উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
রোদের কারণে গাছের ছায়ায় অনেকেই অপেক্ষা করছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর হেলিকপ্টারের আওয়াজ শুনতেই জনতার ঢল নামে মাঠের দিকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন মঞ্চে ওঠেন, ছাতিমতলার মাঠ তখন কানায় কানায় ভর্তি। মঞ্চে চেয়ারে বসে মাটির ভাঁড়ে চায়ের চুমুক দেন মুখ্যমন্ত্রী। চা খেয়ে বক্তব্য শুরু করেন। এদিনের জনসভায় প্রার্থী রুপালি বিশ্বাস ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী রত্না ঘোষ, বিধায়ক কল্লোল খাঁ, জেলা পরিষদের সভাধিপতি রিক্তা কুণ্ডু, রানাঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়, রানাঘাট-১ ব্লক সভাপতি তাপস ঘোষ প্রমুখ। সভা শেষে এখান থেকে মুখ্যমন্ত্রী শান্তিপুরে গিয়ে পদযাত্রা করেন।
বক্তব্যের শুরুতেই নিহত বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, আমার খুব প্রিয় বিধায়ক ছিল সত্যজিৎ। ওকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। ওর দেড় বছরের একটি বাচ্চা আছে। ওর পরিবার একদম অসহায়। আমাদের আগের এমপি তাপস মণ্ডল আছেন। তাপসেব সঙ্গে আলোচনা করি। মেয়েটা অসহায় হয়ে গিয়েছে। আসুন, ওকেই আমরা তুলে ধরি। ওকে যখন প্রার্থী করার কথা ভাবি, তখনও ওর বয়স ২৫ বছরও হয়নি। নমিনেশনের কয়েকদিন আগে ওর ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। ওকেই আমরা বেছে নিয়েছি। যদি আপনারা ওকে শুভেচ্ছা, আশীর্বাদ, দোয়া করেন তাহলে ও ভারতবর্ষের সর্বকনিষ্ঠ এমপি হবে। আমরা তো ওর স্বামীকে ফিরিয়ে দিতে পারব না। তবু ওর পাশে থাকলাম।
এদিনও জেলার উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, কল্যাণীতে এইএমএস গড়ে উঠছে। এরজন্য ১৭০০ কোটি টাকা আমরা দিয়েছি। ১৮০ একর জমি দিয়েছি। এইএমএস গড়ে উঠলে, পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে চিকিৎসার জন্য অন্য রাজ্যে যেতে হবে না। ট্রিপল আইটিআই করল কে? তৃণমূল কংগ্রেস আবার কে! কালনা-শান্তিপুর সেতু গড়ে উঠছে ১১০০কোটি টাকায়। কৃষ্ণনগরে মেয়েদের জন্য কন্যাশ্রী বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠছে। আর ছেলেদের জন্য হরিচাঁদ গুরুচাঁদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস হবে কৃষ্ণনগরে। হরিণঘাটায় দুগ্ধ প্রকল্প। কল্যাণীতে ১১৫কোটি টাকার জল প্রকল্প, নবদ্বীপে ১১২কোটি টাকার জল প্রকল্প, রানাঘাটে ৯৩কোটি টাকার জল প্রকল্প। ফুলিয়ায় হ্যান্ডলুম টেকনোলজি হয়েছে। ৬২লক্ষ টাকা খরচ করে মসলিন তীর্থ হয়েছে। এই জেলায় তৈরি হয়েছে মৌলানা আবুল কালাম আজাদ ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি। নাকাশিপাড়ায় তৈরি হয়েছে মডেল স্কুল। পাঁচ ব্লকে আইটিআই নির্মাণ হয়েছে। আইটি পার্ক হয়েছে কৃষ্ণনগর ও কল্যাণীতে। এই জেলায় চারটি সরকারি কলেজ আমরা তৈরি করে দিয়েছি। কৃষ্ণনগরে মাদার অ্যান্ড চাইল্ড হাব হয়েছে। ৩৪ বছরের বাম জমানায় যা হয়নি, আজ তা হয়েছে। অনেক কাজ করেছি।
কন্যাশ্রী, রূপশ্রী, সবুজসাথী, সমব্যথী, মানবিক ইত্যাদি প্রকল্পের কথা তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিনা পয়সায় চিকিৎসা ছাড়াও আপনারা একটা করে স্বাস্থ্যসাথী কার্ডও পাবেন। পাঁচ লক্ষ টাকা করে বিমা। স্মার্ট কার্ডটা বাড়ির মহিলাদের নামে হবে। মহিলারাই সংসার চালায়। এই পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়ে বেসরকারি হাসপাতালে আপনার ছেলে-মেয়েদের চিকিৎসা করাতে পারবেন। যে মহিলার বাড়িতে বাবা-মা থাকবেন, তাঁদের চিকিৎসাও আপনি করাতে পারবেন। নদীয়ায় আনন্দধারার মেয়েরা ভালো কাজ করে। প্রায় সাড়ে সাত কোটি মানুষ এই স্বাস্থ্যসাথী কার্ডের আওতায় আসবে। সুতরাং বিশ্বাস রাখুন, আস্থা রাখুন, আগামীদিন দিল্লি গড়তে তৃণমূল কংগ্রেসই একমাত্র রাস্তা।
নরেন্দ্র মোদির নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তৃণমূলের কাছে কাজ চাইছে। তুমি কী করেছ? মুখে লিউকোপ্লাস্ট দাও। তুমি হঠাৎ করে নোট বাতিল করে দিয়েছ। নোট বাতিল সহ একাধিক ইস্যুতে বিজেপিকে তুলোধনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।