কর্মপ্রার্থীদের ধৈর্য্য ধরতে হবে। প্রেম-প্রণয়ে আগ্রহ বাড়বে। নিকটস্থানীয় কারও প্রতি আকর্ষণ বাড়বে। পুরোনো কোনও বন্ধুর ... বিশদ
আহামরি কিছু নয়। খুব সামান্য এক মাটির বাড়ি। ট্যারাবাঁকা। মাথায় টালিখোলা। এদিক-ওদিক ভাঙা-ফাটা। বাড়ির সামনে একটু ফাঁকা জমিন, সেখানে প্রাচীন এক কদমগাছ। ওদিকে ছোট এক বাঁশঝাড় আর আকাশ— এইসব নিয়েই শ্যামারানির বাড়ি।
ফেলিনির কথায় একটা শ্বাস ফেলে সে বলে, এ আর কী বাড়ি হল, সই! একখানা চালা বইতো নয়।
প্রায় মাটির সঙ্গে মিশে থাকা নিচু দুয়ার। সেখানে বসে যেন দম নিল ফেলিনি। অনেকটা পথ হাঁটতে হয়েছে তাকে। স্টেশন থেকে বাস, তার পর এই হাঁটা।
বসে সে বলে, একে তুমি চালাঘর বলছ? এ যে সুন্দর এক কুটির গো— শ্রীরাধার কুটির— আর তুমি সেই কুটিরে বাস করো।
একগাল হেসে শ্যামারানি বলে, তুমি যে কী বলো! কোথায় তিনি রাজা বৃষভানুর কন্যা, আর কোথায় আমি!
শ্যামারানির হাঁটার কষ্ট নেই। অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। ট্রেনে চেপে সে গিয়েছিল ছোট মেয়ের বাড়ি। এখন ডাউন চেপে ফিরছে। ফেরার পথেই তো দেখা হল ফেলিনির সঙ্গে। তারপর কথা হতে থাকল। কথা হতে হতে সে বলে, তবে চলো আমার বাড়ি।
ফেলিনিও বলে, চলো তবে। এজন্মে যখন দেখা হল আবার— ক’দিন না হয় থেকেই যাই তোমার ভিটেতে। কতদূর তোমার বাড়ি?
একটা বাস, একটু হাঁটা— যেতে পারবে তো, সই?
পারব পারব— হয়তো এই জন্যেই গোবিন্দ আমায় টেরেন ফসকালেন— তোমার সঙ্গে দেখা হবে বলে, তোমার কুটিরে রাত্রিবাস করব বলে। এখানে চাঁদ ওঠে সই?
কত চাঁদ চাই তোমার? বলে শ্যামারানি ঘরের তালা খোলে। বলে, এসো সই। হাতে-মুখে জল দাও। তারপর দেখি, তোমায় কী সেবা করতে পারি।
সেবা করার আছেটা কী? তোমার ঘরে খুদকুঁড়ো যা আছে— তাই দিও। আর কাল সকালেই আমাকে বৃন্দাবনের টেরেনে তুলে দিও।
সেখানে যাবার এত তাড়া কেন তোমার? ক’দিন না হয় থেকেই গেলে।
তাড়া থাকবে না? কৃষ্ণকে ফেলে এসেছি যে!
সত্যিই ফেলে এসেছ তো? নাকি তাঁকে নিয়ে এসেছ সঙ্গে করে?
তেমন কপাল কি আমার আছে? বৃন্দাবনের অনেকেই বলে, তারা নাকি তাঁর স্পর্শ পেয়েছে, শ্বাসের গন্ধ নিয়েছে। কই, আমার তো তেমন কোনও অনুভূতি নেই! জীবনটাই বৃথা হয়ে গেল।
আজ সারারাত কেবল বৃন্দাবনের কথা শুনব সই। আমি কিন্তু প্রথমেই গোপিনীদের কথা শুনব। তারা স্নানের কলস মাথায় নিয়ে চলেছে যমুনায়। কলকাকলিতে তারা মত্ত। এই সময় ঝোপের আড়াল থেকে বেরিয়ে এলেন কৃষ্ণ। হাতের রং ছুঁড়ে দিলেন গোপিনীদের দিকে। শুরু হয়ে গেল রং খেলা— তাই না? বৃন্দাবনে এমনই তো হয়?
তুমি দেখি সব গড়গড় করে বলে গেলে। আমার বলার মতো কিছু আর রাখলে কোথায়? এমনি করে তুমি কথাগুলি বললে, মনে হল তুমিই ছিলে গোপিনী। কী? কোনও কথা বলছ না যে? সত্যিকারের পরিচয় তুমি দাও সই, না হলে অনর্থ হয়ে যাবে— এই কথা সাফ বলে দিই।
হি হি করে হেসে শ্যামারানি বলে, রাতে বাঁশি শুনবে?
তুমি বুঝি বাঁশি বাজাতেও পার?
আমি? তা কেন।
কে বাঁশি বাজায় তবে?
কে- না বাঁশি বাজায় এ গোঠ-গোকুলে।
মানে?
কী নামে ডাকলে, কে-যেন আসত সেই যমুনাতীরে? ফুলের রেণু মাখিয়ে ও মেখে কে বলত ভালোবাসি তোমায়? সেখানে আজও খঞ্জনি বাজে, শ্রীখোল বাজে।
বিস্মিত নয়নে ফেলিনি বসে, কে-সে?
বাঁশি যার বাজাবার কথা তিনিই বাজাবেন।
উত্তেজনায় উঠে বসে ফেলিনি। বলে, কী কথা বলছ তুমি!
তখন তুমি ওই চাঁদ ওঠার কথা বলছিলে না? চাঁদ উঠলে তিনি আসেন— বাঁশি বাজান— ওই কদমগাছের নীচে। যেদিন আসেন, সারারাত বাঁশি বাজান— দুয়ারে গলবস্ত্র হয়ে আমি রাতভরে সেই বাঁশি শুনি। তারপর ভোর আসে। কদমের নীচে আমি গড়াগড়ি দিই।
ফেলিনি জড়িয়ে ধরে শ্যামারানিকে। বলে, সাধে কি আর এই ঘর দেখে বলেছিলাম, এ হল আমাদের রাধারানির কুটির। দেখেছ তো, আমি ভুল কিছু বলিনি।
বলে সে শ্যামারানির গালে শব্দ করে চুমু খায়। শ্যামারানি একগাল হেসে নিজেকে ছাড়িয়ে নেয়। বলে, সে বাঁশি শোনার জন্য কিছুদিন থাকতে হবে তোমায়— চাঁদ উঠলে— তবেই...।
সে- বাঁশি শোনার জন্যই তো জন্ম-জন্মান্তর ধরে অপেক্ষা করছি সখি। কটা দিন কী আর বেশি হল?
আজও চাঁদ উঠবে— দোল চলে গেছে বটে— দোলপূর্ণিমাও নেই— তবে বাঁকাচাঁদ তো থাকবে আকাশে। আজ আমরা অপেক্ষা করি না কেন, সই?
শ্যামারানি দাসী আর ফেলিনিবালা মণ্ডল। দু’জনের কেউই জানে না তাদের ঠিক বয়স, সঠিক জন্মসাল। তাই একে-অপরের থেকে কতটা তফাৎ— তাই ধরতেও পারে না।
ফেলিনি দীর্ঘদিন বৃন্দাবন প্রবাসে থাকতে থাকতে নবদ্বীপের দোল দেখতে এসেছে। সেখানে ছিল সাত দিন, দলের সঙ্গে। খুব আনন্দ করেছে সে। একসময় দোল মিটল। এবার ফেরার পালা। গোলমালটা হল তখনই। ধাত্রীগ্রাম-বাঘনাপাড়া’র মধ্যে লাইনে কাজ হতে থাকায় ডাউন কাটোয়া-হাওড়া লোকাল ছাড়ছে কালনা থেকে। আপ-লোকাল ছাড়ছে সমুদ্রগড় থেকে। তাই বাসে চেপে তারা নবদ্বীপ থেকে কালনা এল। মুশকিল হল ফেলিনি’র চলন নিয়ে। সে প্রায় হাঁটতেই পারে না। অনেকটা সময় নিয়ে সে খুঁড়িয়ে হাঁটে। ফলে কালনা বাস স্ট্যান্ড থেকে স্টেশন আসতে অন্যদের সাত-আট মিনিট লাগলেও ফেলিনির লাগল পাক্কা পনেরো মিনিট। ততক্ষণে তার সঙ্গিনীরা সব ট্রেনে উঠে পড়েছে আর ট্রেন ছেড়েও দিয়েছে। ফেলিনি যখন হাঁপাতে হাঁপাতে কালনা স্টেশনে এল, ট্রেন হাওয়া। স্টেশনে একটাও লোক নেই। চা-দোকানি, ঘুগনিওয়ালারা টাকা গুনছে, খাবার রেডি করে রাখছে। একজন মাঝবয়সি লোক, মাথার চুলে টেরি, তার হন্তদন্ত হাবভাব দেখে গুটকার প্যাকেট সামনের দড়িতে ঝোলাতে ঝোলাতে বলল, এই তো গেল টেরেন। আর পাঁচটা মিনিট আগে এসতে পারলে না?
পরের ট্রেন তবে কয়টায়?
ফেলিনি তার দোকানের সামনে রাখা বেঞ্চে ধপ করে বসে প্রশ্ন করে। বুক ভরে দমের বাতাস নেয়।
সে অনেক দেরি। এখন তো টেরেনের কোনও টাইম নেই— সবই ইস্পিশাল টেরেন— বুঝলে কিনা। লাইনের কাজ হচ্ছে— তাই। লাইনের কাজ— টেরেনের কোনও ঠিক-ঠিকানা নেই— আমাদের ব্যবসা চৌ-পাট। টানা তিন মাস ধরে লাগাতার হয় এদিকে— নয় ওদিকের লাইন বন্ধ করে মাঝে মাঝেই কাজ হচ্ছে আর লোকজন সাফার করছে। আমাদের বেচাকেনা নেই। তা তুমি যাবে কোথায়?
বলল, বেন্দাবন।
ওমা! সে তো অনেক রাস্তা! একা একা যাবে কী করে?
একা কেন? আমার দলে যে অনেক মেয়েমানুষ আছে—
ওই যে বুড়িদের দল— তারা?
ওরা দৌড়ে এসে টেরেনে উঠল আর টেরেন ছেড়ে দিল। যা বাব্বা! তুমি তাহলে ফাঁকিতে পড়ে গেলে? সত্যি তবে কেউ নেই?
সে তুমি নিজি-ই দেখে নাও না। লোক আছে একটাও? আবার সময় যাবে— লোক জমবে। সরকারি অফিসের বাবুরা এসবে।
সে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ল। কী করে ফিরবে সে? কোথা যাবে? শুনেছে তারা হাওড়া যাবে। সেখান থেকে বৃন্দাবনের টেরেন মেলে। কিন্তু সে কি কম ঝক্কি! একা-একা এখন কী করবে তবে?
এর পরই তার সঙ্গে দেখা হয় শ্যামারানির। সে তখন ট্রেন থেকে নেমে একটি পান দোকানে বসে বসে পান চিবুচ্ছে।
রাতের খাওয়া তারা সন্ধের পরই সেরে নিল। তারপর গল্প চলল। জীবনের আশকথা-পাশকথা সেসব। ফেলিনি বলল, তোমার তবে চলে কীসে, সই?
ওই একখানা গোরু আছে— দুধ-ঘুঁটে বেচি। নদী-নালা-খাল-বিল থেকে শাকপাতা তুলি। ডুমুরগাছ আছে এদিকে হাজার-হাজার। গেরামের লোক এসব খায় না। ভাগ্যি খায় না, নইলে কি আর ইচ্ছেমতো গাছ থেকে তুলে নিতে পারতুম? কচি-কচি ডুমুর ইস্কুলের দিদিমণিরা ফিরতি পথে দরদস্তুর করে কেনে। ওদের খুব অভাব জানো— আমার থেকেও বেশি। এই বলে সে হা হা করে হাসলে।
আর ছেলেপুলে? তাদের কথা বললে না তো?
দুটি মেয়ে। বিয়ে দিয়ে দিয়েছি, তারা তাদের নিয়ে থাকে।
ছেলে নাই?
আছে। সে বউ নিয়ে কোথায় থাকে আমি জানিনে। যোগাযোগ নেই।
আমার কথা এবার কই তোমায়। আমার বাড়ি বাংলাদেশে। স্বামী মরে গেল, ছেলে রাখলেনে, দিয়ে এলে বৃন্দাবনে। আমার নিজেরও আর সংসারে থাকতে ইচ্ছে করছিল না। বড্ড কলহ! ছেলে একবার এসেছিল। বললে, ওখানে বড্ড গোলমাল হচ্ছে। অনেকে বর্ডার পেরিয়ে চলে আসছে। ও-ও চলে আসবে একদিন।
চলে এসেছে?
যদি এসে থাকে, তবে পথ চলতে চলতে দেখা হয়ে যাবে একদিন। ছেলেদের কোনও বৃন্দাবন নেই, বউমাদের আছে।
যা বলেছ।
চলো দেখি, ঘরের কাজগুলি হাতে-হাতে সেরে ফেরিল এইবার।
এক যুগ ঘর ছাড়া তুমি— এখনও এত টান কেন?
টান ঘরের প্রতি নয় গো— মাটির প্রতি, হাওয়া-আলোবাতাসের প্রতি টান।
কথায়-কথায় রাত বাড়ে, চাঁদ ওঠে, শিয়াল ডাকে। ঘরের ভেতর ঘুরে যায় বাতাস। হালকা হিমের বাতাস, গায়ে জাড় জড়ায়। তখন শ্যামারানি বলে, সই চলো এবার, বাইরে চলো।
চলো চলো— আর তর সইছেনে।
তারা বাইরে এসে দেখে চাঁদটা একলাফে অনেকটা উপরে উঠে গিয়েছে। তারা যখন রাতের খাওয়া সারে, চাঁদের দেখা ছিল না আকাশে। এখন সে আকাশে এসেছে, জেপে বসেছে ওই কদমের মাথায়। যেন গাছের পাতারাই সেই চাঁদকে ধরে রেখেছে। শিরশির বাতাস দিচ্ছে। আঁচলটা জড়িয়ে বসে রইল দুইজনে। দুয়ারে মলিন একটি মাদুর পাতা। তাতেই বসেছে তারা। ঠেস দিয়েছে দেওয়ালে। সামনে চকচক করে উঠোনের বালি, আলো পড়ে থাকে গাছেদের পাতায়। মেঠো পোকারা ডাকছে এদিক-ওদিক থেকে। চাঁদের দূর দিয়ে মেঘ ভেসে যাচ্ছে।
কই, সই?
আসবে— আজ নিশ্চয় আসবে সে— তুমি এসেছ নবদ্বীপে, সব কাজ ফেলে সেও চলে এসেছে তোমার পিছুপিছু। আর এখানে তুমি থিতু হলে— সে বাঁশি না শুনিয়ে পারে? তাঁকে যে— বাজাতেই হবে।
বাঁশি কী বলে, সই?
ভালোবাসি....ভালোবাসি...
আহা...
দোর-পূর্ণিমার দিন কী যে-চাঁদ উঠেছিল আকাশে— এমনই মনে হয় যে-সে চাঁদ আমি কোনওদিন দেখিনি। আলো আর আলো— মনে হয় সারা জীবনেও আমার এত আলো কোনওদিন ছিল না— আজও নেই। আর তখনই বেজে উঠল বাঁশি। আহা, কী তার সুর— কী সেই বাঁশির প্রবাহ! হয়তো দোল ছিল বলেই বাঁশিতে এত টান-ছন্দ-সুর! মনে হল, কীসের দুঃখ, কীসের সুখ— তিনি আছেন আমরা আছি আর এই কদমগাছ আছে— আর কী চাই? বাকি সব মিথ্যে, ফাঁকি। এই সংসার, এই ঘরদোর, জীবনের কোলাহল— সব মিছে! মনে হয়, এই ভাঙা ঘর ছেড়ে, মায়া ছেড়ে মোহ ছেড়ে— বেরিয়ে পড়ি না বৃন্দাবনের পথে-পথে। এখানে ভিগ মেগে খাই, সেখানেও খাব— অসুবিধে কী? কিন্তু তাঁকে তো আপনার করে পাব, তাঁর ভূঁই-এ থাকব— আর কী চাই এ পোড়া জীবনে?
বাঁশি বাজে না কেন সখি?
একটু থমকে যায় শ্যামারানি। বলে, রাত কি অনেক হল?
হল তো।
আচ্ছা... আর একটু, তার পর—
তারা উঠোনে নামে। চাঁদের আলো আছে বটে, কিন্তু চাঁদ গিয়েছে ঘুমিয়ে। কম আলোয় গাছ হয়ে ওঠে কৃষ্ণবর্ণ। পায়ে পায়ে তারা গাছের কাছে যায়। গাছের গা-য় হাত বোলায়। একসময় দুইজনেই গাছ ধরে ধরে বসে পড়ে মাটিতে। গাছে ঠেস দেয়। দেখে সামনে একটি কলাপাতা। তাতে রাখা আছে অনেকটা আবির! শ্যামারানি আবির তুলে ফেলিনির গালে দেয়। ফেলিনি যেন ছিটকে ওঠে। বলে, এ কী করছ সই, আমি যে বিধবা— আমাদের দোল খেলতে নেই, রঙিন আবির মাখতে নেই! বৃন্দাবনে থেকেও আমরা রঙিন আবির মাখি না। আমরা ফুল খেলি। পাপ হল না আমাদের?
তাঁর কাছে পাপ কীসের? বিধবা তো আমিও। তাঁর সায় না থাকলে এই রং কি আমি তোমায় দিই না নিজে মাখি? আমার এই ঘর মাঠের একটেরে। এদিকে কে আসে যে- আমাদের জন্য কলাপাতায় রং সাজিয়ে যাবে? তিনি স্বয়ং এই আবির আজ আমাদের জন্য রেখে গিয়েছেন— বুঝছ না?
একটু নীরব থেকে ফেলিনি বলে, তুমি ঠিকই বলেছ, সই। বাঁশি এ-বার শুনলুম না বটে, তবে এক পরম পাওয়া হল। বাঁশি না-হয় পরের বারের জন্য তোলা রইল। না-হলে তারও পরেরবার। একজন্মে কী সব মেলে? মেলে না।
এই বলে সে নিজেই আবির তুলে মাখলে, শ্যামারানিকেও মাখালে। হতবাক হয়ে শ্যামারানি বলে, তার মানে? আমায় নিয়ে যাবে না তুমি? একা ফেলে চলে যাবে?
তার হাত ধরে ফেলিনি বলে, তুমি এখান থেকে কখনও চলে যেও না— শ্রীরাধা হয়ে এই কুটিরেই বাস কোরো। তুমি চলে গেলে পথ হারানো ললিতা-বিশাখা’রা কার ঘরে ঠাঁই নেবে? কার কাছে তারা রং মাখবে, বাঁশি শুনবে? তোমাকে যে-এই দুয়ার আটকে সারাজীবন পড়ে থাকতেই হবে, সই। একটা শ্বাস ফেলে শ্যামারানি বলে, আচ্ছা, তবে তাই হোক। অলংকরণ : সুব্রত মাজী