ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
অপেক্ষা আর মাত্র তিন দিন। পিতৃপক্ষের অবসান, দেবীপক্ষের সূচনাকাল দোরগোড়ায়। মা আসছেন। আকাশ বাতাস মুখরিত। মায়ের আগমনের সঙ্গে সঙ্গে আমরা সেজে উঠি উৎসবের নানা রঙে। সে রং কখনও শান্ত নিবিড় নীল, কখনও উদ্দাম উজ্জ্বল সবুজ, কখনও রোদ ঝলমলে হলুদ আর কখনও লাল-সাদার চিরাচরিত ঐতিহ্যে ভরপুর। আজ আমরা পুজোর সেই ঐতিহ্যবাহী সাজ নিয়েই কথা বলব।
লালপাড় সাদা শাড়ি ছাড়া অষ্টমীর অঞ্জলি কল্পনা করা যায় কি? কিংবা লাল-সাদার মিলমিশের শাড়ি ছাড়া দেবীবরণের কথা ভাবা যায় কি? একযোগে সব বাঙালি বলবে, কখনও না। তাই লাল-সাদার কম্বিনেশনে যে ধরনের শাড়িই পরুক বাঙালি নারী, তার দিকে ফিরে তাকাতেই হবে। এই লাল-সাদার কম্বিনেশন পুরাতন নারীকে যেমন চিনিয়ে দেয়, তেমনই আধুনিক নারীও এই সাজে এক নিমেষে হয়ে ওঠে ঐতিহ্যের প্রতীক।
পুরাণে কথিত, মহালয়ার দিনেই দেবী দুর্গা মহিষাসুর বধের দায়িত্ব পেয়েছিলেন। সেই দেবীরূপের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে সেজে ওঠে অসংখ্য বাঙালি নারী। ছবিতে যে লাল-সাদা কম্বিনেশনের শাড়ি দু’টি দেখতে পাচ্ছেন, সেগুলিতে পুজোর সেই চিরন্তন রূপটিকেই ধরতে চেয়েছে বুটিক ‘গুলমোহর কলকাতা’। মণিপুষ্পক চট্টোপাধ্যায়, সৈকত সাহা এবং দেবর্ষি রায়— তিনজন মিলে ‘গুলমোহর কলকাতা’র তরফে পুজো উপলক্ষে এনেছেন এই কালেকশন।
মণিপুষ্পক জানালেন, শাড়িগুলির দু’টিই হ্যান্ডওভেন জামদানি। ন্যাচারাল ডাইয়ে খাদির উপরে জামদানি বুটা ওয়ার্ক করা হয়েছে। এই শাড়ি থেকে কোনও রং বেরোবে না বলে তাঁর দাবি। জামদানির উপর কাজ করার আগে তাঁরা ভেবেছিলেন দুটো কথা। প্রথমত এটি বাঙালি ঐতিহ্যের অঙ্গ। আর তারই সঙ্গে পুজোর আগে বাংলার তাঁতিদের সাহায্য করতে কিছু করা যায় কি না, সেটাও চাইছিলেন তাঁরা। আর সেই ভাবনা থেকেই তাঁতিদের ঘরে আলো ফোটাতে এক এক করে জামদানি নিয়ে কাজ করা শুরু করেন।
‘গুলমোহর কলকাতা’ যে শাড়িগুলি এনেছে লাল-সাদা কালার প্যালেটে, তাতে সাদাটির উপরে রয়েছে বক্স এবং সরু পাড়, লাল শাড়িতে বক্সগুলির মধ্যে জামদানির বুটা কাজ। সঙ্গে সাদা সুতো দিয়ে তৈরি সরু পাড়। শাড়িগুলির পাশাপাশি খাদির লাল ড্রেসও তাঁরা রেখেছেন এসময়ের কমবয়সি মেয়েদের জন্য। মনিপুষ্পক বললেন, ‘যাঁরা চট করে শাড়ি পরতে স্বচ্ছন্দ নন অথচ ঐতিহ্যের অনুসারী হতে চান, তাঁদের কথা ভেবেই এথনিক ওয়্যারে এটা আমরা করেছি। লাল ড্রেসের মাঝে আছে জামদানির মোটিফ আর তার সঙ্গে বর্ডারে ক্রুশে লেসের কাজ।’ শাড়ি এবং ড্রেসের দাম একেবারে সাধ্যের মধ্যেই পেয়ে যাবেন।
গত বছর থেকেই ‘গুলমোহর কলকাতা’ কাজ শুরু করেছে। তার আগের বছর থেকে চিন্তাভাবনা শুরু হয়ে গিয়েছিল। তাঁরা চান বাংলার হ্যান্ডলুম নিয়েই কাজ করতে। তাই কালেকশনে রাখেন তাঁত, জামদানি, খেস ও কাঁথাকাজ।
মডেল: ঐশিকা শাখারী
ছবি: শান্তনু দাস
গ্রাফিক্স : সোমনাথ পাল