান। সাবেক রীতি মেনে এখনও নৌকোয় প্রতিমা বসিয়ে মাঝ গঙ্গায় নিয়ে গিয়ে দেবীকে বিসর্জন দেওয়া হয়।
নদীয়া জেলার কৃষ্ণগঞ্জ ব্লকের পাবাখালি গ্রামে রায়চৌধুরী  পরিবারের দুর্গোৎসব তিনশো বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এ পুজোর সূচনা মুঘল সম্রাট জাহাঙ্গিরের পৃষ্ঠপোষকতায়। তিনিই তৎকালীন বাংলার যশোরের মহেশপুরের জমিদার ‘বড় সরকার’কে ‘রায়চৌধুরী’ উপাধি দিয়েছিলেন। সেই আনন্দ সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে জমিদার আয়োজন করেছিলেন দুর্গোৎসবের। দেশভাগের পর রায় চৌধুরী পরিবার নদীয়ার পাবাখালি গ্রামে চলে এলেও দুর্গাপুজো বন্ধ হয়নি। মহেশপুর থেকে পঁচিশ কিলোমিটার দূরের পাবাখালিও ছিল তাঁদের জমিদারিরই অংশ। ১৯৪৯ সাল থেকে ওই পাবাখালিতেই রায়চৌধুরি পরিবারের দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এই দেবী প্রতিমা দ্বিভুজা হিসেবেই খ্যাত হলেও আসলে কিন্তু দশভুজা। সামনে থেকে তাঁকে দ্বিভুজাই মনে হয়, বাকি আটটি হাত ঢাকা পড়ে যায় দেবীর চুলের আড়ালে। দেবীর ডান হাতে ত্রিশূল আর বাঁ-হাতে সাপের লেজ। প্রতিমার মাথার ওপর চালচিত্রের বদলে তাঁকে তৃতীয়ার চাঁদের মতো চালি। সাবেককালের রীতি মেনে সন্ধিপুজোর সময় এখনও শূন্যে গুলি ছোড়া হয়।
এখানকার পুজোর পদ্ধতি এবং ভোগের বৈশিষ্ট্য আছে। ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত দেবীকে চারবার ভোগ নিবেদন করা হয়। সকালে পাঁচরকম ভাজা বা পঞ্চব্যঞ্জন দিয়ে খিচুড়ি ভোগ এবং দুপুরে মাসকলাইয়ের ডাল আর নানারকম তরকারি দিয়ে অন্নভোগ দেওয়া হয়। বিকেলে দেওয়া হয় পায়েস ভোগ। সন্ধ্যারতির পর লুচি, সন্দেশ, মোয়া আর নাড়ু দিয়ে ভোগ দেওয়া হয়। দশমীতে দেবীকে দেওয়া হয় পান্তা ভোগ আর মহাদেবকে তামাক ভোগ। শাক্ত আচার অনুসরণ করে এককালে পুজোয় মোষ বলি হতো। জমিদার শিবপ্রসাদ রায়চৌধুরীর আমলে কোনও অজ্ঞাত কারণে বলিদান প্রথা বন্ধ হয়ে যায়।
পারিবারিক এই দুর্গাপূজার বিশেষ কিছু রীতি-পদ্ধতি আছে। পয়লা বৈশাখ ভগবতী যাত্রার দিনে প্রতিমার পাট (কাষ্ঠাসন) পুজো এবং রথের দিন প্রতিমা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ষষ্ঠীতে দেবীর বোধনের সময় হোমের আগুন জ্বালানো হয়, চলে দশমীর পুজোর শেষ পর্যন্ত। চণ্ডীমণ্ডপে জ্বালিয়ে রাখা একটি মোমবাতির সঙ্কেত অনুসরণ করে অষ্টমীর সন্ধিপুজো হয়। পুজোর চারদিনই চণ্ডীপাঠ এবং দশমীতে ‘যাত্রা মঙ্গল’ রায়চৌধুরী বাড়ির দুর্গাপুজোর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। দেবী প্রতিমার বিসর্জন হয় চূর্ণি নদীতে।
মুর্শিদাবাদের কান্দির খড়গ্রাম থানার অন্তর্গত বালিয়া গ্রামে সিংহ বাড়ির দুর্গা প্রতিমাও চতুর্ভুজা। ওই গ্রামের ধর্মপ্রাণ মানুষ বৈকুণ্ঠ নারায়ণ সিং ছিলেন নদীয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্রের নায়েব। উমার স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি চতুর্ভুজা দুর্গার পুজো শুরু করেন। কানা ময়ূরাক্ষী নদী তীরের বালিয়া গ্রামটি আজ ওই চার হাতের দুর্গার জন্যই বিখ্যাত। প্রায় চারশো বছর ধরে সেই সাবেকি প্রতিমাই গড়া হয়ে আসছে। পুজোও হয়ে থাকে পুরনো আচার পদ্ধতি মেনে, বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত মতে। ৭০-৮০ বছর আগেও ওই পুজোয় তিনটি ছাগল বলি দেওয়া হতো। বলিদান প্রথা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক রাজবাড়ির দুর্গ ছিল বহিচবেড় গড়। সেখানে রাজাদের কুলদেবতা রাধাবল্লভ জিউয়ের সঙ্গে নিত্য পূজা হতো চতুভুর্জা দেবী দুর্গারও। তমলুক শহরের রাজবাড়ি থেকে প্রায় দশ কিলোমিটার দূরে নন্দকুমারের বহিচবেড় গড়ে সেই পুজোয় আজও ছেদ পড়েনি। আছে দেবী চতুর্ভুজার মন্দিরও। প্রায় তিনশো বছরের প্রাচীন এই দুর্গাপুজো হয় বৈষ্ণব মতে। আগেকার রীতি মতো এখনও সপ্তমীর দিন নবপত্রিকাকে স্নান করিয়ে গৃহপ্রবেশ করানো হয়। রাজ পরিবারের প্রতীক হিসেবে দেবীর সামনে রাখা হয় একটি তরবারি। আগে ষষ্ঠীর দিন দেবীর বোধনের আগে কামান দাগা হতো। দেবীর ভোগ দেওয়া হতো একমন চালের। এখন আর সে সব হয় না। আগে সেখানে যে মেলা বসত, সে মেলাও চলে গিয়েছে দূরে।
প্রসঙ্গত, বাংলায় দেবীর যে মূর্তিটি আমরা সাধারণত দেখে থাকি, সেখানে তাঁর অধিষ্ঠান সপরিবারে। মধ্যস্থলে দেবী সিংহবাহিনী এবং অসুরদলনী রূপে তাঁর মুকুটে দেবাদিদেবের মুখ শোভিত। দেবীর ডানপাশে ওপরে লক্ষ্মী, নীচে গণেশ। বাঁ পাশে ওপরে সরস্বতী, নীচে কার্তিক। কলকাতায় ১৬১০ খ্রিস্টাব্দে সাবর্ণ রায়চৌধুরি পরিবার এমনই দুর্গা প্রতিমার প্রচলন করেন। তাই ধরে নেওয়া হয়, এটিই দেবীর সাবেকি রূপ। 
পুরুলিয়া জেলার জয়পুর রাজবাড়ির দুর্গাপুজোর অন্যতম আকর্ষণ সোনার তৈরি দ্বিভুজা দুর্গামূর্তি এবং রুপোর তৈরি চালচিত্র। ইতিহাস উঁকি দিচ্ছে এখানেও।
ষোলোশো খ্রিস্টাব্দে উজ্জয়িনী থেকে পুরুলিয়ার এই জঙ্গলমহলে এসেছিলেন জয়সিংহ। স্থানীয় সর্দার খামার মুণ্ডাকে হত্যা করে তিনি সেখানকার রাজা হন। তাঁর নামেই জায়গাটির নাম হয় জয়পুর। খামার মুণ্ডা একটি খাঁড়াকে পুজো করতেন ইষ্টদেবী জ্ঞানে। রাজা জয়সিংহ সেই খাঁড়াটি মুণ্ডাদের বসতি থেকে এনে শক্তির দেবী হিসেবে কলাবউ রূপে পুজোর রীতি প্রচলন করেন। বহু বছর পর সপ্তম রাজা কাশীনাথ সিংহের আমলে এক অগ্নিকাণ্ডে কলা বউ পুড়ে গেলে রাজা নতুন প্রতিমা গড়ার মানত করেন। সেইমতো বেনারস থেকে শিল্পী আনিয়ে তিনি এক কিলোগ্রাম ওজনের সোনার দুর্গামূর্তি এবং ষাট কিলো রুপোর একটি চালচিত্র তৈরি করান। আজও সেই মূর্তিই পূজিতা হন। তবে ১৯৭০ সালে রাজবাড়িতে ডাকাতরা মূল্যবান কিছু সামগ্রী লুঠ করে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে পুজো শেষ হলে সোনার বিগ্রহটি দশমীর দিনে ব্যাঙ্কের লকারে রাখা হয়। পুজোর পাঁচদিন রাজবাড়িতে বিশেষ পুলিসি প্রহরা থাকে।
পুরনো রীতি মেনে শালকাঠের কাঠামোয় তৈরি হয় মা দুর্গার প্রতিমা আর মাটি আসে বাংলাদেশ থেকে। ১০৮ বছরের পুরনো এই দুর্গাপুজো হয় আলিপুরদুয়ারের চৌধুরি পরিবারে। কাঁঠালতলার এই প্রতিমার নির্মাণপর্ব সম্পন্ন হয় বাড়ির মন্দিরেই। বিসর্জনও হয় বাড়ির পুকুরেই। সেখানকার পুজোর বৈশিষ্ট্য হল উমার অধিবাসে গণ্ডারের খড়্গ ও শুয়োরের দাঁতসহ বাইশটি সামগ্রী দেওয়া হয়। দেবী দুর্গার সঙ্গে কালী, শীতলা, ব্রহ্মা ও গঙ্গার পুজো করা হয়।
ঝাড়গ্রামের প্রায় সাড়ে চারশো বছরের পুরনো সামন্ত রাজাদের কনকদুর্গা অষ্টধাতু নির্মিত। তিনি অশ্বারূঢ়া, চতুর্ভুজা। ইতিহাস বলে, চিল্কিগড়ের রাজা গোপীনাথ সিংহ তৈরি করিয়েছিলেন কনকদুর্গার মন্দির। জনশ্রুতি, স্বপ্নাদেশ পেয়ে তিনি স্ত্রী হাতের কাঁকন দিয়ে দেবীমূর্তি তৈরি করিয়েছিলেন। আগে নাকি নরবলি হতো পুজোয়। এখন পাঁঠাবলি হয় অষ্টমীর রাতে নিশি পুজোয়। কনকদুর্গা যেহেতু রাজবাড়ির কুলদেবী, তাই তাঁর নিত্য পুজোও হয়ে থাকে। বিশেষ আয়োজন হয় দুর্গোৎসবের সময়। 
বঙ্গদেশে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শতাব্দী পর্যন্ত মহিষমর্দিনীর প্রস্তরমূর্তিই পূজিত হতো। এগুলির কোনওটি অষ্টাদশভুজা, কোনওটি ষোড়ভুজা, কোনওটি আবার দশভুজা। এমন মূর্তিগুলির পাশে কিন্তু দেবীর সন্তানদের দেখা যায়নি। ত্রয়োদশ শতাব্দীর পর রাজা কংসনারায়ণ প্রথম শরৎকালে মাটির প্রতিমা গড়ে দুর্গাপুজো করেন। সেখানে দেবীর সঙ্গে লক্ষ্মী-সরস্বতী-গণেশ-কার্তিককে দেখা যায়। তার আগে কুলদেবী হিসেবেই দুর্গার পুজো হতো। বারোশো বছর আগেও তিনি কুলদেবীই ছিলেন। প্রাচীনকালের মূর্তিতে দেবীর কোনও বাহন ছিল না। তিনি একাই বিশালবপুর মহিষকে ছুড়ে ফেলে দিয়েছিলেন তার লেজ ধরে। পরবর্তীকালে মহিষমর্দিনীর রূপ হয় সিংহবাহিনী। বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরে মল্লরাজাদের প্রতিষ্ঠিত দেবীর বাহন আবার গাধা। এর মুখটি গোসাপের, কিন্তু দেহটি ঘোড়ার। ৯৯৭ খ্রিস্টাব্দ থেকে এমনই মূর্তিতে সেখানে দেবী পূজিতা হয়ে আসছেন। উত্তর কলকাতার পাথুরিয়াঘাটায় প্রায় দুশো বছর আগে রামলোচন ঘোষ যে দুর্গাপুজোর সূচনা করেছিলেন, সেই দেবীর সিংহটির মুখ ছিল ঘোড়ার মুখের মতো। মহেন্দ্রনাথ দত্তের লেখায় পাই ‘শাক্তের বাটীতে দুর্গার সিংহ সাধারণভাবে এবং গোঁসাই-এর বাড়িতে সিংহ ঘোড়ার মতো মুখ হইত।’ যা ‘হয়বদন সিংহ’ নামে পরিচিত। 
দুর্গার হাতের সংখ্যা যেমন দ্বিভুজা থেকে সহস্রভুজাও হয়েছে। দেবীর বাহনের মূর্তিরও ভিন্নতা লক্ষ করা গিয়েছে। এ বিবর্তন হয়েছে শত শত বছর ধরে। হিন্দু পুরাণ অনুসারে দেবী পার্বতীর যে ৯টি রূপকে জবদুর্গা হিসেবে পুজো করা হয়, সেখানে দেবীর গাত্রবর্ণ থেকে শুরু করে বহু বৈচিত্র্যই চোখে পড়বে। দশভুজা ‘চন্দ্রঘণ্টার’ রূপ সোনার মতো উজ্জ্বল, আবার ‘কালরাত্রি’ হিসেবে পূজিতা দেবী কৃষ্ণবর্ণা। ‘কুষ্মাণ্ডা’ রূপে দেবী অষ্টভুজা। কারুণ্যে ভরা সেই সৌম্যমূর্তির ডানদিকের চার হাতে শোভা পায় পদ্ম, বাণ, ধনুক ও কমণ্ডলু। বাম হাতে তাঁর চক্র, গদা, অমৃতপূর্ণ কলস আর জপমালা। সাধারণত তাঁর বাহন সিংহ হলেও কাশীর মন্দিরে কিন্তু বাঘ। নবরাত্রির প্রথমে দ্বিভুজা শৈলপুত্রী হিসেবেই দেবী পুজো পান। ইনি বৃষারূঢ়া। এঁর ডান হাতে ত্রিশূল, বাঁ হাতে পদ্ম। দ্বিতীয় রূপ ব্রহ্মচারিণীরও দুটি হাত—ডান হাতে জপের মালা, বাঁ হাতে কমণ্ডলু। দেবী শীতলার মতো একমাত্র কালরাত্রি হিসেবেই দেবীদুর্গার বাহন গাধা। নবরাত্রির অষ্টম রাতে পূজিতা দেবীর মহাগৌরীরূপ চতুর্ভুজা। সেখানেও ষাঁড়ই তাঁর বাহন। তাঁর তিনটি হাতে পদ্ম, ত্রিশূল ও ডমরু। অন্য হাতে বরাভয় মুদ্রা।
দেবীর এই বরাভয়ই আমাদের প্রেরণা, আমাদের শক্তি, শত দুর্বিপাকেও। নানা মতে, নানা রূপে আসলেই তিনি সমস্ত শক্তির আধার।
 গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল
 সহযোগিতায় : উজ্জ্বল দাস
10th  October, 2021
পিঠে-পিকনিকে
বাঙালির শীত

কথায় বলে, বর্ষার ছাতা আর শীতের কাঁথা সামলে রাখতে হয়। বাঙালির শীত মানেই লেপ-কাঁথার সঙ্গে সোয়েটার, মাফলার আর বাঁদর টুপি। সেই সঙ্গে পিঠেপুলি, খেজুর গুড়, পাটালি, পিকনিক তো আছেই। শব্দ দিয়ে শীতপ্রিয় বাঙালির ছবি আঁকলেন সোমনাথ বসু।
বিশদ

05th  December, 2021
ব্রিটিশ গরাদে
বন্দি কারাসাহিত্য

সুখেন বিশ্বাস

সময়টা ছিল ১৯৩১-এর ৩০ জুন। আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি রয়েছেন দীনেশ গুপ্ত। ফাঁসির কয়েক দিন আগে মাকে লিখছেন, ‘মা, যদিও ভাবিতেছি, কাল ভোরে তুমি আসিবে, তবুও তোমার কাছে না লিখিয়া পারিলাম না। তুমি হয়তো ভাবিতেছ, ভগবানের কাছে এত কাতর প্রার্থনা করিলাম, তবুও তিনি শুনিলেন না। বিশদ

28th  November, 2021
গ্লাসগোয় পৌষমাস
ঘোড়ামারায় সর্বনাশ
মৃন্ময় চন্দ

হাট বসেছে, সোমবারে। চাঁদের হাট। ক্লাইডের পারে, স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে। ১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর। উপলক্ষ? জলবায়ু সম্মেলন। ‘সিওপি’ বা কপ ২৬’। কপ অর্থে ‘কনফারেন্স অব দি পার্টিস’। বিশদ

21st  November, 2021
ডায়াবেটিসে মালপোয়া!
শ্যামল চক্রবর্তী

বাড়ি থেকে আনা খাবার চেক করছি রোজ দু’বেলা। তবু সুগার আর কমে না। আমরা টেনশনে জেরবার। রেসকোর্সের মাঠের উল্টোদিকের গেট দিয়ে ঢুকে স্যারের কোয়ার্টার দোতলায়। রোজকার মতো সেদিনও সকাল আটটায় পৌঁছে গিয়েছি। স্যার ব্রিফকেসটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছেন প্রায় দৌড়ে। বিশদ

14th  November, 2021
আইএসএল
কতটা প্রস্তুত কলকাতার দুই প্রধান?

আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। তারপরই ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ঢাকে কাঠি পড়বে। প্রথম কয়েকটি বছর এই প্রতিযোগিতাটিকে নিয়ে বেশ হইচই হয়েছিল। একাধিক তারকা ফুটবলার থেকে শুরু করে জিকোর মতো কিংবদন্তি ফুটবল ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি আইএসএলকে অন্য পর্যায়ে পৌঁছে দেয়। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লিগের মানও পড়তে শুরু করে।
বিশদ

07th  November, 2021
সংগ্রাম
শান্তনু দত্তগুপ্ত

আরও এক ৩১ অক্টোবর। ৩৭ বছর আগে ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধীর সংগ্রাম শেষ হয়েছিল ঠিক এই দিনটায়... তাঁর নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে। ব্যক্তি হয়েও প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বে উঠেছিলেন তিনি। ভারতের জাতীয় কংগ্রেস মুছে গিয়েছিল তাঁর রাজনৈতিক গ্ল্যামারে। অস্তিত্ব সঙ্কটে ভোগা দলকে আরও একবার শিখরে নিয়ে গিয়েছিলেন ইন্দিরা। আরও একবার সঙ্কটে কংগ্রেস... অস্তিত্ব রক্ষাই যে আজ চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জের মুখে আরও এক গান্ধী... সোনিয়া। সংগ্রামী জীবন যে তাঁরও... ঘরে-বাইরে। রাজনীতিতে।​​​
বিশদ

31st  October, 2021
স্যোশাল মিডিয়ার ফাঁদে

২০১৮। ব্রাজিল ও মার্কিন মুলুকে সাধারণ নির্বাচন। ফেসবুক নিজেই খুলে ফেলল ১ কোটি ৫ লক্ষ ফেক অ্যাকাউন্ট। ২০২০-এর দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন। অভিযোগ, কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলটিকে জেতাতে ১ হাজার অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে অসংখ্য ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে নাকি নির্লজ্জ প্রচার চালানো হয়। বলিভিয়া-ইকুয়েডর-আজারবাইজান-ইউক্রেন-স্পেন সর্বত্র ‘অর্থের বিনিময়ে’ ভুয়ো খবরের অভিযোগ। ক’জন জানেন, ৬৪ শতাংশ উগ্রপন্থী সংগঠনের আঁতুড়ঘর ফেসবুক। এই সব হাড় হিম করা তথ্যকে লাশকাটা ঘরে পাঠাতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় মার্কিন ‘আধিপত্যবাদের’ চতুর এই তল্পিবাহক। নামটা পাল্টে তাহলে ‘ফেকবুক’ রাখাই কি সমীচীন নয়? প্রশ্ন তুললেন  মৃন্ময় চন্দ
বিশদ

24th  October, 2021
গান্ধীজির কলকাতা
রজত চক্রবর্তী

কলকাতা জুড়ে মিছিল শুরু হয়েছে— হিন্দু-মুসলমান ভাই ভাই। গান্ধীজি সন্ধ্যায় ফলের রস খেয়ে অনশন ভাঙলেন। গান্ধীজি আর সুরাবর্দি হায়দরি মঞ্জিলের সামনে তৈরি মঞ্চে উঠলেন। সাধারণ মানুষ আজ ভিড় করেছে প্রচুর। তারা শুনতে চায় শান্তির ক‍থা। বিশদ

03rd  October, 2021
বাংলার হারিয়ে যাওয়া নদী

মানব সভ্যতা নদীমাতৃক। অথচ, অনেক ক্ষেত্রে মানুষের সচেতনতার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে বহু নদী। সভ্যতা বাঁচাতে নদীকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই। তাই ‘বিশ্ব নদী দিবসে’ বাংলার হারিয়ে যাওয়া নদীগুলির সন্ধান করা হল। বিশদ

26th  September, 2021
বাতাসে বিষ কমছে আয়ু
অরিন্দম রায়

ছোটবেলায় স্কুলের বইতে বায়ুদূষণ নিয়ে যা পড়েছিলাম সেই ধারণার একটা পরিবর্তন করা দরকার। আমাদের পাঠ্য বইতে বায়ুদূষণের বেশিরভাগ অংশটাই ছিল সালফার-ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড কেন্দ্রিক। আমরা পড়েছিলাম, এই দুই গ্যাস কলকারখানা এবং গাড়ির ধোঁয়া থেকে বেরিয়ে অ্যাসিড বৃষ্টির সৃষ্টি করে। বিশদ

19th  September, 2021
অপু-দুর্গার খোঁজে
পুলক চট্টোপাধ্যায়

ছেলেবেলায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় যখন স্কুল পালিয়ে লুকিয়ে তাঁর বাবার লেখা ‘পশ্চিমের ডায়েরি’ পড়তেন, তখন থেকেই তাঁর মনের মধ্যে একটা কল্পনার পাখি বাসা বেঁধেছিল। এরপর বিভূতিভূষণ কর্মসূত্রে হাজির হলেন শরৎচন্দ্রের স্মৃতি বিজড়িত ভাগলপুরের আদমপুরে উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে। বিশদ

12th  September, 2021
বাঙালির শিক্ষক
সমৃদ্ধ দত্ত

স্কটল্যান্ডের এবর্ডিন থেকে ২৫ বছর বয়সে বহু দূরের একটি শহর কলকাতায় যখন ডেভিড হেয়ার এলেন, তার কিছুকাল আগেই এই প্রদেশটিতে ভয়ঙ্কর এক দুর্ভিক্ষ ঘটে গিয়েছিল। তাঁর বাবা ছিলেন ঘড়ি নির্মাতা। চার পুত্র জোশেফ, আলেকজান্ডার, জন ও ডেভিড কমবেশি ঘড়ি-বিশেষজ্ঞ। বিশদ

05th  September, 2021
পেগাসাস, রাজকন্যা
ও চুপকথা

থ্রি মাস্কেটিয়ার্স— নিভ-সালেভ-ওমরির নামের আদ্যক্ষর মিলিয়ে তৈরি ইজরায়েলের কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা এনএসও। কেবল উগ্রপন্থী বা পেডোফাইলস (শিশু যৌন নির্যাতনকারী) পাকড়াতে বিভিন্ন দেশের সরকারকেই নাকি পেগাসাস বিক্রি করা হয়। আরবের রাজকুমারী লতিফা, খুন হওয়া সাংবাদিক জামাল খাশোগি বা মরক্কোর ইতিহাসবিদ্‌ মাতি মনজিব—সকলেই তাহলে ছিলেন পেডোফাইলস বা উগ্রপন্থী? আরব-ইজরায়েল সম্পর্ক সাপে-নেউলে। অথচ, পেগাসাস কেনাবেচার সময় বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও মহম্মদ বিন রশিদ প্রাণের বন্ধু। গোটা বিশ্বের নিরাপত্তাই আজ বিপন্ন। ‘জিরো ক্লিকে’ই পেগাসাস ঢুকে পড়েছে কুলীন আইফোনের বাসরঘরে। রোমাঞ্চ উপন্যাসকেও হার মানানো পেগাসাসের কাণ্ডকারখানার তত্ত্বতালাশে কলম ধরলেন মৃন্ময় চন্দ।   বিশদ

29th  August, 2021
অবিস্মরণীয় চিত্রামৃত
শংকর

অনন্তকালের মহামানবদের বাণী প্রচারে অনেক সময় লেগে যায়। কামারপুকুরের গদাধর চট্টোপাধ্যায় তার ব্যতিক্রম নন। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের পাঁচ টাকা মাইনের পূজারী তাঁর অবসর সময়ে ভক্তজনদের কিছু বললেন, একজন স্কুল মাস্টার তা শ্রদ্ধার সঙ্গে শুনে বাড়ি ফিরে এসে নোটবইতে লিপিবদ্ধ করলেন। বিশদ

22nd  August, 2021
একনজরে
ফুটফুটে এক শিশুকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে ফের উত্তাল হল ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশ। ঘটনাটি হাপুর শহরের। মাত্র ছ’বছরের এক শিশুকন্যার উপর যৌন নির্যাতন চালানোর পর তাকে ...

ঘূর্ণিঝড় ‘জওয়াদ’ ক্রমশ দুর্বল হয়ে আগেই গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছিল। রবিবার মধ্যরাতের দিকে তা আরও শক্তিক্ষয় করে সুস্পষ্ট নিম্নচাপ বলয়ে পরিণত হয় এবং ওড়িশা উপকূল ...

রবিবার আইএসএলের ম্যাচে কেরল ব্লাস্টার্স  ২-১ গোলে হারাল ওড়িশা এফসিকে। এবার প্রতিযোগিতায় প্রথম জয় পেল কেরলের ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটি। ...

কোচবিহার জেলায় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীকোন্দল থামার কোনও লক্ষণ নেই। বরং দলের জেলা সভাপতি গিরীন্দ্রনাথ বর্মনের সঙ্গে সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বসুনিয়ার বিরোধ চরম আকার নিয়েছে। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮২৩: জার্মান দার্শনিক ম্যাক্সমুলারের জন্ম
১৮৫৩: ঐতিহাসিক ও শিক্ষাবিদ হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর জন্ম
১৯৫৬: দলিত আন্দোলনের নেতা ভীমরাওজি রামাজি আম্বেদকরের মৃত্যু
১৯৮৫: ক্রিকেটার আর পি সিংয়ের জন্ম
১৯৯২: অযোধ্যার বিতর্কিত সৌধ ধ্বংস
২০১৬ - তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭৪.৩৯ টাকা ৭৬.১১ টাকা
পাউন্ড ৯৭.৮৬ টাকা ১০১.৩০ টাকা
ইউরো ৮৩.৬১ টাকা ৮৩.৬৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
05th  December, 2021
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৮, ৫৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৬, ০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৬, ৭৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬১, ৮৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬১, ৯৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
05th  December, 2021

দিন পঞ্জিকা

২০ অগ্রহায়ণ, ১৪২৮, সোমবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২১। তৃতীয়া ৫১/৩ রাত্রি ২/৩২। পূর্বাষাঢ়া নক্ষত্র ৫০/৩০ রাত্রি ২/১৯।  সূর্যোদয় ৬/৭/১২, সূর্যাস্ত ৪/৪৭/৫৬। অমৃতযোগ দিবা ৭/৩২ মধ্যে পুনঃ ৮/৫৭ গতে ১১/৫ মধ্যে। রাত্রি ৭/২৮ গতে ১১/০ মধ্যে পুনঃ ২/৩৪ গতে ৩/২৭ মধ্যে। বারবেলা ৭/২৭ গতে ৮/৪৭ মধ্যে পুনঃ ২/৮ গতে ৩/২৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৯/৪৭ গতে ১১/২৭ মধ্যে। 
১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪২৮, সোমবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২১।  দ্বিতীয়া দিবা ৯/২। মূলা নক্ষত্র দিবা ৮/৩২। সূর্যোদয় ৬/৯, সূর্যাস্ত ৪/৪৮। অমৃতযোগ দিবা ৭/৩৯ মধ্যে ও ৯/৪ গতে ১১/১১ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩১ গতে ১১/৫ মধ্যে ও ২/৪০ গতে ৩/৩৪ মধ্যে। কালবেলা ৭/২৯ গতে ৮/৪৯ মধ্যে ও ২/৮ গতে ৩/২৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৯/৪৮ গতে ১১/২৮ মধ্যে।  
১ জমাদিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যজুড়ে কমল দৈনিক সংক্রমণ
গতকালের তুলনায় রাজ্যে অনেকটাই কমল দৈনিক সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় ...বিশদ

09:04:21 PM

গল্ফগ্রিনে চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার অভিযুক্ত, উদ্ধার খোয়া যাওয়া সামগ্রী

04:34:00 PM

রেলের পরীক্ষার ফলপ্রকাশ কবে, জানুন
রেলের পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অপেক্ষায় রয়েছেন ...বিশদ

04:21:03 PM

৯৪৯ পয়েন্ট পড়ল সেনসেক্স

04:06:34 PM

৫২৫ পয়েন্ট পড়ল সেনসেক্স

02:01:53 PM

সারের কালোবাজারি বন্ধের দাবিতে মাথাভাঙার একাধিক জায়গায় পথ অবরোধ

01:27:47 PM