ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
তোমার তো শ্যুটিংয়ের প্রচণ্ড ব্যস্ততা। তার মধ্যে ত্বক বা চুলের যত্নের জন্য কী কী করো?
বিশেষ কিছুই করি না! কারণ আমার মনে হয় যত কেমিক্যাল বা অন্য কিছু বাইরে থেকে ব্যবহার করব, তাতে আরও খারাপ হবে। হয়তো একটা খুব দামি প্রোডাক্ট ব্যবহার করলাম, তারপর সেটা বাজার থেকে দু’বছর পরে উঠে গেল। বা আমিও আর কিনতে পারলাম না। তাছাড়া আমার স্কিন ভীষণ সেনসিটিভ আর পিম্পল-প্রোন। তার জন্য আমি মেডিকেটেড জিনিস ব্যবহার করি। এমনিতেও খুব বেশি প্রসাধনী আমি ব্যবহার করি না। তবে ফেস ওয়াশ থেকে সানস্ক্রিন লোশন সবই মেডিকেটেড। সকাল থেকে রাতের মধ্যে দু-তিনবার ফেস ওয়াশ লাগে। আর সানস্ক্রিন তো মাস্ট। সঙ্গে একটা ময়েশ্চারাইজার আর নাইট ক্রিম। ব্যস এর বেশি আমি কিছু ব্যবহারও করি না। রূপচর্চার বাইরের জিনিসের তুলনায় আমি মনে করি যা খাওয়াদাওয়া করি, সেটাই কিন্তু ত্বকে ফুটে ওঠে। তাই ঠিকমতো খাবার খাওয়া খুব জরুরি। সপ্তাহে পাঁচ দিন সকালবেলায় আমি এক গ্লাস (৩০০ মিলি) ভেজিটেবল জুস খাওয়ার চেষ্টা করি। তবে এক এক রকম জুস ঘুরিয়ে ফিরিয়ে। এখন যেমন খাচ্ছি বিট-ক্যারট-টম্যাটো জুস। কখনও আবার খাই পালং শাক-লাউ আর উচ্ছের রস। এগুলো শুনেই যে কারও মনে হবে ও বাবা কী করে খাব! ওই ওষুধ মনে করে খেয়ে নেওয়া আর কি। প্রাতঃরাশে হাবিজাবি খাওয়ার থেকে এটা খেলে কিন্তু সার্বিকভাবে ভালো হয়। ডিটক্স করে দারুণ। এছাড়া সারাদিনে খাই গ্রিন ভেজিটেবলস, ফিশ ইত্যাদি। রাত থেকে ভেজানো আমন্ড সকালে উঠে খাওয়া চুলের জন্য খুব ভালো। এছাড়া দিনে দু’বার অন্তত ফল খাওয়া আর প্রচুর জল (তিন-চার লিটার) খাওয়া দরকার। আর চুলের জন্য সাধারণ নারকেল তেল দিয়ে মাঝে মাঝে মাসাজ করা। মাসে এক দু’বার স্পা, ঠিক সময়ে হেয়ার ট্রিম করা— এই বেসিক জিনিসগুলোই করি। যেটা সবসময় মেনে চলা সম্ভব। আমি কেন, যে কেউ করতে পারবে।
নিজেকে স্লিম রাখার জন্য আর কী ডায়েট মেনে চলো?
এক্সারসাইজ করার চেষ্টা করি। সবসময় হয় না। টানা এত ঘণ্টা কাজের পর এক্সারসাইজ করার এনার্জি থাকে না। আর কোভিডের জন্য এখন তো ঠিকমতো কিছু হচ্ছেও না। কিন্তু যারা সময় পায়, তারা যদি সপ্তাহে পাঁচ দিন অন্তত এক ঘণ্টা করে এক্সারসাইজ করতে পারে, তার চেয়ে ভালো কিছুু হয় না। এর পাশাপাশি তো বললামই বেসিক খাওয়াদাওয়া ঠিক রাখা। আমি চেষ্টা করি বাড়ির খাবারদাবার খেতে। আর সপ্তাহে এক-দু’দিন চিট ডে হয়েই যায়! চিট ডে-র বদলে আমি চেষ্টা করি চিট মিল খেতে। ডিনার বা লাঞ্চ কখনও একবার উল্টোপাল্টা খাওয়া হয়ে গেলে পরে দিনটা ম্যানেজ করা যায়। আর আমি বাইরে গেলেও যতটা স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া যায়, তার চেষ্টা করি। স্যালাড বা গ্রিলড চিকেন, ফিশ জাতীয় জিনিস খাই। মানে যতটা পারা যায়। আমি এমনিতে বিরিয়ানি খুব ভালোবাসি, সপ্তাহে তিন দিন বিরিয়ানি দিলেও খেয়ে নেব! তাও চেষ্টা করি যতটা ক্লিন খাওয়া যায়।
সাজগোজ বা মেকআপের সময় কী মাথায় রাখো?
দেখো এটা কিন্তু ব্যক্তিগত পছন্দের উপর নির্ভর করে। আর এক একটা জিনিস এক একজনকে ভালো লাগে দেখতে। যেমন আমার মনে হয় ডার্ক শেডের লিপস্টিক আমাকে একদম মানায় না। তাই আমি সেটা কখনও ব্যবহার করি না। আবার অনেকে সেটা খুব ভালো ক্যারি করতে পারে। আমার মা যেমন দারুণ পারেন। ব্রাউন, ডিপ পার্পল পছন্দ করেন মা। আমি পারি না! তাই মেকআপের বিষয়টা খুব পার্সোনাল। এমনিতেও আমি লাইট মেকআপে বিশ্বাসী। সারাদিন মেকআপ থাকলে এমনিই একটা সময়ের পর সেটা উঠতে থাকে। তাই শুরুতে ভারী মেকআপ হলে মুশকিল।
পোশাকের ক্ষেত্রে তোমার ফ্যাশন মন্ত্র কী?
যাতে আরামদায়ক লাগে, তাই পরি। শাড়িতে আমি খুবই স্বচ্ছন্দ। আবার কোনও কোনও অকেশনে লং ড্রেস, লং স্কার্ট, লেহেঙ্গা উইথ ক্রপ টপ ইত্যাদি পরতেও খুব ভালো লাগে। তবে পার্টিতে আমি অবশ্য সব কিছু মিনিমাল রাখায় বিশ্বাসী। এমন কিছু কখনও পরব না, যাতে আমি স্বচ্ছন্দ নই। এমন একটা ড্রেস পরলাম যেটা ক্যারি করা মুশকিল বা এমন উঁচু জুতো পরলাম যাতে হাঁটতেই অসুবিধে হচ্ছে, এটা কখনওই করা উচিত নয়। এছাড়া সব সময়ের পরার জন্য শর্টস-টি শার্ট আমার ভালো লাগে। সঙ্গে পছন্দ কটন প্যান্ট বা ডেনিম। তার সঙ্গে ক্যাজুয়াল কিছু পরে নিলে খুবই স্মার্ট লাগে। আর পায়ের জন্য আমি চপ্পল বা স্যান্ডেলই প্রেফার করি। বেল্টওয়ালা জুতো বা হাই হিল স্টিলেটো একদম পছন্দ করি না। গাড়িতে সব থাকে অবশ্য। এমন অনেক সময়েই হয়, গাড়িতে আমি সেজেগুজে চপ্পল পরে বসে আছি। তারপর বেরনোর আগে হয়তো জুতোটা পরে নিলাম।
ছেলেদের ফ্যাশন নিয়ে কিছু বলো। নীলের (তৃণার স্বামী) জন্য কী ধরনের পোশাক কেনো?
সব পুরুষকেই ফিটেড জিনস আর সাদা শার্টে বেশ ভালো লাগে বলে আমার মনে হয়। আর নীলের পছন্দ অপছন্দ আমি খুব ভালো করে জানি। তাই ওর জিনিস কিনতে আমার অসুবিধা হয় না। ও খুব ফান লাভিং। কোয়ার্কি মোটিফ, উজ্জ্বল রং ও খুব ভালো ক্যারি করতে পারে। ছেলেদের সাধারণ যেসব একঘেয়ে পোশাক হয়, সেগুলো পরায় ওর উৎসাহ নেই। ওর প্রিয় রং যেমন পিচ। এছাড়া পিঙ্ক থেকে পার্পল সবই ও দারুণ ভালো ক্যারি করতে পারে। আমার স্বামী বলে বলছি না, সত্যিই নানা ধরনের নানা রঙের পোশাকে ওকে খুব সুন্দর মানায়।
আজ তো ভাইফোঁটা। কীভাবে কাটাও এই দিনটা, একটু বলো আমাদের।
ভাইফোঁটা বরাবরই খুব গুরুত্বপূর্ণ আমার কাছে। এমন একটা বাড়িতে জন্মেছি যেখানে ছেলেই বেশি, মেয়ে কম। বাবার দিকের সবাই ছেলে, সবাই আমার দাদা। তাই লাইন দিয়ে বসে ছোটবেলায় পরপর ভাইফোঁটা হতো। এখন সবাই নানা কাজে এদিক ওদিক ছড়িয়ে। তাই সকলে এসে উঠতে পারে না। কিন্তু ভাইফোঁটা তো আছেই। দাদাদের কী দেব, সবাই মিলে দুপুরে কী কী খাওয়াদাওয়া হবে বা রাতে বাইরে খেতে যাব— এই সব প্ল্যানিং চলতেই থাকে।