বাংলা নিউজ এজেন্সি: বুধবার থেকে গোটা রাজ্যের সঙ্গে দক্ষিণ দিনাজপুরেও রেশন বিলি করা শুরু হল। এদিন রেশন বিলি শুরু হতেই জেলাজুড়ে একাধিক অভিযোগ উঠতে শুরু করে। এমনকী সেই অভিযোগ জানানো হয় জেলা প্রশাসনের করোনা সংক্রান্ত হেল্পলাইনে ফোন করে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, জেলাজুড়েই আটা কম দেওয়া হচ্ছে। সেইসঙ্গে বালুরঘাট সহ অনেক জায়গাতেই দাম দিয়ে সামগ্রী নিতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আটা নিয়ে সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন জেলা খাদ্য নিয়ামক। সেইসঙ্গে দাম দিয়ে সামগ্রী কেনার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে।
বালুরঘাট ব্লকের বাসিন্দা বিজয় মুন্সি বলেন, এদিন রেশন দোকানে যাওয়ার পর জানানো হয় যে, বেশ কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী দাম দিয়ে কিনতে হবে। অথচ সেসব বিনামূল্যে পাওয়ার কথা। এ ব্যাপারে আমি জেলার হেল্পলাইনে ফোন করে অভিযোগ জানিয়েছি। এছাড়া অনেকেই রেশন না পেয়ে বাড়ি ফিতে যেতে বাধ্য হয়েছেন। এদিন শ’খানেক উপভোক্তা বালুরঘাট প্রশাসনিক চত্বরে উপস্থিত হয়ে বিক্ষোভ দেখান। বালুরঘাট, কুমারগঞ্জ, হরিরামপুর, গঙ্গারামপরের মতো জায়গায় ভিড় করে রেশন সামগ্রী নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রণব ঘোষ বলেন, অভিযোগ পেলেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যাচ্ছেন আধিকারিকরা। তবে এখনও পর্যন্ত যেসব অভিযোগ পেয়েছি, তার মধ্যে অধিকাংশই ভিত্তিহীন। তবে জেলার আটা নিয়ে একটা সমস্যা আছে। পরে আবার আটা দেওয়া হবে। এছাড়া আর কোনও সমস্যা নেই। খাদ্য নিয়ামক জয়ন্ত রায় বলেন, যাঁরা এখন আটা পাচ্ছেন না তাঁরা সপ্তাহ দু’য়েকের মধ্যেই আটা পাবেন।
এদিকে এদিন গঙ্গারামপুরে স্থানীয় পুরসভার চেয়ারম্যান অমলেন্দু সরকারের উদ্যোগে দুঃস্থদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়। বিজেপি নেতা বিপ্লব মিত্র মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে দু’ লক্ষ টাকা দান করেছেন। বালুরঘাটের সংসদ সদস্য বিজেপির সুকান্ত মজুমদার সাংবাদিকদের সুরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী কেনার জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়েছেন।
রেশন নিয়ে সমস্যা হয়েছে উত্তর দিনাজপুরেও। লকডাউনের নিয়মকে তোয়াক্কা না করে বুধবার সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন রেশন দোকানে ভিড় করেন উপভোক্তারা। ভিড়ের মধ্যে সামগ্রী বিতরণে হিমশিম খেতে হয় দোকানদারদের। একাধিক অভিযোগে জেলার করেকটি রেশন দোকানে রেশন সামগ্রী বন্টন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়। ওয়েস্টবেঙ্গল এমআর ডিলার অ্যসোসিয়েশনের উত্তর দিনাজপুর জেলার সম্পাদক কমল সরকার বলেন, কিছু কার্ডের ক্ষেত্রে টাকা দিয়ে কিনতে হবে। এদিন সমস্ত ধরনের কার্ডধারীই বিনামূল্যে পণ্য দাবি করেন। এর জেরে উত্তেজনা তৈরি হয়। রায়গঞ্জের রাসবিহারি মার্কটের ক্রেতা সমবায় ও গোলইসোরা এলাকায় দু’টি দোকানে রেশন দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে। বিষয়টি পুলিস ও প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। সংগঠনের ইসলামপুর ব্লক সম্পাদক জাকির হুসেন বলেন, ভিড়ের জন্য দুপুর পর্যন্ত সামগ্রী দেওয়ার পরে বন্টন বন্ধ রাখা হয়েছে। কাল থেকে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বন্টন শুরু হবে।
এদিকে প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে রায়গঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল মার্কেট ডাকঘরের লিঙ্ক বিকল থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন গ্রাহকরা। ভারপ্রাপ্ত পোষ্টমাষ্টার প্রসেনজিৎ সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, লিঙ্ক বিকল হওয়ার পরই উচ্চতর আধিকারিকদের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। কিন্তু তারপরও কোন কাজ হয়নি।