ব্যবসায় অগ্রগতি ও শুভত্ব বৃদ্ধি। ব্যয়ের চাপ থাকায় সঞ্চয়ে বাধা থাকবে। গলা ও বাতের সমস্যায় ... বিশদ
বিয়েবাড়ি মানেই হইহই কাণ্ড, রইরই ব্যাপার। তা সে আত্মীয়স্বজন হোক বা বন্ধুবান্ধব। জাঁকজমক খাওয়াদাওয়ার সঙ্গে জুড়ে থাকে সাজগোজের আনন্দও। আর আজকাল বিয়েবাড়িতে বর-কনে ছাড়াও প্রত্যেকেই নিজের সাজগোজ নিয়ে ভীষণ সচেতন। প্রত্যেকে চেষ্টা করেন, একটা এক্সক্লুসিভ লুকে সেজে উঠতে, যাতে বিয়েবাড়ির আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারেন তিনিই! তা সে নারী হোন বা পুরুষ। ব্যতিক্রমী সাজে কিন্তু কেউ কাউকে এক ফোঁটা জমিও ছাড়তে নারাজ।
কথা হচ্ছিল ডিজাইনার শ্যামসুন্দর বসুর সঙ্গে। তিনি বলছিলেন, এবার বিয়ের মরশুমে মেয়েদের গর্জিয়াস পোশাকের পাশাপাশি তিনি ভাবনাচিন্তা করেছেন পুরুষদের পোশাক নিয়েও। শ্যামসুন্দরের মনে হয়েছে, গর্জিয়াস শাড়ির মধ্যে বেনারসি, স্বর্ণচরী, কাতান বা সিল্ক কেন মেয়েদের একচেটিয়া হয়ে থাকবে? এই ধরনের ফ্যাব্রিক দিয়ে পুরুষের পোশাকও তো তৈরি হতে পারে। সেই ভাবনা থেকেই তিনি তাঁর ‘রাইকিশোরী কালেকশন’-এ পুরুষদের জন্য এনেছেন একরাশ নতুন ডিজাইনে সাজানো জমকালো পোশাক (ছবি দুইয়ের পাতায়)। আর মেয়েদের ক্ষেত্রেও তাঁর ভাবনা হেঁটেছে অন্য পথে। বিয়েবাড়িতে শুধু একটা গর্জিয়াস শাড়িতে সেজেই বা কেন আটকে থাকবেন আজকের নারী? তাঁর জন্য শ্যামসুন্দর শাড়ির সঙ্গেই এনেছেন অন্য ধরনের সাজ। শাড়ি ছাড়াও রিসেপশনের জন্য তিনি ভেবেছেন আলাদা রকমের একটা লুক। প্রথমে দেখে নেওয়া যাক মেয়েদের শাড়ির সঙ্গে সাজে কী ধরনের পরিবর্তন আনতে চেয়েছেন তিনি। বাংলার ঐতিহ্য বিষ্ণুপুর বাঁকুড়ার বিখ্যাত বালুচরী ও স্বর্ণচরী। বেনারসি শাড়ির সঙ্গে শীতসাজে জমকালো অ্যাডিশন চোখজুড়ানো লং কোট। ঠান্ডায় ব্লাউজের বদলে লং কোট ফ্যাশনে এনেছেন শ্যামসুন্দর। তাঁর মনে হয়েছে, রিসেপশনের ক্ষেত্রে এই সাজটা খুবই আইডিয়াল। ছবিতে দেখছেন স্বর্ণচরী দিয়ে সাজানো এমনই একটি লং কোট। গোটা কোটে স্বর্ণচরী কাজের পাশাপাশি কোটের হাতে দিয়েছেন কাঁথা স্টিচের কাজ। যদিও শাড়ির সঙ্গে সাযুজ্য রেখে লং কোটটি তিনি ডিজাইন করেছেন, তবে তাঁর দাবি এই কোট চাইলে পুরুষরাও পরতে পারবেন। দিব্য লাগবে। এছাড়া বালুচরী ফ্যাব্রিকেও কাজ করেছেন তিনি। বেনারসি ব্লাউজের সঙ্গে বালুচরী মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ করে দিয়েছেন। বাংলার ঐতিহ্য মাথায় রেখে।
শীতের মরশুমে বিয়েবাড়ি উপলক্ষে মেয়েদের সাজে তিনি এনেছেন পঞ্চোও। সেটিকে শ্যামসুন্দর সাজিয়ে তুলেছেন গর্জিয়াস স্টাইলে। সাধারণত এই ধরনের সাজের সঙ্গে ভারী কাজ করা শাল নেন অনেকে। কিন্তু ডিজাইনার সে স্টাইল থেকে সরে এসে শীতের হালকা পঞ্চোকেই বানিয়েছেন ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। তাঁর কথায়, ‘যাঁদের চেহারা একটু ভারী, তাঁদেরও এধরনের পঞ্চোতে খুব স্মার্ট দেখাবে। হাতের অনেকটাই ঢাকা থাকবে।’ ছবিতে যেটি দেখছেন, সুপারনেট কাপড়ের উপরে তিনি তৈরি করেছেন। এটি দেখতে স্বচ্ছ বলে কারও সমস্যা হলে কাস্টমাইজও করে দেবেন। বিয়েতে যাঁরা গয়না বেশি পছন্দ করেন না, তাঁদের জন্য পঞ্চোর গলার কাছে লটকান দিয়ে এমনভাবে সাজিয়েছেন, যে আলাদা করে কোনও গয়নাই লাগবে না পরতে। পঞ্চোর উপরে সুতোর কাজে নানা মোটিফও করা রয়েছে। কোনও জমকালো স্কার্ট টপের উপরে সুন্দর মানিয়ে যাবে পঞ্চ। বিয়েবাড়ির চেনা সাজের মধ্যে একটু ব্যতিক্রমী ছোঁয়া। সকলেই কিন্তু জানতে চাইবে, পঞ্চো স্টাইল নিয়ে। তাই ভেবে দেখুন এই সাজটাই আপন করে নেবেন কি না এবারের বিয়েবাড়ির সাজে!
এবার আসি পুরুষদের সাজে। বিয়েতে পুরুষের সাজ মানেই একটা ঝলমলে শেরওয়ানি, পাঞ্জাবি আর ধুতি বা পাজামা? সেদিন আর নেই। শ্যামসুন্দর এনেছেন কটন কালারড ধুতির সঙ্গে শার্টের মিক্স অ্যান্ড ম্যাচ। তার উপরে কাতান বেনারসির জ্যাকেট। অ্যাসিমেট্রিক কাটে। ডিজাইনার মনে করেন, মহিলারা বেনারসি পরতে পারেন বিয়েবাড়িতে, পুরুষরাই বা পরবেন না কেন? অনেকে আবার এই অকেশনে ইন্দো ওয়েস্টার্ন বা ফিউশন লুকও চাইছেন। তার জন্য তিনি দিয়েছেন শার্টের সঙ্গে ফুলহাতা জ্যাকেট। পিওর কাতান বেনারসির উপরে ইন্দো ওয়েস্টার্ন পাঞ্জাবিও রেখেছেন। রয়েছে আড়ি কাজের পাঞ্জাবিও। মোদ্দা কথা, যত রকমের শাড়ি পরেন মেয়েরা, বাংলার ঐতিহ্যের সেসবই এবার পুরুষের সাজেও ইন!