ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
শীত আসছে। আর সঙ্গে নিয়ে আসছে রুক্ষ ত্বকের সমস্যা। অনেকেরই শীত এলে হাত ও পায়ের চামড়া ফাটে। সেই ফাটা ত্বক থেকে ইনফেকশন হওয়ারও সম্ভাবনা জন্মায়। তাহলে উপায়? বরং আগে থেকেই যত্ন নিন ত্বকের। হাত-পায়ের যত্নে তো ম্যানিকিওর ও পেডিকিওরের জুড়ি মেলা ভার। বিউটিশিয়ান শেহনাজ হুসেন কিছু পরামর্শ দিলেন পেডিকিওর ও ম্যানিকিওর নিয়ে।
মাঝে দশ দিন
দশ দিন থেকে দু’সপ্তাহে একবার অন্তত পেডিকিওর ও ম্যানিকিওর করা উচিত। আর তার মাঝের যে সময়টা পরে রইল তাতে রোজ হাত পায়ে ক্রিম মাসাজ করা খুবই জরুরি। এখন প্রশ্ন হল ক্রিম মাসাজে কী ফল হয়? বা ক্রিম মাসাজ আদৌ কেন প্রয়োজন? শেহনাজ বললেন, হাতের ও পায়ের নখের পাশে যে চামড়া থাকে তাকে কিউটিকলস বলে। নখের পাশ থেকে এই কিউটিকলস উঠতে থাকলে নখে ব্যথা হয়। ফলে এই কিউটিকলস ট্রিম করে, ফাইল করে ও নরম করে রাখা খুবই দরকার। আর সেই কাজই সম্ভব হয় নিয়ম মতো ক্রিম মাসাজের মাধ্যমে। আর শীতে পায়ের গোড়ালি ফাটা তো খুবই সাধারণ সমস্যা। সেক্ষেত্রে এই ধরনের ক্রিম মাসাজ গোড়ালির ত্বক নরম রাখে এবং তা ফাটতে দেয় না। এছাড়া আমাদের কাজের ধরনের ওপর নির্ভর করে অনেকে আবার প্রতি সপ্তাহেই একবার করে পেডিকিওর ও ম্যানিকিওর করেন। সাধারণত ফ্রন্ট অফিসে চাকরি করলে, ইলেক্টনিক মিডিয়ায় থাকলে বা অ্যাঙ্কারিংয়ের কাজ করলে সৌন্দর্যটা বেশি প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। আর সেইসব কাজের সঙ্গে যুক্ত হলে সাপ্তাহিক পেডিকিওর ও ম্যানিকিওর করাটা খুবই জরুরি হয়ে পড়ে।
কেন দরকার?
এবার বলি নিয়ম করে পেডিকিওর ও ম্যানিকিওর করলে ত্বক কেন ভালো থাকে? সাধারণত ত্বকের পুষ্টির জন্য কিছু বিশেষ ভিটামিনের প্রয়োজন হয়। শেহনাজের কথায়, সেই ধরনের ভিটামিন এই পেডি ম্যানি ক্রিম, অয়েল ও প্যাকে ঠাসা থাকে। তাই এই ক্রিম দিয়ে নখের চামড়া মাসাজ করলে স্বাভাবিকভাবেই তা ভালো থাকে। এই মাসাজের ফলে ত্বকের মৃত কোষ সরে যায় এবং তার বদলে নতুন চামড়া গজায়। সেই চামড়া হয় নরম ও কোমল। এতে হাত ও পায়ের আঙুল আরও সুন্দর লাগে। তাছাড়া শীতকালে ত্বক রুক্ষ হয়ে যায় এবং তা নরম রাখার বাড়তি প্রয়োজন হয় বলেও এই ধরনের মাসাজ মাস্ট। এতে হাত ও পায়ের ত্বক অতিরিক্ত ময়েশ্চার পায়।
উপকরণের নানা রকম
পেডিকিওর ও ম্যানিকিওরের জন্য যে এসেনশিয়াল অয়েল লাগে তা ত্বকের পক্ষে বিশেষ উপকারী জানালেন শেহনাজ। এই ধরনের তেল অবশ্য কোনও ভালো কোম্পানি থেকেই কেনা উচিত। এর নানারকম ফ্লেভার থাকে যেমন রোজ, ল্যাভেন্ডার, লেমন ইত্যাদি। নিজের পছন্দ অনুযায়ী ফ্লেভার বাছা সম্ভব। তবে কেউ যদি এসেনশিয়াল অয়েল কিনতে না পারেন তাহলেও কিন্তু পেডিকিওর বা ম্যানিকিওর করা সম্ভব। সেক্ষেত্রে নারকেল তেল, তিলের তেল বা আমন্ড তেল ব্যবহার করা যেতে পারে। এমনকী সূর্যমুখী তেলেও যথেষ্ট উপকার রয়েছে। কিন্তু এই তেল দিয়ে কীভাবে মাসাজ করবেন সেটা জেনে নেওয়া দরকার। সাধারণত এসেনশিয়াল অয়েলের বদলে অন্য তেল ব্যবহার করতে চাইলে তা একটু গরম করে নেওয়া উচিত। তাতে হাত ও পায়ের ত্বকের ওপর তা দ্বিগুণ ভালো কাজ করে।
মনে রাখার মতো কিছু কথা
পেডিকিওর বা ম্যানিকিওর করতে চাইলে একটা গামলায় গরম জল নিয়ে তাতে কয়েক ফোঁটা শ্যাম্পু ফেলে একটু ফেনা করে নিন। তারপর হাত বা পা সেই জলে মিনিট পনেরো ডুবিয়ে রাখুন। সাবান থেকে তুলে হাত ও পা নরম ও শুকনো কাপড় দিয়ে মুখে ফেলুন।
শীতকালে পেডিকিওর করার সময় পা খুব বেশি ঘষবেন না। এতে ত্বক আরও রুক্ষ হয়ে যায়। বরং খুব নরম ব্রাশ দিয়ে পায়ের ত্বকে হালকা মাসাজ করলে ত্বক কোমল থাকে। ব্রাশ করার পর পিউমিস স্টোন দিয়ে হালকা মাসাজ করলেনও ত্বক ভালো থাকে।
এসেনশিয়াল অয়েল মাসাজের সময় খেয়াল রাখতে হবে তা যেন খুবই আলতো স্পর্শে করা হয়। এবং অল্প তেল নিয়ে হালকা মাসাজ করে তেলটা ত্বকে বসিয়ে নেওয়া হয়। এতে ত্বক নরম ও উজ্জ্বল হয়ে উঠবে।
ঘরোয়া নিয়ম ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি কিছু হ্যান্ড ও ফিট রাবের রেসিপি দিলেন শেহনাজ হুসেন। পেডিকিওর ও ম্যানিকিওর করার সময় এই ধরনের রাব তো ব্যবহার করা যেতেই পারে, এমনকী অন্যান্য সময়ও এই রাব দিয়ে হাত ও পায়ে হালকা মাসাজ করলে ত্বক কথা বলবে।
হ্যান্ড রাব রেসিপি
উপকরণ: সূর্যমুখী তেল ২ টেবিল চামচ, লেবুর রস ২ টেবিল চামচ, দানা চিনি ৩ টেবিল চামচ।
পদ্ধতি: সব উপকরণ একসঙ্গে মিশিয়ে নিন। একটু দানা দানা একটি মিশ্রণ তৈরি হবে। কিন্তু খেয়াল রাখবেন সব উপকরণ যেন একে অপরের সঙ্গে মিশে যায়। এই মিশ্রণটি হাতের তালু থেকে কনুই পর্যন্ত মাখুন। তারপর তা মিনিট পনেরো রেখে উষ্ণ গরম জলে ধুয়ে ফেলুন। এরপর যে কোনও নারিশিং ক্রিম হাতে মেখে নিন। ব্যস হয়ে গেল ভরপুর হাতের যত্ন।
ফুট রাব রেসিপি
উপকরণ: আমন্ড অয়েল ৩ টেবিল চামচ, জল ঝরানো টক দই ২ টেবিল চামচ, দানা চিনি ২ টেবিল চামচ।