পিতার স্বাস্থ্যহানী হতে পারে। আর্থিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব হবে না। পঠন-পাঠনে পরিশ্রমী হলে সফলতা ... বিশদ
দিনটি সাড়ম্বরে পালিত হয়
প্রতি বছর স্কুলে নানান দিবস পালিত হলেও আমাদের জন্য কেবল একটি দিনই বরাদ্দ থাকে। সেই বিশেষ দিনটি হল ১৪ নভেম্বর পণ্ডিত জহরলাল নেহরুর জন্মদিনে পালিত শিশুদিবস। জাতির জীবনে ছাত্রসমাজ শিশুসমাজ হল আশা-আকাঙ্ক্ষা-শক্তি ত্রিবেণী সঙ্গমের মূর্ত প্রতীক। শিশুদের প্রধানত জানা দরকার— মিথ্যা আপনার সুখ, মিথ্যা আপনার দুঃখ। তাদের জাগ্রত ইন্দ্রিয় উন্মুক্ত বলে তারা শুনতে পায়—কোথা হতে ধ্বনিছে ক্রন্দনে শূন্যতল। কোন অন্ধ কারা-মাঝে জর্জর বন্ধনে অনাথিনী মানিছে সহায়। আজ হিংসায় উন্মত্ত পৃথিবীর নগ্ন রূপ নানাভাবে প্রকাশ পাচ্ছে। কুসংস্কার, অপসংস্কৃতি, দুর্নীতি, বর্ণবৈষম্য, সংকীর্ণতায় দেশ জর্জরিত। এই সংকট থেকে শিশুরাই একমাত্র এর বিহিত করতে পারবে। এই দায়িত্ব যে বা যারা নেবে তাদের জন্য একটা দিন শিশুদিবস হিসেবে পালন করা দরকার। তাই চাচা নেহরুর জন্মদিন উপলক্ষে ১৪ নভেম্বর দিনটিকে শিশুদিবস হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। বিদ্যালয়ে স্বাধীনতা দিবস, প্রজাতন্ত্র দিবস ইত্যাদি পালনের সঙ্গে সঙ্গে শিশুদিবসও সাড়ম্বরে পালিত হয়। আমাদের বিদ্যালয়ে এই দিনটিতে হলঘরটি কাগজের কারুকাজ ও ফুল দিয়ে সাজানো হয়। তারপর গান, নাচ, আবৃত্তি করা হয়। সর্বশেষে মিষ্টি বিতরণ করা হয়। এই ভাবেই
আমাদের বিদ্যালয়ে এই বিশেষ দিনটি উদ্যাপন করি।
গৌরব রায়, নবম শ্রেণী
বেলগাছিয়া মনোহর অ্যাকাডেমি
শিশুদিবসে মনোজ্ঞ অনুষ্ঠান
প্রতি বছর আমাদের বিদ্যালয় রানী শতরূপা বালিকা বিদ্যালয়ে শিশুদিবস পালিত হয়। বিশেষ এই দিনটিতে মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সমবেত প্রার্থনার পর প্রধান শিক্ষিকা বক্তব্য রাখেন। তারপর বিভিন্ন শ্রেণী থেকে কিছু মেয়ে গান কবিতা ও নেহরুর রচনার অংশ বিশেষ পাঠ করে। সকলের জন্য মিষ্টি ও চকলেটের ব্যবস্থা থাকে। শিশু শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের ওপর ছবি আঁকা হয়। কোনও বছর নেহরু ও শিশু বিষয়ক প্রবন্ধ রচনার আয়োজন হয়। নেহরু স্মরণ মননের মধ্যে দিয়ে শিশুর বিকাশ ও তাদের দক্ষতার ওপর নজর
দেওয়া হয়।
সর্বাণী মাইতি, নবম শ্রেণী
রানী শতরূপা বালিকা বিদ্যালয়
শিশুদের নিয়ে খুব ভাবতেন
শিশুদের জন্য নির্দিষ্ট একটি দিন থাকার জন্য সত্যিই আমি গর্বিত। শিশুদের যে মন আছে তারাও যে স্বপ্ন দেখে এটা অনেকেই ভাবেন না। নিজেদের ইচ্ছেগুলি শিশুদের ওপর চাপিয়ে দেয়। কিন্তু ১৪ নভেম্বর দিনটার জন্য সত্যিই আমি অপেক্ষা করে থাকি। নেহরুর নিজের ছোটবেলা কেটেছিল খুব শাসনের মধ্যে। তাই হয়তো তিনি শিশুদের মন বুঝতেন। ছোটদের খুব ভালোবাসতেন। শিশুদের নিয়ে তাঁর চিন্তাভাবনা ছিল অত্যন্ত অন্যরকমের। তাঁর জন্মদিনটা পালিত হয় শিশুদিবস হিসেবে। আমাদের স্কুলে নাচ, গান, আবৃত্তি, তাৎক্ষণিক বক্তৃতার মাধ্যমে দিনটি পালন করা হয়। প্রধান শিক্ষিকা নেহরুর জীবন ও রাজনৈতিক চিন্তা ভাবনার ওপর আলোকপাত করেন। শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় ভরে ওঠে স্কুল।
স্নেহাশিস চক্রবর্তী, নবম শ্রেণী উত্তরপাড়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়
শিশুদের উন্নতিসাধনে তাঁর চিন্তাভাবনা ছিল অন্যরকম
স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। তিনি শিশুদের নিরাপদ ও ভালোবাসাপূর্ণ পরিবেশ দেওয়ার জন্য নিরলস চেষ্টা করে গিয়েছেন। শিশুদের জন্য এই দিনটা মনে করিয়ে দেয় তাদের দায়িত্বপূর্ণ ভালোবাসার কথা। শিশুদের সামগ্রিক বিকাশের জন্য চারদিকে রয়েছে নেহরু নামে নানা কেন্দ্র। সেখানে নাচ, গান, আঁকা, নাটকের মতো অনেককিছু শেখানো হয়। নেহরু সবসময় চাইতেন একটি শিশু বড় হোক সামগ্রিক বিকাশের ভেতর থেকে। তাই তো নেহরুর এই জন্মদিনটাকে পালন করা হয় স্কুলে। তাঁর জীবনী ও কর্মকাণ্ডের দিকটাতে তুলে ধরা হয়। শিক্ষক শিক্ষিকারা বুনে দেন এক স্বপ্নের মায়াজাল। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় শিশুদিবস।
চিন্ময় পাণ্ডা, সপ্তম শ্রেণী মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউশন
শিশুদের খুব ভালোবাসতেন
জওহরলাল নেহরুর জন্মদিনটিই শিশুদিবস হিসেবে পালিত হয়।
নেহরু শিশুদের ভালোবাসতেন ও তাদের সঙ্গে সময় কাটাতেন। তাই
এই জন্মদিনটিতে স্কুলে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ছোটদের জন্য অঙ্কন প্রতিযোগিতায় হয়। বড়রা অংশগ্রহণ করে তাৎক্ষণিক বক্তৃতায়। আলোচ্য বিষয় থাকে
চাচার জীবনী ও ভারতীয় রাজনীতিতে তার অবদান। স্কুলে এই দিনটি আমাদের খুব আনন্দে কাটে। মনের মধ্যে একটা অতিরিক্ত ভালো লাগা থাকে। অনুষ্ঠান শেষে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে বিতরণ করা হয় কেক, বিস্কুট
ও মিষ্টি।
জাগৃতী রং, নবম শ্রেণী
পাঠভবন, ডানকুনি
শপথ নেওয়ার দিন
শিশুদিবস। এই শব্দের মধ্যেই লুকিয়ে আছে মিষ্টি একটা অনুভূতি। অদ্ভুত সুন্দর ভালোলাগা। জাতির ভবিষ্যৎ এই শিশুরাই। এই কথাটা উপলব্ধি করেছিলেন নেহরু। ছোটদের মধ্যে অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন চাচা নেহেরু। সেজন্যই তাঁর জন্মদিনটাই শিশুদিবস হিসেবে পালন করা হয়। আমার মনে হয় শিশুদের ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত রাখার জন্য নতুন করে ভাবা উচিত। এই শিশুরাই আগামী দিনে দায়িত্ব নেবে রাষ্ট্র পরিচালনার। তাই বহু ইতিবাচক চিন্তাভাবনা বদলে দিতে পারে শিশুদের জীবন। সেজন্যই কতকগুলি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার এই দিনটাতে। যেমন—১. ভারতে কোনও শিশু যেন অনাহারে মারা না যায়। ২. অপুষ্টিতে যেন হারিয়ে না যায় ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। ৩. শিশুশ্রম অবিলম্বে বন্ধ হওয়া দরকার। ৪. মূ্ল্যবোধ, নীতিবোধের শিক্ষা দেওয়া উচিত। এটাই হওয়া উচিত শিশুবিকাশের অঙ্গীকার।
তন্দ্রা নস্কর, নবম শ্রেণী
থানামাখুয়া মডেল হাইস্কুল
নানান অনুষ্ঠান হয়
শিশুদিবস পালনের জন্য স্কুলে অনেক আগে থেকেই মহড়া চলে। কেউ হয়তো নেহরু সাজে, কেউ হয়তো কবিতা বলবে, কেউ আবার গান, নাচ, নাটক করবে। নেহরুর ছবিও আঁকে অনেকে।
স্বাধীন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু ছোটদের ভীষণ ভালোবাসতেন। ছোটরাও তাঁকে তাই চাচা নেহরু বলে ডাকত। তাঁকে সম্মান জানাতেই দেশজুড়ে শিশু দিবস পালিত হয়।
নীলার্ক পাহাড়ি, ষষ্ঠ শ্রেণী
ইয়ং হরাইজন স্কুল
শিশুদের জন্য চাচা নেহরুর অবদান উল্লেখযোগ্য
আমাদের দেশে শিশু অধিকার রক্ষার কথাটি প্রথম উত্থাপন করেন পণ্ডিত জহরলাল নেহরু। তাঁর মতে, ভালোবাসা পাওয়া, সুস্থ পরিবেশে বড় হওয়ার ও স্বাস্থ্যরক্ষার অধিকার, প্রত্যেকটি শিশুর জন্মগত অধিকার। আমাদের দেশে শিশু বলতে জন্ম গ্রহণের পর থেকে ১৪ বছর বয়স পর্যন্ত মানুষকে বোঝায়। শিশুদের সম্পর্কে পণ্ডিত নেহরুর এইরূপ মনোভাবের কারণে ১৯৬৪ সালে তার মৃত্যুর পর থেকে প্রতিবছর তাঁর জন্মদিন ১৪ নভেম্বরকে শিশুদিবস হিসেবে পালন করা হয়। এদিন আমরা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের কাছ থেকে শিশুদিবসের তাৎপর্য সম্পর্কে শুনি। কোনও কোনও বছর এদিনে স্কুল থেকে সায়েন্সসিটি বা আলিপুর এগ্রিকালচারাল গার্ডেনে নিয়ে যাওয়া হয়। আবার কোনও বছরে স্কুলেই নাচ-গানের অনুষ্ঠান করা হয়। তবে প্রত্যেক বছরই মিষ্টিমুখ বাধ্যতামূলক।
সম্পদ উদ জামান শেখ, নবম শ্রেণী
বেলগাছিয়া মনোহর অ্যাকাডেমি