Bartaman Patrika
প্রচ্ছদ নিবন্ধ
 

গান্ধীজির কলকাতা
রজত চক্রবর্তী

‘ওইদিন উপবাসে থাকবে সবাই। প্রত্যেকে নিজের নিজের কাজ করবে। প্রার্থনা করবে। চরকা কাটবে। এই দিনটা আমাদের কাছে একটি পরীক্ষা। কেউ কোনও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করবে না। স্বরাজ আমাদের কাছ থেকে আলোকোজ্জ্বল উৎসব চায় না। খাদ্য, বস্ত্র, শস্য, মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস আমাদের এখনও অর্জিত হয়নি। তা হলে কীভাবে আমরা এই স্বরাজ নিয়ে উৎসব করব?’ একটু থামলেন বাপুজি। সাতাত্তর বছরের মহাত্মা গান্ধী গায়ে জড়ানো কাপড়ের প্রান্ত দিয়ে মুখের ঘাম মুছে নিলেন। আগস্ট মাসের বিহারের আবহাওয়া। বিকেল পাঁচটা। ভাদ্র মাসের গুমোট আবহাওয়া। আজ ৮ আগস্ট, ১৯৪৭ বিকেল ৫টার সময় বিহারের ‘সেনেট হলে’ গান্ধীজি বক্তব্য রাখছেন উপস্থিত কংগ্রেস কর্মীদের উদ্দেশে। পাটনা এসে পৌঁছেছেন ভোর ৩-৩০ মিনিটে। কাশ্মীর গিয়েছিলেন। সেখান থেকে চলে এসেছেন বিহার। বিহার থেকে কলকাতার উদ্দেশ্যে ট্রেন ধরলেন রাতেই। মন ভালো নেই। শরীরও। খিদে হচ্ছে না ঠিক মতো। সারা দেশজুড়ে হিন্দু-মুসলমান রক্তপাত। আজীবন অহিংস ব্রতের পূজারির চোখের তারায় তারায় রক্তাক্ত মানুষের লাশ, লুঠতরাজ, নারীধর্ষণ, আগুন, হিংসা, বিদ্বেষ। কলকাতা, নোয়াখালি, বিহার, পাঞ্জাব— মানুষের লাশ পড়ে থেকেছে রাস্তায় রাস্তায়। এখন আবার শুরু হয়েছে উত্তর ভারতের প্রান্তিক অঞ্চলে, যেখানে যেখানে দু-টুকরো হচ্ছে মানচিত্র।
ভোর চারটের সময় বর্ধমান স্টেশনে ট্রেন পৌঁছল। গান্ধীজি তখনও শুয়ে আছেন। ওঠেননি। এক বছর হয়ে গেল এখনও পর্যন্ত হিন্দু-মুসলমানের পারস্পরিক হিংসা ও হিংস্রতার রেশ কমেনি। এখনও পর্যন্ত বিভিন্ন জায়গায় ঘটে চলেছে দাঙ্গা। কলকাতায় চলেছেন গান্ধীজি। ট্রেনের জানলা দিয়ে বাংলার দিকে তাকালেন। সবুজ বাংলা। সলাজ সজল কিশোরীর যেন ঘুম ভাঙছে। রক্ত। রক্তের ছিটে গাছে গাছে। নদীর জলে। ১৬ আগস্ট, ১৯৪৬ ছিল প্রত্যক্ষ সংগ্রাম দিবস— ‘দ্য গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং’-এর শুরু। কলকাতার রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকল মৃতদেহ। সরকারি হিসাবে মৃত ৪ হাজার। এক লক্ষ মানুষের হাত-পা কেটে ফেলা হয়েছে। শত শত মহিলা, বালিকা ধর্ষিতা হয়েছেন। রক্তের দাগ বাংলার মাটিতে। 
আজ ০৮/০৮/১৯৪৭। গান্ধীজি তাকিয়ে আছেন রক্তিম সূর্যোদয়ের দিকে। সাধারণত সাড়ে তিনটের আগেই উঠে পড়েন ঘুম থেকে। বর্ধমান স্টেশন ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে ট্রেন। গান্ধীজি উঠে বসলেন ঘুম থেকে। কলকাতা থেকে আগের দিন রাতেই কয়েকজন চলে এসেছেন বর্ধমান স্টেশনে। তাঁরা দেখা করলেন। সকাল আটটা নাগাদ ট্রেন পৌঁছল হাওড়া স্টেশনে। প্রচুর মানুষ ভিড় করেছে গান্ধীজিকে একবার দেখার জন্য। গান্ধীজি ট্রেনের দরজায় দাঁড়ালেন। উদ্বেল মানুষ। কলকাতার মানুষের আবেগ, উষ্ণতা, বুদ্ধিমত্তা সব কিছুর প্রকাশ গান্ধীজিকে কি বারবার টেনে এনেছে! 

সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় একবার তাকালেন গান্ধীজির দিকে। অক্টোবর মাসের শেষ, নভেম্বর মাসের শুরু। কলকাতায় শীত পড়েছে। মোহনদাসের পরনের কোটের দিকে তাকালেন। কিছুটা অগোছালো। সুন্দর ইংরেজি বলে এই যুবক। তীক্ষ্ণ চোখ। ১৮৯৬ সাল। সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় তখন ভারতে ব্রিটিশ বিরোধীর অন্যতম মুখ। বাগ্মী, প্রাজ্ঞ, সারা ভারতবর্ষে গড়ে তুলেছিলেন একক প্রচেষ্টায় ‘ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন’। বিরাট সংগঠন নিয়ে যোগ দেন কলকাতায় ১৮৮৬ সালে, কংগ্রেসের দ্বিতীয় অধিবেশনে। মোহনদাস এসেছেন বর্তমান কংগ্রেস সভাপতি সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তাঁর আর্জি, দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসকারী ভারতীয়দের প্রতি ব্রিটিশদের অত্যাচারের কথা তিনি জানাতে চান সভা করে। সুরেন্দ্রনাথ খুব একটা আগ্রহ দেখাননি সেদিন। তাঁর পক্ষে এই সমস্যা নিয়ে জনসভা ডাকা সম্ভব নয়। গান্ধীজি জানেন, বাংলার ‘ইন্টালেক্ট’-এর কাছে তাঁর গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করতেই হবে। সুরেনবাবুর পরামর্শ মতো গেলেন ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশনের রাজা প্যারীমোহন মুখোপাধ্যায়ের কাছে। সেখানেও খুব গুরুত্ব পেলেন না। ‘অমৃতবাজার’, ‘বঙ্গবাসী’ পত্রিকা অফিসে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বসে রইলেন। বোঝানোর চেষ্টা করলেন। কিছু হল না। ফিরে এলেন কিন্তু হেরে গেলেন না। তখন ইংরেজি কাগজ ‘স্টেটসম্যান’ আর ‘ইংলিশম্যান’ বহুল প্রচারিত। গেলেন তাদের দরজায়। ‘স্টেটসম্যান’ পত্রিকার এক সাংবাদিক ছাপালেন তাঁর ইন্টারভিউ— ‘Aggrieved Indian in South Africa; Interview with M.K Gandhi.’ প্রথম সাক্ষাৎকার। আর একটা উপকার হল। ‘ইংলিশম্যান’ পত্রিকার সম্পাদকের সঙ্গে হল বন্ধুত্ব। ফলে ওই পত্রিকার সম্পাদকীয়তে দক্ষিণ আফ্রিকার বিষয়ে লেখাগুলোর পরিমার্জন করতেন মোহনদাস। বাংলার শিক্ষিত ইন্টেলেকচ্যুয়ালদের মধ্যে মোহনদাসের পরিচিতি যখন তৈরি হচ্ছে, তখনই তাঁকে চলে যেতে হয় আবার দক্ষিণ আফ্রিকায়। গ্রেট ইস্টার্ন হোটেলে থাকা মোহনদাস ফিরে গেলেন ওই বছরের নভেম্বর মাসে। মানে এক মাসের মতো এই শহরে ছিলেন তখন। 
সুজলা সুফলা গঙ্গা বিধৌত উর্বর ক্ষেত্র কি তাকে বারবার ডেকেছিল? জাতীয় কংগ্রেসের অধিবেশন বসে ১৯০১ সালের ডিসেম্বর মাসে কলকাতা শহরে। মোহনদাস ফিরে এলেন কলকাতায় ১৯০১ সালের ২৪ ডিসেম্বর। উঠলেন সেই ‘ইংলিশম্যান’ পত্রিকার সম্পাদক সনডার্স সাহেবের অতিথি হয়ে ইন্ডিয়ান ক্লাবে, ৬ নম্বর ব্যাঙ্কশাল কোর্ট। ‘ইন্ডিয়ান মিরর’ কাগজের সম্পাদক নরেন্দ্রনাথ সেন ঘোড়ার গাড়ি থেকে নামলেন ঠিক প্রেসিডেন্সি কলেজের উল্টো দিকে আলবার্ট হলের সামনে। এখন যেটা কফি হাউস। আর তখনই প্রেসিডেন্সি কলেজের গেট দিয়ে দ্রুত পায়ে বেরিয়ে এলেন খাদির ধুতি-পাঞ্জাবি কাঁধে মোটা খাদির চাদর পাট করে রাখা, এক রোগা মানুষ। আলুথালু চুল। এলোমেলো দাড়ি। প্রেসিডেন্সির রসায়নের অধ্যাপক ডঃ প্রফুল্লচন্দ্র রায়। তিনিই আজকের আলবার্ট হলে আহূত জনসভার উদ্যোক্তা। তিনি দেখেছেন সভার সভাপতি নরেন্দ্রনাথ সেন ঢুকছেন আলবার্ট হলে। ছাত্ররা ভিড় করেছে ভালোই। সভাপতিকে সঙ্গে নিয়েই হলে ঢুকলেন অধ্যাপক। তাঁর খর চোখ খুঁজছেন আর একজনকে। মোহনদাস এগিয়ে এলেন। আজ একা মোহনদাসের বক্তব্য শোনার জন্যই এই জনসভার আয়োজন। কলকাতায় মোহনদাস করমচাঁদ গান্ধীর প্রথম বক্তৃতা ১৯০২ সালের শুরুতেই। আলবার্ট হল। কলেজ স্ট্রিট। কলকাতার বুদ্ধি ও চেতনার প্রাণকেন্দ্র।
গান্ধীজির আবেগ যতটা তীব্রতার সঙ্গে বাংলা ও বাঙালি কেন্দ্রিক দেখা গিয়েছে, ঠিক ততটাই তার রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলি বাঙালির অতি প্রিয় সমালোচনার ঊর্ধ্বে উঠতে বাধা তৈরি করেছে। বাঙালি বারবার দ্বিধান্বিত হয়েছে। বিতর্ক করেছে। কিন্তু গান্ধীজি স্বীকার করেছেন, ‘I claim to be an Indian, and, therefore, a bengali, even as I am a Gujrati.’ তাঁর বাংলা ও বাঙালি প্রীতি যেমন বাঙালির বুদ্ধিমত্তার কারণে তেমন তাঁর অনেকটা জুড়ে আছেন রবীন্দ্রনাথ। সংস্কৃতির নেতৃত্ব ও রাজনৈতিক নেতৃত্বের মধ্যে বিরোধভাষ্য কম ছিল না। তবুও এক ‘ইমোশনাল ইন্টালিজেন্স’ দু’জনকে বেঁধে রেখেছিল। গান্ধীজি তাঁর ছেলে দেবদাসকে শান্তিনিকেতনে ভর্তি করিয়েছেন। ১৯১৫ সাল থেকে তিনি যখনই সময় পেয়েছেন শান্তিনিকেতনে ছুটে এসেছেন। বেশ কয়েকবার রবীন্দ্রনাথ শান্তিনিকেতনে না থাকাকালীন অবস্থাতেও গান্ধীজি কাটিয়ে এসেছেন শান্তিনিকেতনে। শান্তিনিকেতন ও গান্ধীজির মাঝখানে সাঁকো হিসেবে সবসময়ই কাজ করেছে দীনবন্ধু অ্যান্ড্রুজ। ১৯১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের হিমেল ঠান্ডা বোলপুরের বাতাসে। গান্ধীজি ও স্ত্রী কস্তুরবাঈ শান্তিনিকেতনে। আত্মার শান্তি খুঁজে পাচ্ছেন। রবীন্দ্রনাথ তখন শান্তিনিকেতনে নেই। ১৯ ফেব্রুয়ারি গোপালকৃষ্ণ গোখলে মারা গেলেন পুনেতে। গান্ধীজির রাজনৈতিক শিক্ষক। গান্ধীজি চলে গেলেন পুনে। ফিরে এলেন ৬ মার্চ। রবীন্দ্রনাথও ফিরে এসেছেন। শ্রীনিকেতনে ‘ফাল্গুনী’ লিখছেন। গান্ধীজির ‘ফোয়েনিক্স’ স্কুলের বেশ কিছু ছাত্র আর তাঁর ছেলে দেবদাস তখন শান্তিনিকেতনের ছাত্র। কঠোর জীবনযাপন পালন করে চলা গান্ধীজির আশ্রমে ভৃত্য-পাচক রাখা পছন্দ করেননি। রবীন্দ্রনাথকে বলেছিলেন, ছাত্র-শিক্ষকরা নিজেরা এইসব কাজ করলে ভালো। রবীন্দ্রনাথ রাজি হলেন। ১১ মার্চ গান্ধীজির শান্তিনিকেতন থেকে ফিরে আসার আগের দিন ছাত্র-শিক্ষক সবাই মিলে পাচক-ভৃত্যদের ছুটি দিয়ে দিল। ১০ মার্চ এখনও চালু আছে একই নিয়ম। ওইদিন শান্তিনিকেতনে ‘গান্ধী দিবস’ পালনের দিন। ১৯১৭ গান্ধীজি কলকাতায়, গেলেন ‘বিচিত্রা’ হলে, রবীন্দ্রনাথের ‘ডাকঘর’ নাটক দেখতে বসেছেন। ১৯২০ দেশজুড়ে অসহযোগ আন্দোলন। বয়কট। বিদেশি পণ্য বর্জনের ডাক। আগুন জ্বলছে। রবীন্দ্রনাথ একের পর এক চিঠি লিখছেন এই আন্দোলনের বিরোধিতা করে, সেই চিঠিগুলো ছাপা হচ্ছে ‘মডার্ন রিভ্যু’ পত্রিকায়। আর গান্ধীজি সেই সময়ে বিশ্রামের জন্য গেলেন তাঁর প্রিয় তীর্থস্থান শান্তিনিকেতনে। ১৯২১ সালে গান্ধীজির জোড়াসাঁকো যাওয়া। দীর্ঘ আলোচনা। বিরোধাভাস। কিন্তু অবিচ্ছেদ্য শ্রদ্ধার সম্পর্ক রেখেছিলেন গান্ধীজি। উপনিষদের মূল ভাব আর ভারতীয় সভ্যতার ধারা বুঝতে হলে রবীন্দ্রনাথ পড়তে হবে— এই ধারণা গান্ধীজি বহন করতেন‌। ১৯২৫, গান্ধীজি আবার রবীন্দ্রনাথের কাছে। দু’দিন আলোচনা হয়। মানব মুক্তি আর রাজনৈতিক মুক্তির ভাবনা এক জায়গায় আসেনি। ১৯৩১ দ্বিতীয় গোলটেবিল বৈঠক করে ফিরে এসে গ্রেপ্তার হন গান্ধীজি। পুনা জেলে অনশনরত গান্ধীজির অনশনভঙ্গে ছুটে যান রবীন্দ্রনাথ। গান্ধীজির প্রিয় গানটি গাইলেন— ‘জীবন যখন শুকায়ে যায় করুণাধারায় এসো...’। জীবনের বহু সময়ে গান্ধীজি বারবার শুনেছেন, শুনতে চেয়েছেন এই গানটি। বাংলার সুর। বাঙালির সুর। সেই সুরকারের যখন অর্থনৈতিক সমস্যা, তখন গান্ধীজি বিড়লার কাছ থেকে ষাট হাজার টাকার চেক জোগাড় করে তুলে দিলেন তাঁর হাতে, সাল ১৯৩৬। এই সময়ে বেশ ক’বার দেখা হয় কবি ও বাপুজির। ১৯৪০, রবীন্দ্রনাথ অসুস্থ। কস্তুরবাই ও গান্ধীজি এলেন কবিকে দেখতে শান্তিনিকেতনে। ফিরে যাবার সময় কবি গান্ধীজির হাতে একটি চিঠি তুলে দেন। সেই চিঠিতে কবি ইচ্ছা প্রকাশ করেন, তাঁর মৃত্যুর পর গান্ধীজি যেন বিশ্বভারতীর দায়িত্ব নেন। বাংলার সাংস্কৃতিক পুরোধা তথা আত্মা কীভাবে গান্ধীজিকে গ্রহণ করেছিলেন তার উদাহরণ হয়ে রইল।
সোদপুরের ‘খাদি প্রতিষ্ঠান’, নোয়াখালি, শান্তিনিকেতন, কলকাতায় গান্ধীজি বারবার এসেছেন। উদ্বিগ্নতায়, উৎকণ্ঠায়, জাতির বিপর্যয়ের প্রতিটি বাঁকে ক্ষতবিক্ষত গান্ধীজি ফিরে ফিরে এসেছেন বাংলার নদী-মাঠ-ঘাট-ফুলের কাছে। নোয়াখালির গ্রামের পর গ্রামে ধুলোমাখা পায়ে হেঁটেছেন দিনের পর দিন। বাংলার মানুষ দাঙ্গায় আত্মহনন করছে, এই দৃশ্য তাঁকে পীড়িত করেছে। কষ্ট পেয়েছেন। দিনের পর দিন আলোচনা করেছেন। বন্ধ করতে চেয়েছেন মারণ দাঙ্গা, চিরস্থায়ী ক্ষত। ১৬ আগস্ট ১৯৪৬-এর দাঙ্গা আবার ফিরে এসেছে আগস্টের প্রথমেই ১৯৪৭ সালে। 
হাওড়া স্টেশন থেকে গাড়িতে সোজা চলে গেলেন সোদপুরের খাদি প্রতিষ্ঠানে। সকালেই গান্ধীজির কাছে চলে এসেছেন প্রফুল্ল ঘোষ, সতীশ দাশগুপ্ত প্রমুখ নেতারা। সারাদিন আলোচনা চলল। দুপুর ৩-৩০ নাগাদ গেলেন গভর্নরের সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা করতে। ১০ আগস্ট খবর এল কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে দাঙ্গা নতুন করে বাড়ছে। সারাদিন সুরাবর্দি সহ সমস্ত নেতাদের অনুরোধ করলেন দাঙ্গা বন্ধ করার। ১১ আগস্ট ঘোষণা করলেন, তিনি নোয়াখালি যাবেন না, কলকাতাতেই থাকবেন। কলকাতার বিস্তীর্ণ দাঙ্গা ক্ষত এলাকায় ঘুরে দেখলেন। শুনলেন মানুষের অসহায়তা। ১২ আগস্ট সারাদিন কেটে গেল বঙ্গীয় ও সর্বভারতীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে। এলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়। এলেন সুরাবর্দি। এলেন আরও বেশ কয়েকজন নেতা। টেলিগ্রাম আদান-প্রদান চলল নেহরুর সঙ্গে। বলছেন, যদি মুসলিম লিগের নেতারা হিন্দুদের, আর কংগ্রেসের নেতারা যে সব এলাকায় যারা সংখ্যালঘু তাদের জীবন বাঁচাতে না পারে তা’হলে কীসের নেতৃত্ব! চিন্তিত গান্ধীজি ১৩ আগস্ট দুপুর ২টা ২৮ মিনিটে বেরিয়ে পড়লেন বেলেঘাটার দিকে। মুসলমান অধ্যুষিত অঞ্চলে থাকবেন তিনি। কারওর অনুরোধ উপরোধ শুনলেন না। স্থির। অচঞ্চল। যন্ত্রণাক্লিষ্ট মুখ।
জরাজীর্ণ বাড়িটির সামনের জঙ্গল কেটে সাফ করা হয়েছে। কাদা-মাটির রাস্তা। ছড়ানো হয়েছে প্রচুর ব্লিচিং ও গ্যামাকসিন। উগ্র গন্ধ তার। একটি ঘর কোনওরকমে পরিষ্কার করে বাসযোগ্য করা হয়েছে। সেখানেই উঠলেন তিনি সপারিষদ। হায়দরি মঞ্জিল। পরিত্যক্ত বাগানবাড়ি। ১৪ কাঠা জমির ৮ কাঠার উপর সাতটা ঘর নিয়ে বাড়ি। গান্ধীজি আছেন এর একটা ঘরে। কমন বাথরুম। চারপাশ খোলা। এদিকে নানা জায়গা থেকে সত্যি-মিথ্যা দাঙ্গার খবর আসছে। কলকাতার অলি-গলিতে খুন, লুঠতরাজ চলছেই। গভর্নর বারোজকে অনুরোধ করলেন, কলকাতার দাঙ্গা বন্ধ করতে পারেন আপনি, কলকাতাকে রক্ষা করুন। ১৪ আগস্ট গান্ধীজি অনশন শুরু করলেন। আর কিছু সময় পরে দিল্লিতে স্বাধীন ভারতের পতাকা উড়বে। ১৫ আগস্ট অসংখ্য মানুষের স্রোত আসতে শুরু করল গান্ধীজির কাছে। সন্ধ্যায় প্রফুল্ল ঘোষ গান্ধীজির কাছে খবর আনলেন, কলকাতা জুড়ে মিছিল শুরু হয়েছে— হিন্দু-মুসলমান ভাই ভাই। গান্ধীজি সন্ধ্যায় ফলের রস খেয়ে অনশন ভাঙলেন। গান্ধীজি আর সুরাবর্দি হায়দরি মঞ্জিলের সামনে তৈরি মঞ্চে উঠলেন। সাধারণ মানুষ আজ ভিড় করেছে প্রচুর। তারা শুনতে চায় শান্তির ক‍থা। প্রফুল্ল ঘোষ গান্ধীজিকে নিয়ে বেরতে চাইলেন কলকাতার রাস্তায়। রাত আটটা বেজে গিয়েছে। কলকাতা তখন মন্ত্রবলে অন্য কলকাতা। আলোয় সাজানো হয়েছে চারিদিক। মানুষ উচ্ছ্বাসে বেরিয়ে পড়েছে। মৃতনগরী হঠাৎ আনন্দনগরী হয়ে উঠেছে। ছোট ছোট শিশুর দল এগিয়ে এসে হাত ধরছে গান্ধীজির। তাঁর মুখের যন্ত্রণার বলিরেখা ধীরে ধীরে হাসির রেখায় পরিণত হল।
কিন্তু অলক্ষ্যে কালো মেঘ তৈরি হচ্ছিল ভারতের সহ বাংলার আকাশে। আবার দাঙ্গা, আবার রক্তপাত, আবার নিরীহ লাশ বুকে নিয়ে কলকাতার পথ কেঁদে উঠল। হিন্দু মহাসভা ও মুসলিম লিগ— শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় আর সুরাবর্দি। দু’জনেই আসছেন গান্ধীজির কাছে। দু’জনেই দু’জনকে দোষারোপ করছেন। মানুষ নিত্যদিন খুন হচ্ছে। গান্ধীজি আমরণ অনশন শুরু করলেন ওই বেলেঘাটার হায়দরি মঞ্জিলের ছোট্ট ঘরে। ১ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭। মৃত্যুবরণ করব, কিন্তু ভাই-ভাইয়ের রক্তে উল্লাস করবে, তা সহ্য করা যাচ্ছে না। ২ সেপ্টেম্বর সারা দিন-রাত চলল বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা। আভাবেন গাইলেন — ‘জীবন যখন শুকায়ে যায় করুণাধারায় এসো।’ সেই প্রিয় রবীন্দ্রনাথের গানে তিনি খুঁজে চলেছেন আশ্রয়। ৩ সেপ্টেম্বর জল খেলেন একটু। অশক্ত শরীর দুর্বল। ডাক্তার এলেন। গান্ধীজির একটাই কথা— শান্ত করো সবাইকে, শান্তি আসুক। ৪ সেপ্টেম্বর তৈরি হল গান্ধীজির সামনে ঘোষণাপত্র। লিখিত ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করলেন শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়, প্রফুল্ল ঘোষ, সুরাবর্দি সহ সকল নেতৃত্ব। হায়দরি মঞ্জিল ঘিরে প্রচুর মানুষের ভিড়। ঘোষণাপত্রে শান্তির কথা। দুই যুযুধান পক্ষ অস্ত্র সংবরণ করে শান্তি স্থাপন করবে। গান্ধীজি ফলের রস খেয়ে অনশন ভাঙলেন। রবীন্দ্রনাথ নেই, কিন্তু তাঁর গান গেয়ে উঠলেন কেউ কেউ। ৫ সেপ্টেম্বর গান্ধীজি বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে দেখা করলেন। হিন্দু, মুসলমান, ছাত্র, যুব— সমাজের সবস্তরের মানুষের সঙ্গে কথা বললেন। শরীর ভালো। ৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে একটু বিশ্রাম নিয়ে গেলেন মনুমেন্টের কাছে ময়দানে বিকালের প্রার্থনা সভায়। সেদিন বৃষ্টি হল খুব। আকাশ কাঁদছিল। শান্তিবারি। জনসভায় বহু মানুষের সমাগম। শান্তি বার্তা পাওয়ার আশায়। গান্ধীজির বক্তব্য শুনল দাঙ্গা বিধ্বস্ত কলকাতা। বাংলার প্রতি অগাধ আস্থা উচ্চারিত হল গান্ধীজির বক্তব্যে— ‘যদি সারা হিন্দুস্তান ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়ে যায় তবুও বাংলা অচঞ্চল শান্ত থাকবে।’
৭ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭, সকাল সাড়ে ৯টার সময় গান্ধীজিকে নিয়ে ট্রেন রওনা দিল কলকাতা থেকে দিল্লির উদ্দেশ্যে। আর ফিরে আসা হয়নি বাংলায়। যে বাংলা তার রাজনৈতিক জীবনের প্রথম সাক্ষী ছিল, সেই বাংলায় তিনি তাঁর রাজনৈতিক জীবনের শেষ পদক্ষেপ করেছিলেন। বাংলা ও বাঙালি তাঁকে নিয়ে কম বিতর্ক করেনি। কিন্তু তর্ক-প্রিয় বাঙালি তাঁকে তর্ক-বিতর্ক-আলোচনা-সমালোচনা-গবেষণায় জড়িয়ে জীবন্ত রেখেছে আজও। এইখানেই তিনি বেঁচে থাকলেন। হ্যাঁ, দেড়শো বছর পরেও...
 ছবি : সংশ্লিষ্ট সংস্থার সৌজন্যে
 গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল
 সহযোগিতায় : উজ্জ্বল দাস
03rd  October, 2021
পিঠে-পিকনিকে
বাঙালির শীত

কথায় বলে, বর্ষার ছাতা আর শীতের কাঁথা সামলে রাখতে হয়। বাঙালির শীত মানেই লেপ-কাঁথার সঙ্গে সোয়েটার, মাফলার আর বাঁদর টুপি। সেই সঙ্গে পিঠেপুলি, খেজুর গুড়, পাটালি, পিকনিক তো আছেই। শব্দ দিয়ে শীতপ্রিয় বাঙালির ছবি আঁকলেন সোমনাথ বসু।
বিশদ

05th  December, 2021
ব্রিটিশ গরাদে
বন্দি কারাসাহিত্য

সুখেন বিশ্বাস

সময়টা ছিল ১৯৩১-এর ৩০ জুন। আলিপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি রয়েছেন দীনেশ গুপ্ত। ফাঁসির কয়েক দিন আগে মাকে লিখছেন, ‘মা, যদিও ভাবিতেছি, কাল ভোরে তুমি আসিবে, তবুও তোমার কাছে না লিখিয়া পারিলাম না। তুমি হয়তো ভাবিতেছ, ভগবানের কাছে এত কাতর প্রার্থনা করিলাম, তবুও তিনি শুনিলেন না। বিশদ

28th  November, 2021
গ্লাসগোয় পৌষমাস
ঘোড়ামারায় সর্বনাশ
মৃন্ময় চন্দ

হাট বসেছে, সোমবারে। চাঁদের হাট। ক্লাইডের পারে, স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে। ১ নভেম্বর থেকে ১৩ নভেম্বর। উপলক্ষ? জলবায়ু সম্মেলন। ‘সিওপি’ বা কপ ২৬’। কপ অর্থে ‘কনফারেন্স অব দি পার্টিস’। বিশদ

21st  November, 2021
ডায়াবেটিসে মালপোয়া!
শ্যামল চক্রবর্তী

বাড়ি থেকে আনা খাবার চেক করছি রোজ দু’বেলা। তবু সুগার আর কমে না। আমরা টেনশনে জেরবার। রেসকোর্সের মাঠের উল্টোদিকের গেট দিয়ে ঢুকে স্যারের কোয়ার্টার দোতলায়। রোজকার মতো সেদিনও সকাল আটটায় পৌঁছে গিয়েছি। স্যার ব্রিফকেসটা আমার হাতে ধরিয়ে দিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নামছেন প্রায় দৌড়ে। বিশদ

14th  November, 2021
আইএসএল
কতটা প্রস্তুত কলকাতার দুই প্রধান?

আর মাত্র কয়েকদিনের অপেক্ষা। তারপরই ইন্ডিয়ান সুপার লিগের ঢাকে কাঠি পড়বে। প্রথম কয়েকটি বছর এই প্রতিযোগিতাটিকে নিয়ে বেশ হইচই হয়েছিল। একাধিক তারকা ফুটবলার থেকে শুরু করে জিকোর মতো কিংবদন্তি ফুটবল ব্যক্তিত্বের উপস্থিতি আইএসএলকে অন্য পর্যায়ে পৌঁছে দেয়। কিন্তু সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে লিগের মানও পড়তে শুরু করে।
বিশদ

07th  November, 2021
সংগ্রাম
শান্তনু দত্তগুপ্ত

আরও এক ৩১ অক্টোবর। ৩৭ বছর আগে ইন্দিরা প্রিয়দর্শিনী গান্ধীর সংগ্রাম শেষ হয়েছিল ঠিক এই দিনটায়... তাঁর নিরাপত্তারক্ষীর গুলিতে। ব্যক্তি হয়েও প্রতিষ্ঠানের ঊর্ধ্বে উঠেছিলেন তিনি। ভারতের জাতীয় কংগ্রেস মুছে গিয়েছিল তাঁর রাজনৈতিক গ্ল্যামারে। অস্তিত্ব সঙ্কটে ভোগা দলকে আরও একবার শিখরে নিয়ে গিয়েছিলেন ইন্দিরা। আরও একবার সঙ্কটে কংগ্রেস... অস্তিত্ব রক্ষাই যে আজ চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জের মুখে আরও এক গান্ধী... সোনিয়া। সংগ্রামী জীবন যে তাঁরও... ঘরে-বাইরে। রাজনীতিতে।​​​
বিশদ

31st  October, 2021
স্যোশাল মিডিয়ার ফাঁদে

২০১৮। ব্রাজিল ও মার্কিন মুলুকে সাধারণ নির্বাচন। ফেসবুক নিজেই খুলে ফেলল ১ কোটি ৫ লক্ষ ফেক অ্যাকাউন্ট। ২০২০-এর দিল্লি বিধানসভা নির্বাচন। অভিযোগ, কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন দলটিকে জেতাতে ১ হাজার অতিরিক্ত কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে অসংখ্য ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে নাকি নির্লজ্জ প্রচার চালানো হয়। বলিভিয়া-ইকুয়েডর-আজারবাইজান-ইউক্রেন-স্পেন সর্বত্র ‘অর্থের বিনিময়ে’ ভুয়ো খবরের অভিযোগ। ক’জন জানেন, ৬৪ শতাংশ উগ্রপন্থী সংগঠনের আঁতুড়ঘর ফেসবুক। এই সব হাড় হিম করা তথ্যকে লাশকাটা ঘরে পাঠাতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়ে যায় মার্কিন ‘আধিপত্যবাদের’ চতুর এই তল্পিবাহক। নামটা পাল্টে তাহলে ‘ফেকবুক’ রাখাই কি সমীচীন নয়? প্রশ্ন তুললেন  মৃন্ময় চন্দ
বিশদ

24th  October, 2021
নানা রূপে দুর্গা
তরুণ চক্রবর্তী

সাধক গাইলেন, ‘ত্রিনয়নী দুর্গা, মা তোর রূপের সীমা পাই না খুঁজে।’ সত্যিই মায়ের রূপের যেন সীমা নেই। আর এমনটি হওয়াই স্বাভাবিক। শ্রীশ্রী চণ্ডীতে দেবী দুর্গার মাহাত্ম্য বর্ণনায় আছে,—‘নিঃশেষ দেবগণশক্তি সমূহ মূর্ত্যাঃ’, অর্থাৎ সব দেবতার সমস্ত শক্তির সম্মিলিত প্রতিমূর্তিই দেবী দুর্গা। বিশদ

10th  October, 2021
বাংলার হারিয়ে যাওয়া নদী

মানব সভ্যতা নদীমাতৃক। অথচ, অনেক ক্ষেত্রে মানুষের সচেতনতার অভাবে হারিয়ে যাচ্ছে বহু নদী। সভ্যতা বাঁচাতে নদীকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদেরই। তাই ‘বিশ্ব নদী দিবসে’ বাংলার হারিয়ে যাওয়া নদীগুলির সন্ধান করা হল। বিশদ

26th  September, 2021
বাতাসে বিষ কমছে আয়ু
অরিন্দম রায়

ছোটবেলায় স্কুলের বইতে বায়ুদূষণ নিয়ে যা পড়েছিলাম সেই ধারণার একটা পরিবর্তন করা দরকার। আমাদের পাঠ্য বইতে বায়ুদূষণের বেশিরভাগ অংশটাই ছিল সালফার-ডাই-অক্সাইড ও নাইট্রোজেন-ডাই-অক্সাইড কেন্দ্রিক। আমরা পড়েছিলাম, এই দুই গ্যাস কলকারখানা এবং গাড়ির ধোঁয়া থেকে বেরিয়ে অ্যাসিড বৃষ্টির সৃষ্টি করে। বিশদ

19th  September, 2021
অপু-দুর্গার খোঁজে
পুলক চট্টোপাধ্যায়

ছেলেবেলায় বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় যখন স্কুল পালিয়ে লুকিয়ে তাঁর বাবার লেখা ‘পশ্চিমের ডায়েরি’ পড়তেন, তখন থেকেই তাঁর মনের মধ্যে একটা কল্পনার পাখি বাসা বেঁধেছিল। এরপর বিভূতিভূষণ কর্মসূত্রে হাজির হলেন শরৎচন্দ্রের স্মৃতি বিজড়িত ভাগলপুরের আদমপুরে উপেন্দ্রনাথ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাড়িতে। বিশদ

12th  September, 2021
বাঙালির শিক্ষক
সমৃদ্ধ দত্ত

স্কটল্যান্ডের এবর্ডিন থেকে ২৫ বছর বয়সে বহু দূরের একটি শহর কলকাতায় যখন ডেভিড হেয়ার এলেন, তার কিছুকাল আগেই এই প্রদেশটিতে ভয়ঙ্কর এক দুর্ভিক্ষ ঘটে গিয়েছিল। তাঁর বাবা ছিলেন ঘড়ি নির্মাতা। চার পুত্র জোশেফ, আলেকজান্ডার, জন ও ডেভিড কমবেশি ঘড়ি-বিশেষজ্ঞ। বিশদ

05th  September, 2021
পেগাসাস, রাজকন্যা
ও চুপকথা

থ্রি মাস্কেটিয়ার্স— নিভ-সালেভ-ওমরির নামের আদ্যক্ষর মিলিয়ে তৈরি ইজরায়েলের কুখ্যাত গুপ্তচর সংস্থা এনএসও। কেবল উগ্রপন্থী বা পেডোফাইলস (শিশু যৌন নির্যাতনকারী) পাকড়াতে বিভিন্ন দেশের সরকারকেই নাকি পেগাসাস বিক্রি করা হয়। আরবের রাজকুমারী লতিফা, খুন হওয়া সাংবাদিক জামাল খাশোগি বা মরক্কোর ইতিহাসবিদ্‌ মাতি মনজিব—সকলেই তাহলে ছিলেন পেডোফাইলস বা উগ্রপন্থী? আরব-ইজরায়েল সম্পর্ক সাপে-নেউলে। অথচ, পেগাসাস কেনাবেচার সময় বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও মহম্মদ বিন রশিদ প্রাণের বন্ধু। গোটা বিশ্বের নিরাপত্তাই আজ বিপন্ন। ‘জিরো ক্লিকে’ই পেগাসাস ঢুকে পড়েছে কুলীন আইফোনের বাসরঘরে। রোমাঞ্চ উপন্যাসকেও হার মানানো পেগাসাসের কাণ্ডকারখানার তত্ত্বতালাশে কলম ধরলেন মৃন্ময় চন্দ।   বিশদ

29th  August, 2021
অবিস্মরণীয় চিত্রামৃত
শংকর

অনন্তকালের মহামানবদের বাণী প্রচারে অনেক সময় লেগে যায়। কামারপুকুরের গদাধর চট্টোপাধ্যায় তার ব্যতিক্রম নন। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরের পাঁচ টাকা মাইনের পূজারী তাঁর অবসর সময়ে ভক্তজনদের কিছু বললেন, একজন স্কুল মাস্টার তা শ্রদ্ধার সঙ্গে শুনে বাড়ি ফিরে এসে নোটবইতে লিপিবদ্ধ করলেন। বিশদ

22nd  August, 2021
একনজরে
ফুটফুটে এক শিশুকে ধর্ষণ ও খুনের অভিযোগে ফের উত্তাল হল ভোটমুখী উত্তরপ্রদেশ। ঘটনাটি হাপুর শহরের। মাত্র ছ’বছরের এক শিশুকন্যার উপর যৌন নির্যাতন চালানোর পর তাকে ...

পুড়িয়ে মারার আগে শ্রীলঙ্কার নাগরিকের শরীরের প্রায় সব হাড়ই পিটিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল উন্মত্ত জনতা। তাদের নৃশংসতা এখানেই থেমে থাকেনি। তাঁকে জ্বালিয়েও দেওয়া হয়। ...

কয়েকদিন আগে জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরই কাটোয়া আদালত চত্বর থেকে বাইক চুরি। এমনকী বাইক চুরি করে পালানোর সময় এক মহিলার ব্যাগ ছিনতাইও করে দুষ্কৃতীরা। ...

রবিবার আইএসএলের ম্যাচে কেরল ব্লাস্টার্স  ২-১ গোলে হারাল ওড়িশা এফসিকে। এবার প্রতিযোগিতায় প্রথম জয় পেল কেরলের ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটি। ...




আজকের দিনটি কিংবদন্তি গৌতম ( মিত্র )
৯১৬৩৪৯২৬২৫ / ৯৮৩০৭৬৩৮৭৩

ভাগ্য+চেষ্টা= ফল
  • aries
  • taurus
  • gemini
  • cancer
  • leo
  • virgo
  • libra
  • scorpio
  • sagittorius
  • capricorn
  • aquarius
  • pisces
aries

ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ


ইতিহাসে আজকের দিন

১৮২৩: জার্মান দার্শনিক ম্যাক্সমুলারের জন্ম
১৮৫৩: ঐতিহাসিক ও শিক্ষাবিদ হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর জন্ম
১৯৫৬: দলিত আন্দোলনের নেতা ভীমরাওজি রামাজি আম্বেদকরের মৃত্যু
১৯৮৫: ক্রিকেটার আর পি সিংয়ের জন্ম
১৯৯২: অযোধ্যার বিতর্কিত সৌধ ধ্বংস
২০১৬ - তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতার মৃত্যু



ক্রয়মূল্য বিক্রয়মূল্য
ডলার ৭৪.৩৯ টাকা ৭৬.১১ টাকা
পাউন্ড ৯৭.৮৬ টাকা ১০১.৩০ টাকা
ইউরো ৮৩.৬১ টাকা ৮৩.৬৯ টাকা
[ স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়া থেকে পাওয়া দর ]
05th  December, 2021
পাকা সোনা (১০ গ্রাম) ৪৮, ৫৫০ টাকা
গহনা সোনা (১০ (গ্রাম) ৪৬, ০৫০ টাকা
হলমার্ক গহনা (২২ ক্যারেট ১০ গ্রাম) ৪৬, ৭৫০ টাকা
রূপার বাট (প্রতি কেজি) ৬১, ৮৫০ টাকা
রূপা খুচরো (প্রতি কেজি) ৬১, ৯৫০ টাকা
[ মূল্যযুক্ত ৩% জি. এস. টি আলাদা ]
05th  December, 2021

দিন পঞ্জিকা

২০ অগ্রহায়ণ, ১৪২৮, সোমবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২১। তৃতীয়া ৫১/৩ রাত্রি ২/৩২। পূর্বাষাঢ়া নক্ষত্র ৫০/৩০ রাত্রি ২/১৯।  সূর্যোদয় ৬/৭/১২, সূর্যাস্ত ৪/৪৭/৫৬। অমৃতযোগ দিবা ৭/৩২ মধ্যে পুনঃ ৮/৫৭ গতে ১১/৫ মধ্যে। রাত্রি ৭/২৮ গতে ১১/০ মধ্যে পুনঃ ২/৩৪ গতে ৩/২৭ মধ্যে। বারবেলা ৭/২৭ গতে ৮/৪৭ মধ্যে পুনঃ ২/৮ গতে ৩/২৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৯/৪৭ গতে ১১/২৭ মধ্যে। 
১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪২৮, সোমবার, ৬ ডিসেম্বর ২০২১।  দ্বিতীয়া দিবা ৯/২। মূলা নক্ষত্র দিবা ৮/৩২। সূর্যোদয় ৬/৯, সূর্যাস্ত ৪/৪৮। অমৃতযোগ দিবা ৭/৩৯ মধ্যে ও ৯/৪ গতে ১১/১১ মধ্যে এবং রাত্রি ৭/৩১ গতে ১১/৫ মধ্যে ও ২/৪০ গতে ৩/৩৪ মধ্যে। কালবেলা ৭/২৯ গতে ৮/৪৯ মধ্যে ও ২/৮ গতে ৩/২৮ মধ্যে। কালরাত্রি ৯/৪৮ গতে ১১/২৮ মধ্যে।  
১ জমাদিয়ল আউয়ল।

ছবি সংবাদ

এই মুহূর্তে
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যজুড়ে কমল দৈনিক সংক্রমণ
গতকালের তুলনায় রাজ্যে অনেকটাই কমল দৈনিক সংক্রমণ। গত ২৪ ঘণ্টায় ...বিশদ

09:04:21 PM

গল্ফগ্রিনে চুরির ঘটনায় গ্রেপ্তার অভিযুক্ত, উদ্ধার খোয়া যাওয়া সামগ্রী

04:34:00 PM

রেলের পরীক্ষার ফলপ্রকাশ কবে, জানুন
রেলের পরীক্ষার ফল প্রকাশের দিন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অপেক্ষায় রয়েছেন ...বিশদ

04:21:03 PM

৯৪৯ পয়েন্ট পড়ল সেনসেক্স

04:06:34 PM

৫২৫ পয়েন্ট পড়ল সেনসেক্স

02:01:53 PM

সারের কালোবাজারি বন্ধের দাবিতে মাথাভাঙার একাধিক জায়গায় পথ অবরোধ

01:27:47 PM