উপার্জন বেশ ভালো হলেও ব্যয়বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে সঞ্চয় তেমন একটা হবে না। শরীর খুব একটা ... বিশদ
সেযুগে জাতীয়তাবাদ তৈরি হওয়ার একটা নির্দিষ্ট পরিসর ছিল বিদেশি ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে লড়াই করার জায়গায়। ইয়োরোপীয় দেশগুলি ভিন দেশে নিজস্ব উপনিবেশ তৈরি করত লুটেপুটে ভোগ করার জন্য। আর ইংল্যান্ড এ বিষয়ে ছিল অধিক সুচারু এবং কৌশলী। তাঁরা শোষণ চালাতেন শাসনের নামে এবং সেটা এমনভাবেই এই ভারতবর্ষে চেপে গিয়েছিল যেখানে এই ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হবার জন্য দেশাত্মবোধ এবং জাতীয়তাবাদ সেখানে সাধারণ প্রবৃত্তি হয়ে ওঠে। শুধু ভারতবর্ষ নয়, উনবিংশের শেষে এবং বিংশ শতাব্দীর প্রথম দুই দশক থেকেই বহু জায়গায় মানুষ দেশ স্বাধীন করার আন্দোলনে নেমে পড়ে এবং স্বাভাবিকভাবেই দেশাত্মবোধ এবং জাতীয়তাবাদ সেখানে প্রয়োজন এবং আস্বাদন দুইই দিল। পুনশ্চ দেশ স্বাধীন হলে প্রয়োজনের চেয়ে আস্বাদন আরও বেশি স্মৃতিমেদুর।
জ্যাক বারজুঁ ভাবনাগতভাবে যে কতটা সঠিক ছিলেন, তা ভাবা যায় না। তিনি ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস কতটুকু জানতেন সেটা বলতে পারব না, কিন্তু তিনি এটা বলেছিলেন যে, ১৯২০ সাল থেকে ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য সমস্ত পৃথিবী জুড়ে যে চেষ্টা হয়েছে, জাতীয়তাবাদ সেখানে ছিল প্রধান অবলম্বন। কিন্তু দেশ স্বাধীন হবার পরে সেই চরম দেশাত্মবোধক আন্তরিক জাতীয়তাবাদের তাৎপর্য ফুরিয়ে গেলেও জাতীয়তাবাদ টিকে রইল অন্যতম এক সংকীর্ণ প্রত্যয়ের মধ্যে। জ্যাক বারজুঁ লিখলেন—পুরাতন দেশাত্মবোধক জাতীয়তাবাদের সঙ্গে পরবর্তী-কালীন জাতীয়তাবাদ এইখানেই ভিন্ন হয়ে ওঠে যে, সেটা মোটেই দেশাত্মবোধের সঙ্গে জড়িত হয়ে ওঠেনি এবং এই ধরনের জাতীয়তাবাদ মানুষকে আত্মীকরণও করতে শেখায়নি, ফলত সকলের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেও তা চলতে শেখায় না—It is not patriotic and it does not want to absorb and assimilate.
‘১৯২০ সালের পর’—এই কথাটার মধ্যেই ঘটে গেছে সেই আশ্চর্য সমাপতন। ভারতবর্ষের রাজনীতির তখন একদিকে স্বাধীনতাকামী আন্দোলন তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে, তেমনই অন্যদিকে, হিন্দু-মুসলমানের সাম্প্রদায়িক রাজনীতিও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছিল তখন থেকেই। দেশের সামগ্রিক জাতীয়তাবাদী ভাবনাগুলির মধ্যে ধর্মের অনুপ্রবেশ নতুন এক রাজনৈতিক ধারা উস্কে দিতে আরম্ভ করল অদ্ভুত কতগুলি অন্তঃসুপ্ত পরিকল্পনার মাধ্যমে। সমস্যা হল—এঁরা সব অনেকেই কংগ্রেসের নেতা ছিলেন—মদনমোহন মালব্য, পুরুষোত্তমদাস ট্যান্ডন, কে এম মুন্সি কিংবা শেঠ গোবিন্দ দাস—এঁরা কংগ্রেসের নেতা হলেও ১৯২২-২৩ সাল থেকেই গো-রক্ষণের অত্যুৎসাহ দেখাতে থাকেন তথা হিন্দুধর্মে ধর্মান্তরিত করার শুদ্ধিবচন দিতে থাকেন। ১৯২৩ সালে হিন্দু মহাসভা এবং আর্যসমাজ একত্র হয়ে যে নিদান দিতে থাকে, সেগুলি অক্ষরে প্রতিবিম্বিত থাকে গীতা প্রেস থেকে প্রকাশিত ধর্মগ্রন্থগুলির মধ্যে এবং তার রাজনৈতিক শাখাপত্র কল্যাণ পত্রিকার মধ্যে।
ওই ১৯২০ সাল থেকেই মারওয়ারি আগরওয়াল মহাসভায় যে ঘরোয়া আলোচনাগুলি চলতে থাকে—যেখানে বিখ্যাত জি ডি বিড়লা, আত্মারাম খেমকা, যমনালাল বাজাজ—যাঁরা সমকালীন গান্ধীবাদী মানুষ ছিলেন, তাঁরাই কিন্তু ভগবদ্গীতার শক্তিমাধুর্যে আপ্লুত হয়ে গীতা প্রেস স্থাপন করলেন উত্তরপ্রদেশের গোরখপুরে। সম্ভবত, ১৯২৩ সালে। এই আপাত নিরীহ প্রকাশন-সংস্থা থেকে গীতা, রামচরিত মানস, রামায়ণের মতো নামী দামি গ্রন্থগুলি হিন্দি অনুবাদে বেরতে থাকে এবং তা এত সস্তা দামে, যা আমাদের ছোটবেলায় বিনা পয়সায় পাওয়া পকেট বাইবেলের কথা মনে করিয়ে দেবে। এর সঙ্গে ১৯২৬ সালে কল্যাণ পত্রিকা, যার সম্পাদক ছিলেন বিড়লার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হনুমানপ্রসাদ পোদ্দার—পণ্ডিতদের মতে, Poddar was equally at ease with Gandhi and with the Hindu Mahasabha.
বস্তুত স্বাধীনতা, স্বাদেশিকতা এবং জাতীয়তাবাদের সঙ্গে দ্বিচারিতার শুরু এইখান থেকেই। এইসময় থেকেই জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মধ্যে ধর্মের সূক্ষ্ম মিশেল দিয়ে এমনভাবেই এক বিকল্প আন্দোলনের ধারা তৈরি হতে থাকে, যেখানে জাতীয়তাবাদ দেশকে বিদেশি শাসনমুক্ত করতে চাইছে, নাকি আরও বহু পূর্বের মুঘল শাসকদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার আন্দোলন গড়ে তুলতে চাইছে, সেটা বোঝা যাচ্ছিল না। লক্ষণীয় গত চার-পাঁচ বছর ধরে গো-মাতা এবং গো-মাংস নিয়ে যত রাজনৈতিক চর্চা হয়েছে, তার ঐতিহ্য এবং পরম্পরা নেমে আসছে ওই কল্যাণ পত্রিকায় লিখিত প্রবন্ধগুলি থেকে। আর তৎকালীন সেই মারওয়ারি মহাসভা, হিন্দু মহাসভা এবং ১৯২৫-এর নবজাতক রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ—এঁরা সবাই কেমন যেন এক সাম্প্রদায়িক প্রতিযোগিতা, অথবা বলা উচিত, প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার মধ্যে নেমে পড়ে। জাতীয়তাবাদের মধ্যে এই ‘হিন্দু-হিন্দি-হিন্দুস্থানের’ সংক্রমণ স্বাদেশিকতা এবং দেশাত্মবোধকে অন্যতর এক মাত্রায় পিছন দিকে টানতে থাকে।
ওঁরা জাতীয়তাবাদের নামে ‘গৌ রক্ষণী’ সভাগুলি নিয়ে বেশি ব্যস্ত হলেন। অনেক বেশি তর্ক করলেন মসজিদগুলির সামনে কীর্তন সঙ্গীতের স্বাধিকার নিয়ে এবং অনেক বেশি জাগ্রত থাকলেন হিন্দি ভাষাকে উর্দু, হিন্দুস্থানী এবং ফার্সি ভাষার মাথায় চাপিয়ে দেবার জন্য। হনুমানপ্রসাদের কল্যাণ পত্রিকায় দুটি বিশেষ সংখ্যা ছিল গো-মাতা এবং গো-সেবা (গৌ অঙ্ক্, গো সেবা অঙ্ক্) নিয়ে, আর ‘গৌ রক্ষণী’ সভাগুলি এতই বেশি পরিমাণ এতই জাতীয়তাবাদ উদ্গিরণ করত গো-ভিত্তিক হিন্দুত্ব নিয়ে যে, ১৯২৩ থেকে ১৯২৭ সালের মধ্যে ৯১টি ‘রায়ট’ নথিভুক্ত হয়েছে উত্তরপ্রদেশে।
জাতীয়তাবাদের এই অদ্ভুত বৈকল্পিক ধারাকে তখনকার দিনের জাতীয়তাবাদের মূলস্রোতী কংগ্রেসিরা আটকাতে পারেনি। মদনমোহন মালব্য কিংবা জগৎনারায়ণ লাল অথবা শেঠ গোবিন্দ দাসদের কংগ্রেসিরা আটকাতে তো পারেনইনি, এমনকী তাঁদের উগরাতেও পারেননি, ফেলতে পারা তো দূরের কথা। ১৯২২ সালের পর ১৯৩৭ পর্যন্ত কংগ্রেসিদের বার্ষিক সভার সঙ্গে সঙ্গে হিন্দু মহাসভার আয়োজন। ১৯৩৭ সালের পর এটা বন্ধ হয়।
কিন্তু তার আগে সর্বনাশগুলো হতেই থাকল। মদনমোহন মালব্য গোষ্ঠী কংগ্রেসের মধ্যে থেকেই ১৯২৫ সালে সেই সংশোধনী চেষ্টাগুলি বন্ধ করে দিলেন যাতে করে মসজিদের সামনে দিয়ে হিন্দুদের ধর্মযাত্রা বিষয়ে একটা আন্তরিক সমাধান হতে পারত। ১৯২৬-এ নেহরু আবার উদ্যোগ নেন সমাধানের, কিন্তু সে চেষ্টাও ফলবতী হয়নি। ফলে ভারতজুড়ে স্বাধীনতার জন্য যে জাতীয়তাবাদী আন্দোলন চলেছে, তার একাংশে সেই প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার কাঁটাটুকু রয়েই গেল। এটা এমনই এক কাঁটা যা ভারতবর্ষের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে মাঝে-মাঝেই কণ্টকিত করেছে বিচ্ছিন্নতার যন্ত্রণায়।
আমরা জ্যাক বারজুঁর কথা দিয়ে এই প্রবন্ধ শুরু করেছিলাম এবং সত্যিই আমরা এটা দেখেছি যে, আমাদের জাতীয়তাবাদের প্রধান তাৎপর্য স্বাধীতালাভের সঙ্গে সঙ্গেই ‘এক্জস্টেড’ হয়ে যায়নি। কিন্তু যেভাবে তা টিকে থাকার কথা ছিল, তার প্রধান পরিসর হতে পারত জাতি-গঠন এবং দেশের অর্থনীতি এবং শিক্ষানীতিকে জাতির জাগরণ-মাত্রা হিসেবে গ্রহণ করার মধ্যে। কিন্তু আমাদের তা হয়নি। আমাদের ১৯৪৭-এর স্বাধীনতা বরণ করতে হয়েছে হিন্দু-মুসলমানের সংঘর্ষের মধ্য দিয়ে। ওদিকে ১৫ আগস্টের মধ্য রাত্রে যখন দিল্লিতে স্বাধীনতার পতাকা উঠতে আরম্ভ করেছে, তখন গান্ধীকে অতন্দ্র প্রহরীর মতো বসে থাকতে হয়েছে বেলেঘাটায়। কলকাতা শহরে রায়ট আরম্ভ হয়েছিল ক’দিন আগে থেকেই, এমনকী স্বাধীনতার আগের দিন ১৪ আগস্ট পর্যন্ত তাঁকে পাইকপাড়া, বাগমারি কাঁকুড়গাছিতে সংঘর্ষের জায়গাগুলি ঘুরে আসতে হয়েছে। দেখতে হয়েছে আমাদের মুসলমান ভাইদের জীবন যেন আর না যায়। তাঁকে শুনতে হয়েছে এই অভিযোগ যে, ১৯৪৬-এর আগস্ট মাসে কোথায় ছিলেন আপনি? যখন জিন্না সাহেব ‘ডিরেক্ট অ্যাকশনের’ ফতোয়া দিয়েছিলেন, আর শত শত হিন্দু মারা গিয়েছিল—সেদিন কোথায় ছিলেন আপনি? কোনও সন্দেহ নেই—জিন্নার প্ররোচনা ঠিক ছিল না।
গান্ধী ১৯৪৬-এর ১৬ আগস্ট কলকাতায় আসতে পারেননি। তাই তাঁকে কথা শুনতে হয়েছে একবছর পর ১৯৪৭-এর ১৪ আগস্ট। স্বাধীনতার আগের দিন। কিন্তু আজকে আমার জিজ্ঞাসা—স্বাধীনতার ৬৯ বছর কেটে যাবার পর ২০১৫ সালের ১৬ আগস্ট হঠাৎ করে মহম্মদ আলি জিন্না সাহেবের সেই ‘ডিরেক্ট অ্যাকশনের’ দিনটাকে উল্টো করে স্মরণ করার প্রয়োজন পড়ল কেন? ১৬ আগস্টের রবিবার, ২০১৫। সকাল ৮টা থেকেই হিন্দু সংহতি নামে একটা গোষ্ঠী বাসে বাসে লোক এনে ওয়েলিংটন স্কয়ার ভরিয়ে তুলল। তাদের উদ্দেশ্য, ১৯৪৬-এর ১৬ আগস্টে পৃথক ভূখণ্ডকামী মুসলমান সম্প্রদায় হিন্দুদের ওপর সন্ত্রাস চালিয়েছিল এবং সেই সন্ত্রাসকে স্তব্ধ করার জন্য শ্রীযুক্ত গোপালচন্দ্র মুখোপাধ্যায় যে পাল্টা সন্ত্রাস তৈরি করেছিলেন, বঙ্গের সেই ‘হিন্দু বীর’ ‘কলকাতার রক্ষাকর্তা’ সেই মানুষটাকে সম্মান জানিয়ে তাঁর নামে বহুমাননী জয়ধ্বনি এবং পোস্টার স্লোগান তৈরি করে হিন্দু সংহতির লোকেরা ওয়েলিংটন থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত হাঁটলেন।
এই গোপাল মুখোপাধ্যায়কে আমার ছোটবেলায় আমি দেখেছি। কেউ এই ভদ্রলোককে ‘মুখোপাধ্যায়’ পদবিতে চিনত না। সম্ভবত বউবাজার অঞ্চলে ওঁর একটা পাঁঠার মাংসের দোকান ছিল, তাতেই একটা ব্যবসায়িক পদবি তাঁর হয়ে গিয়েছিল গোপাল পাঁঠা। আমি যখন তাঁকে দেখেছি, তখন তাঁর কালীপুজো দেখতে যেত লোকে। ১৯৪৬-এর ১৬ আগস্ট যে ভয়ঙ্কর দাঙ্গা লেগেছিল, সেদিন আক্রমণকারী আততায়ীদের ওপর গোপাল পাঁঠাও তাঁর দলবল নিয়ে অস্ত্রশিক্ষা দিয়েছিলেন বিপক্ষকে। খুব আকস্মিকভাবেই এবং প্রধানত সেইদিনের লগ্ন তাঁকে এমনই প্ররোচিত করেছিল যে গোপাল পাঁঠা সেদিন ‘হিরো’ হয়ে উঠলেন। কিন্তু ওইদিনের আগে কোনও রাজনৈতিক স্বাদেশিকতা তাঁর মধ্যে দেখা যায়নি। কিন্তু সেদিনটা তাঁকে এমনই তৈরি করে দিল যে গোপাল পাঁঠা যেন হিন্দুদের ‘ত্রাতা’ হয়ে উঠলেন।
১৯৪৬-এর সেই দিনটা হিন্দুদের পক্ষে আত্মরক্ষার বাতাবরণ করেছিল এবং গোপাল পাঁঠার কাজটাও আকস্মিকতার মুহূর্তে হিন্দুদের বাঁচানোর তাগিদ হিসেবেই ব্যাখ্যাত হয়েছে। কিন্তু ১৯৪৭-এ স্বাধীনতা-পূর্ব দাঙ্গবাজি হল কলকাতায়। গান্ধী বেলেঘাটায় বসে সকলকে অস্ত্র ত্যাগের আর্জি জানালেন, সেদিন কিন্তু গোপাল পাঁঠা গান্ধীকে বলেছিলেন—আমি একটা ‘পেরেক’ও জমা দেব না আপনার কাছে। যে অস্ত্র হিন্দুরক্ষার কাজে লাগে তার একটিও জমা দেব না। গান্ধীর একান্ত চেষ্টায় সেদিন দাঙ্গা বন্ধ হয়েছিল এবং পরের দিন স্বাধীনতা দিবস ১৯৪৭, ১৫ আগস্ট হিন্দু-মুসলমান সম্প্রীতিতে কেটেছিল। কিন্তু ওই যে হিন্দুরক্ষার একটা কবচ তৈরি হল, সেটা সেদিনকার রাজনীতির মধ্যে ঢুকে গিয়েছিল এবং সেটাকে পোষণ করে গেছেন হিন্দু হিতৈষিণী মহাসভা এবং সংঘ পরিষদের মানুষেরা। লক্ষণীয়, অনেককাল আমরা দাঙ্গার চেহারা ভুলে ছিলাম। গোপাল পাঁঠার নামে একটিও স্মারকসভা হয়নি কোথাও কোনও দিন। আধুনিক প্রজন্ম গোপাল পাঁঠাকে স্বাদেশিকতার জন্যও চেনে না, দাঙ্গাবাজ হিসেবেও চেনে না, হিন্দুরক্ষী হিসেবেও চেনে না। তাহলে হিন্দু-সংহতি ওয়ালারা ২০১৫ সালে দাঁড়িয়ে স্বাধীনতার ৬৯ বছর পর দাঙ্গার বার্ষিকী পালন করছেন, তাও এই বাংলায়! এটা কোন রাজনীতি?
একটা কথা বলেছিলাম আগে। আমাদের জাতীয়তাবাদ স্বাদেশিকতার ভাবনা হারিয়ে এক শ্রেণীর রাজনীতিকের হাতে হিন্দু-হিন্দুত্ব এবং বিচ্ছিন্নতার মধ্যে আত্মলাভ করেছে। ঠিক এই কারণেই জ্যাক বারজুঁ দিব্যদৃষ্টিতে বলেছিলেন—The only Political ism surviving in full strength from the past is nationalism. This was partly to be expected from the liberation of so many colonies simultaneously, begining in the 1920s. But this nationalism differs from the old in two remarkable ways: it is not patriotic and it does not want to absorb and assimilate. On the contrary, it wants to shrink and secede, too limit its control to its one small group of like-minded-we-ourselves-alone. It is in that sense racist, particularist, sectarian, minority-inspired. ["Towards the Twenty-First Century" (1972) p. 169].
মতামত ব্যক্তিগত