পুজোর আগে লাস্ট মিনিটে সাজ-সাজেশনে রয়েছে বিভিন্ন পার্লারের আকর্ষণীয় অফার। পুজোর পাঁচটা দিন তাক লাগিয়ে দিন বন্ধুদের। হয়ে উঠুন পুজোর সেরা সুন্দরী। আর যাঁরা এখনও পার্লারমুখো হননি তাঁরাও করে নিন মেকওভার।
যজ্ঞানুষ্ঠান বৈদিক কর্মের অঙ্গ। অগ্নিকে প্রতীকরূপে উপাসনার প্রথা আদিকাল থেকে। এর উৎপত্তিস্থল ঋগ্বেদ। দেবতার অভিলাষে হব্যাদি যে কোনও অর্ঘ্যদান করতে গেলে অগ্নিতেই তা উৎসর্গ করতে হয়।
শহর আর শহরতলি জুড়ে গড়ে উঠছে অসংখ্য আবাসন। সেখানে পুজোর ব্যবস্থাপনায় অগ্রণী ভূমিকা মেয়েদেরই। কয়েকটি আবাসনের মহিলা মহলের সঙ্গে কথা বলে লিখেছেন সোমা লাহিড়ী।
ভোরের প্রথম আলোয় শিউলি ফুলের মন মাতানো মিষ্টি গন্ধই শুধু নয়, ভোরের বাতাসেও অকারণ পুলকের স্পন্দন। পাড়ায় পাড়ায় বাঁশ আর কাপড়ের স্তূপ। যেন উৎসবের আর উৎসাহের জোয়ার। মায়ের আগমনী বার্তা বয়ে নিয়ে আসে এইসব খুঁটিনাটির অনুষঙ্গগুলো।
দুর্গাপুজোর মহাসপ্তমী। এই দিন প্রথমে গৃহকর্তা পুরোহিতকে কাপড় ও নানা দ্রব্য দিয়ে বরণ করে নেবেন। তারপর নবপত্রিকা স্নান। গঙ্গা বা কোনও জলাশয়ে নবপত্রিকাকে স্নান করিয়ে নতুন কাপড় পরিয়ে যথাযথ মন্ত্র উচ্চারণ করে দুর্গামণ্ডপে প্রতিষ্ঠা করা হয়।
বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
কুমোরটুলির এক জায়গায় বসে সবাই যখন ঠাকুর গড়ত, মুগ্ধ হয়ে দেখত মেয়েটি। আর মনে মনে ভাবত সেও একদিন ঠাকুর গড়বে। সেই মতো মেয়েটির যখন চোদ্দো বছর বয়েস, তখন সে বাবার স্টুডিওতে এসে বাবার সঙ্গে ঠাকুর গড়া শুরু করে। কিন্তু তার এই পথ মসৃণ ছিল না। আশপাশের বয়স্ক লোকেরা বলেছিল মেয়েমানুষ হয়ে কেন স্টুডিওতে আসবে! সেই শুনে মেয়েটির বাবাও তাকে স্টুডিওতে আসতে বারণ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু মনের টান বলে একটা কথা আছে। আর সেই টানেই বারে বারে স্টুডিওতে এসে উপস্থিত হতো মেয়েটি। সেদিনের সেই ছোট্ট মেয়েটি হচ্ছেন মৃৎশিল্পী মালা পাল। যাঁর হাতে বানানো দুর্গাঠাকুর এ বছরও থার্মোকলের বাক্সে বন্দি হয়ে পাড়ি জমাচ্ছে আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়াতে। বোনের মূর্তি গড়া দেখে মালার দাদা গোবিন্দ পাল তার বাবাকে বোঝান। তবুও তিনি রাজি হন না। কিন্তু প্রতিভা চাপা থাকে না। ১৯৮৫ সালে দিল্লির হ্যান্ডিক্র্যাফ্ট মিউজিয়াম থেকে লোক আসে কুমোরটুলিতে। এবং সেখানে মালার হাতে গড়া একটা ঠাকুর দেখে খুব পছন্দ হয় ওদের। মালাকে ঠাকুর গড়ার জন্য দিল্লিতে নিয়ে যেতে চান তাঁরা। মালা দাদার সহযোগিতায় দিল্লি যান। প্রগতি ময়দানে গিয়ে দুটো ঠাকুর গড়েন তিনি। এর জন্য কিছু টাকাও পান। এরপর সরকারি উদ্যোগে ঠাকুর রং করাটা ওখানেই শিখে নেন। ঠাকুর রং করা শিখে, তিনি তাঁর হাতে তৈরি দুর্গাঠাকুরগুলো রং করেন এবং তারপর ফিরে আসেন কলকাতার কুমোরটুলিতে। বাবা আগেই মারা গিয়েছিলেন। তাই দাদার সহায়তায় নিজের স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দেওয়ার পথে এগতে থাকেন মালা। চোদ্দো বছরের মালা আজ মধ্যবয়সি এক নারী। স্বামী আর একমাত্র মেয়ে নিয়ে তাঁর ভরা সংসার। সংসার সামলে এ যাবৎ বহু ঠাকুর তিনি নিজের হাতে তৈরি করেছেন। স্বামী সন্তানের সহযোগিতাও প্রচুর পেয়েছেন। ঠাকুর গড়ে, ঠাকুরের আশীর্বাদে এখনও পর্যন্ত ঊনচল্লিশটা পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এছাড়াও জেলাস্তর আর রাজ্যস্তরেও প্রচুর পুরস্কার পেয়েছেন মালা। বর্তমানে তিনি ন্যাশনাল লেভেলে পুরস্কার পাওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন। এ বছর প্রায় কুড়িটা দুর্গাঠাকুর তৈরি করছেন। সাবেকি ঠাকুর গড়তে ভালোবাসলেও বর্তমান বারোয়ারি কর্মকর্তাদের চাহিদা অনুযায়ী থিমের ঠাকুরও গড়ছেন মালা। তবে এখন তিনি কুমোরটুলিতে নতুন আলোর দিশা দেখাতে ঠাকুর বানানোর পাশাপাশি পোড়ামাটির হার, দুল, চুড়ি এবং নাকছাবি বানাচ্ছেন। সেগুলো বিদেশিদের কাছে খুব পছন্দের। বিদেশিরা কুমোরটুলিতে এসে তাঁর বানানো গহনা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। মালার কাছে বহু জন গহনা বানানো শিখে নিয়ে তাঁকে সাহায্য করছে।
মায়ের পেশাকে নিজের পেশা না করতে চাইলেও মালা পালের বি কম পাঠরতা মেয়ে মাকে তাঁর কাজে যথেষ্ট সাহায্য করে। আজ মালা পাল তাঁর ইচ্ছাশক্তিতে কুমোরটুলির পুরুষদের পাশাপাশি নিজেরও একটা শক্তপোক্ত জায়গা তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন।
কাকলি পাল বিশ্বাস
