উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
‘সোহিনী’র সহযোগিতায় বন্দিশ মিউজিক ফাউন্ডেশনের বার্ষিক সঙ্গীতানুষ্ঠান হয়ে গেল শিশির মঞ্চে। এ বছর তাদের অনুষ্ঠান ছ’বছরে পা দিল। এই অনুষ্ঠান সদ্যপ্রয়াত সঙ্গীতশিল্পী পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ীকে উৎসর্গ করা হয়।
শুরুতে পণ্ডিত অরুণ ভাদুড়ীর প্রতিকৃতিতে পুষ্পদান করেন ‘সোহিনী’র কর্ণধার পণ্ডিত সমর সাহা। সঙ্গীতানুষ্ঠান শুরু হয় মাল্যবান চট্টোপাধ্যায়ের ভীমপলশ্রী খেয়ালে। তাঁকে যথাযথ সঙ্গত করেন তবলায় সুব্রত গুপ্ত ও হারমোনিয়ামে গৌরব চট্টোপাধ্যায়।
দ্বিতীয় অনুষ্ঠান সন্তুরবাদন। শিল্পী সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় হংসধ্বনি রাগে আলাপ, জোড় বাজিয়ে ৯ মাত্রার গত্ ও দ্রুত ত্রিতালে ঝালা পরিবেশন করেন। তাঁর সাথে সুব্রত ভট্টাচার্য তবলায় সঙ্গত করেন। সন্তুর ও তবলার মেলবন্ধনে এই অনুষ্ঠানটি আকর্ষণীয় হয়ে ওঠে।
শেষ অনুষ্ঠান ছিল দ্বৈত তবলাবাদন। শিল্পী অরূপ চট্টোপাধ্যায় ও পরিমল চক্রবর্তী, হারমোনিয়ামে সনাতন গোস্বামী। তাঁরা ত্রিতালে তবলা লহরা পরিবেশন করেন। তাঁদের হাতে বিভিন্ন কায়দা, রেলা, টুকরা, চক্রদার অনুষ্ঠানটিকে অন্যমাত্রায় নিয়ে যায়।
নিজস্ব প্রতিনিধি
শাস্ত্রীয় সঙ্গীত সন্ধ্যা
দুই প্রবাদপ্রতিম তবলাবাদক, কিষাণ মহারাজ ও জ্ঞানপ্রকাশ ঘোষের স্মরণে দু’দিন ব্যাপী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান হয়ে গেল বালি সাধারণ গ্রন্থাগার প্রেক্ষাগৃহে। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করেছিল উত্তরপাড়া সঙ্গীত সমাজ। প্রথম দিনের প্রথম নিবেদনে সৌম কর্মকার তবলা লহরা পরিবেশন করেন। এরপর যথাক্রমে কণ্ঠসঙ্গীতে শুদ্ধ সারং ও সোহিনী রাগে বিলম্বিত ও দ্রুত বন্দিশ শোনা গেল অরিন্দম দাশগুপ্তের কাছ থেকে। ভীম পলশ্রী রাগে সরোদ বাদন পরিবেশন করেন শুভ্রাংশু ভট্টাচার্য, স্বরতরঙ্গ যন্ত্রটি বাজালেন সনাতন গোস্বামী, তাঁর নির্বাচিত রাগ ছিল কাফি। পঞ্চম নিবেদনে খেয়াল পরিবেশন করলেন শ্রীময়ী গঙ্গোপাধ্যায়। অরিন্দমের কণ্ঠসঙ্গীত ও শুভ্রাংশুর সরোদ ছিল বিশেষ প্রশংসনীয়। তবলায় সঙ্গতে ছিলেন কৃষ্ণেন্দু পাল ও অনির্বাণ দাশগুপ্ত। গোপাল মিশ্রের তবলা লহরা দিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়। দ্বিতীয় দিনে অনির্বাণ দাশগুপ্তকে তবলায় সঙ্গী করে অনির্বাণ বন্দ্যোপাধ্যায় সরোদে পরিবেশন করলেন রাগা ভীম পলশ্রী।
গণেশচন্দ্র ভাওয়ালের সুরেলা বেহালার ছড়ির টানে শোনা গেল রাগা ‘মধুমালতী’। রাগটি মধুমন্তী রাগের বেশ কাছাকাছি, তবে কোমল ‘নি’ ও শুদ্ধ ‘মা’ ব্যবহৃত হয়। তবলায় অনবদ্য লাগল কৃষ্ণেন্দু পালকে। সুমনা ভট্টাচার্য সেতারে বাজালেন রাগ বাগেশ্রী, তবলায় ছিলেন প্রাণগোপাল বন্দ্যোপাধ্যায়।
বেহালা বাদনের আগে নবীন শিল্পী রৌদ্রাক্ষ রক্ষিত তবলা লহরা বাজিয়ে সকলের কাছে প্রশংসিত হন। শেষ নিবেদনে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় তবলা লহরা বাজালেন ত্রিতালে। হাতের মিষ্টি বোল নিকাশ ছিল শ্রুতিমধুর। হারমোনিয়ামে সহযোগিতা করেন সনাতন গোস্বামী।
নিজস্ব প্রতিনিধি
মায়া সেন জন্মোৎসব
সম্প্রতি হাওড়া শরৎ সদনে প্রয়াত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী মায়া সেনের নব্বইতম জন্মোৎসব পালন করল ভারতীয় সঙ্গীত অ্যাকাডেমি। অ্যাকাডেমির জন্মলগ্ন থেকে শিল্পী আমৃত্যু অ্যাকাডেমির রেক্টর ছিলেন। তাঁর হাতেই অ্যাকাডেমির রবীন্দ্রসঙ্গীতের সিলেবাস তৈরি হয়। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে সম্মান জানানো হয় স্বপ্না ঘোষাল, বিভা সেনগুপ্ত আর মৃগাঙ্ক সরকারকে।
দ্বিতীয় পর্বের শুরুতে প্রয়াত শিল্পীর গাওয়া ‘তবু মনে রেখো’ গানটি বাজানো হয়। সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করেন তটিনী দে। এরপর অ্যাকাডেমির বিভিন্ন সেক্টরের শিক্ষক ও কৃতী শিক্ষার্থীরা একক ও সমবেত নাচ, গান ও আবৃত্তি পরিবেশন করেন। সাগরময় ভট্টাচার্যের কণ্ঠে ‘ও মঞ্জুরী ও মঞ্জুরী’, জ্যোতিকণা দাশগুপ্তর উপস্থাপনায় ‘অন্তরের বাণী তুমি’, মহুয়া বন্দ্যোপাধ্যায়ের গাওয়া ‘মোদের কিছু নাইরে’ শ্রোতাদের মুগ্ধ করে। নৃত্যে প্রশংসার দাবিদার কোয়েল মিত্র, দেবযানী বসু, কথাকলি বসু, গৌতম দে প্রমুখ। সঞ্চালনায় ছিলেন প্রদীপ ঘোষ।
জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়
পরমেশ্বরীর সঙ্গীত সম্মেলন
প্রখ্যাত তবলা বাদক স্বর্গীয় পণ্ডিত গৌর পালের স্মৃতিতে ‘পরমেশ্বরী’ সংস্থা দু’দিন ব্যাপী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছিল ইন্দুমতী সভাগৃহ এবং বিড়লা অ্যাকাডেমি অব আর্ট অ্যান্ড কালচার প্রেক্ষাগৃহে। প্রথম দিন অতসী সরকার ধানি রাগে খেয়াল পরিবেশন করেন। মধ্যলয়ে ঝাঁপতাল ও পরে একতাল ও ত্রিতালে নিবন্ধ বন্দিশ গাইলেন শিল্পী। তবলা ও হারমোনিয়ামে যোগ্য সহযোগিতা করেন যথাক্রমে সোমনাথ দাস ও সঞ্জয় বিশ্বাস। পরবর্তী নিবেদনে শ্রাবণী সিনহা চন্দ্রকোষ রাগে খেয়াল গাইলেন সুন্দর রাগদারি বজায় রেখে। এরপর একক হারমোনিয়াম বাদনে কেশব বন্দ্যোপাধ্যায় রাগ নির্বাচন করেন ‘বসন্ত’। নিবেদনটি সকলের মন ছুঁয়ে যায়। বাগেশ্রী রাগে খেয়াল পরিবেশন করেন শিল্পী আত্রেয়ী মজুমদার। বিলম্বিত একতালে বড়খেয়াল ও পরে দ্রুত ত্রিতালে নিবন্ধ বন্দিশ গেয়ে শোনান শিল্পী। নান্দনিক ঠেকা বাজিয়ে সঙ্গত উপহার দেন তবলায় কৃষ্ণেন্দু পাল। এদিনের শেষ নিবেদনে কিছু লঘু শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে আধারিত গান গেয়ে শোনালেন অনিন্দিতা গঙ্গোপাধ্যায়। এরপর বিদূষী শিপ্রা বোসের গাওয়া অতি পরিচিত সেই গান ‘যমুনা কি বলতে পারে, কত বার কেঁদেছে রাধা’ গেয়ে আসর মাতিয়ে দেন। তবলায় অসাধারণ সঙ্গত করেন মৃণাল সেনগুপ্ত।
দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠান ছিল সকাল এগারোটা থেকে। প্রথমে বেহালা বাজিয়ে শোনান গণেশচন্দ্র ভাওয়াল। টোড়ি রাগে আলাপ-জোড় বিলম্বিত ত্রিতালে গৎ বাজিয়ে দ্রুত ত্রিতালে নিবদ্ধ গৎ ও ঝালা পরিবেশন করেন শিল্পী। পরবর্তী নিবেদনে বসন্ত-মুখারি রাগে খেয়াল পরিবেশন করেন শিল্পী দেবার্ঘ্য রায়। বৃন্দাবনি সারং রাগে সরোদ বাজান শুভ্রাংশু ভট্টাচার্য। ছন্দের কাজ, লয়কারি ও বিস্তার অংশ বেশ ভালো। তবলা সঙ্গতে মুন্সিয়ানা দেখান সংস্থার সম্পাদক তথা গৌর পালের শিষ্য কৃষ্ণেন্দু পাল। শেষ নিবেদনে ছিল পণ্ডিত পার্থ বোসের সেতার বাদন। তবলা সঙ্গতে ছিলেন পণ্ডিত শশাঙ্ক বক্সি। গৌর সারং রাগে আলাপ-জোড় করে বিলম্বিত ত্রিতালে নিবদ্ধ গৎ বাজালেন শিল্পী। যোগীয়া কালিঙ্গারা রাগে দাদরা তালে নিবদ্ধ ধুন বাজিয়ে শিল্পী এদিনের অনুষ্ঠানের ইতি টানেন। তবলা সঙ্গতে পণ্ডিত শশাঙ্ক বক্সি সমগ্র নিবেদনটির মান অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেন।
নিজস্ব প্রতিনিধি