বিদ্যার্থীদের বেশি শ্রম দিয়ে পঠন-পাঠন করা দরকার। কোনও সংস্থায় যুক্ত হলে বিদ্যায় বিস্তৃতি ঘটবে। কর্মপ্রার্থীরা ... বিশদ
রাজ্যের উন্নয়ন করতে হলে শিক্ষার বিস্তার ও তার অগ্রগতি ঘটাতেই হবে। এটি একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া। সেই কারণেই প্রাথমিক, উচ্চপ্রাথমিক, মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক—যে কোনও স্তরেই হোক স্কুলছুট আটকাতেই হবে। স্কুলছুটের একটি বড় কারণ অবশ্যই দারিদ্র্য। অনেকক্ষেত্রেই দেখা যায় দারিদ্র্যের কারণে গরিব মানুষ সংসারের আয় বৃদ্ধির তাগিদে ছেলেমেয়েদের পড়াশুনা ছাড়িয়ে কাজে লাগিয়ে দেয়। সেই কারণে বাড়তে থাকে শিশু শ্রমিকও। পেটের দায়ে অভাবের তাড়নায় কোনও শিশুর শৈশব যাতে হারিয়ে না যায় তা দেখা যে কোনও দায়িত্বশীল সরকারের কর্তব্য। শিশুশ্রমিক আমাদেরই লজ্জা। একথা ঠিক, শিশুদের স্কুলে যাওয়ার আকর্ষণ বাড়াতে তৃণমূল সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের সুফল ইতিমধ্যেই মিলেছে। প্রাথমিক ও উচ্চপ্রাথমিক স্তরের স্কুলগুলিতে বেড়েছে ছাত্র সংখ্যাও। সেক্ষেত্রে স্কুলছুটের হার শূন্যেরও কম হয়ে যাওয়াটা অবশ্যই একটি দৃষ্টান্ত। ঠিক সেভাবেই মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক ক্ষেত্রেও যাতে স্কুলছুটের ঘটনা রোধ করা সম্ভব হয় সেজন্য উদ্যোগী হতে হবে শিক্ষা প্রশাসনকে। নবম ও দশম শ্রেণীকে মাধ্যমিক এবং একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীকে উচ্চমাধ্যমিক ধরা হয়। এই দুটি স্তরেই আগের তুলনায় পড়ুয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেলেও মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরের মধ্যে শিক্ষার্থীদের সংখ্যায় বড়সড় পার্থক্য রয়েছে। একটি তথ্য বলছে, ২০১৫-’১৬ আর্থিক বছরে মাধ্যমিক পর্যায়ে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২৫ লক্ষ ১৬ হাজার ২৯৩। দু’বছর পর অর্থাৎ ২০১৭-’১৮ আর্থিক বছরে তা কমে হয়েছে ১৬ লক্ষের কিছু বেশি। শুধু তাই নয়, উচ্চপ্রাথমিক অর্থাৎ অষ্টম শ্রেণীর পর স্কুলছুটের কারণে মাধ্যমিক স্তরে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমছে কিনা বা তা সঙ্গতিপূর্ণ থাকছে কিনা তাও খতিয়ে দেখার প্রযোজন আছে। যারা উচ্চপ্রাথমিক পর্যন্ত পড়াশুনা করছে তারা যাতে শুধুমাত্র আর্থিক কারণে মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পড়া ছেড়ে না দেয় বা শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয় অর্থাৎ ড্রপ আউট হয়ে না যায় সেদিকে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।
অনেকেই বলে থাকেন, উচ্চশিক্ষা সবার জন্য নয়। কিন্তু স্কুলস্তরে অর্থাৎ উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত স্কুলছুট আটকানোটা জরুরি। কারণ স্কুলস্তরে শিক্ষার ভিতটি মজবুত হলে বৃহত্তর কর্মক্ষেত্রে তার সুফল মিলবে। সমাজেও তার প্রতিফলন পড়বে। আশা করা যায় শিক্ষার প্রসারে তৃণমূল সরকারের সদর্থক ভূমিকাই মাধ্যমিক-উচ্চমাধ্যমিক স্তরেও স্কুলছুট আটকাতে পারবে।