ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
শহর ছেড়ে অনেক বছর মুম্বইতে। কতটা মিস করো কলকাতাকে?
২০০৪ সাল থেকে আমি কলকাতার বাইরে। পুজোর সময় এক আধবার এসেছি। মাঝে মাঝে কালীপুজোতেও আসি। মুম্বইতেও ভালো লাগে। আমার মা আসেন। প্যাণ্ডেলে যাই, খাওয়াদাওয়া হয়। তবে কলকাতার মেজাজটা তো মিস করি বটেই। আবার কাজকর্ম ছেড়ে পুজোর জন্য কলকাতা যাওয়াও আর হয়ে ওঠে না।
ছোটবেলার পুজোর স্মৃতির কথাই বলো...
আমার কাকুর সঙ্গে ঠাকুর দেখতে যাওয়া মনে পড়ে। এক এক বয়েসে এক এক রকম স্মৃতি। কখনও প্যান্ডেলে ঘোরা, কখনও পাড়ায় বসা বন্ধুদের সঙ্গে। নতুন জামা পরে ভোগ খাওয়া। মুম্বইতেও অষ্টমীর ভোগ কখনও মিস করি না। ছোটবেলায় কলকাতায় কাকুর সঙ্গে ট্রাকে করে ভাসান দেখতে গিয়েছি। কলকাতায় শিল্প শৈলী এবং সৌকর্য এত অসাধারণ, যে সেটা না দেখলেও বড় মিস। কিন্তু পুজোর ভিড় কোনওকালেই ভালো লাগে না। আমরা ছোটবেলায় কুমোরটুলিতেও যেতাম। কাকু ছবি তুলতেন। দশমীতে মাকে বরণও করেছি। মুম্বইতে সেটা হয়ে ওঠে না।
মুম্বইয়ের পুজো কেমন লাগে?
ভালোই লাগে। কলকাতার মতো জমজমাট ব্যাপার নয়। রানি মুখোপাধ্যায়ের পুজো, লোখান্ডওয়ালার পুজোয় যেতাম। ওখানে ভোগ ভালো হতো। তবে কলকাতার মতো তো আর হয় না। খারে রামকৃষ্ণ মিশনের পুজোতেও কখনও কখনও যাই।
পুজোর সাজগোজ বলতে কী বোঝ?
এখন সেই নতুন জামা পরার ব্যাপারটা অত আর আলাদা করে কিছু মনে হয় না। মা যদিও কলকাতা থেকে ফোনে বলেন, টাকা পাঠাচ্ছি নতুন জামা কিনে পরো। আসলে কাজের যা ধরন, তাতে রোজই প্রায় নতুন জামা পরি (হাসতে হাসতে)। তাই আলাদা করে নতুন জামা পরা আর এক্সাইটিং লাগে না। তবে এবার দুটো শাড়ি হয়েছে। একটা র সিল্ক কিনেছি, আর একটা প্রাপ্তি হয়েছে। মায়ের জন্য চারটে শাড়ি কিনেছি এবার শখ করে। কারণ মা এখন আমার কাছেই আছেন। সবার জন্যই কিনতে ভালো লাগে। মা মাসিদের জন্য শাড়ি, আর কাকুদের জন্য ধুতি পাঞ্জাবি।
একসময় তো কলকাতায় থাকতে রোজ দুটো নতুন জামা নিজের জন্য ছিল মাস্ট। ষষ্ঠীতে ওয়েস্টার্ন, সপ্তমীতে সালোয়ার কামিজ, অষ্টমীর দিন শাড়ি আর নবমীতে হাইফাই পার্টিওয়্যার। দশমীতে বরণের সময় লাল পাড় সাদা শাড়িই যে পরেছি, তা নয়। সাদা-লাল সালোয়ারেও বরণ করেছি। তবে বইপত্তর পেন ছোঁয়ানো, এখন কাজের আগে স্ক্রিপ্ট মায়ের পায়ে ছোঁয়ানো, এগুলো না করলে মন খচখচ করে।
পুজোয় স্টাইল না ফ্যাশন?
স্টাইল তো নিজস্ব ব্যাপার। কারও মধ্যে স্টাইলের সেন্স থাকে, কারও থাকে না। এটা কপি করা যায় না। ফ্যাশন ট্রেন্ড অনেকে ফলো করে। আমি কখনও করতে পারিনি। আমার মনে হয় কমফর্টটা সব চেয়ে বড় ব্যাপার। পোশাক যে যার মনের ইচ্ছেমতো পরতে পারে। ঘাগরা চোলি পরুক বা জিনস টপ কিংবা শাড়ি, ক্যারি করতে পারলে সবই ভালো লাগে।
আর কী করে যে লোকে হাই হিল পরে ঠাকুর দেখতে যায়, জানি না! ফোস্কা তো পরেই। সঙ্গে পায়ে ব্যথা। জুতো সবসময় আরামদায়ক হওয়া উচিত। নতুন জুতো পরে অনেকটা হাঁটা মুশকিল হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তোমার পোস্ট থেকে বোঝা যায় নারীর অধিকার নিয়ে তুমি সরব। দুর্গাপুজোয় নারীশক্তির আরাধনা, অথচ নারীই লাঞ্ছনার শিকার। কী বলবে এ ব্যাপারে?
পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, সব একদিন বদলে যাবে, এটা ভাবার কোনও কারণ নেই। তবু আমাদের নিয়মিত বলে যেতে হবে কথাগুলো। এত নির্যাতন, ধর্ষণ সত্ত্বেও কারও মনোভাব বদলায় না। এখনও কোর্ট বলছে বৈবাহিক ধর্ষণ কোনও অপরাধ নয়, দুর্ভাগ্যজনক। এগুলো মেনে নেওয়া খুব কষ্টকর। নারীশক্তি কথাটাকে আমরা খুব বড় কিছু না ভেবে যদি দৈনন্দিন জীবনে ছোট ছোট ক্ষেত্রে সেটা নিয়ে ভাবি, তা অনেক কাজে দেয়। আমাদের রোজকার সংগ্রাম, যা যা আমাদের অধিকার খর্ব করে, সব কিছু নিয়ে বলতে হবে। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার যে মেয়েরা বড় হয়ে মা বা মাসি হচ্ছে, তাঁরা যেন ছেলেদের ঠিকমতো বড় করে তোলে, এটা দেখতে হবে। কখনও ছোট থেকে একটা ছেলেকে কোনও কিছুতে বাধা দেওয়া হয় না। কীভাবে কথা বলবে, কীভাবে তাকাবে— এগুলো ছেলেদেরও জানা উচিত। এখনও আমরা বলি একটি মেয়েকে ধর্ষিত হয়েছে। একটি পুরুষ তাঁকে ধর্ষণ করেছে বলা হয় না। এই বলার ধরনটাই তো পাল্টাতে হবে। মহিলাদের প্রতি এমপ্যাথি পুরুষদের দিক থেকে আসাটা খুব দরকার।