ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
যত্ন সকলের
ধরুন একটা আপেলকে দু’দিন ফ্রিজে রাখলেন। আবার তারপর দু’দিন বের করে রাখলেন। আবার তারপর ফ্রিজে রেখে দিলেন। তাতে কী হবে? আপেলের গা-টা দেখবেন কুঁচকে গিয়েছে, আস্তে আস্তে সেটা পচেও যাবে। আমাদের ত্বকও তাই। তাই শীতের জন্য আলাদা করে তো বটেই, সারা বছর একটা রূপরুটিন মেনে চলতে হবে। শীতের সময় এমনিতেই বাতাসে আর্দ্রতা কমে যায়। তার সঙ্গে সঙ্গে জল খাওয়ার প্রবণতাটাও কমে যায় আমাদের। ঠান্ডা আবহাওয়ায় জল খাওয়ার তাগিদটাই যেন থাকে না। এটা সব বয়সের মানুষের ক্ষেত্রে হয়। শুধু খাবার খেলে জলটুকু খাওয়া হয়। তাই সবসময় জল খাওয়ার কথাটা মাথায় রাখতে হবে। না হলে শুষ্কতা এমনিই বেড়ে যায়।
বয়স্কদের জন্য বলব, এসময় এমনিই নানারকম অ্যালার্জি বাসা বাঁধে শরীরে। কারও ঠোঁটের চারপাশ শুকনো হয়ে যায়, কারও চোখের চারপাশ শুকনো হয়ে যায়, কারও আবার মুখ বা হাত বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। সবচেয়ে অসুবিধা হয় মহিলাদের, যাঁরা নিয়মিত ডিটারজেন্ট ব্যবহার করেন। তাঁদের হাতের যত্নে গ্লাভস পরে কাজ করা অভ্যেস করতে হবে।
শিশুদের জন্য
বাচ্চাদের একটু করে উষ্ণ জল বারবার খাওয়ানো উচিত। এতে হাইড্রেটেড থাকবে ওরা সবসময়। তাছাড়া ভালো বেবি অয়েল লাগাতে হবে। বাচ্চাকে সেই তেলে মাসাজ করে স্নান করানো উচিত। ঠান্ডার সময় বাচ্চাদের অনেক গরম জামা পরিয়ে রাখায় স্কিন ড্রাই হয়েই যায়। তাই সঙ্গে ভালো ময়েশ্চারাইজার লোশন। একেবারে ছোট বাচ্চাদের বেশি করে পাউডার মাখানোর প্রবণতা থাকে মায়েদের। সেটা এসময় না করাই ভালো। কারণ পাউডার আরও ড্রাই করে দেয়। তাছাড়া ছোট-বড় সকলের উপকারে হাতের কাছেই যা যা পাওয়া যায় তার মধ্যে থেকে একটু দুধের সর, মুসুর ডাল ভিজিয়ে বেটে বা গোবিন্দভোগ চাল ভিজিয়ে বেটে তার মধ্যে একটু তেল মিশিয়ে পেস্ট করে মেখে নিন। শীতকালে ত্বকে একটা কালচে হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। কারণ ময়লা বসে যায় ত্বকে। এই ধরনের পেস্ট করে মুখে হাতে পায়ে মাখলে বেশ ভালো করে ময়লাটা উঠে যায়।
কিশোর কিশোরী
বয়স ১২ পেরিয়ে যাওয়ার পরে সানস্ক্রিন লোশন লাগানো যেতে পারে। কারণ এই বয়সি বাচ্চারা বাইরে খেলে, স্কুলও যাচ্ছে এখন। অথবা যারা অনলাইন টানা ক্লাস করছে, তাদের জন্য গ্যাজেটের রে চোখের যেমন ক্ষতি করে তেমনই প্রভাব ফেলে চামড়াতেও। তাই সেক্ষেত্রে ত্বকে সানস্ক্রিন লাগানো দরকার। এছাড়া তেল লাগানোর সময় না পেলে এক মগ গরম জলে যে কোনও তেল এক চামচ ফেলে সেটা গায়ে ঢেলে নেওয়া ভালো। তারপর পুরোটা গায়ে ঘষে নিতে হবে। এছাড়া একটু ময়দা, চালের গুঁড়ো, বা ডালের গুঁড়ো, বেসন দুধ ইত্যাদি মিশিয়ে তার মধ্যে সিজনাল জুস দিয়ে (যেমন টম্যাটো, কমলালেবুর রস) একটা পেস্ট করে সারা গায়ে মেখে পাঁচ-দশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেললেই হল। এটা ডিপ ক্লিনজিং-এর কাজ করবে।
রাতের যত্ন
রাতে অবশ্যই ফেস ময়েশ্চারাইজার মাখতে হবে। সঙ্গে নারিশিং ক্রিম। পিম্পলও কিন্তু বাড়ে এই সময়ে। নিম, চন্দন বেটে বা শাখের গুঁড়ো মিশিয়ে মাখতে হবে। সঙ্গে সানস্ক্রিন চলবে। আর শুষ্ক ত্বকে মুখ পরিষ্কারের জন্য আমন্ড বেটে কাঁচা দুধে মিশিয়ে বা কমলালেবুর খোসা গুঁড়ো করে কাঁচা দুধে মিশিয়ে মেখে নিতে পারেন। আর যাদের একটু কম্বিনেশন থেকে তৈলাক্ত ত্বক, তাদের মুখ পরিষ্কারের জন্য টম্যাটোর রস আর ওটমিল মিশিয়ে মেখে নিন। শশা, লেবুর রস আর মধু মিশিয়েও মাখা যায়। শুষ্ক ত্বকে স্ক্রাবের জন্য ট্যান ক্লিয়ার স্ক্রাব লাগাতে পারেন। কিন্তু মুখে সেটা ঘষবেন না কখনওই। কেবল স্ক্রাবটা লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। মুখে কোনও কিছুই খুব ঘষা উচিত নয়। এমনকী মুখ মোছার সময়ও ভেজা তোয়ালে ব্যবহার করুন। শুকনো ত্বকে কিছু লাগাবেন না। জল বা গোলাপ জল লাগিয়ে তারপর কিছু লাগাতে পারেন।
সাধারণ কেয়ার
কখনও এক চামচ মধু, ডিমের কুসুম, গ্লিসারিন আর মিল্ক পাউডার মিশিয়ে মুখে লাগাতে পারেন। এটা ফেস স্কিনের জন্য মাস্ক হিসেবে কাজ করবে। এটা তুলে নেওয়ার পরেই ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। বয়স ৪০ ছুঁলে রোজ ডিপ ক্লিনজিং অবশ্যই করবেন। দু’চামচ মধু, দু’চামচ বেসন আর গোলাপ জল এবং অলিভ অয়েল মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে রেখে তারপর ধুয়ে ফেলুন। মাঝে মাঝে ফেসিয়াল আর ফেস যোগাও করতে পারেন।