পিতার স্বাস্থ্যহানী হতে পারে। আর্থিক ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের অভাব হবে না। পঠন-পাঠনে পরিশ্রমী হলে সফলতা ... বিশদ
কারও কিছু করার নেই। মোবাইল পরিষেবার ব্যবসা এখন প্রায় মনোপলি পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। সেটা ছিল ইউপিএর আমল। তখন দেশে অন্তত বারো-তেরোটি টেলিকম সংস্থা ছিল। তার সঙ্গে ছিল বিএসএনএলের পরিষেবা। তাই সব ক’টির মধ্যে ছিল তীব্র প্রতিযোগিতা। কিন্তু সেটা কমতে কমতে এখন সাকুল্যে এসে দাঁড়িয়েছে মোটামুটি তিনটি সংস্থায়। তার মধ্যে আবার ভোডাফোন-আইডিয়া এবং এয়ারটেলের অবস্থা নাকি বিশেষ সুবিধার নয়। গুটিকয় সংস্থার হাতে পুরো পরিষেবা চলে যাওয়ার অর্থ মনোপলি কায়েম হয়ে যাওয়া। আর তাতেই গ্রাহকদের সঙ্কট গভীর থেকে গভীরে চলে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে বর্তমানে বাজারের চাহিদা বিচার করে দেখা যাচ্ছে, এই বর্ধিত মাশুলের জন্য আমজনতার প্রতি মাসে অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে কলচার্জ বাবদ ব্যয় হবে ১২ হাজার কোটি টাকা এবং ডেটা চার্জ বাবদ ব্যয় হবে ২৪ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ এই পুরো ৩৬ হাজার কোটি টাকা ঢুকে যাবে টেলিকম সংস্থাগুলি পকেটে।
টেলিকম সংস্থাগুলি মাশুলবৃদ্ধি নিয়ে তাদের যুক্তিতে বলেছে, প্রথমত লাইসেন্স এবং স্পেকট্রাম বাবদ তাদের প্রচুর টাকা কেন্দ্রকে দিতে হয়। দ্বিতীয়ত নিত্য পরিবর্তন হচ্ছে প্রযুক্তির। তার সঙ্গে তাল মেলাতে সংস্থার ব্যয় হচ্ছে প্রচুর অর্থ। গ্রাহকদের উন্নত পরিষেবা দিতে গিয়ে নাজেহাল অবস্থা সংস্থাগুলির। প্রায় প্রতিটি সংস্থা ঋণভারে জর্জরিত। এর হাত থেকে রেহাই পেতে গেলে মাশুল বাড়ানো ছাড়া তাদের আর কোনও পথ নেই। এতদিন ভোডাফোন এবং এয়ারটেল মাশুল বাড়ানোর ইচ্ছে থাকলেও বাড়াতে পারেনি। তার কারণ রিলায়েন্স-জিও যে সুবিধা দিত, তার সঙ্গে প্রতিযোগিতা থাকায় ট্যারিফ বাড়ানোর সুযোগ ছিল না। এখন জিও তাদের মাশুল বাড়ানোয় কিছুটা স্বস্তিতে ভোডাফোন এবং এয়ারটেল। তারাও তাই মাশুল বাড়ানোর সুযোগ পেয়ে গেল। এর আগে ওই দুই সংস্থা কেন্দ্রের কাছে ত্রাণ দাবি করেছিল। তারা বলেছিল, এভাবে সঙ্কটের মধ্যে ডুবে থেকে টেলিকম পরিষেবা দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না। সরকারের উচিত এই সঙ্কটের হাত থেকে তাদের বাঁচাতে কিছু ত্রাণের ঘোষণা করা। সেকথা শুনে জিও আপত্তি জানিয়ে বলেছিল, অবস্থা তো এতটা খারাপ নয়! তবু কেন ত্রাণের প্রসঙ্গ উঠছে। এখন রিলায়েন্স নিজেই জিওর মাশুল বাড়ানোয় প্রশ্ন উঠছে, সবই যদি ঠিক থাকে, তবে তাদের মাশুল বাড়াতে হচ্ছে কেন!
পাশাপাশি রাষ্ট্রায়ত্ত টেলি সংস্থা বিএসএনএল নিয়ে মোদি সরকারের যে পদক্ষেপ, সেখানেও প্রশ্ন উঠেছে। এখন চলছে তীব্র বাজারি প্রতিযোগিতা। অথচ মোদি সরকার বিএসনএলকে ৪জি পরিষেবা নিতে দিল না। ফলে প্রতিযোগিতায় তারা প্রথম থেকেই পিছিয়ে রইল। এতে প্রশ্ন যেমন উঠেছে, তাহলে কি প্রকারান্তরে বেসরকারি সংস্থাগুলিকে বাজারে আপোসে খেলা করার সুযোগ দেওয়া হল? বিরোধীদের এই প্রশ্ন ইতিমধ্যেই মোদি সরকারকে বিঁধতে শুরু করেছে। সাধারণ মানুষ আর কীই বা করতে পারে! তারা অসহায় অবস্থার মধ্যে পড়ে সবসময় নতুন করে বাঁচার চেষ্টা করে। এক্ষেত্রেও তার অন্যথা হবে না। নতুন মাশুলের পয়সা পকেট থেকে গুনে বের করে সংস্থাগুলির পকেটে ভরে আবার যেমন ছিল, তেমনভাবেই চালিয়ে যাবেন সকলে। এখন আর তো ছাড়া যাবে না। অভ্যেস হয়ে গিয়েছে যে!